আয়েশা বিনতে আবু বকর (রাঃ) - দ্বিতীয় পর্ব
খাওলা বিনতে হাকিম যিনি খাদিজা (রাঃ) এর অন্তরঙ্গ বান্ধবী ছিলেন। খাদিজা (রাঃ) মারা যাবার পর তিনি রাসুল (সাঃ) এর পক্ষ থেকে সওদা বিনতে জামআ (রাঃ) এর কাছে বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে গেছিলেন। এবার তিনি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে গেলেন আবু বকর (রাঃ) এর বাড়িতে। তিনি বাসায় ছিলেন না বিধায় আয়েশা (রাঃ) এর আম্মা উম্মে রুমান এর কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাতলেন। তিনি খুশিতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন। আবু বকর (রাঃ) বাড়িতে ছিলেন না বিধায় তিনি বললেন, তিনি আসলেই তার সাথে কথা বলবো। তার মাঝেই আবু বকর (রাঃ) এসে হাজির। খাওলা বললেন, রাসুল (সাঃ) আয়েশার জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। আবু বকর (রাঃ) খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেছেন। তিনি রাসূল (সাঃ) এর সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়তে চাইছিলেন কিন্তু কখনো মুখ ফুটে বলতে পারেন নি। এই নিশ্চয়ই আল্লাহর ই ইশারা। কিন্তু হঠাৎ তিনি বললেন, খাওলা! এই বিয়ে কিভাবে হতে পারে? রাসূল (সাঃ) তো আমার ভাই আর আয়িশা (রাঃ) ভাতিজি। আর ভাতিজির সাথে তো বিয়ে হতে পারেনা। তখন খাওলা রাসুল (সাঃ) কাছে গেলেন সমাধান আনতে। তিনি মুচকি হেসে জবাব দিলেন, আবু বকর (রাঃ) তো আমার নিজের রক্তের ভাই না, সে আমার ধর্মীয় ভাই সেই ক্ষেত্রে এই বিয়েতে ধর্ম নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। খাওলা খুশি মনে আবু বকর (রাঃ) কে খুশির সংবাদ জানালেন। খুশি খবর শুনে সবার অন্তরে খুশি ফল্গুধারা বইতে লাগলো। আয়েশা (রাঃ) প্রতিবেশির বাড়িতে সখিদের সাথে পুতুল খেলছিলেন আর এইদিকে তাঁর দুধ মা ওয়াইলা তাকে খুঁজতে ব্যস্ত। অবশেষে পেলেন এবং বাড়িতে এনে, হাত-পা সাফ করে,চুল বেঁধে পরিপাটি করে নিয়ে গেলেন বাগদাদ অনুষ্ঠানে। এটা একদম আড়ম্বতাহীন অনুষ্ঠান যেখানে, উম্মে রুমান, আবু বকর (রাঃ), দুই তিনজন সাহাবী এবং রাসুল (সাঃ) ছাড়া কেউ ছিলেন না। আবু বকর (রাঃ) নিজেই খুতবা পাঠ করলেন এবং ৫০০ দিহরম মোহর নির্ধারন করে সম্পন্ন হলো পৃথিবীর সর্বশেষ্ঠ মহামানবের বিবাহপূর্ব অনুষ্ঠান। তারপর রাসুল (সাঃ) চলতে লাগলেন নিজের মতো করে, দাওয়াতের কাজে। আর আয়েশা (রাঃ) সেই পুতুল খেলায়। উম্মে রুমান আয়েশা (রাঃ) কে শাসন করলেও শোনে না, তাই একদিন খুব বকাবকি করেছেন। আয়েশা (রাঃ) দরজার কপাট ধরে চোখ-মুখ ফুলিয়ে কাঁদছিল। তখন ই রাসুল (সাঃ) বাড়িতে এসে উম্মে রুমান কে বললেন, তোমাকে না বলেছিলাম আয়েশা (রাঃ) না বকতে। আমার কথা রাখলে না তো! উম্মে রুমান খুব বিব্রত বোধ করলেন এবং বললেন ইয়া রাসুল (সাঃ), সে যে কোনো কথায় শোনে না আর কিছু বললেই ওর বাবাকে আমার বিষয়ে নালিশ দেই। যাই করুক না কেন তাঁকে তুমি বকবে না। আমার খাতিরে অন্তত আয়েশা (রাঃ) কে কিছু বলোনা। তাঁকে নিজের মতো থাকতে দাও। আয়েশা বিনতে আবু বকর (রাঃ) - দ্বিতীয় পর্ব || উম্মুল মুমিনিন || জান্নাতুন নেসা তারিন
source-md rehad sarker/youtube
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন