Posts

আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ দলিল মদিনা সনদ

Image
  শান্তির দূত বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রথম আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্রের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি মদিনা ও এর পাশের অঞ্চলগুলোর মুসলমান এবং নানা ধর্মের ও নানা বর্ণের লোকদের নিয়ে একটি সাধারণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন, যা জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সবার মানবিক, সামাজিক, নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। যে ঐতিহাসিক ঘোষণার মাধ্যমে এই বহুজাতিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়, ইতিহাসে তা ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। এটি মানবসভ্যতার প্রথম লিখিত রাষ্ট্রীয় সংবিধান। এ চুক্তির উদ্দেশ্য ছিল সংঘাতের পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, অত্যাচারিত–নিপীড়িতকে সাহায্য করা এবং চুক্তিভুক্ত সব পক্ষের মানমর্যাদা ও ধর্মবিশ্বাসের অধিকার সংরক্ষণ। মদিনা সনদ মানবসভ্যতায় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জীবনে বিরাট পরিবর্তন সাধন করে। এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নৈরাজ্য, সংঘাত, যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে যুদ্ধবাজ গোত্রগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করে মদিনা সনদ মানবসভ্যতায় ধর্মীয় ও রাজনৈতিক জীবনে বিরাট পরিবর্তন সাধন করে। এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নৈরাজ্য, সংঘাত, যুদ্ধবিগ্রহ বন্ধ করে যুদ্ধবাজ গোত্রগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য,

জান্নাত কি এবং দেখতে কেমন?

Image
  জান্নাত, বেহেশত, জান্নাতুল ফিরদাউস-- একজন মুসলমানের জীবনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য। জান্নাত হল সেই পুরষ্কার যার জন্য আমরা সমস্ত কষ্ট সহ্য করি এবং কখনও কখনও নিজের ইচ্ছার গলা টিপে ধরছি... যাতে করে আমরা পরকালে জান্নাতে যেতে পারি। কিন্তু জান্নাহ কি এবং দেখতে কেমন? এটা সাধারণভাবে বিশ্বাস করা হয় যে কোন চোখ কখনো জান্নাত দেখেনি, কোন কান তা থেকে কখনো শোনেনি এবং কোন মন কখনো চিন্তা করেনি যে জান্নাতে আমরা কোন কোন উপহার পেতে যাচ্ছি। কুরআন ও হাদিসে এমন কিছু লিড রয়েছে যা জান্নাতের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা প্রদান করে, উদাহরণস্বরূপ- জান্নাতের নিচে প্রবাহিত পানির স্রোত থাকবে (আল-বাকারাহ 02:25 ) এটি আকারে অপরিসীম, প্রকৃতপক্ষে সমস্ত আকাশ এবং পৃথিবীর মিলিত রূপের চেয়েও বড় (আল-ইমরান 3:133, আল-হাদিদ 57:21 ) এতে অকল্পনীয় পরিমাণ সোনা এবং সবুজ রেশম রয়েছে (আল-কাহফ 18:31 , আল-হজ 22:23 ) জান্নাতে বসবাসের স্থানগুলি আমাদের কল্পনার বাইরে হবে (আল-ফুরকান 25:75, আল-আনকাবউত 29:58 ) এটি সবচেয়ে সুস্বাদু সুস্বাদু খাবার সরবরাহ করবে যা কেউ কখনও জানতে পারবে না এবং তারপরে (ইয়াসিন 36:57 ) এর চেয়েও বেশি... জল, যা কখনই

প্রয়োজনীয় বই ,ইসলাম সম্পর্কে জানতে

Image
  ১। তাইসীরুল কুরআন কুরআনের এই অনুবাদটি সহজ সরল ভাষায় চলিত ভাষায় লিখিত। ২। তাফসীর আহসানুল বায়ান সম্পূর্ণ কুরআন মাজীদের বিশুদ্ধ তাফসীরের সহজবোধ্য ও মানসম্মত বাংলা অনুবাদ। তাফসীরটি রচনা করেন শাইখ সালাহুদ্দিন ইউসুফ; আর বাংলা অনুবাদের তত্ত্বাবধান ও সম্পাদনা করেছেন আল-মাজমা‘আ দাওয়া সেন্টারের সম্মানিত দা‘ঈ শাইখ আবদুল হামীদ ফাইযী মাদানী সাহেব। – ৩। আর রাহীকুল মাখতূম: একটি অনবদ্য সীরাত-গ্রন্থ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সীরাত পর্যালোচনায়, সীরাতের ঘটনামালার সুসংহত ও মনোজ্ঞ উপস্থাপনায় বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি সত্যিই এক নজিরবিহীন রচনা। আল কুরআনুল কারীম, হাদীসে নববী ও বিশুদ্ধ আছার এবং ঐতিহাসিক বর্ণনার নির্যাস বের করে প্রাজ্ঞ লেখক তাঁর এ বইটি সুবিন্যস্ত করেছেন ৪। রিয়াদুস সালেহীনঃ রিয়াদুস-সালিহীনের নাম শোনেনি এমন পাঠক মেলা ভার। যুগশ্রেষ্ঠ ইমাম নববী রহ.-এর বিখ্যাত সংকলন। রসূল ﷺ -এর হাদীসের আলোকে নেককার হবার গোটা সিলেবাস বইটিতে বিন্যাস করা হয়েছে। এতে আছে আত্মশুদ্ধি নিয়ে বর্ণিত প্রায় সকল হাদীস। ইসলামের যে কয়েকটি বই আমাদের প্রত্যহ পড়া উচিত, সেই তালিকার শীর্ষে আছে এটি। ইতিপূর্বে অন

ধৈর্য নিয়ে আল্লাহর বাণী ও হাদিস

Image
  ইসলাম মানবতার ধর্ম। মানব চরিত্রের উৎকর্ষ সাধনই এর মূল লক্ষ্য। এ মহান লক্ষ্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আদি যুগ থেকে নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছেন মানবতার উৎকর্ষের পূর্ণতা প্রদানের জন্য। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘বুইছতু লিউতাম্মিমা মাকারিমাল আখলাক’, অর্থাৎ আমাকে পাঠানো হয়েছে সুন্দর চরিত্রের পূর্ণতা প্রদানের জন্য। (মুসলিম ও তিরমিজি)। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা কোরআন কারিমে বলেন, ‘ওয়া ইন্নাকা লাআলা খুলুকিন আজিম’, অর্থাৎ হে মুহাম্মদ (সা.), নিশ্চয় তুমি মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত। (সুরা কলম, আয়াত: ৪)। মানব চরিত্রের উত্তম গুণাবলির অন্যতম হলো ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা। পবিত্র কোরআনে স্থানে স্থানে মহান আল্লাহ নিজেকে ধৈর্যশীল ও পরম সহিষ্ণু হিসেবে পরিচয় প্রদান করেছেন। ধৈর্যের আরবি হলো ছবর। সহিষ্ণুতার আরবি হলো হিলম। ছবর ও হিলম শব্দদ্বয়ের মাঝে কিঞ্চিৎ তাত্ত্বিক পার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে। সাধারণত ছবর তথা ধৈর্য হলো অপারগতার কারণে বা অসমর্থ হয়ে প্রতিকারের চেষ্টা বা প্রতিরোধ না করা। আর হিলম, অর্থাৎ সহিষ্ণুতার মানে হল

