Posts

Showing posts from September, 2022

ঈমানদারদের দুআ

Image
  বিভিন্ন কারণে আমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। তার মাঝে একটি হলো- আমাদের জন্য ঈমানদারদের দুআ। যে কেউ যে কোনো সময় যদি বলে- আল্লাহ অমুককে ক্ষমা করে দিন। অথবা জানাজার নামাজ। অথবা কারো মৃত্যুর পর মানুষ তার কথা মনে করে যদি বলে- আমি বা আমরা দুআ করছি আল্লাহ উনাকে ক্ষমা করে দিন। উনি খুবই দ্বীনদার মানুষ ছিলেন। এটাও তার গুনাহ ক্ষমা করে দিবে। এই ব্যাপারটা কি আমাদের হাতে? - না। যদি বলি আংশিকভাবে? - কিছুটা। কেন কিছুটা? - প্রভাব। ভেরি গুড! প্রভাব। কার কথা মানুষ বেশি মনে করবে এবং তার জন্য বেশি করে ক্ষমা চাইবে? যার কার্যক্রম অনেক বেশি মানুষের উপকার করে। যিনি বহু মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। যার উত্তম চরিত্র এবং উত্তম আচার-ব্যবহারের কথা মানুষ মনে রাখে। তাই, পরপারে চলে যাওয়া মানুষদের কথা চিন্তা করতে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সবার আগে কার কথা আমাদের স্মরণে আসে? যাদের কার্যক্রম আমাদের সবচেয়ে বেশি উপকার করেছে। যারা আমাদের সবচে বেশি সাহায্য করেছেন। যাদের চরিত্র, যাদের উপকার আমাদের কাজে লেগেছে। অতএব, যদিও এ উপায়টি সরাসরি আমাদের হাতে নেই, পরোক্ষভাবে আমরা এর জন্য বীজ বপন করে যেতে পারি। কিভাবে? ভালো

কুচিন্তা হৃদয়কে কলুষিত করে

Image
  কুচিন্তা হৃদয়কে কলুষিত করে। কুমানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তি নানাবিধ পাপ কাজে শামিল হয়ে নিজের আমলনামাকে পাপরাশিতে ভরে ফেলে। পাপের অনুতাপে নিজের ব্যক্তি সত্তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ইহকাল ও পরকালে নিজেকে পাপিষ্ঠের তকমায় কলুষিত করে। পাপের কারণে নিজের মানসম্মান নষ্ট করে জনগণের কাছে নিজেকে উপহাসের পাত্র বানায়। ঘৃণিত ব্যক্তিও তার সঙ্গে তাচ্ছিল্যের মতো অমানবিক আচরণ করে। কুচিন্তাজনিত কারণে পাপের ময়লায় তার জীবন কয়লার মতো জ্বলতে থাকে। যার ফলে সুন্দর জীবনটা কালো ছাইয়ের মতো হয়ে যায়। মোটকথা কুচিন্তা ব্যক্তিকে কয়লার মতো জ্বালিয়ে মরার আগেই মের ফেলে। মানবজাতির পরীক্ষিত চিরশত্রু ইবলিস। ইবলিসকে শয়তান বলা হয়, শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। (সূরা বনি ইসরাইল : আয়াত-৫৩)। আল্লাহতায়ালা তাকে কিছু এমন ক্ষমতা দিয়েছেন যা অন্য কাউকে দেননি, এ প্রসঙ্গে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘অবশ্যই শয়তান আদম সন্তানের শিরা-উপশিরায় বিচরণ করে।’ (সহিহ বুখারি, ১২৮৮)। শয়তান মানুষের মনে কুমন্ত্রণা ঢেলে দেয়। পবিত্র কুরআন মাজিদে এ মর্মে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে। জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে।’ (সূরা নাস : আয়াত-৫, ৬)। ইব

বিনয় মুমিনের অন্যতম গুণ

Image
  পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় ৭০০ কোটির অধিক মানুষের বসবাস। সব মানুষই আল্লাহর বান্দা। তবে সবাই রহমানের বান্দা নয়। রহমানের বান্দা হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো শালীনতাবোধ সম্পন্ন হওয়া। ব্যক্তিকে নম্র ও ভদ্র হওয়া। আল্লাহতায়ালা তাঁর খাঁটি বান্দাদের পরিচয় দিয়েছেন এভাবে, তারা প্রকৃত মুমিন, পরহেজগার, উন্নত আদর্শের অনুসারী, তারা বিনম্র পদক্ষেপে চলাফেরা করে, তারা কখনো অহংকার করে না, তাদের মনে যেমন অহংকার থাকে না, তেমনি তাদের চাল-চলনে, কথাবার্তায়, ওঠাবসায় কখনো অহংবোধ পরিলক্ষিত হয় না, তারা রহমানের নাম শ্রবণ করে মুশরিকদের মতো মন্দ কথা বলার ধৃষ্টতা দেখায় না, বিনীত, বিনম্র, নিরহংকার মুমিনদেরই আল্লাহ তার প্রকৃত বান্দা বলে ঘোষণা করেছেন। প্রিয় নবি (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহতায়ালা তাকে সুউচ্চ মর্যাদা দান করেন। বিনয় অর্থ নিজেকে ছোট মনে করা। হজরত ইয়ায ইবনে হিমার (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রিয় নবি (সা.) এরশাদ করেছেন, মহান আল্লাহ আমার কছে এ মর্মে ওহি নাজিল করেছেন যে, তোমরা বিনয় অবলম্বন করে চলো। অতএব, কেউ কারও ওপর গর্ব করবে না, কেউ কারও ওপর বাড়াবাড়ি করবে না। (মুসলিম-২৮৬৫)। অহংকার

সম্পদ কোন পথে অর্জিত হয়েছে ?

Image
  সম্পদ কোন পথে অর্জিত হয়েছে তার জবাব দিতে হবে নাগরিক হওয়ার প্রথম শর্ত হলো রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করা। দেশের যাবতীয় আইনকানুন মেনে চলা। কোনো আইন ত্রুটিপূর্ণ থাকলে নিয়মতান্ত্রিকভাবে তার সমালোচনা ও সংশোধন করার চেষ্টা করাও নাগরিকের কর্তব্য। রাষ্ট্র যদি ইসলামি আইন অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে, তবে নাগরিকেরা তার প্রতি অনুগত থেকে রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করবে। এ ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা দায়িত্বশীল তাদের।’ (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৫৯) অন্যায়ভাবে ও অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করা গুরুতর অপরাধ। চুরি, ডাকাতি, প্রতারণা, দালালি, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদক ব্যবসা, চোরাকারবারি প্রভৃতি পন্থায় সম্পদ অর্জন করা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ও হারাম। হালাল ও সৎ উপার্জন ইবাদত কবুলের প্রধান শর্ত। অর্থসম্পদ মানবজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। রাষ্ট্রের প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে অর্থনৈতিক অধিকার। সব নাগরিক যার যার সামর্থ্য ও যোগ্যতা অনুযায়ী রাষ্ট্রের যাবতীয় অর্থনৈতিক উপায় উপাদান থেকে উপকৃত হওয়ার সমান অধিকারী। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র কর্তৃক ক

ওয়াসওসা (কুমন্ত্রণা)

Image
  সুরাতুন নাসে আল্লাহর কাছে আমরা শুধু শয়তানের ওয়াসওসা (কুমন্ত্রণা) থেকে নয়, বরং মানুষের ওয়াসওয়াসা থেকেও আশ্রয় চাই। এটা পরিষ্কার যে শুধু মানুষের কথার পরামর্শ না বরং তাদের চাহুনির দ্বারাও ওয়াসওসা হয়ে থাকে। আপনার আত্মসম্মান যদি দুর্বল হয়… আমার মেয়ে আছে। তাই এটা নিয়ে অনেক ভাবি। কারণ, মেয়েদের জন্য আত্মসম্মান বিশাল এক সমস্যা। তাই না? কোনো মেয়ে মনে করে সে কুৎসিত। সে কোনো বিয়েতে গেলো। সেখানে তার চোখে সুন্দরী এক মেয়ে তার দিকে মুখ বাঁকা করে তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে তাকাল। এটুকুই… সাময়িক একটু ইঙ্গিত। এই মেয়েটি এখন মায়ের সাথে ঝগড়া করবে। “আমি মেকআপ করতে চাই, এরকম কাপড় পড়তে চাই, এটা করতে চাই, ওটা করতে চাই…” এ সবকিছুই শুরু হয়ে কোত্থেকে? একটি বিয়েতে, একটি মাত্র মেয়ে তাকে দেখে মুখ ভেংচি দিলো। এটুকুই হয়েছিল! আর তার জীবন বদলে গেলো! বুঝতে কি পারছেন ওয়াসওয়াসা কতোটা শক্তিশালী? কীভাবে আল্লাহ্‌র কাছে আপনার আশ্রয় চাওয়া উচিত মানুষ দ্বারা প্রভাবিত হওয়া থেকে? কখনো কখনো আমাদের খুব কাছের মানুষও এমন কিছু বলতে পারে যা সারাজীবনের জন্য ক্ষত তৈরি করে! সারাজীবনের জন্য! আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ আমাকে অসাধারণ পিতামাতা দিয়েছ

[রাব্বিন নাস, মালিকিন নাস, ইলাহিন নাস]

Image
  সূরাতুন নাসে আল্লাহর তিনটি নামের যৌক্তিক অগ্রগতি [রাব্বিন নাস, মালিকিন নাস, ইলাহিন নাস] ---------- * ------------ * ------------- চলুন, প্রথমে নিজেদের অন্যান্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করে দেখি। আমার একটি ছাগল থাকতে পারে, কিংবা গরু বা উট। আমি এর প্রয়োজনগুলোর খেয়াল রাখি। এরপর একটা বেড়া তৈরি করে দেই। কখনো বেড়াটি বেশ বড় হয়। এরপর একে বলি— মুখে বলি না— কিন্তু সে জানে যে, যতক্ষণ এই সীমার মধ্যে থাকবো ইচ্ছেমত ঘুরাঘুরি করা যাবে। প্রাণীটি নিজের পুরো জীবন সেই সীমানার মধ্যেই কাটাতে পারে, সমস্যা ছাড়াই। সে খুশি। কোন অসুবিধা নেই। কারণ— এক, সে সুরক্ষিত আর তার খেয়াল রাখা হচ্ছে। দুই, সে আমার দেয়া সীমানা মেনে নিয়েছে। এরকম যখন হয়, তার জীবন সুন্দর। কোন চাহিদা নেই। কিন্তু অন্যদিকে, মানুষ এমন হতে পারে না। আমরা এভাবে কাজ করি না। আমাদের মানসিকতা এমন না। আমাদের মানসিকতা প্রানীদের থেকে একদমই ভিন্ন। আপনি একজন মানুষকে একটি বাড়ি দিলেন অথবা একটি এপার্টমেন্ট। সেই মানুষটিকে আপনি চাকরিও দিলেন যেন সে নিজে খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারে। এটাকি তার জন্য যথেষ্ট? নাকি সে আরও বেশী কিছু চাইবে? সে আরও বেশী কিছু চাইবে। সে আরও

রিয়াজুল জান্নাহ বা রওযা শরীফঃ

Image
  রিয়াজুল জান্নাহ বা রওযা শরীফঃ আমাদের দেশের মানুষেরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের কবরকে ‘রওজা’ বা ‘রওযা শরীফ’ বলে ডাকে। এটা ভুল, কারণ রওযা হচ্ছে রাসুলুল্লাহর কবরের পর থেকে রাসুলুল্লাহর মসজিদের মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান, যেখানে আল্লাহর রাসুলের মূল মসজিদ অবস্থিত ছিলো। আরবীতে এটাকে বলা হয় রিয়াজুল জান্নাহ। রিয়াজ অর্থ বাগান, জান্নাহ অর্থ জান্নাত। অর্থ হচ্ছে, জান্নাতের বাগানের মধ্যে একটা বাগান। এই স্থানটুকু দুনিয়াতে জান্নাতের একটা বাগান বা টুকরা বলা হয় কারণ, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার ঘর ও মিম্বারের মধ্যবর্তী স্থানটুকু জান্নাতের বাগানগুলোর মধ্যে একটি বাগান।” সহীহ আল-বুখারীঃ ১১৯৫। নাবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেছেন, “আমার ঘর ও মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগানগুলোর একটি বাগান, আর আমার মিম্বর অবস্থিত আমার হাউযে (কাউসার)-এর উপরে অবস্থিত।” সহীহ আল-বুখারীঃ ১১৯৬। যারা মসজিদে নববী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম নামায পড়ার জন্য আসবেন, তারা চেষ্টা করবেন ছোট্ট এই জায়গাতে ফরয, সুন্নত বা নফল যে কোন নামায পড়া ও দুয়া করার জন্য। এ

‘হাওয়া’ (কুপ্রবৃত্তি বা খেয়াল-খুশির) অনুসরণ

Image
  ক্বুরআন হাদীসের বিপরীতে ‘হাওয়া’ (কুপ্রবৃত্তি বা খেয়াল-খুশির) অনুসরণ মানুষকে ধ্বংস করে। (১) আল্লাহ তাআ’লা হযরত মুসা আ’লাইহিস সালামের সাথে ত্বুয়া উপত্যকায় কথোপকথনের সময় মুসা নবীকে যারা হাওয়ার অনুসরণ করে তাদের থেকে সতর্ক করে বলেন, অর্থঃ কাজেই যে ব্যক্তি কিয়ামতের প্রতি ঈমান রাখেনা এবং হাওয়া (নিজ প্রবৃত্তির) অনুসরণ করে, সে যেন আপনাকে তার উপর ঈমান আনা থেকে ফিরিয়ে না রাখে, নতুবা আপনি ধ্বংস হয়ে যাবেন। সুরা ত্বোয়া হাঃ ১৬। (২) আল্লাহ তাআ’লা হযরত মুহা’ম্মদ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী বিচার-ফয়সালা করতে আদেশ করেছেন। পক্ষান্তরে, লোকদের হাওয়ার অনুসরণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করে বলেন, অর্থঃ (হে নবী মুহাম্মদ!) আমি আপনার উপর সত্য বিধানসহ কিতাব নাযিল করেছিন যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী ও সংরক্ষক। কাজেই আল্লাহ যা নাযিল করেছেন আপনি সে অনুযায়ী মানুষের মধ্যে বিচার ফায়সালা করুন। আর আপনার কাছে যে সত্যবিধান এসেছে সেটা ছেড়ে দিয়ে তাদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করবেন না। সুরা আল-মাইয়ি’দাহঃ ৪৮। আল্লাহ তাআ’লা ক্বুরআনে বারবার হাওয়া বা কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করার ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্

আয়াতুল কুরসি

Image
  আয়াতুল কুরসিঃ সুরা বাক্বারাহর ২৫৫ নাম্বার আয়াতকে ‘আয়াতুল কুরসী’ বলা হয়। আয়াতুল কুরসীতে তাওহীদ, ইখলাস, আল্লাহর ইসমে আযম, আল্লাহর ক্ষমতা ও সিফাত, ‘আল্লাহর কুরসির’ মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় বর্ণিত হয়েছে। এইজন্য এই আয়াতটি হচ্ছে ক্বুরানুল কারীমের শ্রেষ্ঠ আয়াত বলা হয়েছে এবং সহীহ হাদিসে এই আয়াতটি বিভিন্ন সময়ে পাঠ করার অনেক ফযীলতের কথা বর্ণিত হয়েছে। অনেকে মনে করেন, আয়াতুল কুরসী হচ্ছে সুরা বাক্বারাহর ২৫৫ ও ২৫৬ নাম্বার। এটা ভুল! সুরা বাক্বারাহর শুধুমাত্র ২৫৫ নাম্বার আয়াতটিকেই আয়াতুল কুরসী বলা হয়, ২৫৬ নাম্বার আয়াত আয়াতুল কুরসির অন্তর্ভুক্ত নয়। আয়াতুল কুরসী নিয়মিত পড়লে কুফুরী কালাম, তাবীজ-কবজ, যাদু, চোখের নজর, জিনের আসর বা ক্ষতি ও অন্যান্য বিপদ আপদ থেকে সুরক্ষা করে। প্রত্যেক ফরয সালাতের পরে একবার করে আয়াতুল কুরসি পড়লে মৃত্যুর পরে রয়েছে জান্নাত। শয়তানের প্রভাব এবং ভূত-প্রেত থেকে বাঁচার জন্য আয়াতুল কুরসি পাঠ করা পরীক্ষিত একটি আমল। আয়াতুল কুরসী ক্বুরানুল কারীমের শ্রেষ্ঠ বা সবচাইতে মর্যাদাবান আয়াত। আবু জর জুনদুব ইবনে জানাদাহ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞে

বিনা হিসাবে জান্নাত লাভ

Image
বিনা হিসাবে জান্নাত লাভঃ মহান আল্লাহর বাণী, “হে মু’মিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। সুরা আল-বাক্বারাহঃ ১৫৩। এই আয়াতের তাফসীরে ইমাম ইসমাঈল ইবনে কাসীর রহি’মাহুল্লাহ বর্ণনা করেছেন, ইমাম যায়নুল আবেদীন রহি’মাহুল্লাহ বলেন যে, “ক্বিয়ামতের দিন একজন আহ্বানকারী ডাক দিয়ে বলবেন, ধৈর্যশীলগণ কোথায়? আপনারা উঠুন ও বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করুন।” এইকথা শুনে কিছু লোক দাঁড়িয়ে যাবেন এবং জান্নাতের দিকে অগ্রসর হবেন। ফেরেশতাগণ তাঁদেরকে দেখে জিজ্ঞেস করবেন, ‘আপনারা কোথায় যাচ্ছেন?’ তারা বলবেন, ‘জান্নাতে।’ ফেরেশতাগণ বলবেন, ‘এখনও তো হিসেব দেয়াই হয়নি?’ তারা বলবেনঃ ‘হাঁ, হিসেব দেওয়ার পূর্বেই।’ ফেরেশতাগণ তখন জিজ্ঞেস করবেন, ‘তাহলে আপনারা কোন প্রকৃতির লোক?’ উত্তরে তারা বলবেন, ‘আমরা ধৈর্যশীল লোক। আমরা সদা আল্লাহর নির্দেশ পালনে লেগে ছিলাম, তাঁর অবাধ্যতা ও বিরুদ্ধাচরণ হতে বেঁচে থাকতাম। মৃত্যু পর্যন্ত আমরা আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের উপর ধৈর্য ধারণ করেছি এবং অটল থেকেছি।’ তখন ফেরেশতারা বলবেন, ‘বেশ, ঠিক আছে। আপনাদের প্রতিদান অবশ্যই এটা (অর্থাৎ বি

আল্লাহ তাআ’লার নৈকট্য অর্জনের আমল

Image
  আল্লাহ তাআ’লার নৈকট্য অর্জনের জন্য অত্যন্ত সহজ তিনটি আমল: মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, যে যাকে ভালোবাসে সে তার নৈকট্য অনুসন্ধান করে। মুমিন বান্দারা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে মহান আল্লাহকে, যার স্বীকৃতি দিয়ে স্বয়ং আল্লাহ বলেছেনঃ وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَندَادٗا يُحِبُّونَهُمۡ كَحُبِّ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَشَدُّ حُبّٗا لِّلَّهِۗ وَلَوۡ يَرَى ٱلَّذِينَ ظَلَمُوٓاْ إِذۡ يَرَوۡنَ ٱلۡعَذَابَ أَنَّ ٱلۡقُوَّةَ لِلَّهِ جَمِيعٗا وَأَنَّ ٱللَّهَ شَدِيدُ ٱلۡعَذَابِ ١٦٥ “আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যকে আল্লাহর সমকক্ষ রূপে গ্রহণ করে, তারা তাদেরকে ভালবাসে আল্লাহকে ভালবাসার মতোই। পক্ষান্তরে, যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকে ভালবাসে সবচেয়ে বেশি।” সুরা আল-বাক্বারাহঃ ১৬৫। যেকোন নেক আমল সম্পাদন করা কিংবা যেকোন পাপ কাজ বর্জন করার মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা ও নৈকট্য লাভ করা যায়। তবে বান্দার সমস্ত আমলের মাঝে এমন কিছু বিশেষ আমল রয়েছে যেইগুলো আল্লাহ অত্যন্ত ভালোবাসেন, যার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়। এমনই কতগুলো নেক আমলের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেওয়

মানুষের হিসাব গ্রহণের সময় সন্নিকটে

Image
  মানুষের হিসাব গ্রহণের সময় সন্নিকটে; অথচ মানব জাতি এখনো উদাসীন হয়ে আছে। (১) ক্বিয়ামত অতি নিকটেঃ আল্লাহ তাআ’লা বলেন, “মানুষের হিসাব-নিকাশের সময় আসন্ন, অথচ তারা উদাসীনতায় মুখ ফিরিয়ে রয়েছে।” সুরা আল-আম্বিয়াঃ ১। মানুষের হিসাবের সময় অর্থাৎ ক্বিয়ামত প্রতি সেকেন্ডে আমাদের নিকটবর্তী হচ্ছে। অথচ মানুষ দুনিয়ার চাকচিক্য নিয়ে এতোটাই মগ্ন যে, তারা আখেরাতের কথা ভুলে গেছে। আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হলে যে আল্লাহর উপর ঈমান আনতে হয়, তাঁর বেঁধে দেওয়া ফরয কাজগুলো আদায় করতে হয়, নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে দূরে থাকতে হয়; মানুষ তার জন্য কোন প্রস্তুতি গ্রহণ করছেনা। (ফাতহুল ক্বাদীর)। মক্কার কাফির-মুশরিকরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহর রাসুল হিসেবে বিশ্বাস না করে তাঁকে চাঁদ দুই খন্ড করার মতো আশ্চর্জনক কোন মুজিজাহ দেখানোর দাবী করেছিল। মক্কাবাসীদের দাবীর প্রেক্ষিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম চাঁদের দিকে আংগুলি হেলনে তা দুই টুকরো হয়ে গিয়েছিল। এমনকি লোকেরা দুইখন্ড চাঁদের মাঝখান দিয়ে হেরা পাহাড়কে দেখতে পেয়েছিলো। সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম। চাঁদ দ্বিখন্ডিত হওয়ার এই ঘটনার

আল্লাহ কোথায় আছেন?

Image
  আল্লাহ কোথায় আছেন? উত্তরঃ আল্লাহ তাআ’লা সাত আকাশের উর্ধে, তাঁর সম্মানিত আরশের উপরে আছেন। আল্লাহ্‌ তাআ’লা বলেন, “রহমান (দয়াময় আল্লাহ) আরশের উর্ধে সমুন্নত।” সুরা ত্বোয়া হাঃ ৫। এ কথায় কোন সন্দেহ নেই যে, আরশ সাত আসমানের উর্ধে রয়েছে, জমিনে বা সর্বত্র নয়। এমনিভাবে ক্বুরানুল কারীমে মোট সাতটি আয়াতে আল্লাহ তাআ’লা উল্লেখ করেছেন যে, তিনি আরশের উপরে সমুন্নত হয়েছেন। সেই আয়াতগুলো হচ্ছে, (১) সুরা আল-আ’রাফঃ ৫৪, (২) সুরা ইউনুসঃ ৩, (৩) সুরা আর-রা’দঃ ২, (৪) সুরা ত্বোয়া-হাঃ ৫, (৫) সুরা আল-ফুরকানঃ ৫৯, (৬) সুরা আস-সাজদাহঃ ৪, (৭) সুরা আল-হাদীদঃ ৪। বাংলাদেশের এক বড় আলেম, বলেছেন, ‘আল্লাহ কোথায় আছেন’, এই প্রশ্ন করা বেয়াদবী। এখন কথা হচ্ছে, আল্লাহ কোথায় এই প্রশ্ন করা যাবে? নাকি এই প্রশ্ন করা বেয়াদবী হবে? উত্তরঃ নিশ্চয়ই ‘আল্লাহ কোথায় আছেন’ এই প্রশ্ন করা যাবে। স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম একজন দাসীর ঈমান ঠিক আছে কিনা, তা জানার জন্যে এই প্রশ্ন করেছিলেন। ইবনুল হাকাম আস-সুলামী রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার একটি দাসী ছিল। সে উহুদ ও জাওয়ানিয়া (এই দুইটি পাহাড়ের) দিকে আমার ছাগল

একইসাথে নাযিল হওয়া দুটো সূরা (ফালাক এবং নাস)

Image
  সুরাতুন নাস হচ্ছে একইসাথে নাযিল হওয়া দুটো সূরার (ফালাক এবং নাস) দ্বিতীয়টি। আর দুটোই সুরাতুল ইখলাসের ধারাবাহিকতা রক্ষা করছে এভাবে যে, আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা আমাদের শেখাচ্ছেন— প্রয়োজনের সময় আমরা শুধু আল্লাহ্‌র দিকেই ফিরে যাই। মানব জাতি যে দুটো প্রয়োজনের জন্য মরিয়া হয়ে থাকে— বাহ্যিক বিপদ থেকে আশ্রয় এবং আভ্যন্তরীন বিপদ থেকে আশ্রয়। কুরআনে আমরা আল্লাহর কাছে দুয়া করি এই জীবনের এবং পরকালের কল্যাণ চেয়ে, তাই না? রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনইয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাহ। একইভাবে আমরা তা বোঝাতে অন্য শব্দও ব্যবহার করি। যেমন আপনারা অবশ্যই শুনে থাকবেন; দ্বীন ও দুনিয়া। তাই না? দ্বীন আর দুনিয়া। যা বলতে মূলত আখিরাত এবং দুনিয়াও বোঝায়। মানে— দ্বীনের খেয়াল রাখলে আখিরাতের তথা পরকালের প্রতি খেয়াল রাখা হলো। আর দুনিয়ার খেয়াল রাখলে পার্থিব এই জীবনের কল্যাণের প্রতি খেয়াল রাখা হলো। আর এই দুটো পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত। যদি সূরা ফালাকের বিষয়টি খেয়াল করেন, দেখবেন, আল্লাহ আমাদের রক্ষা করেছেন এই পৃথিবীর সমস্যাগুলো থেকে। তাই না? যেমনঃ রাতে অশুভ কিছুর আক্রমণ থেকে, এমন মানুষ যারা আপনার প্রতি ঈর্ষান্বিত, আপনাক