Posts

সুরা মুলক রাতে কেন পড়া হয়

Image
  সুরা মুলক পবিত্র কোরআনের ৬৭তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর ২ রুকু, ৩০ আয়াত। আল্লাহ সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী এবং সর্বশক্তিমান। তিনি মানুষকে দিয়েছেন দেখার ও শোনার শক্তি ও বিবেক। অথচ তারা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।  এ সুরা পাঠের ফজিলত সীমাহীন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরআনে এমন একটি সুরা আছে, যার আয়াত ৩০টি। এই সুরা যে পাঠ করবে, সেই ব্যক্তির জন্য সুরাটি সুপারিশ করবে এবং তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে। সুরাটি হলো তাবারাকাল্লাজি বিয়াদিহিল মুলকু (সুরা মুলক)। (সুনানে আত-তিরমিজি, ২৮৯১) প্রতি রাতের যেকোনো সময় সুরা মুলক তিলাওয়াত করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। তিরমিজি শরিফের ২,৮৯২ নম্বর হাদিস অনুযায়ী, রাসুলুল্লাহ (সা.) সুরা আস-সাজদা ও সুরা মুলক তিলাওয়াত না করে কোনো দিন ঘুমাতেন না। তার মানে এই নয় যে সুরাটি দিনে পড়া যাবে না। যেকোনো সময়ই পড়া যাবে, তবে রাতে বিশেষ জিকির হিসেবে এ সুরা পড়া উত্তম। সুরাটি নামাজের সঙ্গে পড়াও ভালো। মুখস্থ না থাকলে দেখে দেখে অর্থ বুঝে পড়লে বিশেষ সওয়াব পাওয়া যায়। সুরা মুলকের ছয়টি ভাগ: প্রথম ভাগ ১ থেকে ৪ আয়াত—এ অংশে আছে আল্লাহর ক্ষমতার বর্ণনা। দ্বিতীয় ভাগ ৫ থেকে ১৫ আয়াত—এ অংশে জাহ

একজন ব্যবসায়ী সাহাবির গল্প

Image
  রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর সাহাবি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) ছিলেন হাতেগোনা সেসব সাহাবিদের একজন, যাঁরা দুনিয়ায় থাকতে জান্নাতের সুসংবাদ পান। তিনি ছিলেন ‘আশারায়ে মুবাশশারা’ বা সুসংবাদপ্রাপ্ত দশজনের একজন। মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার সময় তিনি ছিলেন প্রায় রিক্তহস্ত। হাতে ছিল মাত্র দুই বা চার দিনার। মদিনায় গেলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন করে দেন সাদ ইবনে রাবিআ (রা.)–র সঙ্গে। সা’দ ইবনে রাবি’আ ছিলেন মদিনার অন্যতম ধনী সাহাবি। তাঁর অনেক জমিজমা ছিল, একাধিক স্ত্রী ছিলেন। সাহাবিদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন করা হলে একেকজন সাহাবি তাঁর ভাইকে সবকিছু উজাড় করে দিতে প্রস্তুত ছিলেন। তাঁরা চাইতেন নিজেরা যতটা ভালো আছেন, অপর ভাইকেও ততটা ভালো রাখতেন। নিজেরা যতটা সম্পদশালী আছেন, অপর ভাইকেও ততটা সম্পদশালী বানাতেন। সা’দ ইবনে রাবিআ (রা.) ছিলেন তাঁদের অন্যতম। তিনি আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.)-কে বলেন, ‘ভাই আমার। সবাই জানে যে আমি আনসারদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি। তোমার সঙ্গে আমার ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক হয়েছে। তুমি কী চাও আমার কাছে? তুমি আমার কাছে যা চাইবে, আমি তোমাকে তাই দেব।’ মদিনার ধনকুবের সা’দ ইবনে রা

সিজদার উপকারিতা

Image
  সিজদা মানে প্রণত হওয়া। নামাজের সময় উপুড় হয়ে দুই হাঁটু ও কপাল মাটিতে ঠেকিয়ে নিবেদন করা। দৈনিক পাঁচবারের নামাজে বহুবার সিজদা দিতে হয়। যাঁরা নিয়ম করে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, তাঁদের অনেকের কপালে সিজদার কালো দাগ স্থায়ী হয়ে যায়। ওই দাগ পুণ্য ও সম্মানের বলে মনে করা হয়। সিজদার সম্মান শুধু দুনিয়ায় নয়, আখিরাতেও অনেক বেশি। রাসুল (সা.) তাঁর উম্মতের পরিণতি নিয়ে তাঁদের ক্ষমার জন্য আল্লাহর কাছে যে শাফায়াতগুলো চেয়েছিলেন, তা সিজদারত অবস্থাতেই চেয়েছিলেন। প্রখ্যাত তাবেয়ি আহনাফ ইবনুল কায়েস (রহ.) একদিন ভোরবেলায় মসজিদুল আকসায় প্রবেশ করতে গিয়ে দেখেন, একজন লোক সারা রাত নামাজ পড়েছেন। যত না নামাজ পড়েছেন, তার চেয়ে বেশি সিজদা দিয়েছেন। একেকটি সিজদায় অনেক বেশি সময় নিয়েছেন। এত সময় সিজদায় দেখে মাঝেমধ্যে মনে হতো, তিনি কি সিজদার মধ্যে ইন্তেকাল করেছেন? তখন আহনাফ (রহ.)-এর মনে এই প্রশ্ন এল—এতটা সময় সিজদায় থাকলে কোন রাকাতের সিজদায় আছেন, অনেক সময় তা-ও তো ভুলে যাওয়ার কথা। এসব নানা কথা ভাবতে ভাবতে তিনি সেই সিজদারত লোকটির কাছে গেলেন। এর পরেরবার যখন তাঁর নামাজ শেষ হলো, তখন আহনাফ (রহ.) তাঁকে প্রশ্ন করলেন—‘আপনি যে এত লম্বা স

ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের জন্য দোয়া

Image
  ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের জন্য সহায় হোন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের জন্য সহায় হোন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের জন্য সহায় হোন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদেরকে সম্মানিত করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদের মর্যাদা উন্নত করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদের ভয় প্রশমিত করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদের অসুস্থদের সুস্থ করে দিন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদের আহতদের আরোগ্য দান করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদের মৃতদের গ্রহণ করে নিন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদের উপর আপনার রহমতের বারিধারা বর্ষণ করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি তাদেরকে দৃঢ়তা দান করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনার নিকট দোয়া করছি, আপনি আমাদেরকে দিয়ে তাদের প্রশান্তি দান করুন। ও আল্লাহ! আমরা আপনা

মুমিনদের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য

Image
  আল্লাহ তায়ালা সূরা আলে ইমরানের ১৭ নম্বর আয়াতে মুমিনদের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন- اَلصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡمُنۡفِقِیۡنَ وَ الۡمُسۡتَغۡفِرِیۡنَ بِالۡاَسۡحَارِ - "যারা ধৈর্যশীল, সত্যপরায়ণ, আনুগত্যশীল, দানশীল এবং ঊষাকালে ক্ষমাপ্রার্থী।" উক্ত আয়াতের শেষ অংশটি "ওয়াল মুস্তাগফিরিনা বিল আছ্হার" নিয়ে আমরা এখন কথা বলবো। এ অংশটি আয়াতটির সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ। লক্ষ্য করুন, এখানে অন্য গুণগুলোর জন্য নির্দিষ্ট করে কোনো সময়ের উল্লেখ করা হয়নি। ধৈর্যশীল, সত্যপরায়ণ, আনুগত্যশীল, দানশীল...কিন্তু যখন 'আল-মুস্তাগফিরিনদের' অর্থাৎ যারা ক্ষমা প্রার্থনা করে তাদের কথা এলো আল্লাহ বললেন, ওয়াল মুস্তাগফিরিনা বিল আছ্হার। ঊষাকালে, ভোরে বা সকালে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করে। আরেকটি ব্যাপার খেয়াল করুন, এখানে 'اَسۡحَارِ-আছহার' ব্যবহার করা হয়েছে যা বহুবচন। অর্থাৎ ভোরগুলোতে, সকালগুলোতে, ঊষাকালগুলোতে। কেন? কারণ, আল্লাহ এসব মানুষদের কাছ থেকে আশা করেন যে তারা তাদের সকালগুলোতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবে। যারা সত্যিই আল্লাহর সামনে নিজেদের বিনম্র কর

আল্লাহর ক্ষমা থেকে নিরাশ হবেন না

Image
  কিভাবে আপনি আল্লাহর ক্ষমা এবং রহমতের প্রতি আশা হারাতে পারেন? এ জন্য আল্লাহ কুরআনে বলেছেন- قُلۡ یٰعِبَادِیَ الَّذِیۡنَ اَسۡرَفُوۡا عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ- ও আমার বান্দারা! আল্লাহ সরাসরি আমাদের সম্বোধন করে বলেছেন, আমাকে এবং আপনাকে সরাসরি। তিনি ফার্স্ট পারসনে কথা বলছেন। তিনি কুরআনে সরাসরি আমাদের লক্ষ্য করে বলছেন। তিনি আমাদের বলছেন, ইয়া ইবাদিই! ও আমার বান্দারা। আমরা আল্লাহর দাস। এখানে তিনি সৎ কর্মশীলদের উদ্দেশ করে বলছেন না, নবীদেরও নয়, সবচেয়ে সেরাদের উদ্দেশ্যেও নয়, তিনি পাপীদের উদ্দেশ্যে বলছেন। "ইয়া ইবাদিয়াল্লাজিনা আস্রাফুও আলা আনফুসিহিম।" ও আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের বিরুদ্ধে এতো বেশি পাপ করেছ। তিনি সবচেয়ে খারাপদের উদ্দেশ্য করে বলছেন, আমি এবং আপনি, পাপীদেরকে। তিনি বলছেন- لَا تَقۡنَطُوۡا مِنۡ رَّحۡمَۃِ اللّٰهِ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। আশা ছেড়ে দিও না। যখন আল্লাহ আপনাকে উদ্দেশ্য করে কথা বলছেন, তিনি আপনাকে ডাকছেন আপনার সবচেয়ে সঠিক বর্ণনা ধরে, এটাই আমার সবচেয়ে সঠিক বর্ণনা, যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, আপনি এবং আমি এর

জান্নাতে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য অনন্তকাল

Image
  সূরা মুতাফফিনিনে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বলেন- "ইন্নাল আবরারা লাফিই নাঈম- পুণ্যবান লোকেরা থাকবে অফুরন্ত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের মাঝে।" عَلَی الۡاَرَآئِکِ یَنۡظُرُوۡنَ - "সুসজ্জিত আসনে বসে তারা দেখতে থাকবে।" অর্থাৎ, বিলাসবহুল চেয়ারে বা সিংহাসনে। আর তারা আরাম করে বসে থাকবে। রিল্যাক্স করবে। পাশ্চাত্য সমাজে যেমন বলা হয় 'লেজি বয় চেয়ার' বা অলস ছেলের চেয়ার। যে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে মানুষ রিল্যাক্স করে, চা কফি পান করে বা বই পড়ে। টিভি দেখে বা আড্ডা দেয়, যাই করুক। এটা হলো আরাম আয়েশের একেবারে খাঁটি আচরণ। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বলছেন যারা এই দুনিয়াতে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতো পরের জীবনে তারা "আলাল আরা-ইকি ইয়ানজুরুন-সুসজ্জিত আসনে আয়েস করে বসে দেখতে থাকবে।" এরপর তিনি বলেন- تَعۡرِفُ فِیۡ وُجُوۡهِهِمۡ نَضۡرَۃَ النَّعِیۡمِ- "তুমি তাদের মুখে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের উজ্জ্বলতা দেখতে পাবে।" এই দুনিয়াতেও কেউ যদি ভালো খাবার আহার করে, মজার আলাপ-আলোচনা করে তাদের চোখ মুখ থেকেও কেমন যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দীপ্তি ছড়িয়ে পড়ে। সবকিছু ভালো যাচ্ছে। আল