সকাল-সন্ধ্যার আমল

Image
  সকাল-সন্ধ্যার আমলগুলো কেন এত জরুরি? . সকাল-সন্ধ্যার আমলগুলো একজন মুমিনের প্রধান নিরাপত্তবলয় ও সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে। এগুলো ঈমানকে নিরাপত্তা দেয়, আমলকে তরতাজা রাখে, মনের অশান্তি দূর করে, বদনজর থেকে সুরক্ষা দেয় এবং শয়তান ও নিকৃষ্ট জ্বিনের আক্রমণ থেকে হেফাজত করে। এবার বলুন, একজন বুদ্ধিমান ঈমানদার কী করে সকাল-সন্ধ্যার আমলগুলো থেকে দূরে থাকতে পারে? . এজন্যই আল্লাহ তাআলা কুরআন কারিমে বারবার সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর যিকর (স্মরণ) ও তাসবিহ পড়তে বলেছেন। আল্লাহ বলেন— . “হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর মহিমা ঘোষণা করো।” [সুরা আহযাব, আয়াত: ৪১-৪২] . “অতএব, তোমরা আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করো, যখন তোমরা সকাল করো এবং যখন তোমরা সন্ধ্যায় উপনীত হও।” [সুরা রুম, আয়াত: ১৭] . “তুমি তোমার রবের প্রশংসাসহ পবিত্রতা বর্ণনা করো সকালে ও সন্ধ্যায়।” [সুরা গাফির, আয়াত: ৫৫] . এরকম অসংখ্য আয়াত আছে কুরআনে। আর আল্লাহ তাআলার এসব নির্দেশনার আলোকে তাঁর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সকাল-সন্ধ্যার বিভিন্ন আমল, আযকার ও তাসবিহাতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। সেগুলো

ফজিলতের হাদিস

Image
  এর চেয়ে বেশি ফজিলতের কোন হাদিস আমার জানা নেই। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারীদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তাহলে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য একটি করে সওয়াব আল্লাহ তার আমল নামায় লিখে দেবেন (ত্বাবরানী, শাইখ আলবানী হাদীছটিকে হাসান সহিহ বলেছেন, সহীহুল জামে হা/৬০২৬) হাদিসটা নিয়ে একটু চিন্তা করে দেখুন, বর্তমান পৃথিবীতেই ২০০ কোটির উপরে মুসলিম রয়েছে আর আদম (আঃ) থেকে শুরু করে কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিমের সংখ্যা কত হবে সেটা ১মাত্র আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা ছাড়া আর কারো পক্ষেই জানা সম্ভব নয়। অথচ তাদের জন্য ১ বার ক্ষমা চাইলেই আপনি সেই সংখ্যক নেকী পেয়ে যাবেন যার পরিমাণ কোন মানুষের কল্পনায়ও আসবে না। ইসলামের সৌন্দর্য দেখুন, ইসলাম শুধু নিজের কথা চিন্তা করতে বলে না বরং অন্যদের কল্যাণ কামনা, তাদের প্রতি বিদ্বেষ না রাখা, তাদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এটাও শরীয়তে বিরাট ইবাদত হিসাবে বিবেচিত আর সেই কারনেই দেখা যাচ্ছে মুসলিম ভাই বোনদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়াতে তিনি এমন পরিমাণ সওয়াব নির্ধারণ করেছেন যেটা আর কোথাও পাওয়া যায় না। কিভাবে তাদের জন্য ক্ষমা চাইবেন- আল

কোমল স্বভাব: জান্নাতি মানুষদের বৈশিষ্ট্য

Image
  কোমল স্বভাব: জান্নাতি মানুষদের বৈশিষ্ট্য ----------------------*------------------- মুমিনের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো সে ঝামেলা তৈরি করে না। সে ক্ষুদ্রমনা নয়। এমন অনেককে হয়তো চিনে থাকবেন যার সাথে আপনি কোনো ধরনের কাজ কারবারে জড়াতে চান না। তারা ঝামেলা পাকাবে, উচ্চ আওয়াজে কথা বলবে, সামান্য ভুল ত্রুটিও মেনে নিবে না। আবার, অন্য অনেককে চিনে থাকবেন যাদের সাথে কাজ কারবার করা অনেক সহজ। মুমিন হলো হাইয়িন বা কোমল। সে হলো জেন্টল বা নম্র-ভদ্র। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা কুরআনে এ বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রশংসা করেন- فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰهِ لِنۡتَ لَهُمۡ “অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে।” وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ۪- “আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত।” (3:159) অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ (স) যদি কঠোর স্বভাবের হতেন তাহলে সাহাবারা আশপাশ থেকে সরে পড়তো। তিনি হলেন আমাদের রোল মডেল। তাই আমাদেরও উচিত নম্র এবং কোমল স্বভাবের হওয়া। সবার সাথে। বাছাই