Posts

Showing posts from August, 2023

সূরা আদ-দোহা

Image
  সূরা আদ-দোহা শুরু হয়েছে 'আশার' বাণী দিয়ে আর তাই এটি শেষও হয়েছে 'মানুষকে আশা দাও' এই মেসেজ দিয়ে। সূরা আলাম নাশরাহ শুরু হয়েছে 'কৃতজ্ঞতা' দিয়ে। আপনি কার প্রতি কৃতজ্ঞ? আল্লাহর প্রতি। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা কিভাবে প্রকাশ করবেন? তাঁর ইবাদাত করার মাধ্যমে। আর তাই এটি শেষও হয়েছে আল্লাহর ইবাদাত করার নির্দেশ দিয়ে। এখন, এখান থেকে আমাদের জন্য শিক্ষাঃ আমাদের ধর্ম আমাদের কাছ থেকে মূলত দুইটি জিনিস দাবি করে। যা আমাদের অন্তরে ধারণ করা উচিত। আর তা হলোঃ ১। আল্লাহর প্রতি আমাদের আশা থাকতে হবে। ২। আল্লাহর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা থাকতে হবে। আশা হলো ভবিষ্যতের জন্য। আর কৃতজ্ঞতা হলো অতীতের জন্য। বুঝতে পারছেন? যখন অতীত নিয়ে ভাববেন, তখন আপনার অন্তর কৃতজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া উচতি। আর যখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করবেন, তখন অন্তর কী দিয়ে ভরপুর হয়ে যাওয়া উচিত? আশা দিয়ে। এখন, যদি এই দুইটি বীজ অন্তরে অবস্থান করে তাহলে এর থেকে দুইটি চারাগাছ উৎপন্ন হবে। কি কি সেগুলো? ১। আপনি মানুষের যত্ন নিবেন। মানুষকে আশা দিবেন। (কারণ আপনি যে একজন আশাবাদী মানুষ। আল্লাহ কুরআনের অসংখ্য আয়াতে মানুষকে অগনিত পুর

জান্নাতের গেইটের সংখ্যা বেশি কেন?

Image
  জান্নাতে প্রবেশের জন্য রয়েছে আটটি গেইট। আর জাহান্নামের গেইট সাতটি। জান্নাতের চেয়ে জাহান্নামে বেশি মানুষ যাবে। আমি আবারো বলছি জান্নাতের চেয়ে জাহান্নামে বেশি মানুষ যাবে। তবু জাহান্নামের চেয়ে জান্নাতের গেইট বেশি। কেন? যখন জাহান্নামীদের সংখ্যা হবে জান্নাতীদের চেয়ে অনেক অনেক অনেক বেশি, তখন জান্নাতের গেইটের সংখ্যা বেশি কেন? আমাদের স্কলাররা এর অনেকগুলো জবাব দিয়েছেন। আর তা হলো--এটা ইঙ্গিত করার জন্য যে, আল্লাহর দয়া সবসময় তাঁর ক্রোধের উপর বিজয়ী। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্ হলেন আর-রাহমান এবং আর-রহিম। জান্নাতের পথে চলা সহজতর, পথের সংখ্যাও বেশি এবং আপনার জন্যে তা উত্তম। আরো ইঙ্গিত হলো-- মানুষকে আশাবাদী করে তোলা। মানুষকে জান্নাতে প্রবেশের জন্য প্ররোচিত করা। দেখো, জান্নাতের রয়েছে আটটি দরজা! জান্নাতের জন্য বেশি দরজা রয়েছে। একটা না একটা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। আশা হারিয়ে ফেলো না। ব্যাপারটা হলো, দিনশেষে মানুষকে আশা এবং আল্লাহর করুণা দেখানো। আল্লাহ এতো সহজ করা সত্ত্বেও অধিকাংশ মানুষ ধর্মের প্রতি পিঠ দেখিয়ে অন্যদিকে চলে যাবে। অধিকাংশ মানুষ জীবন নিয়ে গভীরভাবে ভাববে না। তাই তাদের পরিণতিও হবে জাহান্নাম।

