দাম্পত্যজীবন আল্লাহর অশেষ নিয়ামত

 

দাম্পত্যজীবন আল্লাহর অশেষ নিয়ামত


স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কটি মানবসভ্যতার ইতিহাসের প্রথম ও সবচেয়ে ঘনিষ্ঠতম এবং শক্তিশালী সম্পর্ক। স্বামী স্ত্রীকে থাকার জন্য যে ঘর বা কক্ষ দেবেন, সে ঘর বা কক্ষে স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া (স্বামী ব্যতীত) কেউই প্রবেশ করতে পারবেন না। এমনকি স্বামীর মা, বাবা, ভাইবোনও নন। স্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে প্রয়োজনে এই ঘরে বা কক্ষে তিনি তালা–চাবিও ব্যবহার করতে পারেন। স্ত্রীর ব্যক্তিগত বা গোপনীয় বিষয়ে স্বামী ছাড়া কেউ নাক গলাতে পারবেন না। স্ত্রীর স্যুটকেস, ট্রাংক ও আলমারি স্বামী ছাড়া কেউ তল্লাশি করতে পারবেন না। কোনো স্ত্রীর চলাফেরা বা আচার-আচরণ শ্বশুর-শাশুড়ির অপছন্দ হলে তাঁকে আলাদা বাড়ি বা ঘর করে দিতে হবে। (শরহে বেকায়া)। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হজরত উমর (রা.)-কে তাঁর ছেলে আবদুল্লাহ (রা.)-এর স্ত্রীর ব্যাপারে এরূপ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। স্বামীর সংসারে স্ত্রী কাজকর্ম করলে নফল ইবাদতের সওয়াব পাবেন। অসচ্ছল ও অভাবী স্বামীর সংসারে স্ত্রী কাজকর্ম করলে স্বামীর উপার্জনে সহায়তা এবং সন্তানদের প্রতি সহযোগিতা করা হবে। সংসারে উন্নতির জন্য স্বামী-স্ত্রী একে অন্যকে সহযোগিতা করা উচিত। পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করলে সংসারে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি আসবে, ইনশা আল্লাহু তাআলা।

দাম্পত্য সুখের জন্য বিয়ের পর স্ত্রীর একটি কর্তব্য হলো স্বামীর বৈধ নির্দেশ পালন করা। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজান মাসে রোজা রাখে, স্বীয় সতীত্ব ও সম্ভ্রম রক্ষা করে শালীনতা বজায় রেখে চলে এবং স্বামীর আনুগত্য করে; তখন সে বেহেশতের যেকোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছেমতো প্রবেশ করতে পারবে (সুনানে আবু দাউদ)।’ স্বামীর সেবা ও খেদমত এবং পতির মনোরঞ্জন স্ত্রীর প্রধান করণীয় ও কর্তব্য। স্বামীর সংসারের দেখাশোনা করা এবং স্বামীর সম্পদ সংরক্ষণ করাও স্ত্রীর অন্যতম দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তবে সৎকর্মশীলা নারী বা সাধ্বী রমণী তাঁরা, যাঁরা অনুগতা এবং লোকচক্ষুর অন্তরালেও তঁারা তা সংরক্ষণ করেন; যা আল্লাহ হেফাজত করেছেন (সুরা: ৪ নিসা, আয়াত: ৩৪)।’

সুখী দাম্পত্যজীবনের জন্য চাই বিশ্বাস, আশা ও ভালোবাসা। স্বামী-স্ত্রীকে একে অন্যের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে হবে, ভবিষ্যতের প্রতি আশাবাদী হতে হবে এবং প্রতিনিয়ত অন্তহীন ভালোবাসায় অবগাহন করতে হবে।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম। prothomalo

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট