নারীদের জন্য ৫০টি শরঈ নিষেধাজ্ঞা :
নারীদের জন্য ৫০টি শরঈ নিষেধাজ্ঞা :
পুরুষ যেমন আল্লাহর বান্দা, নারীও তেমন আল্লাহর বান্দী। পুরুষ যেমন আল্লাহর নেয়ামতরাজি ভোগ করে, তেমনি নারী জাতিও আল্লাহর অগণিত নেয়ামত রাজিতে ডুবে থাকে। এজন্য পুরুষের মতো নারীরাও আল্লাহর হুকুম আহকাম মেনে চলা আবশ্যক। মৃত্যু, কবর, হাশর নশর, বিচার, মিযান, জান্নাত জাহান্নাম সবই নারীপুরুষ সকলের সামনে রয়েছে। সকলকে কাল কেয়ামতের মাঠে জবাবদিহী করতে হবে। এজন্য নারীপুরুষ সকলকে শরীয়তমতে জীবনযাপন করা জরুরি। শরীয়তের কিছু বিধিবিধানে নারী পুরুষ উভয়ে সমান। কিছু বিধান কেবল পুরুষের জন্য, নারী সেখানে অংশিদার নয়। আর কিছু বিধান কেবল নারীর জন্য, পুরুষের সেখানে অংশ নেই। এখানে কয়েকটি এমন নিষেধাজ্ঞা উল্লেখ করা হচ্ছে, যা নবীজি বিশেষভাবে নারীজাতিকে সম্বোধন করে বলেছেন। যদিও অনেকগুলো পুরুষেরও পরিহার করার বিষয়। সম্ভবত নারীদের এগুলোতে পতিত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, এজন্য তাদেরকে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এর কিছু কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত। আর বাকীগুলো বিশুদ্ধ ও আমলযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। একটি আরবী পোস্টের ছায়া অবলম্বনে নতুন বিন্যাসে এখানে পেশ করা হচ্ছে। মূল পোস্টে ছিল ৩০টি। আমরা এখানে একটি ভূমিকা এবং আরও ২০টি যুক্ত করে মোট ৫০টি নিষেধাজ্ঞা পত্রস্থ করছি। আল্লাহ তাআলা কবুল করুন। নারীদের জন্য ৫০টি শরঈ নিষেধাজ্ঞা ১) শিরক করা। ২) চুরি করা। ৩) ব্যভিচার করা। ৪) সন্তান বা ভ্রুণ হত্যা করা। ৫) যেনার তোহমত বা অপবাদ দেওয়া। ৬) অন্যের সন্তান গর্ভে ধারণ করে স্বামীর বলে চালিয়ে দেওয়া। ৭) গায়রুল্লাহর নামে কসম করা। ৮) গায়রুল্লাহর নামে মান্নত করা। ৯) মাথায় আলগা বা পরচুলা লাগানো। ১০) উল্কি অংকন করা বা টেট্টু লাগানো। ১১) দাঁত সরু করা। ১২) ভ্রু প্লপ করা বা তুলে ফেলা। ১৩) ধোঁকা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মিথ্যা মেকাপ করা। ১৪) সুগন্ধি ও পারফিউম লাগিয়ে বাইরে বের হওয়া। ১৫) পরপুরুষের সামনে সৌন্দর্য্য প্রকাশ করা। ১৬) ওজর ছাড়া স্বামীর যৌনচাহিদা পূরণে অস্বীকৃতি জানানো। ১৭) স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলোর কথা অন্যকে বলা। ১৮) স্বামী বাড়িতে থাকাকালে তার অনুমতি ব্যতিত নফল রোযা রাখা। ১৯) স্বামীর অনুমতি ব্যতিত তার সম্পদ খরচ করা। ২০) স্বামীর অবাধ্যাচরণ করা। ২১) কোনো জটিলতা না-থাকা সত্ত্বেও স্বামীর কাছে তালাক প্রার্থনা করা। ২২) স্বামী বা দায়িত্বশীল অভিভাবকের না-শোকরী করা। ২৩) পরপুরুষের সাথে নির্জনবাস। ২৪) পোষ্যজন্তুকে কষ্ট দেওয়া ২৫) পরপুরুষের সাথে করমর্দন করা। ২৬) আচার-আচরণ বা বেশভূষায় পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণ করা। ২৭) স্বামীর কাছে পরনারীর রূপ-সৌন্দর্য্য বর্ণনা করা। ২৮) পরনারীর সতর দেখা। ২৯) পরনারীর সাথে একই কাঁথার নিচে বস্ত্রহীন ঘুমানো। ৩০) মাহরাম ছাড়া দূরের সফর করা। ৩১) জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া। ৩২) কারও মৃত্যু বা মুসবিতের সময় বিলাপ করা, কাপড়-চোপড় ফাঁড়া বা বুক চাপড়ানো। ৩৩) গীবত করা। ৩৪) চোগলখোরী করা বা একের কথা অন্যকে লাগানো। ৩৫) অন্যের দোষ খোঁজা। ৩৬) অন্যের প্রতি জুলম বা তার ক্ষতি করা। ৩৭) ঝগড়াঝাটি করা ৩৮) অশ্লীল গালমন্দ করা। ৩৯) উঁকি মারা। ৪০) আড়ি পেতে শোনা। ৪১) তিন দিনের বেশি অন্যের সাথে কথা বন্ধ রাখা। ৪২) মৃতের জানাযার সঙ্গে যাওয়া। ৪৩) পুরুষদের ভিড়ে কবর যেয়ারত করা। ৪৪) আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা। ৪৫) খোঁটা দেওয়া। ৪৬) গণক ও জ্যোতিষির কাছে গমন করা। ৪৭) সন্তান ও পালিত পশুকে অভিশাপ দেওয়া। ৪৮) কাজের লোকদের কষ্ট দেওয়া। ৪৯) প্রতিবেশিকে কষ্ট দেওয়া। ৫০) কারও মৃত্যুতে তিনদিনের অধিক শোকযাপন করা। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশদিন শোকযাপন করা ফরয তথা বাধ্যতামূলক। সুতরাং প্রতিটি মুসলিম নারী এগুলো থেকে বেঁচে থাকা জরুরি। কারণ, এ গুলোর একেকটি কারণ কোনো নারী জাহান্নামে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। ইতিপূর্বে কেউ যদি এগুলোতে কখনো পতিত হয়ে থাকে, তা হলে এখন তাওবা, ইস্তিগফার করা ও ক্ষমা চাওয়া উচিত। ভবিষ্যতে যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, সে জন্য সতর্ক থাকা উচিত। তা হলে তাদের জন্য আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে সুসংবাদ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন : وَ الَّذِیۡنَ اِذَا فَعَلُوۡا فَاحِشَۃً اَوۡ ظَلَمُوۡۤا اَنۡفُسَہُمۡ ذَکَرُوا اللّٰہَ فَاسۡتَغۡفَرُوۡا لِذُنُوۡبِہِمۡ ۪ وَ مَنۡ یَّغۡفِرُ الذُّنُوۡبَ اِلَّا اللّٰہُ ۪۟ وَ لَمۡ یُصِرُّوۡا عَلٰی مَا فَعَلُوۡا وَ ہُمۡ یَعۡلَمُوۡنَ ﴿۱۳۵﴾ اُولٰٓئِکَ جَزَآؤُہُمۡ مَّغۡفِرَۃٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَ جَنّٰتٌ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ وَ نِعۡمَ اَجۡرُ الۡعٰمِلِیۡنَ ﴿۱۳۶﴾ؕ "আর যারা কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে বা নিজেদের প্রতি যুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে আছে পাপ ক্ষমা করবে? এবং তারা যা করে ফেলে, জেনে-বুঝে তারা তা পুনরায় করতে থাকে না। "এরাই তারা, যাদের প্রতিদান তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও জান্নাতসমূহ যার তলদেশে প্রবাহিত রয়েছে নহরসমূহ। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আর আমলকারীদের প্রতিদান কতই না উত্তম!" (সূরা আলে ইমরান : ১৩৫-১৩৬) মুহাম্মাদ সাইফুদ্দীন গাযী
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন