Posts

Showing posts from May, 2021

ইসলামের আলোকে নিরাপদ মাতৃত্ব ও নবজাতকের পরিচর্যা

Image
  ইসলামের আলোকে নিরাপদ মাতৃত্ব ও নবজাতকের পরিচর্যা আল্লাহ তাআলা নিজ কুদরতি হাতে আদি পিতা আদম (আ.) কে সৃষ্টি করলেন, তাঁর থেকে সৃষ্টি করলেন আদি মাতা হাওয়া (আ.)–কে। এ যুগলের মাধ্যমেই মানব প্রজন্ম পরম্পরা সূচনা করলেন, বিস্তার ঘটালেন মনুষ্য সভ্যতার। (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ১)। মানুষের কল্যাণ নিমিত্তে আল্লাহ তাআলা কুলমাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ২৯)। মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন হেতু মানব জাতির সুরক্ষা, সমৃদ্ধি, উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। মানবসভ্যতার সুরক্ষার জন্য মানবশিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রাকৃতিক নিয়মে মানবসন্তান পিতা-মাতার মাধ্যমেই পৃথিবীতে আগমন করে। তাই শিশুর যত্নের পূর্ব ধাপ হিসেবে তার পিতা-মাতার নীরোগ সুস্থ দাম্পত্যজীবন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হতে হবে। এ জন্য সন্তান মাতৃগর্ভে আগমনের আগেই দম্পতি যুগলের শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, তাদের উভয়কে স্বাস্থ্যসচেতন থাকতে হবে এবং অনাগত সন্তানের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।গর্ভকালে মায়ের স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও তার প্রয়োজনীয় সেবাযত্ন অতীব জর

ঈদের চাঁদ ও আনন্দময় ইবাদত

Image
  ঈদের চাঁদ ও আনন্দময়  ইবাদত   ঈদ মানে আনন্দ, যা ঘুরে ঘুরে আসে। মুসলমানের দুটি ঈদ। ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ এবং ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। নবীজি (সা.) বলেন, প্রত্যেক জাতির উৎসব আছে, আমাদের উৎসব হলো এই দুই ঈদ। (মুসলিম, তিরমিজি)। রমজানের এক মাস সিয়াম সাধনার পর ঈদের আনন্দের বার্তা নিয়ে পশ্চিমাকাশে উঁকি দেয় হিলাল। তাই ঈদের সঙ্গে নতুন চাঁদের সম্পর্ক সুনিবিড়। ‘হিলাল’ অর্থ নতুন চাঁদ, যা বাংলায় ‘হেলাল’ হিসেবে বেশি উচ্চারিত হয়। ‘হিলাল’ হলো ১ থেকে ৩ তারিখের চাঁদ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে রোজা ছাড়ো, ইফতার করো বা ঈদ করো।’ যে সন্ধ্যায় আকাশে চাঁদ দেখা যায়, সে রাত হলো ‘চাঁদরাত’। প্রতি মাসের চাঁদরাত গুরুত্বপূর্ণ। আরবি চান্দ্রবছরের নবম মাস রমজান এবং দশম মাস শাওয়াল। রমজানের রোজার শেষে পয়লা শাওয়াল ঈদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। শাওয়ালের চাঁদরাত হলো ঈদের রাত। ইসলামে যে রাতগুলো ইবাদতের জন্য এবং ফজিলতে পরিপূর্ণ, সেসবের অন্যতম এই ঈদের রাত। চাঁদরাতের প্রথম সুন্নত ও ফরজে কিফায়া আমল হলো সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে চাঁদ দেখা। চাঁদ দেখলে বা চাঁদ দেখার সংবাদ নিশ্চিত হলে দোয়া পড়া সুন্নত। (ত

সিয়াম সাধনায় ‘ইহতিসাব’ বা আত্মমূল্যায়ন

Image
সিয়াম সাধনায় ‘ইহতিসাব’ বা আত্মমূল্যায়ন রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের ডালি নিয়ে রমজান এসেছিল। আমরা তা কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি, আমাদের জীবনে এর প্রভাব কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে, এই হিসাব কষার সময় এসেছে। রমজান পেয়েও যারা নাজাত লাভ থেকে বঞ্চিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদের অভিসম্পাত করেছেন। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘একদা জুমার দিনে রাসুলুল্লাহ (সা.) মিম্বরের প্রথম ধাপে পা রেখে বললেন, আমিন! অতঃপর দ্বিতীয় ধাপে পা রাখলেন, বললেন আমিন! তারপর তৃতীয় ধাপে পা রাখলেন এবং বললেন আমিন! এরপর খুতবা দিলেন ও নামাজ আদায় করলেন। নামাজ শেষে সাহাবায়ে কিরাম প্রশ্ন করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)! আজ যা দেখলাম তা ইতিপূর্বে কখনো দেখিনি (আপনি একেক ধাপে পা রেখে আমিন! বলছিলেন); এটা কি কোনো নতুন নিয়ম নাকি? নবীয়ে করিম (সা.) বললেন: না, এটা নতুন কোনো নিয়ম নয়; বরং আমি মিম্বরে ওঠার সময় হজরত জিবরাইল (আ.) আসলেন, আমি যখন মিম্বারের প্রথম ধাপে পা রাখি তখন তিনি বললেন—আল্লাহ তাআলা বলেছেন, যারা পিতা–মাতাকে বার্ধক্য অবস্থায় পেয়েও তাদের খেদমতের মাধ্যমে জান্নাত অর্জন করতে পারল না, তারা ধ্বংস হোক। তখন আমি সম্মতি জানিয়ে বললাম আমিন! যখন দ্বিতীয়

পুরুষদের মধ্যে প্রথম মুসলমান আলী ইবনে আবু তালিব (রা.)

Image
  পুরুষদের মধ্যে প্রথম মুসলমান আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) পুরুষদের মধ্যে প্রথম আলী (রা.) রাসুলের (সা.) ওপর বিশ্বাস স্থাপন করেন, তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন এবং তিনি যে আল্লাহর কাছ থেকে ওহি পেতেন, তা বিশ্বাস করেন। তখন তার বয়স মাত্র দশ বছর। অসীম ছিল তার ওপর আল্লাহর অনুগ্রহ, কারণ ইসলাম শুরু হওয়ার আগে থেকে রাসুলের (সা.) হাতেই তিনি বড় হচ্ছিলেন। মুজাহিদ ইবনে জাবির আবুল হাজাজের নাম ধরে আবদুল্লাহ ইবনে আবু নাজি আমাকে বলেছেন, আল্লাহ তার ওপর করুণা এবং শুভেচ্ছা বর্ষণ করেছিলেন এমন এক সময়, যখন কোরাইশরা ছিলেন এক প্রচণ্ড দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত। আবু তালিবের পরিবার অনেক বড়। রাসুলের (সা.) চাচা আল-আব্বাস বনু হাশিমদের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিত্তশালী লোক। তাঁর কাছে গেলেন রাসুল (সা.)। বললেন, আবু তালিবের পরিবারে এত মানুষ, তাদের কিছুর দায়িত্ব তিনি যদি নেন, তাহলে ওরা বেঁচে যায়। আল আব্বাস রাজি হলেন। তারপর তিনি আবু তালিবের কাছে গিয়ে বললেন, তাঁর দুটি সন্তানের ভরণ পোষণের দায়িত্ব আল-আব্বাস নেবেন। তারপর দিন ফিরলে ছেলেদের তিনি আবার ফেরত নিয়ে আসতে পারবেন। আবু তালিব বললেন, ‘যা তোমাদের খুশি করো, কিন্তু আকি

শাওয়াল মাসের আমল ও ছয় রোজার ফজিলত

Image
  শাওয়াল মাসের আমল ও ছয় রোজার ফজিলত ‘শাওয়াল’ অর্থ উঁচু করা, উন্নতকরণ; উন্নত ভূমি; পূর্ণতা, ফলবতী, পাল্লা ভারী হওয়া, গৌরব করা, বিজয়ী হওয়া; প্রার্থনায় হস্ত উত্তোলন করা বা ভিক্ষায় হস্ত প্রসারিত করা; পাত্রে অবশিষ্ট সামান্য পানি; ফুরফুরে ভাব, দায়ভারমুক্ত ব্যক্তি; ক্রোধ প্রশমন ও নীরবতা পালন; সিজন করা শুকনা কাঠ। এসব অর্থের প্রতিটির সঙ্গেই শাওয়ালের সুগভীর সম্পর্ক রয়েছে। এ মাসের আমলের দ্বারা উন্নতি লাভ হয়; পূর্ণতা ফল লাভ হয়; নেকির পাল্লা ভারী হয়; গৌরব অর্জন হয় ও সাফল্য আসে; ফলপ্রার্থী আল্লাহর কাছে হস্ত সম্প্রসারিত করে প্রার্থনা করে; পূর্ণ মাস রোজা পালনের পর আরও কয়েকটি রোজা রাখে; প্রাপ্তির আনন্দে বিভোর হয়; ফরজ রোজা পালন শেষে নফল রোজার প্রতি মনোনিবেশ করে; আত্মনিয়ন্ত্রণের শক্তি অর্জন করে; পরিপক্বতা ও স্থিতি লাভ করে। এসবই হলো শাওয়াল মাসের নামের যথার্থতা। আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘যখন তুমি (ফরজ) দায়িত্ব সম্পন্ন করবে তখন উঠে দাঁড়াবে এবং তুমি (নফলের মাধ্যমে) তোমার রবের প্রতি অনুরাগী হবে।’ (সুরা-৯৪ ইনশিরা, আয়াত: ৭-৮)। শাওয়াল ইসলামি মাসগুলোর মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মাস। এ মাসের বহুবিধ তাৎপর্য রয়

দেখতে কেমন ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

Image
  দেখতে কেমন ছিলেন আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। — ডঃ ওমর সুলেইমান। কাতাদা (র) বলেন— আল্লাহ্‌ যত নবী পাঠিয়েছেন সবার চেহারা ছিল সুন্দর এবং কণ্ঠও ছিল সুন্দর। রাসূল (স) এর ক্ষেত্রে, তারা তাঁর মত সুন্দর কোনো কিছু বা কাউকে কখনো দেখেনি, ইসলামের পূর্বে বা পরে। কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে, বাহির থেকে তাকে সুন্দর দেখালেও ভেতরটা কুৎসিত। কিন্তু, রাসূল (স) এর ক্ষেত্রে, তিনি দেখতে যেমন অত্যাশ্চর্য সুন্দর ছিলেন, তাঁর চরিত্র—আল্লাহ্‌ যার প্রশংসা করেছেন— ছিল তার চেয়েও অধিক সুন্দর। আব্দুল্লাহ ইবনে রাওয়াহা (রা) রাসূল (স) এর উপস্থিতির কথা বর্ণনা করেন। তিনি বলেন— যদি রাসূল (স) শুধু উপস্থিত থাকতেন... তিনি কোনো কিছু তিলাওয়াত না করে বা কোনো কথা না বলে চুপ করে থাকতেন, আপনি তাঁর দিকে তাকালেই বুঝতে পারতেন তাঁর মাঝে স্বর্গীয় সৌন্দর্যের কোনো ব্যাপার আছে। এই জন্যই আমরা এমন বহু ঘটনার কথা জেনেছি যেখানে মানুষ শুধু রাসূল (স) এর মুখায়বের দিকে তাকিয়েই ইসলাম গ্রহণ করেছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা) যিনি রাসূল (স) এর আগমনের পূর্বে মদিনার প্রধান ইহুদি পণ্ডিত ছিলেন, যখন তিনি রাসূল (স) কে দেখতে গে

ভারসাম্যপূর্ণ জাতি।

Image
  ভারসাম্যপূর্ণ জাতি। -- নোমান আলী খান আমি মনে করি, বিশ্বে এখন যা ঘটছে তা নিয়ে অসচেতন থাকা অসম্ভব। মুসলমানদের বিরুদ্ধে অমুসলিমরা যে ঘৃণ্য অপরাধ চালাচ্ছে এবং মুসলমানরাও অপর মুসলিমের বিরুদ্ধে যে অপরাধ চালাচ্ছে তার দ্বারা আমরা সবাই প্রভাবিত। একজন মুসলিম হিসেবে বড় হওয়ার কালে এই ট্রাজেডিগুলো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনাদের মধ্যে যাদের বয়স ত্রিশ চল্লিশ বছর আপনারা দেখেছেন গত অর্ধ শতক বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে উম্মাহ শুধু একটি সংকটের পর আরেকটি, এরপর আরেকটি, এরপর আরেকটির মধ্য দিয়ে গত হয়েছে। এভাবে দীর্ঘ সময় পর কোনো ব্যক্তি একেবারে নিস্তেজ হয়ে পড়তে পারে। "ওহ, আবার শুরু হলো। এরপর আরেকটা। এরপর আরেকটা।" এতবেশি জনপদ আজ জ্বলছে এবং এতবেশি জরুরী অবস্থা আজ মুসলিম জনপদগুলোতে!! যেমন, আমাদের প্রাণপ্রিয় ফিলিস্তিনে এই মুহূর্তে যা ঘটছে...একদিকে হতাশা অন্যদিকে নিরুপায় অবস্থা...আমাদের পক্ষে কী করার আছে। ব্যাপারগুলো আমাদের সম্পূর্ণরূপে অভিভূত করতে ফেলতে পারে। অনেক মানুষ আমাকে এ বিষয়ে বক্তব্য রাখতে বলেছেন। ফিলিস্তিন সম্পর্কে আমার চিন্তা-ভাবনা কী তা নিয়ে কথা বলতে বলেছেন। উম্মাহ