একটি সুসংবাদ

 একটি সুসংবাদ শুনুন।


রাসূলুল্লাহ (স) কে দেওয়া বিশেষ মর্যাদাগুলোর একটি হলো, সকল নবীদের মাঝে তাঁকে সবচেয়ে বড় উম্মত প্রদান করা হয়েছে। বুখারী শরীফের একটি হাদিসে এর উল্লেখ আছে। তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে উম্মত সমূহ দেখালেন। আমি বিশাল এক উম্মাহ দেখলাম, দৃষ্টি যতদূর যায় ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। আমি বললাম, এটা মনে হয় আমার উম্মাহ। আমাকে জানানো হলো— না, এটা মূসা (আ) এর উম্মাহ। এরপর আমি এর চেয়েও আরো অনেক বড় আরেকটি উম্মাহ দেখতে পেলাম। এটা ছিল দিগন্ত বিস্তৃত। এটা আমার দৃষ্টি আটকে দিলো। আমাকে বলা হলো, এটা হলো আপনার উম্মাহ। অন্য আরেকটি হাদিসে তিনি সাহাবাদের বললেন, তোমরা কি চাও তোমাদের উম্মাহ (মানে, আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাহ) জান্নাতের এক তৃতীয়াংশ হোক? তাঁরা বললেন, আল্লাহু আকবার। আমাদের আগে শত শত হাজার হাজার উম্মাহ গত হয়েছে। যদি একটি উম্মাহ জান্নাতের অধিবাসীদের এক তৃতীয়াংশ হয়, আল্লাহু আকবার। তো তিনি চুপ করে থাকলেন। এরপর তিনি বললেন, তোমরা কি খুশি হবে যদি আমি বলি জান্নাতের অধিবাসীদের অর্ধেক হবে তোমাদের উম্মাহ। তাঁরা বললেন, আল্লাহু আকবার। তিনি আবারো চুপ করে থাকলেন। এরপর রাসূল (স) বললেন, আল্লাহর শপথ! আমার আশা জান্নাতের অধিবাসীদের দুই-তৃতীয়াংশ হবে আমার উম্মাহ। এমন না যে, আমাদের জন্য তাদের বের করে দেওয়া হবে। আস্তাগফিরুল্লাহ। তাঁরা সবাই প্রবেশ করতে পারবে যদি তাঁরা এর যোগ্য হয়। কিন্তু ব্যাপারটা হলো, আমাদের উম্মাহ এতো বড় হবে যে...। সুবহানাল্লাহ! আধুনিক গণনা মতে, পৃথিবীতে মুসলমানদের সংখ্যা কত? প্রায় এক বিলিয়ন। এক বিলিয়ন। হিসেব করে দেখুন, রাসূল (স) এর সময়কাল থেকে কিয়ামত পর্যন্ত। ইতোমধ্যেই সংখ্যাটা অনেক বড়। এখন, অন্যান্য নবীদের আসল অনুসারীদের সাথে এর তুলনা করে দেখুন। প্রকৃত, সত্যিকারের খ্রিষ্টান। এমন খ্রিষ্টানরা নয় যারা ঈসা (আ) এর ঐশ্বরিক ক্ষমতায় বিশ্বাস করে। বরং এমন খ্রিষ্টানরা যারা ঈসা (আ) কে আল্লাহর রাসূল হিসেবে বিশ্বাস করেছিল। তাদের সংখ্যা কত অল্প ছিল। এরপর প্রকৃত বনী ইসরাইল। মূসা (আ) এর সময়কালের এবং তাঁর পরে আসা অন্যান্য নবীদের অনুসারীরা। তাদের সংখ্যা হয়তো শত শত মিলিয়ন হবে। বিশাল সংখ্যা, মাশাআল্লাহ, বিশাল সংখ্যা। কিন্তু এর সাথে তো আজকের দিনের বিলিয়ন মানুষ এবং চৌদ্দ শত বছর যাবত আসা মুসলমানদের সংখ্যার কোনো তুলনা চলে না। আর আল্লাহ্‌ জানেন, কিয়ামত হতে আরও কত শত বছর লাগবে। আপনি যদি এভাবে হিসেব করে দেখেন তাহলে বুঝবেন, রাসূল (স) এর কথা কত সত্য ছিল!! ভাবতে পারেন? তিনি এমন এক সময়ে এই কথাগুলো বলেছিলেন যখন শুধু একটি শহরে মুসলমানদের বাস ছিল। সেটা হলো, মদিনা। তিনি এমন এক সময়ে কথাগুলো বলেছিলেন যখন পৃথিবীতে মুসলমানদের সংখ্যা ছিল সম্ভবত সর্বসাকুল্যে পনের শত। আর তখন হয়তো দুই তিন মিলিয়ন খ্রিস্টান ছিল এবং লক্ষ লক্ষ ইহুদি ছিল। আর তিনি তাঁর মসজিদে উপবিষ্ট হয়তো পঞ্চাশজন সাহাবাকে এই সুসংবাদ জানাচ্ছেন যে, "আমি আশা করি, ইনশাআল্লাহ, জান্নাতের অধিবাসীদের দুই-তৃতীয়াংশ তোমাদের উম্মাহ থেকে হবে। " আমরা এখন এই হাদিস শুনে বলি, অবশ্যই। এটা তো কমন সেন্স। কিন্তু তিনি যখন এটা বলেছিলেন তখন এটা ছিল মিরাকল। এখন আমরা স্বচক্ষে এটা দেখতে পাচ্ছি। — ড. ইয়াসির ক্বাদী।

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট