Posts

Showing posts from January, 2021

আমরা কীভাবে আল্লাহর মাগফিরাহ(ক্ষমা) লাভ করব?

Image
  আমরা কীভাবে আল্লাহর মাগফিরাহ(ক্ষমা) লাভ করব? এক নাম্বার, মাগফিরাতের জন্য দোয়া করে। আল্লাহ বলেন - وَإِنِّي لَغَفَّارٌ لِّمَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ صَالِحًا ثُمَّ اهْتَدَىٰ - আর যে তওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে অতঃপর সৎপথে অটল থাকে, আমি তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল।(২০:৮২) আর আমি অবিরত ক্ষমা করতে থাকবো...কাকে? যে আমার কাছে অনুতপ্ত হয়, যে আমার প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং যে ভালো কাজ করে...। তাহলে কীভাবে আমরা আল্লাহর ক্ষমা পাব? আমরা মুখে বলবো - আস্তাগফিরুল্লাহ। আমরা বলবো - আল্লাহুম্মাগফিরলিই (হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দিন)। আমরা বলবো - রাব্বি আজনাবতু জানবান ফাগফিরলিই (ও আমার প্রভু! আমি গুনাহ করেছি, আমাকে ক্ষমা করে দিন)। আমরা বলবো - রাব্বানা জলামনা আনফুসানা ফাগফিরলানা...(হে আমাদের প্রভু! আমরা নিজেদের উপর জুলুম করেছি, আমাদের ক্ষমা করে দিন)। সুতরাং আমরা আল্লাহর কাছে এভাবে ক্ষমা ভিক্ষা চাইবো। আমাদের রাসূল (স) বলেন - "আমি আল্লাহর কাছে দৈনিক একশো বারের বেশি ক্ষমা চাই।" যদি রাসূলুল্লাহ (স) এতবার ক্ষমা চেয়ে থাকেন তাহলে আমাদের কতবার চাওয়া উচিত? তাই, সবসময় বলতে থাকুন আস্তাগফিরুল

আমাদের রব গাফুরুন শাকুর

Image
  আল কুরআনে ব্যবহৃত আরেকটি ইন্টারেস্টিং যুগ্ম নাম হল, আল-গাফুর আস-শাকুর। তিন বা চারবার আল্লাহ গাফুর এবং শাকুর একত্রে উল্লেখ করেছেন। পরে আমরা শাকুর নাম নিয়ে আলোচনা করব। এখন সংক্ষেপে শাকুর নামের অর্থ বলছি...প্রসঙ্গত সূরা ফাতিরের আকর্ষণপূর্ণ একটি আয়াতে আল্লাহ জান্নাতীদের একটি কথোপকথন উল্লেখ করেন। জান্নাতের অধিবাসীরা বলবে - وَقَالُوا الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنَّا الْحَزَنَ ۖ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٌ شَكُورٌ - "আর তারা বলবে, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আমাদের রব গাফুরুন শাকুর।" (৩৫:৩৪) তাহলে, জান্নাতের অধিবাসীরা আল্লাহকে গাফুরুন শাকুর হিসেবে অভিহিত করবেন। কেন? কেন জান্নাতের অধিবাসীরা আল্লাহকে গাফুরুন শাকুর বলবে? কারণ, জান্নাতে যেতে হলে দুইটি ব্যাপার ঘটতে হবে। এক নাম্বারঃ আল্লাহকে আমাদের অগণিত অসংখ্য গুনাহ ক্ষমা করে দিতে হবে -ইনি হলেন গাফুর। কারণ, অন্যথায় আমরা জান্নাত অর্জন করতে পারব না। আমাদের রাসূল (স) বলেন - তোমাদের কেউ তার সৎ কর্ম দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। জান্নাত এতোই মূল্যবান যে এটা অর্জন করার জিনিস নয়। একবার চ

শিশুর নৈতিকতা বিকাশে অভিভাবকের ভূমিকা

Image
  শিশুর নৈতিকতা বিকাশে অভিভাবকের ভূমিকা কোনো জাতি ধ্বংস হওয়ার আগে তাদের সন্তানদের শৈশব ধ্বংস হয়ে যাবে। যত কাল পর্যন্ত কোনো জাতির শিশুদের কৈশোর ও তারুণ্য নিরাপদ থাকবে, তত দিন সে জাতি উন্নতি করতে থাকবে। হজরত নুহ (আ.) বলেছিলেন, ‘হে আমার রব! পৃথিবীতে অকৃতজ্ঞদের একটি গৃহও রেখো না। যদি তুমি তাদের ছেড়ে দাও, তবে তারা তোমার বান্দাদের বিপথগামী করবে এবং তারা অপরাধী ও পাপী সন্তানই জন্ম দেবে।’ (সুরা-৭১ নুহ, আয়াত: ২৬-২৭)। তারা পাপী–বিপথগামী হলেও যদি তাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকত, তবে সে জাতি সমূলে ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যেত। তাই আমাদের মানবসভ্যতার রক্ষার জন্য শিশুদের শৈশবকে পঙ্কিলতা ও আবিলতামুক্ত রাখতে হবে। সভ্যতার উন্নয়নের জন্য আমাদের শিশুদের উন্নত চিন্তা ও পবিত্র জীবনের দীক্ষা দিতে হবে। সন্তানের শৈশব সুন্দর হলে সে ইহকাল ও পরকালে গর্বের ধন হবে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা এমন নারীদের বিয়ে করো, যারা অধিক সন্তানপ্রিয়। আমি তোমাদের সুসন্তানের জন্য রোজ কিয়ামতে গর্বিত হব।’ (নাসায়ি: ৩২২৭, আবুদাউদ: ২০৫০)। আল্লাহ তাআলা অনাগত সন্তানের জন্য দোয়া ও শুভকামনা শিখিয়েছেন। ‘হে আমার প্রভু! আমাক

আমরা কীভাবে আল্লাহর রহমত অর্জন করতে পারি?

Image
  আমরা কীভাবে আল্লাহর রহমত অর্জন করতে পারি? কীভাবে আমরা আল্লাহর রহমা লাভ করব? এক নাম্বারঃ আমি ইতোমধ্যে এটা বলেছি। অন্যদের প্রতি রাহমা প্রদর্শন করুন, আল্লাহ আপনার প্রতি রাহমা প্রদর্শন করবেন। খুব সুন্দর একটি হাদিসে এ কথা এসেছে। মুখস্ত করে রাখুন। খুব সুন্দর আরবি। الرَّاحِمُونَ يَرْحَمُهُمُ الرَّحْمَنُ - আররহিমুন ইয়ারহামুহুমুর রহমান। ارْحَمُوا مَنْ فِي الأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ - ইরহামু মান ফীল আরদ, ইয়ারহামকুম মান ফিস শা-মা। 'আররাহিমুন' - যাদের দয়া আছে, 'ইয়ারহামুহুমুর রহমান' - আর-রহমান তাদের প্রতি দয়া দেখাবেন। যারা দয়া দেখায় তাদের প্রতি দয়া দেখানো হবে তার দ্বারা যিনি দয়ালু। পৃথিবীর মানুষের প্রতি দয়া দেখান, যিনি আকাশে আছেন তিনি আপনার প্রতি দয়া দেখাবেন। এটি একটি হাদিস। খুব সুন্দর একটি হাদিস। তুমি আল্লাহর রাহমা চাও? তাহলে দয়া দেখাও এমনকি একটি কুকুরের প্রতিও। প্রাণীদের প্রতি দয়া দেখাও। গাছ গাছালির প্রতি দয়ালু হও। সৃষ্টির প্রতি দয়া দেখাও। তাহলে, আল্লাহ আপনার প্রতি দয়া দেখাবেন। আল্লাহর রহমত চান? আমাদের রাসূল (স) বলেন - "রাহিমাল্লাহু আব্দান...আল্লাহ সেই ব

ইসলামি দাওয়াতি কাজের সুন্নতি পদ্ধতি

Image
  ইসলামি দাওয়াতি কাজের সুন্নতি পদ্ধতি শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী ইসলাম মানে শান্তি। শান্তির পথে আহ্বান হলো দাওয়াত। দাওয়াতের পদ্ধতিতে রয়েছে বিশেষ সুন্নাত, যা অনুসরণ করলে শান্তির আহ্বান সফল হবে, সমাজের সর্বস্তরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। আল্লাহ তাআলা যেমন শরিয়তের বিধান দিয়েছেন, তেমনি তা বাস্তবায়নের জন্য বিশেষ সুন্নত পদ্ধতিও দিয়েছেন। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যা এর আগে অবতীর্ণ কিতাবের সমর্থক ও সংরক্ষণকারী। সুতরাং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুসারে তুমি তাদের ফয়সালা নিষ্পত্তি করো এবং যে সত্য তোমার নিকট এসেছে, তা পরিত্যাগ করে ওদের খেয়ালখুশির অনুসরণ কোরো না। তোমাদের প্রত্যেকের জন্য শরিয়ত ও স্পষ্ট পথপদ্ধতি নির্ধারণ করেছি। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তোমাদের এক জাতি করতে পারতেন, কিন্তু তিনি তোমাদের যা দিয়েছেন, তা দ্বারা তিনি তোমাদের পরীক্ষা করতে চান। তাই তোমরা সৎকর্মে প্রতিযোগিতা করো। আল্লাহর দিকেই তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করছিলে সে সম্বন্ধে তিনি তোমাদের অবহিত করবেন।’ (সুরা-৫ মায়িদা, আয়াত: ৪৮)। ইসলাম আল্লাহ কর্তৃক মনোনীত একমা

দান–সদকার গুরুত্ব ও ফজিলত

Image
  দান–সদকার গুরুত্ব ও ফজিলত দান-খয়রাত ও সদকা-জাকাত ইসলামে বিধিবদ্ধ ইবাদত। মহাগ্রন্থ আল–কোরআনে দানের কথাটি সালাত বা নামাজের মতোই বিরাশিবার উল্লেখ হয়েছে। ‘জাকাত’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে আছে বত্রিশবার, নামাজের সঙ্গে কোরআন মাজিদে আছে ছাব্বিশবার; স্বতন্ত্রভাবে কোরআন কারিমে আছে চারবার; পবিত্রতা অর্থে রয়েছে দুবার। জাকাত কখনো ‘সদাকাহ’ এবং কখনো ‘ইনফাক’ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইনফাক শব্দটি ব্যাপক, সদাকাহ শব্দটি সাধারণ ও জাকাত শব্দটি বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কখনো কখনো এর ব্যতিক্রমও হয়েছে, অর্থাৎ এ তিনটি শব্দ একে অন্যের স্থলে ব্যবহার হয়েছে। দানের প্রাথমিক সুনির্দিষ্ট খাতগুলো কোরআন কারিমে উল্লেখ হয়েছে এভাবে, ‘মূলত সদাকাত হলো ফকির, মিসকিন, জাকাতকর্মী ১ (খলিফা কর্তৃক নিযুক্ত জাকাত ব্যবস্থাপনায় কর্মরত ব্যক্তির মজুরি), অনুরক্ত ব্যক্তি, ক্রীতদাস, ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর পথে জিহাদ (মানবতা, মানবাধিকার ও মানবসভ্যতার সুরক্ষার জন্য) ও বিপদগ্রস্ত বিদেশি মুসাফিরের জন্য। এটি আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও পরম কৌশলী।’ (সুরা-৯ তাওবা, আয়াত: ৬০)। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, ‘ওপরের হাত নিচে

ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ

Image
  অনেক সময় আমরা বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়ি আর এসব কাজের দীর্ঘ মেয়াদি ফল নিয়ে চিন্তা করি না। আল্লাহ তায়ালা সূরা আলে ইমরানের ১৮২ নাম্বার আয়াতে বলেন - ذَٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيكُمْ - "এ হল তারই প্রতিফল যা তোমরা ইতিপূর্বে নিজের হাতে পাঠিয়েছ।" এই আয়াত আমাদেরকে যে দৃষ্টিতে পৃথিবী দেখা শেখাচ্ছে তা হল: প্রতিটি শব্দ যে আমি উচ্চারণ করি, আমার করা প্রতিটি কাজ, আমার প্রতিটি অভিজ্ঞতা, যা কিছু আমি খরচ করি, যা কিছু আমি উপভোগ করি, যে মজা আমি এখন উপভোগ করি, যে মজা থেকে আমি এখন বিরত থাকি - এই সবকিছুর ভবিষ্যতে ফলাফল আছে। সবকিছুর। একটি উদাহরণ দিচ্ছি। যদি ছোট্ট একটি ইটের টুকরা নিয়ে পানিতে নিক্ষেপ করেন, কী হয়? পানিতে ছোট ছোট ঢেউ দেখা যায়। প্রতিটি নুড়ি পাথরের ঢেউ আছে, প্রতিটি শব্দের ঢেউ আছে, প্রতিটি দয়ার ঢেউ আছে, প্রতিটি অপমানকর কথার ঢেউ আছে, প্রতিটি মূর্খতার ঢেউ আছে, প্রতিটি পাপের ঢেউ আছে, প্রতিটি ভালো কাজের ঢেউ আছে। আমাদের করা প্রতিটি কাজের ঢেউ আছে। আল্লাহ তায়ালা সূরা ইয়াসিনে বলেছেন - " ওয়া নাকতুবু মা কাদ্দামু ওয়া আ-সারাহুম" - আমি লিখে রাখছি তারা যা ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করেছে, এ