Posts

Showing posts from August, 2019

আযান সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক আলোচনাঃ

Image
আযান সংশ্লিষ্ট সামগ্রিক আলোচনাঃ ১) আযানের জবাবঃ বিভিন্ন হাদিসে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মুআযযিন আযানে যা যা বলবেন শ্রোতাও তাই বলবেন। আবু সাঈদ খুদরী (রা.) বলেন,রাসূল (সাঃ) বলেছেন- "যখন তোমরা মুওয়ায্যিনকে আযান দিতে শুনবে তখন সে যা বলবে তদ্রুপ বলবে।" [1] "যে ব্যক্তি মুআযযিনের পিছে পিছে আযানের বাক্যগুলি অন্তর থেকে পাঠ করে এবং ‘হাইয়া ‘আলাছ ছালা-হ’ ও 'হাইয়া আলাল ফালা-হ’ শেষে ‘لا حول ولا قوة الا بالله 'লা-হাওলা ওয়ালা-কুওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ’ (নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি আল্লাহ ব্যতীত) বলে, সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে।" [2] অতএব আযান ও ইকামতে ‘হাইয়া ‘আলাছ ছালা-হ’ ও ‘ফালা-হ’ বাদে বাকী বাক্যগুলির জওয়াবে মুআযযিন যেমন বলবে, তেমনই বলতে হবে। ইক্বামতের জবাবও একইভাবে দিবে। কেননা আযান ও ইক্বামত দু’টিকেই হাদীছে ‘আযান’ বলা হয়েছে। [3] লক্ষ্যণীয় যে, (ক) ফজরের আযানে ‘الصلاة خير من النوم 'আছ ছালা-তু খায়রুম মিনান নাঊম’-এর জওয়াবে صدقت وبررت ‘ছাদাক্বতা ওয়া বারারতা’ বলার কোন ভিত্তি নেই।[4] (খ) তেমনিভাবে এক্বামত-এর সময় قد قامت الصلاة ‘ক্বাদ ক্বা-মাতিছ ছা

দু'আ কবুলের ২৮টি স্থান, ক্ষেত্র ও সময়:

Image
দু'আ কবুলের ২৮টি স্থান, ক্ষেত্র ও সময়: ১) অনুপস্থিত ব্যক্তি (কোন মুসলিমের অগোচরে অন্য মুসলিমের) দু'আ। (মুসলিম -৬৮২২) ২) জালিমের বিরুদ্ধে মাজলুম ব্যক্তির দু'আ। (তিরমীযি-৩৪৪৮) ৩) বাবা তার সন্তানের জন্য দু'আ৷ (তিরমীযি-৩৪৪৮ ৪) নেককার সন্তানের দু'আ - বাবা-মায়ের জন্য তাদের মৃত্যুর পর। (আবু দাউদ-২৮৮০) ৫) আরাফাতের ময়দানে দু'আ। (তিরমীযি-৩৫৮৫) ৬) বিপদগ্রস্ত অসহায় ব্যক্তির দু'আ (সূরা নমল ৬২,৫৭ ও ইসরার ৬৭ নং আয়াত) ৭) সেজদায় দু'আ। (নাসায়ী১০৪৫) ৮) হজ্জের স্থানসমূহে (যেমন: আরাফাহ, মুজদালিফা, মিনা) দু'আ।(ইবনে মাজাহ-২৮৯২) ৯) হজ্জ করা অবস্থায় হাজ্জীর দু'আ। (ইবনে মাজাহ-২৮৯৩) ১০) উমরাহ করার সময় উমরাহকারীর দু'আ। (নাসায়ী-২৬২৫) ১১) আযানের পর দু'আ। (তিরমীযি-২১০) ১২) ক্বিতাল চলাকালীন সময় দু'আ। (আবু দাউদ-২৫৪০) ১৩) বৃষ্টি বর্ষণকালে দু'আ। (আবু দাউদ-২৫৪০) ১৪) শেষ রাতের দু'আ, তাহাজ্জুদের সময়কার দু'আ। বুখারী-১১৪৫) ১৫) জুম্মার দিনে আসরের শেষ দিকে দু'আ। (নাসায়ী-১৩৮৯) ১৬) লাইলাতুল ক্বদরের রাত্রির দু'আ। (বুখারী ও মুসলিম) ১৭) আযান

রাসূলুল্লাহ সা:-এর সামাজিক যোগাযোগ

Image
রাসূলুল্লাহ সা:-এর সামাজিক যোগাযোগ জাফর আহমাদ সাধারণত যারা রাজনৈতিক নেতা, সরকারের মন্ত্রী বা বড় কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তি হন, তারা সব শ্রেণীর জনমানব থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকেন। তারা এত বেশি ব্যস্ত থাকেন, তাদের অন্যদের দিকে মনোযোগ দেয়ার সময়-সুযোগ ও মানসিক চিন্তা-চেতনা কোনো কিছু থাকে না।  কিন্তু রাসূলুল্লাহ সা: সমাজের সর্বস্তরের জনমানুষের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। কখনো একাকী, কখনো দলবদ্ধ অর্থাৎ স্থান, কাল ও পরিবেশ অনুযায়ী তিনি সর্বস্তরের জনগণের কাছে ছুটে যেতেন। এই যোগাযোগ ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক যোগাযোগ থেকে শুরু করে ছোট কোনো বিষয়ও বাদ যেত না। সমাজের নি¤œস্তর যেখানে সাধারণত কারো নজর পড়ে না, রাসূল সা: সেখানেও নির্দ্বিধায় পৌঁছে যেতেন। ইতিহাসের পাতায় অসংখ্য এ ধরনের যোগাযোগের উদাহরণ রয়েছে।  ‘একবার খেলার মাঠে রাসূলুল্লাহ সা: এক শিশুকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার ওই লাল পাখিটা কোথায়? ছেলেটি আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল, আপনি এতদিন আগের কথা মনে রাখলেন কী করে?’ হাজারো কাজ, হাজারো ব্যস্ততায় এবং হাজারো শিশুর মধ্যে একটি শিশুর পাখির কথা মনে রাখাকে আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?  তাঁর যোগাযোগে

কুরআনের নির্দেশনা

Image
কুরআনের  নির্দেশনা "আল্লাহ কষ্টের পর সুখ দিবেন।" --সূরা ত্বলাক : ৭ "নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে রয়েছে স্বস্তি।" --সূরা ইনশিরাহ : ৬ "আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতাগুলো আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি।" --সূরা ইউসুফ : ৮৬ "জেনে রেখো, আল্লাহর সাহায্য নিকটে।" --সূরা বাক্বারা : ২১৪ "একমাত্র কাফির ছাড়া অন্য কেউ আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয় না।" --সূরা ইউসুফ : ৮৭ "আল্লাহ কোনো ব্যক্তির উপর তার সাধ্যের চাইতে বেশী, এমন বোঝা চাপিয়ে দেন না।" --সূরা বাক্বারা : ২৮৬ "এবং অবশ্যই আমি তোমাদের পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।" --সূরা বাক্বারা : ১৫৫ "হে ঈমানদারগণ, তোমরা সবর ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।" ‌‌ --সূরা বাক্বারা : ১৫৩ "হে আল্লাহ, আমি তো কখনো আপনাকে ডেকে ব্যর্থ হইনি।" --সূরা মারইয়াম : ৪ # রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন-- "মুমিনের ব্যাপারটাই আশ্চর্যজনক! তার প্রতিটা অ

কুরআনের ১০০ নির্দেশনা

Image
কুরআনের ১০০ নির্দেশনা ০১. কথাবার্তায় কর্কশ হবেন না। (০৩ঃ১৫৯) ০২. রাগকে নিয়ন্ত্রণ করুন (০৩ঃ১৩৪)। ০৩. অন্যের সাথে ভালো ব্যবহার করুন। (০৪ঃ ৩৬) ০৪. অহংকার করবেন না। (০৭ঃ ১৩) ০৫. অন্যকে তার ভুলের জন্য ক্ষমা করুন (০৭ঃ ১৯৯) ০৬. লোকদের সাথে ধীরস্থির হয়ে শান্তভাবে কথা বলুন। (২০ঃ ৪৪) ০৭. উচ্চস্বরে কথা বলবেন না। (৩১ঃ ১৯) ০৮. অন্যকে উপহাস করবেন না (৪৯ঃ ১১) ০৯. পিতামাতার প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করুন। (১৭ঃ ২৩) ১০. পিতামাতার প্রতি অসম্মানজনক শব্দ উচ্চারণ করবেন না। (১৭ঃ ২৩) ১১. অনুমতি না নিয়ে পিতামাতার শোবার ঘরে প্রবেশ করবেন না। (২৪ঃ ৫৮) ১২. ঋণ গ্রহণ করলে তা লিখে রাখুন। (০২ঃ ২৮২) ১৩. কাউকে অন্ধভাবে অনুসরণ করবেন না। (০২ঃ ১৭০) ১৪. ঋণ গ্রহণকারীর কঠিন পরিস্থিতিতে পরিশোধের সময় বাড়িয়ে দিন। (২ঃ ২৮০) ১৫. কখনো সুদের সাথে জড়িত হবেন না। (০২ঃ ২৭৫) ১৬. কখনো ঘুষের সাথে জড়িতে হবেন না। (০২ঃ১৮৮) ১৭. প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবেন না। (০২.১৭৭) ১৮. আস্থা রাখুন (০২ঃ ২৮৩) ১৯. সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করবেন না। (২:৪২) ২০. ইনসাফের সাথে বিচার করবেন। (০৪ঃ ৫৮) ২১. ন্যায়বিচারের জন্য দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে যান। (০৪: ১৩৫) ২২.

ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজন চিরদিন

Image
ধর্মীয় শিক্ষার প্রয়োজন চিরদিন  মুহাম্মাদুল্লাহ আরমান দ্বীনি শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে এ ব্যাপারে বাধ্য করেনি যে, দ্বীনি শিক্ষাই গ্রহণ করতে হবে অন্য কোনো শিক্ষার প্রয়োজন নেই। মুফাসসিরিনে কেরাম বলেছেন, হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বীনি শিক্ষা ফরজ হওয়ার যে কথা বলেছেন তার উদ্দেশ্য হল, প্রত্যেক ব্যক্তির ওপর ওই পরিমাণ ধর্মীয় শিক্ষা ফরজ যার মাধ্যমে সে ইসলাম বুঝতে পারে। অর্থাৎ ইমান, আকিদা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত ইত্যাদি যথাযথ আদায় করতে পারে। এটুকু জানা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর ফরজে আইন। কিন্তু এর থেকে ইসলামের সব শাখা-প্রশাখা সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞানার্জন করা, কোরআন-হাদিসকে তার ভাষায় বুঝা, মাসআলা চর্চা শরিয়তের মূলনীতি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা সব মুসলমানের ওপর ফরজে আইন নয়, কিছু মানুষ এ জিম্মাদারি আদায় করলে অন্যদের দায়িত্বও আদায় হয়ে যাবে। ইসলাম মানব প্রকৃতির ধর্ম। মানব জীবনের প্রয়োজনীয় সব বিষয়ে জ্ঞানার্জনের প্রতিই ইসলাম গুরুত্ব দিয়েছে। যেসব বিষয়ের জ্ঞান ছাড়া পৃথিবীতে বসবাস করা অসম্ভব সেসব বিষয়ে জানা মুসলমানদের ওপর ফরজে কিফায়া। এলাকায় ডাক্তার না থাকা

হজের শিক্ষা ও হজ–পরবর্তী করণীয়

Image
হজের শিক্ষা ও হজ–পরবর্তী করণীয় শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী ইসলামের মূল পঞ্চ ভিত্তির অন্যতম হজ। পবিত্র হজ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার একটি বিশেষ বিধান। আল্লাহ হজ পালনের মধ্যে মহান উদ্দেশ্য নিহিত রেখেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রকৃত হজের পুরস্কার বেহেশত ব্যতীত অন্য কিছুই হতে পারে না। সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে যাঁরা হজ পালন করবেন, আল্লাহপাক তাঁদের হজ কবুল করবেন এবং তাঁদের জন্য অফুরন্ত রহমত ও বরকত অবধারিত। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘সুবিদিত মাসসমূহে হজব্রত সম্পাদিত হয়। অতঃপর যে কেউ এই মাসগুলোতে হজ করা স্থির করে, তার জন্য অশ্লীলতা, কুৎসা, অন্যায় আচরণ, ঝগড়া ও কলহ-বিবাদ বিধেয় নয়।’ (সুরা-২ বাকারা; আয়াত: ১৯৭)। হজের এই শিক্ষা নিজের জীবনে আজীবন লালন ও ধারণ করতে হবে। সর্বদা তর্কবিতর্ক ও ঝগড়াবিবাদ পরিহার করে চলতে হবে। কারও ব্যবহার পছন্দ না হলেও রাগ করা যাবে না বা কটু কথা বলা যাবে না, কারও মনে কষ্ট দেওয়া যাবে না। কারও দ্বারা যদি কারও কোনো ক্ষতি হয়, তবে সঙ্গে সঙ্গে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। সব সময় অজুর সঙ্গে থাকার চেষ্টা করতে হবে এবং মনে সব সময় আল্লাহর জিকির জারি রাখতে হবে। নিজের স্বার্থ আগে উ

ওয়াকফ : নতুন আন্দোলন প্রয়োজন

Image
ওয়াকফ: নতুন আন্দোলন প্রয়োজন শাহ্ আব্দুল হান্নান আমাদের প্রয়োজন নতুন এক ওয়াকফ আন্দোলন। ওয়াকফর যে বিশেষ গুরুত্ব তা আজকের দিনে আমাদের সমাজে হারিয়ে গেছে। সে গুরুত্বকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে হবে। ওয়াকফর নীতি হলো, যেকোনো ব্যক্তিই তার সম্পত্তির একটি অংশ আল্লাহ তায়ালার ওয়াস্তে দিয়ে দিতে পারেন এবং বলে দিতে পারেন যে, সম্পদ কিভাবে ব্যবহৃত হবে, কী কাজে ব্যবহার করা হবে। ওয়াকফ সব সময় ভালো কাজেই ব্যবহার করা যায়, মন্দ কাজে ব্যবহার করা যায় না। ওয়াকফ যিনি করে দেন তিনিই ওয়াকফ কিভাবে বাস্তবায়িত হবে তার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। তার ব্যবস্থাপনা কৌশল বলে দেন। কমিটির মাধ্যমে বা কিভাবে ওয়াকফ পরিচালিত হবে, এ নির্দেশ তিনি দিতে পারেন। ইসলামের শুরুতেই ওয়াকফ শুরু হয়েছিল। প্রথম থেকেই মুসলমানদের স্বভাব ছিল, তাদের সম্পত্তির একটা অংশ তারা মহান আল্লাহর পথে দিয়ে যেতেন। এই সম্পদ কিভাবে ব্যয় হবে তাও বলে দিতেন। যেমন- এর মাধ্যমে সেখানে সরাইখানা প্রতিষ্ঠা করা হতো যেখানে পর্যটকরা থাকতে পারতেন। যারা মুসাফির হতেন, এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতেন, তারা থাকতে পারতেন। সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল। সে সময় বহু হাসপাতাল তৈরি

ঈদুল আজহা ও কোরবানির বিধিবিধান

Image
ঈদুল আজহা ও কোরবানির বিধিবিধান শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী ঈদুল আজহা অর্থ কোরবানির ঈদ। একে বড় ঈদ এবং বকরি ঈদও বলা হয়। হিজরি বর্ষের ১২তম মাসের ১০ তারিখে এই ঈদ অনুষ্ঠিত হয়। খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠা, ফজরের নামাজ মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করা, সকালে গোসল করা, মিসওয়াক করা, সম্ভব হলে নতুন জামা বা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন জামাকাপড় পরিধান করা, আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করা, ঈদগাহে এক রাস্তায় যাওয়া অন্য রাস্তায় ফিরে আসা, তাকবির বলা, খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় এবং সম্ভব হলে কোরবানির মাংস দিয়ে দিনের প্রথম আহার করা ইত্যাদি এই ঈদের দিনের বিশেষ আমল। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি করুন’ (১০৮: ২)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের ধারেকাছেও না আসে।’ (ইবনে মাজাহ)। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কোনো মুসলিম যদি সাহেবে নিসাব অর্থাৎ সাড়ে ৭ ভরি স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা এর যেকোনো একটির মূল্যের সমপরিমাণ নগদ অর্থ বা ব্যবসার পণ্যের মালিক থাকেন বা হন, তাঁর কোরবানি কর

ত্যাগের ঈদে মনের পশুত্ব জবাই করাই কোরবানি

Image
ত্যাগের ঈদে মনের পশুত্ব জবাই করাই কোরবানি সাইফুল ইসলাম আল-আযহারি পরম প্রভুর জন্য প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করতে পারাই কোরবানির শিক্ষা। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার গোলামি প্রকাশ পায়, প্রভুর জন্য তার ভালোবাসা ও ত্যাগের মাত্রা নির্ণীত হয়। আল্লাহর দান আল্লাহকে ফিরিয়ে দিতে আমরা কতটা প্রস্তুত, তারই একটি ক্ষুদ্র পরীক্ষা কোরবানি। আমাদের জীবন সম্পদ আল্লাহর কাছে উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতিই গ্রহণ করি কোরবানির মাধ্যমে। কোরবানি দেয়ার মধ্যে মৌলিক যে কথাটি আমরা বলি তা হল- আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও মৃত্যু সারা জাহানের ‘রব’ আল্লাহর জন্য।’ (সূরা আল আনআম-১৬২)। মূলত আমাদের জীবন ও সম্পদের মালিক আল্লাহ। এ দুটি জিনিস আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করাই ইমানের অপরিহার্য দাবি এবং জান্নাত লাভের পূর্বশত। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনের জীবন ও সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন।’ (সূরা তাওবা-১১০)। কাজেই জীবন সম্পদ আল্লাহর এবং তা আমাদের কাছে আমানত। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ও তার পছন্দনীয় পথে ব্যয় করাই ইমানের দাবি। কোরবানি মানুষকে ইমানের এ দাবি পূরণের উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠতে সাহ

জিলহজ মাসের ফজিলত ও আমল

Image
জিলহজ মাসের ফজিলত ও আমল শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী জিলহজ মাস মানে হজের মাস। হজের তিনটি মাস শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ। এর মধ্যে প্রধান মাস হলো জিলহজ মাস। এই মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ—এই ছয় দিনেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়। কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হজ সম্পাদন সুবিদিত মাসসমূহে। অতঃপর যে কেউ এই মাসগুলোতে হজ করা স্থির করে, তার জন্য হজের সময়ে স্ত্রীসম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহবিবাদ বিধেয় নহে। তোমরা উত্তম কাজে যা কিছু করো, আল্লাহ তা জানেন এবং তোমরা পাথেয়র ব্যবস্থা করবে, আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ, তোমরা আমাকে ভয় করো’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৯৭)। বছরের বারো মাসের চারটি মাস বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন। এই চার মাসের অন্যতম হলো জিলহজ মাস। আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর কাছে মাসের সংখ্যা বারোটি, যা আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী সেই দিন থেকে চালু আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। এর মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান’ (সুরা-৯ তাওবাহ, আয়াত: ৩৬)। এই চার মাস হলো জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব। এসব মাসে যুদ্ধবিগ্রহ, কলহ

এক সূরাতেই সফলতা

Image
এক সূরাতেই সফলতা ড. আদনান এক লোক রাসূলুল্লাহ(সা) এর কাছে এসে বলল, “আমাকে তিলাওয়াত করা শিখান (অর্থাৎ সূরা শিখান), হে আল্লাহর রাসূল”। রাসূলুল্লাহ(সা) বললেন, “তুমি সেই তিনটা সূরা তিলাওয়াত করো যেগুলো আলিফ-লাম-রা দিয়ে শুরু”। লোকটা বলল, “আমার বয়স হয়েছে। আমার হৃদয় কঠিন হয়ে গেছে আর জিহবা ভারী হয়ে গেছে।” উনি(সা) বললেন, “তাহলে ঐ তিনটা পড়ো যা হা-মীম দিয়ে শুরু।” লোকটা একইভাবে বলল – এটাও কঠিন। উনি(সা) বললেন, “তবে সেই তিনটা পড়ো যেগুলো আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করে শুরু হয়।” লোকটা একইভাবে বলল – এটাও কঠিন। সে যোগ করল, “হে রাসূলুল্লাহ(সা), আমাকে এমন একটি সূরা শিখিয়ে দিন যেটা সবকিছু কাভার করে (comprehensive), আমি ওটা পড়ব।” নবী (সা) তিলাওয়াত করলেন – “ইযা- যুলযিলাতিল আরদু যিলযা-লাহা ”। এভাবে তিনি সূরা যিলযাল এর শেষ পর্যন্ত পড়লেন। লোকটা বলল, “সেই সত্তার কসম যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন, আমি এর সাথে সারাজীবনে আর কিছুই যোগ করব না (অর্থাৎ এই সূরায় যা আছে আমি শুধু তার উপরই আমল করব)” – এই বলে সে চলে গেল। আল্লাহর রাসূল (সা) দুইবার বললেন, “ছোট মানুষটি সফল হয়েছে”। – (আবু দাউদ ১৩৯৯, সাহিহ (আহমেদ শাকির), আব

কৃত্রিম উপায়ে পশু মোটা-তাজা করা হারাম

কৃত্রিম উপায়ে পশু মোটা-তাজা করা হারাম আহনাফ আবদুল কাদির প্রতি বছরই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি গরুর সমারোহে কোরবানির হাটগুলো চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সাধারণত কোরবানির পশু হিসেবে মোটাতাজা, নাদুস-নুদুস ও বিশালদেহী গরুগুলোই ক্রেতা সাধারণের নজর কাড়ে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে উচ্চমূল্য হেঁকে চলতে থাকে দরদাম। তাই কাঙ্ক্ষিত দাম পেতে গরু ব্যবসায়ীরা বিক্রিতব্য গরুকে মোটাতাজাকরণে তৎপর হয়ে উঠে। সঠিক পদ্ধতিতে পশু মোটাতাজাকরণ দোষণীয় কোনো বিষয় নয়। এ প্রসঙ্গে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড.মোফাজ্জল হোসাইন জানান,মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি একটি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রক্রিয়া। তিন-চার মাসের মধ্যেই নিয়মতান্ত্রিক খাবারের মাধ্যমে পশু মোটাতাজা করা যায়। তিনি জানান, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা এ সব মোটাতাজা গরু স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয়,বরং সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এমন কিছু অসাধু ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী আছে যারা নিয়মনীতি না মেনেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে কৃত্রিম উপায়ে পশু মোটা-তাজাকরণে। এ জন্য তারা নিষিদ্ধ ডেক্সামেথাসন, ডেকাসন, বেটামেথাসন ও পে

হজ হোক সেলফিমুক্ত

Image
হজ হোক সেলফিমুক্ত আহনাফ আবদুল কাদির হজ একটি আধ্যাত্মিক সফরের নাম। হৃদয় যাদের মহান রবের আহ্বানে সাড়া দেয় তাদেরই কেবল নসিব হয় হজের মতো মর্যাদাপূর্ণ ইবাদতের। তার চেয়েও খোশ নসিব তাদের, যাদের হজ হয় হাদিসে বর্ণিত ‘হজ্জে মাবরুর’। হাদিসের ভাষায়, হজ্জে মাবরুর বা আল্লাহর কাছে গৃহিত হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয় (মুত্তাফাকুন আলাইহি)। তাইতো হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে হাজিরা ছুটে আসেন পবিত্র মক্কায়। মহান প্রভুর প্রতি ভক্তি, ভালোবাসা আর প্রেম উথলে উঠে হবু হাজিদের হৃদয় আঙ্গিনায়। আল্লাহর পথের মেহমান ও যাত্রীদের হৃদয়ের এলবামে একে একে ভেসে উঠে পবিত্র নগরী বায়তুল্লাহ, মিনা, মুজদালিফা, সাফা-মারওয়া, মাকামে ইব্রাহিম আর আরাফা ময়দানের নয়ন জুড়ানো দৃশ্যাবলি। কাবার চত্বরে আসতেই নিজেকে আবিষ্কার করেন পরম সৌভাগ্যবান হিসেবে। সত্যিই পবিত্র কোরআন ও হাদিসে ঘোষিত পরম সৌভাগ্য সেইসব হাজিদের জন্যই যারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ করতে এসেছেন। যাদের হৃদয়ে আছে আল্লাহর ভয় তারা কখনো আল্লাহর দেয়া নিয়ামতের কথা ভুলে যায় না। ভুলে যায় না স্রষ্টার দেয়া পথ-নির্দেশনার কথা। তাই কাবার চ