আইয়ুব আলাইহিস সালামের ধৈর্য

Image
  আইয়ুব আলাইহিস সালামের ধৈর্য — ড. ইয়াসির ক্বাদী আমার প্রিয় মুসলিম ভাই এবং বোনেরা,আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া কুরআনে উল্লেখ করেন- نَحۡنُ نَقُصُّ عَلَیۡکَ اَحۡسَنَ الۡقَصَصِ - "আমি তোমার কাছে সর্বোত্তম কাহিনী বর্ণনা করছি...।" (১২:৩) তাই, কুরআনের প্রতিটি কাহিনী প্রজ্ঞায় পরিপূর্ণ, নৈতিক শিক্ষায় পরিপূর্ণ এবং উপদেশে পরিপূর্ণ। আজকের সংক্ষিপ্ত খুৎবায় আমি আমাদের সবাইকে কুরআনের এমন একটি কাহিনী স্মরণ করিয়ে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করছি। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যে ঘটনা সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে আমাদেরকে চিন্তা করতে বলেছেন। আর সে ঘটনাটি হলো— আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যখন বলেছেন- وَ اذۡکُرۡ عَبۡدَنَاۤ اَیُّوۡبَ - “স্মরণ কর আমার বান্দা আইয়ূবের কথা” (৩৮:৪১) আমার বান্দা আইয়ুবের ঘটনা মনে করো এবং চিন্তা করো। আল্লাহ্‌ আজ্জা ওয়া জাল্লা আইয়ুব (আ) কে 'নি'মাল আবদ' হিসেবে অভিহিত করেছেন। "সে কতই না উত্তম বান্দা!" ইন্নাহু আওয়াব। তিনি বার বার আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অভিমুখী হতেন। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তার ঘটনা উল্লেখ করলেন। এরপর তিনি বললেন- এই ঘটনায় 'জিকরা লি উ

কিশোর কিশোরীদের প্রতি সহানুভূতি

Image
  কিশোর কিশোরীদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করুন -------------- * ------------------- আমরা এমন এক সময়ে বাস করছি যখন কিশোর কিশোরীদের মাঝে ব্যাপক পরিমাণে হতাশা দেখা যাচ্ছে। এসব পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে গিয়ে আমরা একটি ভুল করি। আমরা মনে করি বাচ্চাদের সাথে কঠোর আচরণ করলে বাচ্চারা ভালো থাকবে। কঠোরতার নিজস্ব স্থান আছে এবং তার ভূমিকাও আমি অস্বীকার করছি না। কিন্তু একই সময়ে বাচ্চার প্রতি সহমর্মিতাও প্রদর্শন করতে হবে। কারণ, সহমর্মিতা প্রদর্শনের ধারণাটা কুরআনিক। মক্কায় কুরাইশদের ক্রমাগত প্রত্যাখ্যানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হৃদয়ে তীব্র ব্যথা অনুভব করতেন। তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ব্যথিত হৃদয়ের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- وَ لَقَدۡ نَعۡلَمُ اَنَّکَ یَضِیۡقُ صَدۡرُکَ بِمَا یَقُوۡلُوۡنَ - "আমি জানি, তারা যে সব কথা-বার্তা বলে তাতে তোমার মন সংকুচিত হয়।" (১৫:৯৭) আল্লাহ আরও বলেন- قَدۡ نَعۡلَمُ اِنَّهٗ لَیَحۡزُنُکَ الَّذِیۡ یَقُوۡلُوۡنَ فَاِنَّهُمۡ لَا یُکَذِّبُوۡنَکَ وَ لٰکِنَّ الظّٰلِمِیۡنَ ب

নামাজ পড়তে অলসতা

Image
  তোমরা যারা নামাজ পড়তে অলসতা দেখাও --------------------- * -------------------------- মনে করো, তোমাদের বাবা তোমাদের সাথে কথা বলছে। আমি ধরে নিচ্ছি যে, আমি আমার নিজের সন্তানদের সাথে কথা বলছি। আমি মিম্বরে না, আমি বাসায় বসে আমার বাচ্চাদের সাথে কথা বলছি। তখন কীভাবে আমি তাদের নামাজ পড়তে বলবো? প্রথম যে বিষয়টা বলে আমি কথা শুরু করতে যাচ্ছি তা হলো— প্রিয় সন্তান! এমন একটি সময় ছিল যখন আমি তোমার কথা জানতাম না। তোমার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না। তোমার কোনো অস্তিত্ব ছিল না। আমি তোমার ব্যাপারে কোনো পরোয়া করতাম না। তোমার কথা কখনো চিন্তা করতাম না। তুমি আমার নিকট কিছুই ছিলে না। "লাম ইয়াকুন শাইয়াম মাজকুরা।" কুরআন বলেছে- "মানুষের জীবনে এমন একটি সময় ছিল যখন কেউ তাকে স্মরণ করতো না।" একেবারেই না। আমিও এর অন্তর্ভুক্ত। আমি তোমার কথা মনে করতাম না। আমি জানতাম না তোমার নাম কী হবে। আমি তোমাকে একটুও ভালবাসিনি, কারণ, তুমি আমার নিকট জিরো ছিলে। কিছুই না। কিন্তু হঠাৎ করে আমার জীবনে তোমার আগমন ঘটলো। এমনকি যখন আমি জানতে পারলাম যে, তোমার মা তোমার জন্ম দিবে। যখন সে তার পেটের মধ্যে তোমাকে বহন কর

আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া

Image
  একটি ভালো দিন...আপনি সকালে উঠে মসজিদে গেলেন। কিছু কুরআন তিলাওয়াত করলেন। অন্তর বিগলিত করে অকৃত্রিম কিছু দোয়া করলেন। কিছু খারাপ কাজ আপনার অভ্যাসের অংশ হয়ে গিয়েছে কিন্তু আজ সেগুলো থেকেও দূরে থাকলেন। মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোনো কথা বললেন না। কোনোভাবে কারো কোনো ক্ষতি করলেন না। এভাবে যোহর পর্যন্ত পৌঁছে গেলেন। এখন, অনুভব করছেন আপনি আগের চেয়ে আল্লাহর অনেক কাছাকাছি আছেন। অন্তরে এক ধরণের স্বর্গীয় প্রশান্তি অনুভব করছেন। নিজের উদ্বেগ উৎকণ্ঠাগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। এরপর... কেমন করে যেন মনোবল কমে গেল। ভাবলেন, আমার হাতে কিছুটা ফ্রি সময় আছে। মুভি বা কিছু একটা দেখে একটু বিনোদন করি এবং শুরু করলেন। ব্যাস! সিরাতল মুস্তাকিম থেকে অন্যদিকে মোড় নিলেন। শয়তান বিশাল এক সুযোগ পেয়ে গেলো। শয়তান সাথে সাথে আপনাকে অনুসরণ করা শুরু করে, পথভ্রষ্ট করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। আপনি হয়ে পড়েন তার এক নম্বর প্রজেক্ট। সে সবকিছু ছেড়ে আপনার পেছনে লাগে। এতক্ষণ সে কিন্তু পারেনি। কারণ, আমাদের রাসূল (স) বলেছেন— "আল্লাহর জিকির হলো 'হিসনুল হাসিন' একটি সংরক্ষিত দুর্গ যা তোমাদেরকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা করবে।&qu

সবকিছু যখন ভালো যাচ্ছে...

Image
  প্রশ্নঃ আমার কী করা উচিত যখন আমার মনে হয় যে, আল্লাহ তায়ালা আমাকে কোনো পরীক্ষা প্রদান করেননি? (আমার সবকিছু যখন ভালো যাচ্ছে। কোথাও কোনো সমস্যা নেই। তখন কী করবো?) ড. ইয়াসির: "পরীক্ষা প্রদান" বলে কিছুর অস্তিত্ব নেই। আপনি সর্বদাই পরীক্ষার মাঝে আছেন। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেছেন- ؕ وَ نَبۡلُوۡکُمۡ بِالشَّرِّ وَ الۡخَیۡرِ فِتۡنَۃً - "আর ভাল ও মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি।" (২১:৩৫) আপনার পরীক্ষা-নিরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে আপনার জীবনের প্রতিটি পরিস্থিতিতে। মাঝে মাঝে আপনি সে পরীক্ষাটা বুঝতে পারেন আবার অন্যসময় আপনি হয়তো সেটা সম্পর্কে সচেতন থাকেন না। ঠিক এই মুহূর্তে, আমাদের কথা বলার এই মুহূর্তে আপনি যদি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে থাকেন, যথেষ্ট ধন-সম্পদ থাকে, যথেষ্ট ফ্রি সময় থাকে--আপনাকে তাহলে ভালো দ্বারা পরীক্ষা করা হচ্ছে। নিজের স্বাস্থ্য এবং সম্পদ দিয়ে আপনি কী করছেন? আপনি কি দানশীলতা দেখাচ্ছেন আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা আপনাকে যা দিয়েছেন তা দিয়ে। যদি উপলব্ধি করতে না পারেন যে, আপনি পরীক্ষিত হচ্ছেন ব্যাপারটা সমসাজনক। কারণ, বুঝতে চেষ্টা করুন, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্র

মৃত্যুর মুহূর্ত থেকেই ভালো কাজের পুরস্কার

Image
  মৃত্যুর মুহূর্ত থেকেই ঈমানদার ব্যক্তি তার ভালো কাজের পুরস্কার পাওয়া শুরু করে - নোমান আলী খান -----------------------------*------------------------- আপনি একটি ভালো জীবন অতিবাহিত করেছেন, এখন মৃত্যু শয্যায়...। আজ হউক কাল হউক আমরা একদিন এই মৃত্যু শয্যায় শায়িত হব। আপনি শুয়ে আছেন আর চারপাশে পরিবারের সদস্যরা কান্নাকাটি করছে, আপনি কথা বলতে পারছেন না, কারণ ''বালাগাতিত তারাকি'' (প্রাণ কণ্ঠাগত ৭৫ঃ ২৬) রুহ ইতোমধ্যে গলায় পৌঁছে গেছে। আপনি আমি এই ক্ষণস্থায়ী বাসস্থান ছেড়ে চিরবিদায়ের পথে... এই শরীরটাও আমাদের রুহের জন্য ক্ষণকালের বাসস্থান, আমরা এই শরীর ছেড়ে দেয়ার পথে। আপনার মা পাশে দাঁড়িয়ে আছে, ভাই, বোনেরা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা দাঁড়িয়ে আছে, তারা সবাই কাঁদছে। ঠিক সে সময় আপনার চোখ খুলে গেল এমন কিছু দেখতে পাচ্ছেন যা অন্য কেউ দেখছে না, দেখতে পেলেন ফেরেশতারা নেমে আসছে। আশে পাশের কেউ এই দৃশ্য দেখতে পারছে না, কিন্তু আপনি দেখতে পাচ্ছেন। (কারণ, অদৃশ্যের পর্দা আপনার সামনে থেকে সরে গেছে।) আর যখন মানুষ ফেরেশতাদের দেখতে পায়, তখন তারা শুধু দুই দলের ফেরেশতাদের মাঝে যে কোন এক দলের দেখা পা

যখন কোনো আলেমের মৃত্যু হয়

Image
  যখন কোনো আলেমের মৃত্যু হয় --------------------------- আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- "আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা মানুষের বুক থেকে জ্ঞান কেড়ে নেয়ার মাধ্যমে তা উঠিয়ে নেন না। কিন্তু আল্লাহ জ্ঞান উঠিয়ে নেন ওলামাদের মৃত্যুর মাধ্যমে। এভাবে যখন কোনো আলেম আর বাকি থাকবে না মানুষ তখন আহাম্মকদেরকে তাদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করে নিবে। তারপর এসব আহাম্মকদের প্রশ্ন করবে, আর তারা কোনো ধরণের জ্ঞান ছাড়াই ফতওয়া দিবে। ফলে তারা নিজেদের পথভ্রষ্ট করবে এবং অন্যদেরও পথভ্রষ্ট করবে।" এটি একটি দুঃখজনক বাস্তবতা যে, আমরা শেষ বিচারের দিনের যত কাছাকাছি হবো দেশে ওলামাদের সংখ্যা এবং তাদের গুণমান ততটা হ্রাস পাবে। নতুন প্রজন্ম পূর্বের প্রজন্মের প্রভাবশালী আলেমদের মত আলেম আর পাবে না। এভাবে অল্প অল্প করে জ্ঞান কমতে থাকবে। একজন আলেম একটি জাতির প্রতিরক্ষক। একজন আলেম একটি জাতির জাগরণ ঘটান এবং সম্মুখপানে এগিয়ে নিয়ে যান। একজন আলেম সমগ্র একটি জাতিকে সত্যের উপর টিকিয়ে রাখেন। যদিও সে জাতি তা উপলব্ধি করতে পারে না। মনোযোগ দিয়ে শুনুন, আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের আলাম

জাবিরের নিকট উট বিক্রি

Image
  জাবিরের নিকট উট বিক্রিঃ রাসূলুল্লাহর ভালোবাসা, মমতা আর সহানুভূতি সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার বিস্ময়কর একটি ঘটনা ----------------------- * ---------------- সিরাহ বহু পর্যায়ে আমাদের সাথে অনুরণিত হয়। আমার জন্য, একটি ঘটনা আমার সবচেয়ে প্রিয়। সাহাবাদের জন্য রাসূলুল্লাহ (স) এর কত বেশি মমতা এবং সহানুভূতি ছিল তা এ ঘটনা দ্বারা বুঝা যায়। আর তা হলো জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) এর বিখ্যাত ঘটনা। এ ঘটনার নাম 'জাবিরের নিকট উট বিক্রি।' সীরাতে এমন একটি ঘটনা আছে যাকে বলা হয় 'জাবিরের নিকট উট বিক্রি।' ঘটনাটা যে কতটা ভালোবাসাপূর্ণ, শক্তিশালী, আবেগময়, সহানুভূতিশীল এবং মমতাময় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সত্যিই। কিভাবে আপনি এ মানুষটিকে ভালো না বেসে থাকতে পারেন!! সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। যখন এ ঘটনাটি পড়বেন। জাবির রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পনের বছর বয়সে এতিম হয়ে পড়েন। জাবিরের বয়স ছিল ১৫ যখন তাঁর বাবা আব্দুল্লাহ (রা) ওহুদে শহীদ হয়ে যান। তিনিই ছিলেন একমাত্র ভাই এবং সবার বড়। তাঁর সাতজন বোন ছিল। সাত বোন! দেখাশোনা করার জন্য। আর তিনি ছিলেন সবার বড়। তাই, জাবের দুঃখ-দুশ্চিন্তায়, উদ্বেগ-উৎকন

আল্লাহ কি আমাকে কোনদিন মাফ করবেন?

Image
  আল্লাহ কি আমাকে কোনদিন মাফ করবেন? --------------- * ---------------- * ------------------ আমি চাই না কেউ অনুশোচনায় দগ্ধ এক জীবন যাপন করুক। আল্লাহ আমাদেরকে এ ধর্ম এ জন্য দান করেননি যে, আমরা অতীতের ভুল নিয়েই পড়ে থাকবো। কুরআনের অন্যতম মহান একটি লক্ষ্য হলো...আল্লাহ বলেন— اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَذِکۡرٰی لِمَنۡ کَانَ لَهٗ قَلۡبٌ اَوۡ اَلۡقَی السَّمۡعَ وَ هُوَ شَهِیۡدٌ - নিশ্চয় এতে উপদেশ রয়েছে তার জন্য, যার রয়েছে অন্তর অথবা যে নিবিষ্টচিত্তে শ্রবণ করে। (৫০:৩৭) তাই হৃদয় সম্পর্কিত যে কোনো বিষয়, সবচেয়ে বিস্তীর্ণ উত্তর, যে আপনার হৃদয়ের অনুভূতি কেমন হওয়া উচিত, তা কুরআনে আছে। কুরআনের মতে— কেউ যদি সমগ্র জীবন পাপ-পঙ্কিলতায় কাটিয়ে দেয়, বিস্মৃতিতে কাটিয়ে দেয়, ভুল-ত্রুটিতে কাটিয়ে দেয়, উপেক্ষায় কাটিয়ে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি...আল্লাহ কি বলেছেন যে, এখন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বাকি জীবনটা তোমাকে অতীত জীবনের অনুশোচনায় জ্বলে পুড়ে কাটাতে হবে? কুরআন কি কখনো এমনটি বলেছে? আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির অন্তঃকরণের সুরক্ষায় বেশি সংরক্ষণশীল সৃষ্টির নিজের চেয়েও। আমি নিজের অন্তরের প্রতি যতটা যত্নশীল আল্লাহ আমার অন্তরের প্রতি তার চে

ধর্ম প্রচারকদের তিনটি প্রতারণার কাহিনী

Image
  ধর্ম প্রচারকদের তিনটি প্রতারণার কাহিনী ------------- * ------------ ইসলামের দিকে দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বিষয় বুঝুন। প্রথম যাকে দাওয়াত দিবেন সে হলো আপনি নিজে। যদি নিজেকে সম্ভবোধন করতে না পারেন, এ দাওয়াত কোনোদিন কাজ করবে না। কুরআন বলছে- নিজে যা করো না তা অন্যদের করতে বলো কেন? এখান থেকে কোনো বারাকাহ আসবে না। আপনি কেমন মানুষ তা বুঝতে পারা মাত্র মানুষ আপনাকে আর বিশ্বাস করবে না। আল্লাহ তো কোনোভাবেই আপনাকে বিশ্বাস করেন না। যদি সত্যিই বিশ্বাস করেন আমি নামাজ না পড়লে আমাকে দোজখে যেতে হবে, তাহলে সবার আগে তো আপনার নামাজ পড়ার কথা। যদি না পড়েন, মুখে যাই বলেন না কেন, আপনি আসলে ইসলামে বিশ্বাস করেন না। আপনি জাস্ট মানুষকে দেখাচ্ছেন। নিজে না মানলে কোনো দাওয়াত নেই। মানুষকে বুঝতে হবে- সবার আগে আমার জীবন। কুরআন বলেছে- "নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।" আগে তুমি নিজে এবং তোমার পরিবার। তারপরে গিয়ে অন্যান্য মানুষেরা। "আমি নিজের পরিবারকে শেখাই না, আমি অন্য সবাইকে শেখাই।" এর নাম ব্যবসা। মানুষ সমাজে নিজের পজিশন বা টাকার জন্য এটা করে। বা অন্য কোনো কারণে। এ

যে দশটি উপায়ে আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়

Image
  যে দশটি উপায়ে আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয় ------------------------------------------- আমরা জানি, সাধারণ নিয়ম হলো কুরআনে পরিষ্কার করে বলে দেয়া হয়েছে কেউ কোনো মন্দ কাজ করলে তাকে সে কাজের জন্য শাস্তি দেওয়া হবে। তাহলে, কোনো ব্যক্তি একটি মন্দ কাজ করলে তার ঐ কাজের জন্য একটি শাস্তি নির্ধারিত হয়ে যায়। আল্লাহ তায়ালা বলেন- اِنَّا مِنَ الۡمُجۡرِمِیۡنَ مُنۡتَقِمُوۡنَ- নিশ্চয় আমি অপরাধীদের কাছ থেকে প্রতিশোধ গ্রহণকারী। (৩২:২২) এখন, আমরা তো এ শাস্তি চাই না। কেউ অপরাধ করে ফেললে এর থেকে বাঁচার উপায় কী? কি কি উপায়ে আমাদের অপরাধগুলো মাফ করে দেওয়া হয়? শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (র) কুরআন হাদিস থেকে এরকম দশটি উপায় খুঁজে বের করেছেন যার মাধ্যমে আমরা আমাদের পাপগুলো ক্ষমা করে নিতে পারি; চূড়ান্ত শাস্তিতে নিক্ষিপ্ত হওয়ার পূর্বে। অবশ্যই চূড়ান্ত শাস্তি হলো দোজখের আগুন। আমরা আল্লাহর আশ্রয় চাই। আমরা ঐ শাস্তি ভোগ করতে চাই না। সংক্ষেপে এ দশটি উপায় নিম্নরূপঃ ১। তাওবা। ২। ইস্তেগফার। তাওবা হলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পথে ফিরে আসা আর ইস্তেগফার হলো আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া। ৩। ভালো ভালো কাজ। উত্তম আমল। আ

ফিতনার এই যুগে বাচ্চাদের কীভাবে বড় করবো? (৩য় পর্ব)

Image
  ভয়াবহ ফিতনার এই যুগে আমার বাচ্চাদের কীভাবে বড় করবো? (৩য় পর্ব) —নোমান আলী খান অনেক সময় পিতা-মাতা কিছু নিয়ে কথা বলছে, আর বাচ্চা হিসেবে তুমি তাদের সামনে এলে। তখন তারা বিরক্ত হয়ে...যাও! আমরা এখন কথা বলছি। অন্য রুমে যাও। বাচ্চাটা তখন মনে মনে ভাবে— উনাদের সাথে তো আমার কথা বলার সুযোগ নেই। এরপর পিতামাতা বলে— "হ্যাঁ, সে তেমন কথা বলে না।" হ্যাঁ, সে কথা বলে না। কারণ, আপনারা তাকে কথা বলার কোনো সুযোগই দেন না। বস্তুত, এই একই শিশু যখন অনলাইনে যায়, ইন্সটাগ্রামে একাউন্ট খোলে বা টিকটকে একাউন্ট খোলে এরপর কোথাও কমেন্ট করে বা ভিডিও পোস্ট করে বা অন্য কিছু পোস্ট করে—মানুষ তাদের সাথে কথা বলা শুরু করে। মানুষ বলে—এটা খুবই মজার ছিল! ঐটা অত্যন্ত সুন্দর ছিল! এভাবে সে বৈধতা পেতে শুরু করে। তার কাছে তখন মনে হয় তার কথা মানুষ শোনে। কিন্তু তার তো এই অনুভূতিটা বাসা থেকে পাওয়ার কথা ছিল। তার তো এমন মনে হওয়ার কথা ছিল—আমি কী বলতে চাই আমার বাবা তা শোনে। আমার মা-ও আমাকে শোনে। তো এখন, আমাদের বাচ্চারা এমন মনোভাব গড়তে শুরু করে যে, তারা আপনাকে বলে না। তারা আপনাকে বলবে না—"আমার ফিল হচ্ছে যে, আপনি আমার কোনো

ধৈর্যের সাধারণ প্রকারভেদ

Image
  ধৈর্যের সাধারণ প্রকারভেদ — ড. ইয়াসির ক্বাদী আমাদের আলেম-ওলামারা বলেছেন— ধৈর্য তিন প্রকার। প্রথম প্রকার ধৈর্য হলো, বিপদে পড়লে ধৈর্য ধারণ করা। এই প্রকারের ধৈর্য সবচেয়ে নিম্নস্তরের। কারণ, এটা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। আপনার পক্ষে নিজের পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় না। যেমন— চাকরি হারানো, প্রিয় কারো মৃত্যু ইত্যাদি। এখন, এসব ক্ষেত্রে কিভাবে ধৈর্য প্রদর্শন করতে হবে? আপনাকে জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার প্রতি আশাবাদী মনোভাব পোষণ করতে হবে। এ বিপদটা কেন আপনার উপর এসে পড়লো আপনাকে এটা না বুঝলেও চলবে। আপনি দুঃখ অনুভব করতে পারবেন। দুঃখ অনুভব করা মানব প্রকৃতির অংশ। কাঁদতে পারবেন। শোকাহত হতে পারবেন। কিন্তু, কোনোভাবেই আল্লাহর বিজ্ঞতা, দয়া এবং ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবেন না। অন্তরেই এসব প্রশ্নকে পাত্তা দেয়া যাবে না, মুখে উচ্চারণ তো দূরে থাক। অতএব, এসব ক্ষেত্রে ধৈর্য মানে বিপদে পড়লে আপনার চিন্তাকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিশেষ করে আপনার জিহ্বা। আপনি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার বিজ্ঞতাকে প্রশ্ন করতে পারবেন না। আর এ ধরণের ধৈর্য হলো সবচেয়ে নিম্নস্তরে