আমাদের রব গাফুরুন শাকুর

 


আল কুরআনে ব্যবহৃত আরেকটি ইন্টারেস্টিং যুগ্ম নাম হল, আল-গাফুর আস-শাকুর। তিন বা চারবার আল্লাহ গাফুর এবং শাকুর একত্রে উল্লেখ করেছেন। পরে আমরা শাকুর নাম নিয়ে আলোচনা করব। এখন সংক্ষেপে শাকুর নামের অর্থ বলছি...প্রসঙ্গত সূরা ফাতিরের আকর্ষণপূর্ণ একটি আয়াতে আল্লাহ জান্নাতীদের একটি কথোপকথন উল্লেখ করেন। জান্নাতের অধিবাসীরা বলবে - وَقَالُوا الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَذْهَبَ عَنَّا الْحَزَنَ ۖ إِنَّ رَبَّنَا لَغَفُورٌ شَكُورٌ - "আর তারা বলবে, ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আমাদের রব গাফুরুন শাকুর।" (৩৫:৩৪) তাহলে, জান্নাতের অধিবাসীরা আল্লাহকে গাফুরুন শাকুর হিসেবে অভিহিত করবেন। কেন? কেন জান্নাতের অধিবাসীরা আল্লাহকে গাফুরুন শাকুর বলবে?

কারণ, জান্নাতে যেতে হলে দুইটি ব্যাপার ঘটতে হবে। এক নাম্বারঃ আল্লাহকে আমাদের অগণিত অসংখ্য গুনাহ ক্ষমা করে দিতে হবে -ইনি হলেন গাফুর। কারণ, অন্যথায় আমরা জান্নাত অর্জন করতে পারব না। আমাদের রাসূল (স) বলেন - তোমাদের কেউ তার সৎ কর্ম দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। জান্নাত এতোই মূল্যবান যে এটা অর্জন করার জিনিস নয়। একবার চিন্তা করে দেখুন। আমরা মাত্র ৬০ বছর জীবন পাই। এই ষাটের চল্লিশ বছরই যায় দুনিয়ার কাজে। বাকিটা যায় খেলাধুলা আনন্দ স্ফূর্তিতে। কতটুকু সময় আমরা আসলে আল্লাহর ইবাদাত করি? কতটুকু সময় আসলে আমরা ইবাদাতে ব্যয় করি? আর কেমন কোয়ালিটির হয় সে ইবাদাত? সেখান থেকে আল্লাহ আমাদেরকে চিরস্থায়ী জান্নাত দান করবেন!! "জান্নাতুন তাজ্রিমিন তাহতিহাল আনহার।" এমন জান্নাত যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত। জীবন ভর আমরা কত শত পাপ করেছি!! তাই, আমাদের জান্নাতে যেতে হলে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লাকে আমাদের গুনাহগুলো উপেক্ষা করতে হবে। তো, ইনি হলেন গাফুর। এরপর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাকে আমাদের নূন্যতম, আমাদের অত্যল্প ইবাদাতগুলো নিয়ে বিশাল পুণ্য কাজে পরিবর্তন করে দিতে হবে। আশ-শাকুর এটা করবেন। শাকুর হল আপনি যতটুকু পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য আল্লাহ আপনাকে তার চেয়ে অনেক বেশি প্রদান করবেন। "শাকারা" অর্থ ধন্যবাদ দেওয়া। "শাকুর" হল এমন সত্ত্বা যিনি আপনাকে আপনি যতটুকু পাওয়ার কথা তার চেয়ে অনেক বেশি দিবেন। আর আমরা সবাই জানি, আল্লাহ কখনোই একটি ভালো কাজের প্রতিদানে একটি সওয়াব দেন না। ঠিক কিনা? তিনি কখনোই একটি ভালো কাজের প্রতিদানে একটি নেকী দেন না। আল্লাহ নূন্যতম দশটি নেকী থেকে ৭০০ পর্যন্ত নেকী প্রদান করেন। কখনো কখনো এর চেয়েও বেশি। সুবহানাল্লাহ!! -- শায়েখ ইয়াসির কাদি।

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট