আল্লাহর নাম আত-তাউওয়াব

 


আল্লাহর নাম আত-তাউওয়াব (যিনি বার বার, সবসময় তাওবা কবুল করেন, ক্ষমা করেন।) খুব সম্ভবত কুরআনে অবতীর্ণ আল্লাহর সর্বশেষ নাম। সমগ্র কুরআনে খুব সম্ভবত এটাই ছিল মানব জাতির প্রতি আল্লাহর শেষ শব্দ যা আল্লাহ জিব্রিল (আ) কে বলেছিলেন এবং জিব্রিল (আ) রাসূলুল্লাহ (স) এর কাছে বলেছিলেন। কুরআনের সমাপ্তি হয়েছে আল্লাহর নাম তাউওয়াব বলার মাধ্যেম।

এটা খুবই খুবই গভীর একটি ইঙ্গিত বহন করে। চিন্তা করে দেখুন। সর্বশেষ যে শব্দ আল্লাহ মানবজাতির প্রতি প্রেরণ করেছেন তা ছিল তাঁর নাম তাউওয়াব। আমরা কীভাবে এটা জানি? কারণ, সবার শেষে কোন সূরাটি নাযিল হয়? "ইজা জায়া নাসরুল্লাহি ওয়াল ফাতহ। ওয়া রাআইতান নাসা ইয়াদখুলুওনা ফিই দিই নিল্লাহি আফওয়াজা, ফাসাব্বিহ বিহামদি রাব্বিকা ওয়াস তাগফিরহু, ইন্নাহু কা-না তাউওয়াবা।" এই সূরা নাযিল হওয়ার সপ্তাহ খানেক পর রাসূলুল্লাহ (স) ইন্তেকাল করেন। সর্বশেষ যে আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয় তা ছিল সূরা আন-নাসর। এরপর রাসূলুল্লাহ (স) মৃত্যুবরণ করেন। চিন্তা করে দেখুন আল্লাহ সর্বশেষ যে তথ্যটি আমাদের জানাতে চেয়েছেন তা হল, আমি সবসময় তাওবা কবুল করে থাকি। اِنَّہٗ کَانَ تَوَّابًا নিশ্চয়ই তিনি বার বার তাওবা কবুলকারী। এখন, একজন মানুষ কিভাবে তাওবা করবে? খুব সংক্ষেপে বলছি। এক নাম্বার: তাওবা করার ক্ষেত্রে আন্তরিক হওয়া। তাওবা হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। দুই নাম্বার: সত্যিকারের অনুশোচনা থাকতে হবে এবং নিজেকে অপরাধী মনে করতে হবে। এটা ছাড়া কোনো তাওবা নেই। তাওবা অন্তর থেকে আসতে হবে। আর অন্তরকে উপলব্ধি করতে হবে যে, আমি অন্যায় করেছি। আমি ভুল করেছি। আমার ঐ টাকাটা নেওয়া উচিত হয়নি। আমার অমুক কাজটি করা ঠিক হয়নি। আমার ঐটা খাওয়া বা পান করা উচিত হয়নি। যে কাজটি আমি করেছি তা করা উচিত হয়নি। অন্তরে খাঁটি অনুতাপ থাকতে হবে। আমাদের রাসূল (স) বলেছেন - তাওবার মূল হল অনুশোচনা অনুভব করা। (আন-নাদামু তাওবা) অনুতাপ অনুভব করা তাওবার অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য। তাহলে, দুই নাম্বার হল, অনুশোচনা অনুভব করা। তিন নাম্বার: ইস্তেগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করা জিহ্বা দিয়ে। আপনি আল্লাহর কাছে এভাবে চাইবেন - ইয়া গাফ্ফার! ইয়া তাউয়াব! ইয়া রাহমান! আমাকে মাফ করে দিন। এরপর, তাওবা যথাযথ করতে হলে ..... এতক্ষণ যা বলেছি তা হল সর্বনিম্ন। আর আল্লাহ আমাদের কাছে পূর্ণাঙ্গ তাওবা আশা করেন, তিনি বলেন - হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা। একটি যথাযথ তাওবা। আর তাওবাকে যথাযথ করতে হলে আমাদেরকে আরো দুইটি শর্ত এর সাথে যোগ করতে হবে। যদি এই দুইটি শর্ত পূরণ করা না হয়, তাহলে তাওবা পরিপূর্ণ হবে না। এটা হয়তো সি গ্রেইড, এ গ্রেইড নয়। তাওবাটা পূর্ণাঙ্গ নয়। শেষ দুইটি শর্ত একটি যথাযথ তাওবার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর তা হল, পাপটি ভবিষ্যতে আর না করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। কারণ, যে ব্যক্তি এটা জেনে তাওবা করে যে সে এই পাপটি আবার করবে, সে তাওবাকে পূর্ণ করলো না। এটি পরিপূর্ণ আন্তরিক তাওবা নয়। আমি বলছি না যে এটা মিথ্যা তাওবা। না, এটা অর্ধ-হৃদয়ের তাওবা। এটা খাঁটি তাওবা নয়। কোন তাওবা না করার চেয়ে এটা উত্তম। তবু, এটা পূর্ণাঙ্গ তাওবা নয়। এটা অর্ধমনা, আল্লাহ গ্রহণ করতেও পারেন আবার নাও করতে পারেন। এরপর, শেষ শর্ত হল, তাকে অবশ্যই কোন ভাল কাজ করার মাধ্যমে এই মন্দ কাজের ক্ষতিপূরণ করতে হবে। অন্য কথায়, একটি খাঁটি তাওবা আপনাকে আরো ভালো মানুষে পরিণত করে। আপনি আপনার দান-সদকা বাড়াবেন, আপনার যাকাত, আপনার নামাজ, আপনার দোআ, আপনার জিকির, আপনার কুরআন অধ্যয়ন বা তিলাওয়াত, হয়তো কোন এতিমের দেখাশোনা করতে পারেন, এগুলো বাড়াবেন। কারণ, আপনি বুঝতে পেরেছেন যে, আমি অন্যায় করেছি আমাকে এর ক্ষতিপূরণ করতে হবে। আমি ভুল একটা কাজ করেছি আমাকে এর প্রতিবিধান করতে হবে। আর তাইতো আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা (পরাক্রমশালী এবং মহিমান্বিত) বলেন, যারা পাপ কাজ করে আল্লাহ তাদের শাস্তি দিবেন... "তবে যে তাওবা করে, ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে। পরিণামে আল্লাহ তাদের পাপগুলোকে পূyoutubeণ্য দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।" (২৫:৭০) -- ইয়াসির কাদি।source-nak in bangla/

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট