পোস্টগুলি

তারা কি আসলে স্বাধীন নাকি বন্দী?

ছবি
  যারা যা খুশি তা-ই করে তারা কি আসলে স্বাধীন নাকি বন্দী? প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃত কর্মগুলোর দ্বারা জিম্মি হয়ে আছে। মানুষ মদ্যপানের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। মানুষ যৌন আসক্তি দ্বারা, পর্নোগ্রাফি দ্বারা জিম্মি হয়ে আছে। মানুষ মাদকের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। মানুষ সময়ের অপচয় দ্বারা জিম্মি হয়ে আছে। তাদের দোষ যা-ই হোক, তাদের অপরাধ যা-ই হোক, তারা সেটার দ্বারা জিম্মি। তারা এর মধ্যে নিজেদেরকে নিমজ্জিত রেখেছে। একমাত্র কিছু মানুষ আসলে এই আসক্তিগুলো, এই বদভ্যাসগুলো থেকে মুক্ত রয়েছে। আমাদের বলা হয়েছে, ইন্টারনেট ব্রাউজিং-এ তুমি স্বাধীন। ইন্টারনেট ব্রাউজিং-এ তুমি স্বাধীন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঢুকতে তুমি স্বাধীন। কিন্তু যদি আপনি আপনার ফোনটি সরিয়ে রাখেন; যদি আপনি দীর্ঘ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় অভ্যস্ত হন; ধরুন, ১৪, ১৫ বছর বছর বয়সী একজন কিশোর, সে যা কিছু দেখার, দেখছে। আর আপনি যদি ফোনটি কেড়ে নেন, সেই কিশোরের কী ঘটে ? সে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে, তার মেজাজ খারাপ হয়, তার মানসিক যন্ত্রণা শুরু হয়, সব ধরণের অদ্ভুত বিষয় শুরু হয়ে যায়। জানেন কেনো ? কারণ তারা আসলে সেই ডিভাইস দ্বারা বন্দী। তারা আসলে মোটেও স্বাধীন নয়।...

ফিতনা হলো তিন প্রকারের

ছবি
  ফিতনা হলো তিন প্রকারের। আর এর মধ্যে প্রথমটি হলো, আল্লাহ যখন কাউকে ফিতনায় ফেলেন। দ্বিতীয় ধরণটি হলো, যখন মানুষ আপনাকে ফিতনায় ফেলে। যেমন, [إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ]। যেমন, [رَبَّبِنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا]। যখন মানুষ আপনাকে কষ্টে ফেলে। যখন মানুষ ইমানদারদেরকে নির্যাতন করে। যখন মানুষ ইমানদারদেরকে আক্রমণ করে, যখন মানুষ অন্যায় করে, যখন মানুষ অন্যের ওপর জুলুম করে। যারা নির্যাতন, নিপীড়ন, লুটতরাজ, হত্যা করে, তারা অন্য মানুষকে ফিতনায় ফেলে। এটা আরেকটি ধরণ। তৃতীয় আরেকটি ধরণও রয়েছে। যে ফিতনায় আমি নিজেকে ফেলি— [وَلَكِنَّكُمْ فَتَنْتُمْ أَنفُسَكُمْ]। আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে ফিতনায় ফেলেছো। এখন আমাদেরকে বুঝতে হবে এই তিনটি কিভাবে কাজ করে। যখন অন্য মানুষ তাদেরকে ফিতনায় ফেলে, [ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ]। (তখন তারা মানুষের ফিতনাকে আল্লাহর ‘আযাবের মত মনে করে। ২৯:১০) এই ব্যক্তি মানুষের তৈরী ফিতনাকে এভাবে নেয়। যখন মানুষ আপনার সাথে কোনো অন্যায় করে, মানুষ বাজে কিছু করে, তখন আপনি নিজের মাথায় সেটাকে এভাবে সা...

বাদশাহ আবরাহার হাতির বাহিনীর করুণ পরিণতি

ছবি
  নবীজি মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের কয়েক মাস আগে বাদশাহ আবরাহা মক্কায় অবস্থিত কাবাঘর ধ্বংস করতে আসেন। তার সঙ্গে ছিল প্রায় ৬০ হাজার সৈন্য এবং অন্যূন ১০টি বৃহদাকার হাতি। এ হাতিগুলো আবরাহার সেনাবাহিনীর সম্মুখভাগে ছিল এবং এগুলো দিয়েই কাবাঘর ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার অভিপ্রায় ছিল তার। এ কারণে তার বাহিনীকে আসহাবে ফিল বা হস্তীবাহিনী বলা হয়। ( সুবুলুল হুদা ওয়ার রাশাদ , খণ্ড ১, পৃষ্ঠা ২১৬) আবরাহা যখন মক্কায় পৌঁছে হাতিগুলোকে কাবাঘরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন হাতিগুলো সামনে না গিয়ে নিজেদের জায়গা বসে পড়ে। হাতির মাহুত এবং সৈন্যরা শত চেষ্টা করেও আর সেগুলোকে কাবাঘরের দিকে নিয়ে যেতে পারল না। আবরাহা যখন মক্কায় পৌঁছে হাতিগুলোকে কাবাঘরের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন তখন হাতিগুলো সামনে না গিয়ে নিজেদের জায়গা বসে পড়ে। হাতিগুলোকে নিষ্ঠুরভাবে পেটানো হলো, সেগুলোর শুঁড়ের ভেতরে লাঠি ঢুকিয়ে উত্তেজিত করার চেষ্টা করা হলো। কিন্তু হাতিগুলো মক্কার দিক ছেড়ে ইয়েমেনের দিকে চলতে লাগল। ( সিরাতে ইবনে হিশাম , পৃষ্ঠা ৩০) আবরাহার সৈন্যরা যখন হাতিগুলো নিয়ে জেরবার হচ্ছিল, এমন সময় দেখা গেল, বিরাট বিরাট পাখির ঝ...

ইসলামি নীতিশাস্ত্রে সুখের ধারণা

ছবি
  ইসলামের একটি মৌলিক বিশ্বাস হলো, আল্লাহর কোনো চাওয়া-পাওয়া বা প্রয়োজন নেই। তিনি ফেরেশতা ও নবীদের মাধ্যমে যে ওহি দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণরূপে মানুষের কল্যাণ ও সমৃদ্ধির জন্য। আল্লাহ মানুষকে একটি চুক্তি দিয়েছেন: এটি গ্রহণ করলে তাদের উপকার হবে, আর প্রত্যাখ্যান করলে ক্ষতি হবে তাদেরই। ইসলামি শরিয়ার নীতিই এমন, যা ক্ষতি দূর করার এবং দুঃখ-কষ্টের অবসান ঘটানোর নির্দেশ দেয়। (সুরা শারহ, আয়াত: ৫-৬) তবে কষ্ট দূর করা আর সুখ অর্জন করা সমান কথা নয়। এমনকি সবচেয়ে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাও কষ্ট দূর করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও তার মাধ্যমে যে সুখ আসবে, তা নিশ্চিত করে না। কষ্ট দূর করা আর সুখ অর্জন করা সমান কথা নয়। এমনকি সবচেয়ে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাও কষ্ট দূর করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও তার মাধ্যমে যে সুখ আসবে, তা নিশ্চিত করে না। সুখ কেবল আনুষ্ঠানিক আনুগত্য বা আইনি পদ্ধতির মাধ্যমে অর্জিত হয় না। বরং ইসলামি সাহিত্যে ‘সাআদা’ বা সুখ নিয়ে ভিন্ন কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ, জ্ঞান ও আলোকপ্রাপ্তির সঙ্গে সুখের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক, এই কথাটায় জোর দেওয়া হয়েছে বারবার। একজন বিশ্বাসী যত বেশি নিজেকে, অন্য মানুষকে, অন্য সংস্কৃতিকে এ...

দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন

ছবি
  দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন, আপনার অন্তর যদি আখিরাত নিয়ে মগ্ন থাকে, আপনার অন্তর যদি আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত থাকে—তখন লক্ষ্য করবেন আপনার হৃদয় কখনো হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে না, পরকালে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় অন্তরটি সবসময় আলোকিত থাকে। আশার প্রদীপটি কখনো নিভে যায় না। পক্ষান্তরে দেখুন, আপনি যদি স্রষ্টায় অবিশ্বাসী হয়ে থাকেন, জীবনে যদি ধর্মকর্ম অনুপস্থিত থাকে, যদি আপনার সমগ্র অস্তিত্ত্ব শুধুই দুনিয়ার এ জীবন নিয়ে কিন্তু তবু দুনিয়া আপনার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেলো, দুনিয়াতে ব্যর্থ হলেন—তখন আপনি ভয়াবহ এক সমস্যায় নিপতিত হবেন। হতাশার অমানিশা চার দিক থেকে আপনাকে ঘিরে ধরবে। ডিপ্রেশনে পড়ে যাবেন। এমনকি আত্মহত্যার মতো জঘন্য সম্ভাবনাও দেখা দিবে। সব ধরণের নেতিবাচক অনুভূতিগুলো আপনার অন্তরে জেঁকে বসবে। কিন্তু যদি দুনিয়ার জীবনটাকে পরকালের সাথে যুক্ত করেন... যখন উপলব্ধি করবেন যে, হ্যাঁ, আমি দুনিয়াতে সফল হতে চাই, কিন্তু যদি কোনো কারণে ব্যর্থ হই, আমার জন্য তো পরকাল আছেই। যদি এই মানসিকতা অন্তরে লালন করতে পারেন, হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর উত্তেজনা অনুভব করবেন। হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর এ...

যারা শিশু সন্তান হারিয়েছেন

ছবি
  যারা শিশু সন্তান হারিয়েছেন তাদের জন্য খুবই সান্ত্বনাদায়ক হাদিস ----------------------- * ----------------------- শেষ বিচারের দিন শিশুদের শাফায়াত করার অধিকার থাকবে। যারা শৈশবে মারা গেছে। আর তাদের মাতা-পিতারা সে সময় ধৈর্য ধারণ করেছে। এসব শিশুদের শেষ বিচারের দিন শাফায়াত করার অধিকার দেওয়া হবে। আর অবশ্যই তারা তাদের পিতা-মাতার জন্য শাফায়াত করবে। এ সম্পর্কে বহু হাদিস আছে। তার মধ্যে মুসলিম শরীফের বিখ্যাত একটি হাদিস। রাসূলুল্লাহ (স) মহিলাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। প্রসঙ্গত: এটা রাসূলুল্লাহ (স) এর সুন্নাহ ছিল, তিনি মহিলাদের উদ্দেশ্যে নিয়মিত বক্তব্য প্রদান করতেন। বুখারী শরীফের একটি হাদিসে বর্ণিত আছে। মহিলারা রাসূলুল্লাহ (স) এর নিকট অভিযোগ করে বলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ! পুরুষেরা সব সময় আপনাকে প্রশ্ন করার সুযোগ পায়। আমাদের সময় হয় না। অতঃপর তিনি প্রতি সপ্তাহে একবার মহিলাদের জন্য সময় নির্ধারণ করেন। (আমার এটা বলা উচিত না। আমি বোনদের জন্য মাসে একবার সময় প্রদান করি। তিনি করেছিলেন সপ্তাহে একবার। তিনি তো ছিলেন আল্লাহর রাসূল। তাঁর মাকাম আমাদের সবার চেয়ে উচ্চে। আমার পক্ষে সপ্তাহে একবার করা সম্ভ...

মুনাফিকির বিশাল বড় এক সংস্কৃতি

ছবি
  উপনিবেশ-পরবর্তী সময়ে ইসলামি আন্দোলনগুলোর যে সংকট তৈরী হয় তা হলো, ক্ষমতার প্রতি অতিমাত্রার একধরণের মোহাবিষ্টতা তৈরী হয়। এই মোহাবিষ্টতা ছিলো—আমাদের ভুখন্ডের অধিকার নিতে হবে, আমাদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সমস্যা হলো—ধরুন, কোনো মুসলিম দেশে, যেমন পাকিস্তানে, কিছু ইসলামপন্থী মানুষ হুট করে ক্ষমতা দখল করলো, কিছু ধর্মভীরু সামরিক জেনারেল বললো, "আমরা দেশে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা করবো, শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করবো।" এখন সবার অবস্থা এরকম— "তাকবির!" (উচ্চস্বরে)। তাই না ? আর আমরা আসলেই আনন্দিত, কারণ এখন আমরা পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক রাষ্ট্র পেলাম। ইসলামিক আইন অনুযায়ী সব হারাম জিনিস অপসারণ করা হবে— নাইটক্লাব বন্ধ হবে, বার বন্ধ করা হবে, সুদ বিলুপ্ত হবে। রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তিত হোলো। এটাই কি আসলে ইসলামের উদ্দেশ্য ? যদি তাই হয়, তাহলে আপনি ইসলামের আইন এমন এক জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন যাদের বেশিরভাগেরই এই আইনের প্রতি আগ্রহ নেই, তারা এটা মানতেও চায় না। তো, আপনি নিশ্চিত করছেন যে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির পরিবর্তে ভিন্ন উদ্দেশ্যে এই আইন মানছে। যার অর্থ, আপনি মুনাফিকির ...