বিনা হিসাবে জান্নাত লাভ


বিনা হিসাবে জান্নাত লাভঃ মহান আল্লাহর বাণী, “হে মু’মিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর, নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। সুরা আল-বাক্বারাহঃ ১৫৩। এই আয়াতের তাফসীরে ইমাম ইসমাঈল ইবনে কাসীর রহি’মাহুল্লাহ বর্ণনা করেছেন, ইমাম যায়নুল আবেদীন রহি’মাহুল্লাহ বলেন যে, “ক্বিয়ামতের দিন একজন আহ্বানকারী ডাক দিয়ে বলবেন, ধৈর্যশীলগণ কোথায়? আপনারা উঠুন ও বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করুন।” এইকথা শুনে কিছু লোক দাঁড়িয়ে যাবেন এবং জান্নাতের দিকে অগ্রসর হবেন। ফেরেশতাগণ তাঁদেরকে দেখে জিজ্ঞেস করবেন, ‘আপনারা কোথায় যাচ্ছেন?’ তারা বলবেন, ‘জান্নাতে।’ ফেরেশতাগণ বলবেন, ‘এখনও তো হিসেব দেয়াই হয়নি?’ তারা বলবেনঃ ‘হাঁ, হিসেব দেওয়ার পূর্বেই।’ ফেরেশতাগণ তখন জিজ্ঞেস করবেন, ‘তাহলে আপনারা কোন প্রকৃতির লোক?’ উত্তরে তারা বলবেন, ‘আমরা ধৈর্যশীল লোক। আমরা সদা আল্লাহর নির্দেশ পালনে লেগে ছিলাম, তাঁর অবাধ্যতা ও বিরুদ্ধাচরণ হতে বেঁচে থাকতাম। মৃত্যু পর্যন্ত আমরা আল্লাহর আদেশ ও নিষেধের উপর ধৈর্য ধারণ করেছি এবং অটল থেকেছি।’ তখন ফেরেশতারা বলবেন, ‘বেশ, ঠিক আছে। আপনাদের প্রতিদান অবশ্যই এটা (অর্থাৎ বিনা হিসাবে জান্নাত) এবং আপনারা এরই যোগ্য। যান, জান্নাতে গিয়ে আনন্দ উপভোগ করুন।’ *কুরআন মাজীদে একথাই ঘোষিত হচ্ছেঃ “ধৈর্যশীলগণকে তাদের পূর্ণ প্রতিদান বে-হিসাব দেওয়া হবে।” সুরা আয-যুমারঃ ১০। (উৎসঃ তাফসীর ইবনে কাসীর, সুরা আল-বাক্বারাহ, ১৫৩-নং আয়াতের তাফসীর জীবনে দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হলে ধৈর্য ধারণ করুন। যারা যারা জান্নাতী হবে তাদের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, দুনিয়ার জীবনে তারা দুঃখ-কষ্ট এবং ভয়-ভীতির সম্মুখীন হবে। ইমাম ইবনে রজব আল-হাম্বালী রহি’মাহুল্লাহ তাঁর একটি রিসালাতে উল্লেখ করেছেনঃ ইবরাহীম আত-তাইমী রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “যে ব্যক্তি জীবনে কখনো কোন দুঃখ-কষ্টের সম্মুখীন হয়না তার উচিত এই ভয় করা যে, সে একজন জাহান্নামী। কেননা যারা জান্নাতী হবে তারা বলবে, “যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ কষ্ট দূর করে দিয়েছেন।” সুরা ফাতিরঃ ৩৪। আর যে ব্যক্তি জীবনে কখনো কোন ভয়-ভীতির সম্মুখীন হয়না তার উচিত এই ভয় করা যে, সে জান্নাতী নয়। কেননা যারা জান্নাতী হবে তারা বলবে, “পূর্বে আমরা আমাদের পরিবারে ভয়-ভীতির মধ্যে ছিলাম।” সুরা আত-ত্বুরঃ ২৬। উৎসঃ আল-তাখওয়ীফ মিন আন-নারঃ ১৭।
সাবধান! স্পষ্ট হারাম কাজে জড়িত হয়ে আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করা এবং সাহায্য প্রার্থনা করা এটা আর একটি জাহেলি এবং হারাম কাজের অন্তর্ভুক্ত। কত বড় জাহেল হলে কেউ একজন এমন স্পষ্ট হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা এবং তওবা করার পরিবর্তে, আল্লাহর নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে পারে বরং সেই হারাম কাজে লিপ্ত থাকার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে পারে। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুক। এমন কিছু জাহেলিয়াতের উদাহরণ নীচে দেয়া হলো। ইনশাআল্লাহ। ১! আলহামদুলিল্লাহ! আমার মেয়ে বাংলাদেশী আইডলে চান্স পেয়েছে। ২! "ইনশাআল্লাহ এবার ব্যাংকের জব হয়ে যাবে।" অথবা ভাই দুয়া করবেন ব্যাংক থেকে এবার লোনটা যেন হয়ে যায়। ৩! মাশাআল্লাহ আন্টি আপনার "মেয়ে তো দারুণ নাচতে জানে"। ৪! হ্যাঁ আলহামদুলিল্লাহ "স্কুলের ডান্স প্রতিযোগিতায় সে প্রথম হয়েছে"। ৫! এক ছেলে কলিকের স্ত্রীকে ইঙ্গিত করে ভাবী, আর বইলেন না আপনি যে সুন্দর মাশাআল্লাহ। ৬! ইনশাআল্লাহ এইবার যদি আর্জেন্টিনা ওয়াল্ড কাপ জিতে আমি নামাজ পড়া শুরু করব। ৭! মাশাআল্লাহ আপনার ছেলের গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান দারুণ হয়েছিল - যা ডান্স করেছি জোয়ান বুড়ো সবাই। হ্যা দোয়া করবেন যেন দ্বিতীয় ছেলের বিয়েটাও এমন করে পালন করতে পারি। ৮! ছেলে-মেয়ে মিক্স ফ্রেন্ড সার্কেলকে উদ্দেশ্য করে, আলহামদুলিল্লাহ আমার ফ্রেন্ডসরা খুব হেল্প ফুল। ৯! মাশাআল্লাহ তোমাকে তো এমনিতেই সুন্দর দেখায়, দাড়ি রাখবে কেন? ১০! মাশাআল্লাহ আমার মেয়েটা এত সুন্দরী যে সব মানুষ ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। 

১১! এক আঙ্কেল আমাকে বললেন, "শুনেছ অমুক ভাইয়ের ছেলের তো আল্লাহর রহমতে খ্রিস্টান মিশনারিতে চাকুরি হয়ে গেল, গাড়ি এসে তাকে নিয়ে যায়!

 ❖ কোন স্থানে সালাত আদায় করা নিষেধ? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি হবেঃ ৩। কবরস্থান, মাজার এবং গোসলখানা এই তিন স্থানেই সালাত আদায় করা নিষেধ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, গোরস্থান, গোসলখানা ও অপবিত্র জায়গা ছাড়া সমস্ত জমিনটাই মসজিদ। ঘরেও মসজিদ বানাও।

রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের কিছু নামাজ (অর্থাৎ সুন্নত ও নফল নামাজগুলো) নিজেদের ঘরে পড় এবং (ঘরে ঐসব নামাজ না পড়ে) ঘরটাকে কবরে পরিণত করো না। (বুখারী, মুসলিম, মেশকাত, ৬৯ পৃ.) যায়দ ইবনে সাবেত (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) তাঁর ঘরে নামাজের জন্য একটি খাস হুজরা করে রেখেছিলেন। অনেক লোক তাঁর কাছে আসত এবং তাতে নামাজ পড়ত। তিনি বলেন, ফরজ ছাড়া পুরুষের অন্যান্য সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে পড়া উত্তম। (বুখারী, মুসলিম) ২৬ নভেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ/ রাসেল/মাহমুদ মহানবী (সাঃ) বলেন, “---আর সারা পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ (নামাযের জায়গা) এবং পবিত্রতার উপকরণ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তির নিকট যে কোন স্থানে নামাযের সময় এসে উপস্থিত হবে , সে যেন সেখানেই নামায পড়ে নেয়।” (বুখারী ৪৩৮নং, মুসলিম প্রমুখ) কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সারা পৃথিবীর (সমস্ত জায়গাই) মসজিদ (নামায ও সিজদার স্থান)। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, দারেমী, সুনান, মিশকাত ৭৩৭নং)

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট