পোস্টগুলি

কাউকে বোন ডাকলে তার সঙ্গে দেখা দেওয়া যাবে?

ছবি
  প্রশ্ন:  একটি মেয়ের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব রয়েছে, তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা নিজ ভাই বোনের মত, আমাদের মধ্যে কোন খারাপ কথাবার্তাও হয় না, একদম নিজ ভাই বোনের মত আমাদের সম্পর্ক। আমাদের এই সম্পর্কে শরিয়তে অনুযায়ী কী বলে, আমাদের কি কথা বললে গোনাহ হবে? আমরা দুজন নিজের আপন ভাই বোনের মত। দয়া করে জানাবেন। উত্তর:  মুমিন-পুরুষ হোক কিংবা নারী- তারা একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন, মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। (সূরা হুজুরাত ১০) এই আয়াত থেকে বুঝা যায়, মুমিন পুরুষ মুমিন নারীকে ‘বোন’ কিংবা মুমিন নারী মুমিন পুরুষকে ‘ভাই’ বলে সম্বোধন করতে পারবে। তবে এই সম্বোধন দ্বারা আপন বোনের মত কিংবা আপন ভাইয়ের মত মাহরাম মনে করা যাবে না এবং এর কারণে তার সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ, অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা ইত্যাদি জায়েয হয়ে যাবে না।  কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সঙ্গেকোমল ও আকর্ষনীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে তোমরা সঙ্গত কথাবার্তা বলবে। (সূরা আহযাব ৩২) মাহরাম আরবি শব্দ। এটি আরবি হারাম শব্দ থেকে এসেছে। ইসলা...

ঋণ থেকে মুক্তির জন্য যে আমল

ছবি
  আর্থিক দুরবস্থায় পড়লে মানুষ ঋণ নিতে বাধ্য হয়। ঋণের টাকায় প্রয়োজন পূরণের চেষ্টা করে। তবে সাধ্যের বাইরে ঋণ দেওয়া-নেওয়া দুটিই ইসলাম নিষেধ করেছে। কারণ, তাতে সময়মতো ঋণ পরিশোধের সম্ভাবনা কমে যায়। এর ফলে ঋণদাতাকে যেমন হতাশাগ্রস্ত হয়, ঋণগ্রহীতার আত্মমর্যাদাও ক্ষতির শিকার হয়। মহানবী (সা.) আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন যাতে তিনি ঋণে জড়িয়ে না পড়েন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) নামাজের পরে দোয়া করতেন—হে আল্লাহ, আমি তোমার কাছে গুনাহ ও ঋণ থেকে পানাহ চাচ্ছি। এক প্রশ্নকারী জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি ঋণ থেকে বেশি পানাহ চান কেন? রাসুল (সা.) জবাব দিলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা ভঙ্গ করে। (বুখারি, হাদিস: ২,৩৯৭) হাদিসে ঋণ থেকে মুক্তির আরও কয়েকটি দোয়া রয়েছে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাজানি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউজুবিকা মিনাল-বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া আউজুবিকা মিন দ্বালায়িদ্দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।’ অর্থাৎ, হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে,...

লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন

ছবি
  হজরত ইউনুস (আ.) ছিলেন একজন নবী। সুরা ইউনুস নামে পবিত্র কোরআনে স্বতন্ত্র একটি সুরা আছে। এই সুরায় তওহিদের প্রমাণ ও অংশীবাদের প্রতিবাদ রয়েছে। সুরাটিতে অবিশ্বাসীদের সম্বোধন করে তওহিদ, ওহি, নবুয়ত ও পরকালের সত্যতা ঘোষণা করা হয়েছে। সুরা ইউনুস ছাড়াও কোরআনে আরও ছয়টি সুরায় হজরত ইউনুস (আ.) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দুজন নবী মায়ের নামে পরিচিত হয়েছেন। একজন হজরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ.), অন্যজন হজরত ইউনুস ইবনে মাত্তা (আ.)। মাত্তা হজরত ইউনুস (আ.)-এর মায়ের নাম। মায়ের নামেই তাঁকে ইউনুস ইবনে মাত্তা বলা হয়। কোরআনে তাঁকে তিনটি নামে উল্লেখ করা হয়েছে—ইউনুস, জুননুন ও সাহিবুল হুত। জুননুন ও সাহিবুল হুতের অর্থ মাছওয়ালা। মাছ–সংশ্লিষ্ট ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তাঁকে এ নামে ডাকা হয়েছে। হজরত ইউনুস (আ.)-কে বর্তমান ইরাকের মসুল নগরীর কাছাকাছি নিনাওয়া জনপদে নবী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। সুরা সাফফাতের ১৪৭ আয়াতে এ নিয়ে আলোচনা আছে। তিনি মসুলবাসীকে আল্লাহর পথে ডাকলেন। আখিরাতের বিষয়ে সতর্ক করলেন। কিন্তু তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁর কথা শোনেনি। নবী ইউনুস (আ.) তাদের ইমান নিয়ে হতাশ হয়ে পড়লেন। তিন দিনের মধ্যে আল্লাহর আজাব তাদের ওপ...

'আল ফাত্তাহ।'

ছবি
  আল্লাহর একটি নাম হলো 'আল ফাত্তাহ।' এর অর্থ সর্বোত্তম ফয়সালাকারী। যদি কোন সংকটে আটকে যান, কোন উপায় দেখতে পারছেন না তখন এই নাম পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। বলুন, ইয়া ফাত্তাহ! আমি একটি সংকটে আটকে গেছি, আমার জন্য একটি উত্তম উপায় বের করে দিন। আল্লাহর নাম 'আল-ফাত্তাহ'-এর উপর বিশ্বাস করে আল্লাহর উপর আমরা আমাদের ইয়াকিন এবং তাওয়াক্কুল সীমাহীন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারি। কারো পক্ষে যখন সাহায্য করা সম্ভব নয় তখন একমাত্র আল্লাহই সাহায্য করতে পারেন। যখন কারো পক্ষে দান করা সম্ভব নয় তখন একমাত্র আল্লাহই দিতে পারেন। আল্লাহর কাছেই আছে অদৃশ্য জগতের চাবিসমূহ, যা আর কারো কাছে নেই। আল্লাহর জন্য অসম্ভব বলতে কিছু নেই। 'আল-ফাত্তাহ' অর্থাৎ যিনি শ্রেষ্ঠ ফয়সালাকারী, আমাদের জন্য একটা উপায় বের করে দিতে পারেন। তাহলে আল্লাহর নাম 'আল-ফাত্তাহ' আমরা প্রতিটি সমস্যাজনক পরিস্থিতিতে ব্যবহার করতে পারি এবং সকল উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন। এবং তিনি প্রতিটি কঠিনকে সহজ করে দিতে পারেন। সেজন্য রাসূলুল্লাহ (স) এর একটি দুআ ছিল: اللَّهُمَّ لا سَهْ...

হাজেরা এবং ইসমাইল (আ) এর বিখ্যাত ঘটনা

ছবি
  সূরা বাকারার ১৫৫-১৫৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন: ১৫৫। আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, ধন, প্রাণ এবং ফল-ফসলের স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। ১৫৬। নিশ্চয়ই যারা বিপদকালে বলে থাকে, ‘আমরা আল্লাহর জন্য আর আমরা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী’। ১৫৭। এদের প্রতি রয়েছে তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে অনুগ্রহ ও করুণা আর এরাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। ঠিক এই অংশটির পরেই আল্লাহ বলেন- "নিশ্চয়ই ‘সাফা’ এবং ‘মারওয়া’ আল্লাহর নিদর্শনগুলোর অন্যতম। কাজেই যে ব্যক্তি কাবাগৃহের হাজ্জ অথবা ‘উমরাহ করবে, এ দু’টোর সায়ী করাতে তাদের কোনই গুনাহ নেই এবং যে ব্যক্তি স্বেচ্ছায় কোন সৎ কাজ করবে তাহলে নিশ্চয় আল্লাহ (তার ব্যাপারে) গুণগ্রাহী এবং সর্বজ্ঞ।" আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় সাফা মারওয়ায় সায়ী করার সাথে আগের আয়াতগুলোর কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু যদি ভালোভাবে চিন্তা করেন... আমরা হাজেরা এবং ইসমাইল (আ) এর বিখ্যাত ঘটনার কথা জানি। ইসমাইলের জন্য পানি খুঁজতে তিনি এই দুই পাহাড়ের মাঝে সাত বার দৌড়াদৌড়ি করেন। সেই ঘটনার স্মরণে হজ্জ্ব এবং উমরা করার সময় এই দুই পাহাড়ের মাঝে আমরা সাত বার প্রদক্ষিণ করি, ...

আগুনের তৈরি জামা

ছবি
  প্রিয় ভাইয়েরা, জাহান্নামের তীব্র শাস্তিতে বেপরোয়া হয়ে জাহান্নামীরা জাহান্নামের রক্ষীদের ডাকতে থাকবে। আমি আগুনের তৈরি জামা পরে আছি, আমি আগুনের শিকল দিয়ে বন্দি, আমার খাবার জাক্কুম, আমার পানীয় হলো পঁচা গলা পূঁজ আর তীব্র গরম পানি, আমি তীব্র অন্ধকারে, আমি কিছুই দেখতে পাই না, কথা বলার কেউ নেই, অভিযোগ করার মত কোনো বন্ধু নেই, কোনো সাথী নেই।  আমার বিছানা দোজখের আগুনের, কোনো বিশ্রাম নেই, কোনো আরাম নেই, কোনো বিরতি নেই। মানুষ চিৎকার করে জাহান্নামের গার্ডদের ডাকতে থাকবে। মানুষ অসহনীয় যন্ত্রণায় মূর্ছা যাচ্ছে, একটা উপায় তো থাকতে হবে। দিনের পর দিন আমি শাস্তি ভোগ করছি। আমি কিছুই দেখতে পাই না, আমি খুবই সংকীর্ণ এক স্থানে। সমস্ত, সব ধরণের শাস্তি আজ একত্রিত হয়েছে। মানসিক, শারীরিক সব ধরণের। আমি সকল দিক থেকে আক্রান্ত হচ্ছি। এক আয়াতে আল্লাহ যেমন বলেছেন,  وَ یَاۡتِیۡهِ الۡمَوۡتُ مِنۡ كُلِّ مَكَانٍ وَّ مَا هُوَ بِمَیِّتٍ তার কাছে সকল স্থান থেকে মৃত্যু ধেঁয়ে আসবে, অথচ সে মরবে না। (১৪:১৭) মানুষ কাকুতি মিনতি করতে থাকবে, দয়া ভিক্ষা চাইবে, অনুনয় করবে এই গার্ডদের কাছে—বের হয়ে ...

শেষ বিচারের দিন আপনি একা

ছবি
  নিজের পরীক্ষার উপর ফোকাস করুন ----------------- * ----------------- শেষ বিচারের দিন আপনি একা একা বিচারের সম্মুখীন হবেন। দুনিয়াতে আপনাকে যে সমস্ত উপায় উপকরণ প্রদান করা হয়েছে, যেসমস্ত নেয়ামতরাজি প্রদান করা হয়েছে, যে পরিবেশ পরিস্থিতি প্রদান করা হয়েছে তার আলোকে আপনার বিচার হবে। এগুলোর আলোকে আপনি কি কি নেক আমল করেছেন, সম্ভাব্য যে নেক আমলগুলো আপনার দ্বারা করা সম্ভব ছিল তার কতটুকু আপনি করেছেন। তাই অন্যদের ব্যাপারে আপনি কিভাবে অভিযোগ করবেন যখন আপনার রেজাল্টের সাথে অন্যদের কোন সম্পর্ক নেই। আমরা এখন এমন এক যুগে বাস করছি যখন সমগ্র দুনিয়ার সকল তথ্য আমাদের আঙ্গুলের আগায়। দুনিয়ার যে কোন প্রান্তের ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আমরা মুহূর্তের মাঝেই জেনে যাচ্ছি। ফলে অনেক বেশি অর্থহীন তথ্য বা আমার নিজ জীবনের সাথে সম্পর্কহীন তথ্য আমরা জানছি। আর এগুলোতে আমাদের প্রচুর সময় ব্যয় হচ্ছে। মহা মূল্যবান সময়গুলো, যেগুলো দিয়ে আমি আমার পরকাল গড়ার কথা। তাই নিজের পরীক্ষার উপর ফোকাস করুন। আমাকে আল্লাহ কি কি উপায় উপকরণ দিয়েছেন? আমার পক্ষে কোন কোন ভাল কাজ করা সম্ভব? আমি আমার পর জীবনের জন্য আজকে কি কি পা...