Posts

Showing posts from March, 2023

ইব্রাহিম (আ.) সারার ঘটনা

Image
  হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.)-র বরাতে এই হাদিসটির বর্ণনা আছে। তিনি নবী (সা.)-এর কাছে নিচের ঘটনাটি শুনেছেন। ইব্রাহিম (আ.) সারাকে সঙ্গে নিয়ে হিজরত করে একটি জনপদে প্রবেশ করলেন। সেখানে এক অত্যাচারী শাসক ছিল। শাসককে বলা হলো, ইব্রাহিম (নামে এক ব্যক্তি) এক নারীকে নিয়ে (আমাদের এখানে) প্রবেশ করেছে।’ শাসকটি তখন তার কাছে লোক পাঠিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘হে ইব্রাহিম, তোমার সঙ্গে এ নারীটি কে?’ তিনি বললেন, ‘আমার বোন।’ তারপর তিনি সারার কাছে ফিরে এসে বললেন, ‘তুমি আমার কথা মিথ্যা মনে কোরো না। আমি তাদের বলেছি যে তুমি আমার বোন। আল্লাহর শপথ! দুনিয়াতে (এখন) তুমি আর আমি ছাড়া আর কেউ মুমিন নেই। সুতরাং আমি আর তুমি দ্বীনি ভাই–বোন।’ এরপর ইব্রাহিম (আ.) (বাদশাহর নির্দেশে) সারাকে বাদশাহর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। বাদশাহ তাঁর দিকে এগিয়ে এল। সারা ওজু করে নামাজ আদায়ে দাঁড়িয়ে দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! আমিও তোমার আর তোমার রাসুলের ওপর ইমান এনেছি। আমার স্বামী ছাড়া সবার থেকে আমার সতীত্ব রক্ষা করেছি। তুমি এই বিধর্মীকে দিয়ে আমার সতীত্ব হরণ করিয়ো না।’ বাদশাহ বেহুঁশ হয়ে পড়ে মাটিতে পায়ের আঘাত করতে লাগল। সারা বললেন, ‘হে আল্লাহ! লোকটি মারা গেলে তো লো

পবিত্র কোরআনের সুরা নিসা

Image
  পবিত্র কোরআনের চতুর্থ সুরার নাম সুরা নিসা। নিসা মানে স্ত্রীজাতি। এই সুরায় ২৪ রুকু, ১৭৬ আয়াত। তৃতীয় হিজরিতে ওহুদের যুদ্ধের পর এটি অবতীর্ণ হয়। এতে উত্তরাধিকার এবং এতিমের অধিকার বর্ণিত রয়েছে। পঞ্চম হিজরিতে মুসতালিকের যুদ্ধে পানির অভাব দেখা দিলে তায়াম্মুমের আদেশ জারি হয়। এ সুরায় মুসলমানদের চরিত্রের কথা বর্ণিত হয়েছে। তবে এ সুরায় নারীদের বিধানের বর্ণনা বেশি বলে এর নাম হয়েছে সুরা নিসা। রাসুল (সা.) মদিনায় হিজরত করে আসার পর প্রাথমিক বছরগুলোতে সুরা নিসা নাজিল হয়। এর বেশির ভাগ অংশই নাজিল হয় বদরের যুদ্ধের পরে। মদিনায় একটি ইসলামি রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হওয়ার পর নবগঠিত রাষ্ট্রের যাবতীয় কাঠামো প্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করে। মুসলমানদের নিজেদের ইবাদত, আচরণ ও সমাজব্যবস্থা নিয়ে নানা বিধানের প্রয়োজন দেখা দেয়। ইসলামের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করার জন্য শত্রুপক্ষ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করার চেষ্টা করছে। নিজেদের ভৌগোলিক ও ভাবগত সীমারেখা সংরক্ষণের জন্য মুসলমানরা সে সময় নিত্যনতুন সমস্যার মুখোমুখি। ঠিক এমন সময়ই সুরা নিসা নাজিল হয়। নারী ও পরিবার হলো একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষুদ্র একক, কিন্তু একটি সুসংগঠিত ও প্রধান বনিয়াদ। সুর

তাকওয়া আল্লাহর ভালোবাসা আদায়ের পথ

Image
  একবার হজরত উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে হজরত ওমর (রা.) তাকওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, হে ওমর, পাহাড়ের দুই ধারে কাঁটাবন, মাঝখানে সরু পথ। এই অবস্থায় কীভাবে চলতে হবে। হজরত ওমর (রা.) জবাব দিলেন, ‘সাবধানে পথ চলতে হবে, গায়ে যেন কোনো কাঁটা না লাগে।’ হজরত কাব (রা.) বললেন, এটাই তাকওয়া। তাকওয়া অর্থ আত্মরক্ষা করা, নিষ্কৃতি লাভ করা, ভয় করা। অর্থাৎ আল্লাহর ভয় এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভের আশায় অপরাধ, অন্যায় ও আল্লাহর অপছন্দের কথা ও কাজ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার নাম তাকওয়া। সুরা বাকারার দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলেছেন, ‘এ সেই কিতাব এতে কোনো সন্দেহ নেই। সাবধানীদের জন্য এ পথপ্রদর্শক।’ রোজা ফরজ করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গিয়েও আল্লাহ তাকওয়া অর্জনের কথা বলেছেন। সুরা বাকারার ১৮৩ আয়াতে বলা আছে, হে বিশ্বাসীগণ তোমাদের জন্য রোজার বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের দেওয়া হয়েছিল যাতে তোমরা সাবধান হয়ে চলতে পারো। তাকওয়া অর্জনের সঙ্গে আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে। ভালোবেসে আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন, ঘৃণা করার জন্য নয়। কারো কারো মতে, তাকওয়া মানে আল্লাহকে ভয় করা। আবার কেউ কেউ বলেন

রাসুলের (সা.) প্রতি তাঁর আপন মানুষের আচরণ

Image
  কোরাইশ গোত্র আর রাসুলে করিমের (সা.) নবদীক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ কোরাইশদের পক্ষে একপর্যায়ে গভীর মর্মপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াল। তখন তারা কতিপয় নির্বোধ লোককে রাসুলের (সা.) বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিল। রাসুলকে (সা.) তারা মিথ্যাবাদী বলে প্রচার করতে লাগল। তাঁকে অপমান করতে শুরু করল। রটনা করতে লাগল, তিনি কবি, জাদুকর, জ্যোতিষী, ভূতে-ধরা মানুষ। রাসুল (সা.) কিন্তু এসব সত্ত্বেও আল্লাহ্‌র আদেশ অনুসারে তাঁর ধর্ম প্রচার করে যেতে লাগলেন। কিছুই তিনি গোপন করলেন না। কোরাইশদের ধর্মকে পরিত্যাজ্য ঘোষণা করলেন, তাদের দেবদেবীকে ত্যাগ করলেন। এতে করে তাদের বৈরী ভাবকে তিনি উত্তেজিত করলেন। নিজেদের অবিশ্বাসে উপরন্তু তারা অটলই থেকে গেল।’ আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আমর ইবনে আল-সাদের সূত্রে ইয়াহিয়া ইবনে উরওয়া ইবনে আল-জুবায়েরের বাবা এবং তার বাবার সূত্রে ইয়াহিয়া আমাকে বলেছেন, রাসুলে করিমের (সা.) প্রতি কোরাইশদের শত্রুতা প্রদর্শন করার নিকৃষ্টতম পথ কোনটি ছিল, তা আবদুল্লাহ্‌কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। আবদুল্লাহ্‌ জবাব দিয়েছিলেন, ‘একদিন কাবা প্রাঙ্গণে হাতিমের কাছে কোরাইশদের সমস্ত মান্যগণ্য লোক বসে গল্প করছিল। ওখানে আমিও ছিলাম। ক

