আল্লাহর সাথে একটি সুন্দর সম্পর্ক

 


আল্লাহর সাথে একটি সুন্দর সম্পর্ক থাকার আনন্দ পৃথিবীর যে কোনো আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান এবং অতিশয় সুমিষ্ট। আপনার হৃদয়ে যদি এ আনন্দ থেকে থাকে তাহলে দুনিয়ার অন্যান্য সুখগুলো আপনাকে আর সেভাবে আনন্দিত করে না। তাই আপনি চাইবেন অন্তরের সে মান সবসময় বজায় রাখতে।

আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন- اِنَّ الۡاَبۡرَارَ لَفِیۡ نَعِیۡمٍ- "নিশ্চয় সৎকর্মপরায়ণরা থাকবে নানান নেয়ামতের মাঝে।" وَ اِنَّ الۡفُجَّارَ لَفِیۡ جَحِیۡمٍ - یَّصۡلَوۡنَهَا یَوۡمَ الدِّیۡنِ - “আর নিশ্চয় অন্যায়কারীরা থাকবে প্রজ্জ্বলিত আগুনে। কর্মফলের দিন তারা তাতে প্রবেশ করবে।” সূরা আল-ইনফিতার, ১৩-১৫। খেয়াল করে দেখুন, আল্লাহ যখন নেককারগণের কথা বললেন এবং বললেন যে তারা থাকবে নানান নেয়ামতের মাঝে; তিনি এখানে কোনো সময়ের উল্লেখ করেননি। আর যখন মন্দ লোকদের কথা বললেন, তিনি বললেন তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে শেষ বিচারের দিন। এখানে সময়ের উল্লেখ করা হলো। এখান থেকে আমাদের আলেমেরা বলেন, "ইন্নাল আবরারা লাফিই নায়িম" সৎকর্মপরায়ণরা অবিরাম আশীর্বাদে থাকে এ দুনিয়াতে এবং পরকালে। আর মন্দ লোকেরা হয়তো আংশিকভাবে এ দুনিয়া উপভোগ করবে, কিন্তু পরকালে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। আর সৎকর্মপরায়ণরা দুনিয়াও পায় আবার পরকালও পায়। পরকাল উপভোগের পূর্বে তারা এ জগতও উপভোগ করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কুরআনে আরো বলেন- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَجِیۡبُوۡا لِلّٰهِ وَ لِلرَّسُوۡلِ اِذَا دَعَاکُمۡ لِمَا یُحۡیِیۡکُمۡ - "হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দাও; যখন তোমাদেরকে ডাকা হয়, যা তোমাদেরকে জীবন দান করবে।" (৮:২৪) আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও, যখন তাঁরা তোমাদের কিছু করতে বলেন, করো। যখন তাঁরা তোমাদের আসতে বলেন, আসো। এভাবে যখন তোমরা তাঁদের আহ্বানে সাড়া দাও, এই সাড়া প্রদান তোমাদেরকে জীবন দান করবে। এই আয়াতটি দারুণ আকর্ষণীয়। আল্লাহ কি মৃতদের উদ্দেশ্য করে কথা বলছেন? কবর থেকে উঠে আসো তোমাদের আবার জীবন দেওয়া হবে? অন্য আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন- اَوَ مَنۡ کَانَ مَیۡتًا فَاَحۡیَیۡنٰهُ وَ جَعَلۡنَا لَهٗ نُوۡرًا یَّمۡشِیۡ بِهٖ فِی النَّاسِ کَمَنۡ مَّثَلُهٗ فِی الظُّلُمٰتِ لَیۡسَ بِخَارِجٍ مِّنۡهَا - "তাদেরকে ঐ ব্যক্তির উদাহরণ দাও, যে ব্যক্তি মৃত ছিল, তাকে আমি জীবিত করলাম, তার জন্য আলোর ব্যবস্থা করলাম যার সাহায্যে সে মানুষের মাঝে চলাফেরা করে, সে কি তার মত যে অন্ধকারে নিমজ্জিত, যাত্থেকে সে কক্ষনো বেরিয়ে আসতে পারবে না।" (৬:১২২) ইবনে আব্বাস (রা) বলেন- এটি তার উদাহরণ নয়, যে কবরে ছিল এরপর আল্লাহ তাকে জীবিত করে তোলেন। এটি সে ব্যক্তির উদাহরণ যে আল্লাহর ইবাদাত করতো না। এরপর আল্লাহ তাকে আশীর্বাদ করেছেন, হেদায়েত দিয়েছেন আল্লাহর ইবাদাত করার। যে আল্লাহর ইবাদাত করতো না আল্লাহ তাকে মৃত হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। "আওয়ামান কানা মাইতা। " আল্লাহ তাকে মৃত বলছেন। যদিও সে এ পৃথিবীতে হাঁটছে এবং কথা বলছে। আল্লাহ বলেন- فَاَحۡیَیۡنٰهُ -আমি তাকে জীবন দিয়েছি। যদিও সে ফিজিক্যালি মৃত ছিল না। কিন্তু সে আধ্যাত্মিক দিক থেকে, স্পিরিচুয়াল দিক থেকে মৃত ছিল। কুরআনে এ ধারণাটি বার বার উপস্থাপন করা হয়েছে। আধ্যাত্মিক দিক থেকে মৃত বনাম আধ্যাত্মিক দিক থেকে জীবিত। আমাদের অন্তর, আমাদের হৃদয় ধার্মিকতার কদর করে। আমরা যখন আল্লাহর ইবাদাত করি, আমরা যখন আল্লাহর সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকি, আমাদের অন্তর জীবন অনুভব করে। ব্যাপারটা এতোই সোজা। -শায়েখ ইয়াসির কাদি

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট