পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০১৯ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

নদ–নদী ও মৎস্যসম্পদ রক্ষায় কোরআনের নির্দেশ

ছবি
নদ–নদী ও মৎস্যসম্পদ রক্ষায় কোরআনের নির্দেশ শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষ সৃষ্টির আগে এ জগতে মানবজাতির জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর আয়োজন করে রেখেছেন। মানবজাতি পর্যায়ক্রমে তা আহরণ ও ব্যবহার করে আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দা হবে, এটাই আল্লাহর ইচ্ছা। প্রাণের উৎস পানি। আল্লাহ তাআলা সবকিছু পানি থেকে সৃষ্টি করেছেন। পানিই জীবন। পানি জীবজগতের আদি উৎস। কোরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা কুফরি করে তারা কি ভেবে দেখে না, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী মিশে ছিল ওতপ্রোতভাবে, অতঃপর আমি উভয়কে পৃথক করে দিলাম এবং প্রাণবান সমস্ত কিছু সৃষ্টি করলাম পানি হতে। তবু কি তারা ইমান আনবে না।’ (সুরা-২১ আম্বিয়া, আয়াত: ৩০)। পানির উৎস সাগর, নদ-নদী বা জলাধার। নদীতে রয়েছে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন। কোরআন কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনি প্রবাহিত করেন দুই ধারা, যারা পরস্পর মিলিত হয়, কিন্তু তাদের মধ্যে রয়েছে এক অন্তরাল যা তারা অতিক্রম করতে পারে না। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার করবে? উভয় নদী হতে উৎপন্ন হয় মুক্তা ও প্রবাল। সুতরাং তোমরা উভয়ে তোমাদের প্রতিপালকের কোন অনুগ্রহ অস্বীকার কর...

সমালোচনা ও উপদেশ প্রদানে ইসলামি শিষ্টাচার

ছবি
সমালোচনা ও উপদেশ প্রদানে ইসলামি শিষ্টাচার শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী ইসলাম সহজ, সাবলীল ও যৌক্তিক। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণ, সহাবস্থান ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ইসলামের অন্যতম সৌন্দর্য। সব স্বাধীনতায় রয়েছে সীমারেখা, দায়িত্ব পালনেও রয়েছে বিধিনিষেধ। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ জীবনযাপনে, কথায়, কাজে, আচরণে কখনো ভুলত্রুটি হলে, সংশোধন, উত্তরণের জন্য প্রয়োজন যথাযথ সমালোচনা ও হিতোপদেশ। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো হিতাকাঙ্ক্ষী হওয়া। হাদিস শরিফে রয়েছে, ‘কল্যাণ কামনাই ধর্ম।’ (মুসলিম: ২০৫)। কোনো বিষয়ের ওপর বিশদ তথ্য উপস্থাপন করে তার ভালো–মন্দ পক্ষে ও বিপক্ষে মতপ্রকাশ করাকে আলোচনা বলে। আর গভীর বিশ্লেষণ ও বিষয়ের নেতিবাচক দিক এবং এর নেতিবাচক প্রভাব বর্ণনাকে সমালোচনা বলা হয়। ইসলামে পরনিন্দা, পরচর্চা, অহেতুক সমালোচনা ও অনর্থক তিরস্কার যেমন নিষিদ্ধ, তেমনি সমাজ-সংস্কৃতি, গণমানুষের স্বার্থ, সর্বজনীন নীতিনৈতিকতা ও জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিক সমালোচনাও অনুমোদিত। শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সত্য কথা বলা, প্রয়োজনে উপদেশ দেওয়া, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করা ধর্মীয় কর্তব্যের অংশ। সত্যের প্রতি আহ...

র‍্যাগিং ও র‍্যাগিং মানসিকতাঃ

ছবি
র‍্যাগিং ও র‍্যাগিং মানসিকতাঃ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র‍্যাগিং নামে যা কিছু চলে তা মূলত নবীন শিক্ষার্থীদের অপেক্ষাকৃত সিনিয়র শিক্ষার্থী কর্তৃক অপমান, মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন, যা কখনো কখনো অশ্লীলতার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে। আমি অনেক শিক্ষার্থীকে জানি যারা র‍্যাগিং এর শিকার হয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কারণ, তারা জীবনে এত ভয়ংকর ও ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি আগে কখনোই হয়নি... আমাদের নিজেদের মাঝেও একধরণের র‍্যাগিং ম্যান্টালিটি কাজ করে। দেখুন তো, আপনার মাঝে সেরূপ কোনো মানসিকতা কাজ করছে কিনা? নীচে কয়েকটি প্রশ্ন দেয়া আছে, আপনার উত্তর যদি ‘হা’ হয়, তাহলে আপনার ভেতরেও বসবাস করছে একজন র‍্যাগার। ১. আপনি রিকশায় চড়ে গন্তব্যে নামার পর রিকশাচালক আপনার কাছে বাড়তি ভাড়া চাইলে আপনার কি তাকে চড় দিতে মন চায়? বা মনে করেন, চড়টা তার প্রাপ্য এবং আপনার অধিকার? মাঝেমধ্যে দুই-একটা চড় দিয়েই দেন এবং আনন্দ লাভ করেন? ২. গাড়ির ড্রাইভার বা বাসার দারোয়ানকে আপনার খুব ছোটলোক মনে হয়, এবং সুযোগ পেলেই তার ওপর চড়াও হয়ে পড়েন, অপমান করেন বা কখনো হাত ব্যবহার করে শাসিয়ে দেন? ৩. কাজে...

মিথ্যাবাদীকে আল্লাহও ঘৃণা করেন

ছবি
মিথ্যাবাদীকে আল্লাহও ঘৃণা করেন সৈয়দ আসাদুজ্জামান সুহান মিথ্যাকে সব পাপের জননী বলা হয়। একটি মিথ্যা থেকে শতশত পাপের সূত্রপাত হয়। তাই খুব সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা কথা বলা ঠিক নয়। এতে করে যে কেউ ধীরে ধীরে মিথ্যা বলায় অভ্যস্ত হয়ে যায়। তখন মিথ্যা কথা বলতে আর দ্বিধাবোধ করে না। যে কোনো বিষয়ে মুখ দিয়ে অকপটে মিথ্যা বের হয়ে আসে। মিথ্যাকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই কেবল ঘৃণা করা হয় না বরং সব বর্ণের-ধর্মের মানুষ মিথ্যাকে ঘৃণা করে। যারা কোনো ধর্ম মানে না, তারাও মিথ্যাকে ঘৃণা করে। যারা অনর্গল মিথ্যা বলে, তারাও মিথ্যাকে ঘৃণা করে। মিথ্যাবাদীও চায়, অন্যেরা তার সঙ্গে সত্য কথা বলুক। খুব আফসোস করে বলতে হয়, আমরা দিনে দিনে মিথ্যার রাজ্যে ডুবে যাচ্ছি। আমাদের অবস্থা এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, আমরা কখন যে মিথ্যা কথা বলছি, সেটা নিজেরাই বুঝতে পারি না। কথায় কথায় খুব সাধারণ বিষয়ে অবলীলায় মিথ্যা কথা বলে ফেলি। অতি সাধারণ বিষয়েও মিথ্যা বলা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। আমরা যতই তাদের শিক্ষা দিয়ে থাকি, মিথ্যা বলা মহাপাপ কিন্তু নিজেরাই যদি মিথ্যা বলা থেকে বের না হয়ে আসতে পারি, তাহলে...

মানবিক গুণাবলির বিলুপ্তি মানবতার মৃত্যু

ছবি
মানবিক গুণাবলির বিলুপ্তি মানবতার মৃত্যু শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী মহান আল্লাহ তাআলা কুল মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন ভালোবেসে। জিন–ইনসান বানিয়েছেন ইবাদতের জন্য। মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন খেলাফতের দায়িত্ব দিয়ে, যাতে মানুষ আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হয়ে সৃষ্টির কল্যাণে ও সেবায় নিবেদিত হয়। এই মহান দায়িত্ব পালনে যাঁরা সফল হবেন, তাঁদের সম্মানিত করবেন বেলায়াত বা বন্ধুত্বের মর্যাদায়। তাঁদের জন্য রয়েছে জান্নাতের নিয়ামত। ইসলাম মানবতার ধর্ম, ইসলাম প্রকৃতির ধর্ম। জগতের সব মানুষের দুনিয়ার শান্তি ও পরকালীন মুক্তির একমাত্র পথ ও অনন্য পন্থা। আল্লাহ তাআলা মানুষকে ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ বা সৃষ্টির সেরা হিসেবে মনোনীত করেছেন। মানুষের এ শ্রেষ্ঠত্ব তার ‘ইলম’, তথা বুদ্ধিবিবেক বা জ্ঞানের জন্য। এই জ্ঞানের জন্যই মানুষ ফেরেশতাদের নমস্য হয়েছে। মানুষকে মহান আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন চিন্তার স্বাধীনতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সামর্থ্য। তাই মানুষের ওপর কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া যায় না। মানুষ পরিচালিত হয় তার স্বীয় ইচ্ছার অনুকূলে। মানুষ ভালো–মন্দ বিচার করে যার যার জ্ঞানের আলোকে। জ্ঞানের ভিত্তি হলো তথ্য। তথ্যের অবাধ প্রবাহ বা আদান–প...

মদ, জুয়া ও ব্যভিচার গর্হিত অপরাধ

ছবি
মদ, জুয়া ও ব্যভিচার গর্হিত অপরাধ শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী আল্লাহ তাআলা হলেন সারা জাহানের রব। ‘রব’ হলেন সৃষ্টিকর্তা, লালনকর্তা ও রক্ষাকর্তা। ইসলামি নীতিমালাগুলো সৃষ্টির সুরক্ষার অনুকূলেই নাজিল হয়েছে। শরিয়তের বিধানের উদ্দেশ্যসমূহকে ‘মাকাসিদে শরিয়া’ বলা হয়। মাকাসিদে শরিয়া পাঁচটি, যথা জীবন রক্ষা, সম্পদ রক্ষা, জ্ঞান রক্ষা, বংশ পবিত্রতা রক্ষা, ইমান আকিদা রক্ষা। মাদক, জুয়া ও ব্যভিচার মানুষের ঘরসংসার, পরিবার-পরিজন, ধনসম্পদ, বিবেক-বুদ্ধি-জ্ঞান, মানসম্মান, জীবন ও জগৎ, ইহকাল ও পরকাল সবকিছু বরবাদ করে দেয়।  ইসলামে মানব হত্যা নিষিদ্ধ এবং হত্যার পরিবর্তে হত্যা জীবন সুরক্ষার জন্য। জুয়া ও চুরি নিষিদ্ধ এবং চুরির দায়ে হাত কাটা সম্পদ সুরক্ষার জন্য। সব ধরনের মাদক বা নেশাদ্রব্য নিষিদ্ধ, এর জন্য কঠোর শাস্তির বিধান জ্ঞান ও বিবেক-বুদ্ধি সুরক্ষার জন্য। কারণ, মানুষের ‘আকল’ বা সুষ্ঠু স্বাভাবিক জ্ঞান সুরক্ষিত না হলে সে নিজের, পরিবারের, দেশ, জাতি ও রাষ্ট্রের সবার ক্ষতি করবে। ব্যভিচার নিষিদ্ধ, নারী-পুরুষের বৈবাহিক সূত্রে পবিত্র বন্ধন বংশগতির পবিত্রতা সুরক্ষার জন্য। তা না হলে মানুষ আর ইতর প্রাণীর প্র...