পৃথিবীতে মহানবী (সা.)–র অবদান

Image
  আবুল হাসান আলি আল হাসানি আন নদভি (৫ ডিসেম্বর ১৯১৩ - ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯) বিশ শতকের অসামান্য ইসলামি শাস্ত্রজ্ঞ ও মনীষী। তিনি ভারতের উত্তর প্রদেশের লখনৌতে অবস্থিত দারুল উলুম নাদওয়াতুল উলামার মহাপরিচালক, অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সভাপতি, দারুল উলুম দেওবন্দের মজলিসে শুরার সভাপতি, মদিনা ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলর ও সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। তার রচনাবলির সংখ্যা পাঁচশরও বেশি। ১৯৮০ সালে তিনি প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লস ফিলিপ জর্জের আমন্ত্রণে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন। ইসলাম নিয়ে জ্ঞানচর্চার অবদানের কারণে তিনি পেয়েছেন বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার (১৯৮০)। ১৯৮৯ সালের ২২ আগস্ট (বৃহস্পতিবার), অক্সফোর্ড সেন্টার ফর ইসলামিক স্টাডিজ সেমিনার হলে ‘ম্যানকাইন্ড’স ডেট টু দ্য প্রফেট মুহাম্মদ’ শিরোনামে অনন্য একটি বক্তব্য উপস্থাপন করেন। এখানে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হলো। মহানবীর(সা.) ঐতিহাসিক ভূমিকা বিশ্বের মানুষ এখন যেমন বিবেক ও রুচির স্বাধীনতা উপভোগ করছে, শান্তিতে ও সৌহার্দ্যে জীবন যাপন করতে, শিক্ষা ও প্রচারে

মহানবী (সা.)-এর বিবাহের পেছনে

Image
  নবীজি (সা.) জীবনের বিরাট একটি অংশ কাটিয়েছেন একাকী নিঃসঙ্গ। যৌবনের শ্রেষ্ঠ সময়, ২৫ থেকে ৫০ বছর বয়স অব্দি তিনি থেকেছেন তাঁর প্রায় ১৫ বছর বেশি বয়সী একজন নারীর সঙ্গে, যিনি পূর্বে দুবার সংসার করা বিধবা। অথচ নবীজি (সা.)  ছিলেন তখন একজন সুস্থ-সুন্দর আরব যুবকের উপমা, যাকে আল্লাহ সভ্যতা ও সংস্কৃতির যাবতীয় ব্যাধি ও বিচ্যুতি থেকে সুরক্ষিত রেখেছেন।  দ্বিতীয় বিয়ের সময় তাঁর বয়স পঞ্চাশোর্ধ। যাঁকে বিয়ে করেছেন, সাওদা বিনতে যামআ (রা.), তাঁর বয়সও প্রায় কাছাকাছি। আয়েশা (রা.) ছাড়া কোনো কুমারী ও অবিবাহিত নারীকে তিনি বিয়ে করেননি। ফলে নবীজি (সা.)  একাধিক বিয়ে নিয়ে নবুয়তের পূর্বাপর কেউ সমালোচনা করেননি। আরবরা নয়, তাঁর নিকৃষ্ট শত্রুও নয়। তাঁর নিষ্কলুষ চরিত্রগুণের কথা আধুনিক মনোবিশ্লেষকেরাও অস্বীকার করেননি। নবীজির (সা.)  যাপিত জীবনেও ভোগ-বিলাসের স্থান ছিল না। নিরাসক্ত, যুহদ, ত্যাগ ও অল্পে তুষ্টির জীবন ছিল তাঁর, যে জীবন প্রাচীনকালের অটুট সংকল্পধারী সন্ন্যাসীর ভেতরও পাওয়া যায় না। আবার জীবনসঙ্গীরাও সবাই নির্দ্বিধায় নবীজির (সা.) সাহচর্যে থেকে পারলৌকিক জীবনকে প্রাধান্য দিয়েছেন। তাঁরা ছিলেন নবুয়তের মহান

আল-ওয়ালিদ ইবনে আল-মুগিরা

Image
  মেলার সময় হলো। কতিপয় কোরাইশ এলেন আল-ওয়ালিদ ইবনে আল-মুগিরার কাছে। আল-ওয়ালিদ জ্ঞানী-গুণী লোক। তাঁদের তিনি বললেন, ‘মেলার সময় হয়ে এল। আরবরা এখানে আসবে। ওরা সবাই নিশ্চয়ই এই লোকের কথা এরই মধ্যে জেনে গেছে। তাদের কাছে কী বলবে তোমরা সবাই মিলে ঠিক করে নাও, যাতে এক একজন এক এক কথা না বলে। তাহলে কেউ কারও কথা বিশ্বাস করবে না।’ তারা বলল, ‘আপনিই বলুন ওকে কী বলা যায়।’ তিনি বললেন, ‘না, তোমরা বলো, আমি শুনে যাই।’ ওরা বলল, ‘ওটা একটা কাহিনি।’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্‌র কসম, ও কাহিনি নয়। ও তো দুর্বোধ্য ভাষায় বিড়বিড় করে না, ছন্দ মিলিয়ে কথা বলে না।’ ‘তাহলে ওকে ভূতে ধরেছে।’ ‘না, তা-ও নয়। ভূতে ধরা লোক আমরা দেখেছি। ওর গলায় বিকৃতি নেই, শরীরে টান নেই, ফিসফিস করে সে কথাও বলে না।’ ওরা বলল, ‘তাহলে ও কবি একটা।’ ‘না, কবি নয়। কারণ, কবিতার সব ধরনধারন ছন্দটন্দ আমাদের জানা আছে।’ ‘তাহলে ও জাদুকর।’ ‘না, আমরা জাদুকরের জাদু সব দেখেছি। ও তো কাউকে থুতু দেয় না, কোথাও কোনো বান মারে না।’ তারা প্রশ্ন করল, ‘তাহলে কী বলব, অ্যাঁ, আবু আবদু শামস?’ তিনি বললেন, ‘আল্লাহ্‌র নামে বলছি, ওর কথা খুব মিষ্টি, ওর শিকড় যেন খেজুরগাছের,

ঋণ ফেরতের ঘটনা

Image
  হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.)-র বরাতে এই হাদিসটির বর্ণনা আছে। তিনি নবী (সা.)-এর কাছে নিচের ঘটনাটি শুনেছেন। বনি ইসরাইলের এক লোক অন্য এক লোকের কাছে এক হাজার দিনার ঋণ চাইল। তখন সে (ঋণদাতা) বলল, কয়েকজন সাক্ষী আনো, আমি তাদের সাক্ষী রাখব। সে বলল, সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। তখন (ঋণদাতা) বলল, তাহলে একজন জামিনদার উপস্থিত করো। সে বলল, জামিনদার হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট। ঋণদাতা বলল, তুমি সত্য বলেছ। এরপর নির্ধারিত সময়ে তাকে এক হাজার দিনার দিয়ে দিল। তারপর ঋণগ্রহীতা সমুদ্রে সফর করল। সে তার কাজ শেষ করে সে যানবাহন খুঁজতে লাগল, যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণদাতার কাছে এসে পৌঁছাতে পারে। কিন্তু সে কোনো বাহন পেল না। তখন সে এক টুকরা কাঠ নিয়ে তা ছিদ্র করে ঋণদাতার নামে একটি চিঠি এবং এক হাজার দিনার তার মধ্যে ভরে ছিদ্র বন্ধ করে সমুদ্রতীরে এসে বলল, হে আল্লাহ! তুমি তো জানো আমি অমুকের কাছে এক হাজার দিনার ঋণ চাইলে সে আমার কাছে জামিনদার চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, আল্লাহই জামিন হিসেবে যথেষ্ট। এতে সে রাজি হয়। তারপর সে আমার কাছে সাক্ষী চেয়েছিল, আমি বলেছিলাম সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট, তাতে সে রাজি হয়ে যায়। আমি তার ঋণ (যথাসময়ে

যখন কুরআন পড়বেন

Image
  যখন কুরআন পড়বেন এ দৃষ্টিতে পড়ুন যে, এ কিতাবটি আপনার সৃষ্টিকর্তার, এটি ইন্সট্রাকশনের (নির্দেশাবলীর) বই, হেদায়েতের বই এবং যে বইটি আপনার নিজস্ব প্রকৃতিকে প্রস্ফুটিত করে, বার বার স্মরণ করিয়ে দেয়ার বই। এ কিতাবটি এসেছে আপনাকে মনে করিয়ে দিতে। পড়া শুরু করার আগে গভীরভাবে উপলব্ধি করুন, এই কিতাবটি আমার রবের কিতাব। যিনি আমাকে তৈরী করেছেন এটি তাঁর বই। যিনি আমার প্রতি সর্বাধিক আন্তরিক। তিনি সত্যিই আমাকে পথ দেখাতে চান। তিনি আমাকে ভালোবাসেন। তিনি আমার প্রতি মাত্রাতিরিক্ত দয়ালু। এ কথাগুলো মনে করে যদি কুরআন পড়তে যান, পড়া শুরু করার আগেই আপনার চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়বে। আবু হুরাইরা (রা) কখনো কখনো কুরআন পড়ার পূর্বে অজ্ঞান হয়ে যেতেন। "হাজা কিতাবু রাব্বি" এটি আমার প্রভুর কিতাব!! তিনি আমার জন্য এটি পাঠিয়েছেন!! শুধু চিন্তা করে দেখুন, মহাকাশ থেকে পাঠানো ফ্রেশ একটি কিতাব। মুসলমানদের আসলে বড়ই কৃতজ্ঞ হওয়া উচতি এটা ভেবে যে, মহাকাশ থেকে পাঠানো একেবারে ফ্রেশ কিছু জিনিস তাদের আছে। আর তা হলো- আল্লাহর কিতাব কুরআন এবং আল্লাহর ঘর কা'বা, এর ফাউন্ডেশন। এগুলো মানুষের প্রতি আল্লাহর বড়ই করুণা। এই কি

মহানবী (সা.)-কে আমরা কেন ভালোবাসব

Image
  মুমিন হতে হলে মহানবী (সা.)-কে ভালোবাসতেই হবে। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘মা–বাবা, সন্তান এমনকি সবার চেয়ে আমি তোমাদের কাছে প্রিয়তর না হওয়া অবধি তোমরা কেউ মুমিন হবে না।’ (সহিহ্ বোখারি, হাদিস: ১৫) হাদিসের ব্যাখ্যায় খ্যাতিমান মুহাদ্দিস কাজী আয়াজ (র.) বলেন, ‘নবী (সা.)-কে ভালোবাসা ইমান বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত।’ (ফাতহুল বারি: ১/৫৯) প্রশ্ন হলো, ‘ভালোবাসতেই হবে’ এমন আদেশ অদ্ভুত কি না। কারণ, ভালোবাসা তো একটি মানবীয় আবেগ। আবেগ-অনুভূতি কখনো আদেশ-নিষেধের প্রাচীরে বেঁধে ফেলা যায় না। যেমন, মহানবী (সা.) প্রার্থনা করে বলেছিলেন, ‘হে আল্লাহ, এটা (অন্তর) আমার অংশ, যার মালিক তুমি। আর যার মালিক আমি নই—তুমি, তার ব্যাপারে আমায় তিরস্কার কোরো না। (যাওয়াইদুস সুনান আলাস সহিহাইন, হাদিস: ৪৫০৪) এ ভালোবাসার ব্যাখ্যা কী কাজী আয়াজ (র.) বলেন, ভালোবাসার প্রকৃতি হলো তরল, যা অনুকূল বিষয়ের দিকে ঝুঁকে পড়ে। ভালোবাসা কাম্য হতে পারে: ১. উপভোগের জন্য; যেমন সুন্দর চেহারা, চমৎকার কণ্ঠ, সুস্বাদু খাবার বা পানীয় ভালোবাসা। ২. উদ্বেল হৃদয়ের তৃপ্তি জন্য; যেমন সজ্জন, ওলামা, বরেণ্য ব্যক্তিদের ভালোবাসা। ৩. আবার কারও দান বা অনুগ্রহের কারণেও হৃদয় তা

অনুপম তওবা

Image
  বুরাইদাহ (রা.)-এর বরাতে তার পিতা বর্ণনা থেকে পাওয়া এই হাদিস। মাইয ইবনু মালিক আসলামী নবী (সা.)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! নিশ্চয়ই আমি আমার আত্মার ওপর জুলুম করেছি, অর্থাৎ ব্যাভিচার করেছি। আমি চাই যে আপনি আমাকে পবিত্র করবেন। তখন তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। পর দিন সে আবার নবী (সা.)–এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি ব্যাভিচার করেছি। এবারও তিনি তাকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) তার সম্প্রদায়ের কাছে একজন লোককে পাঠালেন। লোকটি সেখানে গিয়ে তাদের জিজ্ঞেস করল, আপনারা কি মনে করেন যে তার মস্তিষ্ক–বিকৃতি ঘটেছে? সে মন্দ কাজে লিপ্ত হয়েছে? জবাবে তারা বলল, আমরা তো তার মস্তিষ্কের বিকৃতি সম্পর্কে কোনো কিছু জানি না। আমরা জানি যে সে সম্পূর্ণ সুস্থ প্রকৃতির। এরপর মাইয তৃতীয়বার রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এল। তখন তিনি আবারও একজন লোককে তার গোত্রের কাছে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠালেন। তখনো তাঁরা তাঁকে জানালেন যে আমরা তার সম্পর্কে খারাপ কোনো কিছু জানি না এবং তার মস্তিষ্কের কোনো বিকৃতি ঘটেনি। এরপর যখন চতুর্থবার সে এল, তখন তার জন্য একটি গর্ত খোঁড়া হলো। নবী (সা.) তাকে (ব্যভিচারের শাস্তি প্র

রোজা কি ভেঙে গেল?

Image
  সকালে টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা আমাদের সবারই অভ্যাস। পবিত্র রমজানের সকালেও অনেকেই টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেন। কারও কারও মনে সন্দেহও জেগে ওঠে, টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙে যায় না তো? রোজা থাকা অবস্থায় চোখে ওষুধের ড্রপ ব্যবহারের কী বিধান বা রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে কি না, ইনজেকশনও কি নেওয়া যায়—এসব নিয়েও রোজদারদের নানা প্রশ্ন। আমরা সেগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছি। চোখের ড্রপ ব্যবহার রোজা থাকা অবস্থায় চোখের বা কানের ড্রপ ব্যবহার করা যাবে। এ কারণে রোজা ভাঙবে না। এমনকি কানের বা চোখের ওষুধের স্বাদ যদি গলায় অনুভূত হলেও রোজা ভাঙবে না। কারণ, এসব পানাহারের বিষয় নয়। কান বা চোখ পানাহারের পথও নয়। এ কারণেই চোখে বা কানে ওষুধ ব্যবহার করলে রোজা ভাঙবে না। দাঁত ব্রাশ করা অনেক ফকিহ বলেছেন, টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভাঙে না। কারণ, টুথপেস্ট তো আমরা খাই না। তবে ব্রাশ করার সময় সতর্ক থাকতে হবে যে পেস্ট পেটে চলে না যায়। কোনো কোনো ফকিহ আবার বলেন, টুথপেস্ট দিয়ে ব্রাশ করলে রোজা মকরুহ হয়ে যায়। ভেঙে যাওয়ার কথা কেউ বলেননি। কারও মনে সন্দেহ হলে সাহ্‌রি খেয়ে ভালো করে পেস্ট দ

শহীদ সাবিত আনসারি

Image
  হজরত আমর ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.)-র বরাতে এই হাদিসটির বর্ণনা আছে। তিনি নবী (সা.)-এর কাছে নিচের ঘটনাটি শুনেছেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) দশ ব্যক্তিকে গোয়েন্দা হিসেবে সংবাদ সংগ্রহের জন্য পাঠালেন। আসিম ইবনে উমর ইবনে খাত্তাবের নানা আসিম ইবনে সাবিত আনসারিকে তিনি তাঁদের দলপতি নিয়োগ করলেন। তাঁরা রওনা দিলেন। উসফান ও মক্কার মাঝখানে হাদআত নামে একটি স্থানে তাঁরা পৌঁছালেন। লেহইয়ান’ নামে পরিচিত হুযায়েল গোত্রের একটি প্রশাখার মধ্যে তাঁদের নিয়ে আলোচনা হয়। তাঁদের ধাওয়া করার জন্য তারা প্রায় ২০০ তীরন্দাজ পাঠায়। এরা তাঁদের চিহ্ন দেখে চলতে থাকে। সাহাবিরা যেখানে বসে মদিনা থেকে সঙ্গে নিয়ে আসা খেজুর খেয়েছিলেন, তারা সে জায়গাটির সন্ধান পেয়ে গেল। তারা বলল, ইয়াসরিবের খেজুর। এর পর তারা তাঁদের পদচিহ্ন দেখে চলতে লাগল। আসিম ও তাঁর সঙ্গীরা ওদের দেখতে পেয়ে একটি উঁচু স্থানে আশ্রয় নিলেন। অবিশ্বাসীরা তাঁদের ঘিরে ফেলে বলতে লাগল, তোমরা নেমে এসে আত্মসমর্পণ করো। আমরা অঙ্গীকার করছি ও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে তোমাদের কাউকে আমরা হত্যা করব না। তখন গোয়েন্দা দলের নেতা আসিম ইবনে সাবিত (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর কসম! আমি আজকে অবিশ্বাসীদের নিরাপত্