জীবনের একমাত্র লক্ষ্য


 আখেরাত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিকে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য বানানোর উপকারীতাঃ (১) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যার সমস্ত চিন্তা-ফিকির এবং ইচ্ছা ও খেয়াল একমাত্র আখেরাতের জন্যে হয় এবং তাতেই নিমগ্ন থাকে, আল্লাহ তাআ’লা তাকে দুনিয়ার সমস্ত চিন্তা ও উদ্বেগ থেকে রক্ষা করেন। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি শুধু দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন থাকে, সে যে কোন উপত্যকায় ধ্বংস হয়ে যাক, এতে আল্লাহ তাআলার কোন পরওয়া নেই।” এই হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ রহি’মাহুল্লাহ বর্ণনা করেছেন।

(২) অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, “দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন ব্যক্তির সমস্ত কাজে আল্লাহ তাআ’লা উদ্বেগ নিক্ষেপ করেন এবং তার দারিদ্র তার চোখের সামনে করে দেন। মানুষ দুনিয়া হতে ঐ পরিমাণই প্রাপ্ত হবে যে পরিমাণ তার ভাগ্যে লিপিবদ্ধ আছে। আর যে ব্যক্তি আখেরাতকে তার কেন্দ্রস্থল বানিয়ে নেবে এবং নিজের নিয়ত শুধু আখেরাতকেই রাখবে, আল্লাহ তাআ’লা তার প্রতিটি কাজে প্রশান্তি আনয়ন করবেন এবং তার অন্তরকে পরিতৃপ্ত করবেন। আর দুনিয়া তার পায়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে।” (৩) সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, ফযীলাতুশ-শায়খ সা’দ আস-শিসরী হা’ফিজাহুল্লাহ বলেন, “যখন তুমি আখিরাত অনুসন্ধান করবে, তখন আল্লাহ তোমার দুনিয়াবী কাজ-কর্ম সংশোধন করে দেবেন। যেহেতু তোমার নিয়ত হচ্ছে আখিরাত; একারণে দুনিয়াও তোমার হাসিল হবে, যদিও তুমি তা কামনা না করো। তুমি নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে, তোমার অন্তর প্রশান্তি লাভ করবে, তুমি ইয়াক্বীনের দজায় পোঁছাতে পারবে। হালাল ও পবিত্র রিযিক্ব তোমার কাছে আসবে, দুনিয়াতে তুমি যা কামনা করো তুমি তা পেয়ে যাবে। নাআ’ম। এই দুনিয়া কি আল্লাহর রাজত্বের অধীনে নয়? আল্লাহ যদি তোমার জন্য কোন কিছু নির্ধারণ করেন, তাহলে পূর্ব ও পশ্চিমের সমস্ত মানুষ কি তোমার থেকে তা ফিরিয়ে রাখতে পারবে? তুমি জেনে রাখো যে, দুনিয়ার সমস্ত মানুষ যদি একত্রিত হয় তোমার উপকার করার জন্য, তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তার বাহিরে সামান্য কোন উপকার তারা করতে পারবে না। আর দুনিয়ার সমস্ত মানুষ যদি একত্রিত হয় তোমার ক্ষতি করার জন্য, তাহলে আল্লাহ তোমার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখেছেন, তার বাহিরে সামান্য কোন ক্ষতি তারা করতে পারবে না। সমস্ত কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা আল্লাহর হাতে। মহান আল্লাহ বলেন, وَمَا مِن دَآبَّةٖ فِي ٱلۡأَرۡضِ إِلَّا عَلَى ٱللَّهِ رِزۡقُهَا وَيَعۡلَمُ مُسۡتَقَرَّهَا وَمُسۡتَوۡدَعَهَاۚ كُلّٞ فِي كِتَٰبٖ مُّبِينٖ ٦ “যমীনে বিচরণশীল এমন কোন জীব নেই যার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর উপর নেই, তিনি জানেন তাদের থাকার জায়গা কোথায় আর কোথায় তাদেরকে (মৃত্যুর পর) রাখা হয়, সব কিছুই আছে সুস্পষ্ট লিপিকায়” সুরা হুদঃ ৬। সম্মান, মর্যাদা ও প্রতিপত্তির মালিক আমাদের রব্ব বলেন, “যখন আমার কোন বান্দা আমাকে সন্তুষ্ট করার জন্য চেষ্টা করে, তখন আমি তাকে সন্তুষ্ট করে দেবো।” যে ব্যক্তি লোকদেরকে অসন্তুষ্ট করে হলেও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে চায়, তাহলে আল্লাহ তার উপর সন্তুষ্ট হবেন, এমনকি লোকদেরকেও তার উপর সন্তুষ্ট করে দেবেন। মহান আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, তিনি তোমার কাজ-কর্ম সংশোধন করে তোমাকে সন্তুষ্ট করে দেবেন। মহান আল্লাহ বলেন, أَلَا بِذِكۡرِ ٱللَّهِ تَطۡمَئِنُّ ٱلۡقُلُوبُ ٢٨ “জেনে রাখ, আল্লাহর যিকির দ্বারাই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়।” সুরা আর-র’দঃ ২৮। আল্লাহর যিকিরের মাঝে সবচেয়ে বড় যিকির হচ্ছে, তোমার প্রত্যেকটা কাজে সর্বদা আল্লাহর ব্যাপারে সতর্ক ও সাবধান থাকা। তুমি এমন কোন আমল করবে না, যা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা না হয়। তুমি এরূপ করতে পারলে তোমার অন্তর প্রশান্তি লাভ করবে।

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট