যে দশটি উপায়ে আমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।

 যে দশটি উপায়ে আমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। (৩য় পর্ব)


— ড. ইয়াসির ক্বাদী ছয় নাম্বারঃ ঈমানদারদের দুআর পর পরেই এর অবস্থান। ছয় নাম্বার উপায় হলো- পরপারে চলে যাওয়ার পর আপনাকে দেওয়া ঈমানদারদের উত্তম আমল। এটা দুআর চেয়ে ভিন্ন। কোনো পুণ্যের কাজ উপহার দেওয়া। যা অনেক বেশি দুর্লভ। কে আপনাকে হজ্জ এবং উমরা উপহার দিবে? আপনার মৃত্যুর পর কে আপনার নামে এক লাখ টাকা দান করবে? এমন ঘটনা একেবারেই বিরল। অল্প কিছু সংখ্যক মানুষ আপনার জন্য এটা করতে পারে যাদের জীবনে আপনার প্রভাব অপরিসীম। অথবা কোনো না কোনো ভাবে আপনি তাদের সীমাহীন উপকার করেছেন। তো, আপনি যদি কাউকে ভালো আমল দান করেন, যিনি ইতোমধ্যে মারা গেছেন। তিনি ইতোমধ্যে বারজাখের জগতে চলে গেছেন। আর আপনি তার কথা মনে করে তাকে কোনো ভালো আমল দান করলেন। তখন পরলোকে সে ব্যক্তির মর্যাদা বেড়ে যাবে এবং তার গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। এটা ঠিক ঐ ব্যাপারটার মতো— দুনিয়াতে থাকাবস্থায় কোনো ভালো কাজ করলে যেমন আপনার গুনাহ মাফ হয়ে যেতো, ঠিক তেমনি আপনি মারা যাওয়ার পরেও কেউ যদি আপনার পক্ষ থেকে কোনো ভালো কাজ করে এতেও আপনার গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। কিন্তু আবারো বলছি, কে আপনাকে পুণ্যের কাজ দান করবে? কোন ধরণের মানুষেরা আপনার জন্য এমন কষ্ট স্বীকার করবে? আপনার ছেলে বা মেয়েরাই শুধু এমনটা করতে পারে। যদি তারা ধার্মিক হয় এবং আপনি তাদের সঠিক উপায়ে বড় করেন। কে অনেক টাকা দান করে বলবে— "ইয়া রব! এই দানের পুরস্কার আমি আমার বাবার জন্য চাই বা অমুকের জন্য চাই।" আবারো বলছি, এগুলো বেঁচে থাকাবস্থায় মানুষের উপকার করার করার বাস্তবতা। কে আপনার জন্য এতো কষ্ট করতে যাবে। আমি এমন অনেক ঘটনার কথা জানি। আমার শিক্ষকেরা আমাকে বলেছেন। তাঁরা সুদূর অতীতের বিখ্যাত উলামাদের জন্য হজ্জ করতেন। কারণ তাঁরা বলতেন, আমরা তাঁদের লেখা থেকে এতো বেশি উপকৃত হয়েছি যে, কৃতজ্ঞতা স্বরূপ অন্ততপক্ষে তাঁদের জন্য উমরা এবং হজ্জ করতে পারি। যেমন, ইমাম নববীর জন্য হজ্জ করতে পারি; ইবনে হাজমের জন্য করতে পারি বা অমুক আলেমের জন্য করতে পারি। আক্ষরিক অর্থেই তাঁরা হাজার বছর আগের কোনো আলেমের জন্য উমরা করতেন। কারণ তাঁরা বলতেন, আমি ঐ ব্যক্তির নিকট অপরিসীম ঋণী! এগুলোই হলো রেখে যাওয়া সৎ কর্মের উপকারিতা।
***************************************************************************************************

দিনশেষে, আমাদের চোখ এবং কান দিয়ে যত কিছু আমাদের ভেতরে প্রবেশ করে তার দ্বারা আমাদের চিন্তা-ভাবনাগুলো প্রভাবিত হয়। সারাদিন কার সাথে কথা বলছেন, কী নিয়ে কথা বলছেন? কী শুনছেন? কী দেখছেন? আর যা কিছু আমাদের ভেতরে প্রবেশ করছে তা আমাদের অন্তরকে প্রভাবিত করছে। চোখ যা কিছু দেখছে তা আপনার হৃয়দকে প্রভাবিত করছে। আপনার কান যা কিছু শুনছে তা আপনার হৃয়দকে প্রভাবিত করছে। হয় এটা এমনভাবে প্রভাবিত হচ্ছে যা আপনাকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে তুলছে অথবা আপনার অন্তরকে এটা এমনভাবে প্রভাবিত করছে যা আপনাকে আল্লাহর কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। কারো কারো সমগ্র দিন কেটে যায় অন্য মানুষদের কার্যক্রম দেখে। "জানো, অমুকে কী বলেছে? তমুকে কী বলেছে? ঐ ভিডিওটা দেখেছো? তার ঐ ছবিটা দেখেছো?" সারা দিন কাটে অন্যদের কাজকারবার দেখে। তার সমগ্র চিন্তা-ভাবনায় শুধু মানুষ, মানুষ আর মানুষ। আপনি যত বেশি অন্য মানুষদের তুচ্ছ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে দিন কাটাবেন ততবেশি আপনার অন্তর আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লার কাছ থেকে দূরে সরে যাবে। এমনটাই ঘটে। নিজের মূল্যবান সময়গুলো কিভাবে ব্যয় করবেন তা নিয়ে আপনি যথেষ্ট সতর্ক নন। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলছেন- يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ - তোমরা যারা বিশ্বাস করো, আল্লাহর কাছ থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখার ব্যাপারে সতর্ক থাকো। (ভাবানুবাদ) (৩:১০২) এমন মানুষে পরিণত হইও না যে আল্লাহর উপস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক নয়। আল্লাহ তোমাকে দেখছেন, তিনি তোমাকে ভালোবাসেন, তিনি তোমার সবকিছু জানেন। - নোমান আলী খান

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট