সবর এবং শোকর।

 


দুটি মূল্যবোধ আপনার ব্যক্তিত্বের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় থাকতে হবে। সেগুলো হলো সবর এবং শোকর। ধৈর্য এবং কৃতজ্ঞতাবোধ। প্র্যাকটিক্যাল্লি বলতে গেলে—মনে করুন, একজন মানুষ জীবনে কঠিন একটি সময় অতিক্রম করছে। সে সময় তার ধৈর্য দরকার। কোন জিনিসটি তাকে ধৈর্য প্রদান করবে? শোকর।

কিভাবে এটি কাজ করে? ধরুন, আমি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লাম। আমার এক হিতাকাঙ্খী এসে বললো, — ধৈর্য ধরো। — আমি জানি ধৈর্য ধরতে হবে। কিন্তু শরীরের ব্যথা তো যাচ্ছে না। কিন্তু সে সময় আমি যদি একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করি। যদি নিজের মন মানসিকতাকে অন্য দিকে ধাবিত করি, জীবনের যে ব্যাপারগুলো এখনো ভালোভাবে চলছে সেগুলোর দিকে মনোযোগ প্রদান করি.... আলহামদুলিল্লাহ, ব্যাপারটা আরো অনেক খারাপ হতে পারতো। আলহামদুলিল্লাহ, এতে নিশ্চয়ই কল্যাণকর কিছু আছে। এভাবে নিজের অন্তরে কৃতজ্ঞতার অনুভূতি জাগ্রত করুন। যখন এভাবে কৃজ্ঞতাবোধে নিজের অন্তর পূর্ণ করে তুলবেন, তখন কোন ব্যাপারটা সহজ হয়ে উঠবে? ধৈর্য ধরা। সবর করাটা তখন অতটা তিক্ত মনে হবে না। অতএব, এ দুটো জিনিস পরস্পর নির্ভরশীল। যেমন, পাখির দুটো ডানা। শুধু একটি দিয়ে কাজ হবে না। আপনার দুটোই দরকার। সবর এবং শোকর। ধৈর্য এবং কৃতজ্ঞতাবোধ। সূরা বাকারার ১৫২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন— فَاذۡکُرُوۡنِیۡۤ اَذۡکُرۡکُمۡ وَ اشۡکُرُوۡا لِیۡ وَ لَا تَکۡفُرُوۡنِ - "কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব এবং আমার শোকর করতে থাক, না-শোকরী করো না।" ঠিক এর পরের আয়াতে তিনি বলেন- یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا اسۡتَعِیۡنُوۡا بِالصَّبۡرِ وَ الصَّلٰوۃِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ مَعَ الصّٰبِرِیۡنَ - "হে মুমিনগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।" প্রথমে বলেছেন শোকরের কথা আর ঠিক পরের আয়াতেই বললেন সবরের কথা। বিষয়টা অত্যন্ত চমৎকার। কুরআনে উপস্থাপিত সমস্ত ধারণাগুলো এভাবে খাপে খাপে মিলে যায়! — নোমান আলী খানের আলোচনা অবলম্বনে — 057. Al-Baqarah (Ayah 152-153) - A Deeper Look
আমরা সবাই জানি এবং সবসময় বলে থাকি— প্রতিটি সফল পুরুষের পেছনে থাকে একজন ভালো নারী। এটা জীবনের বাস্তবতা। সবাই এটা স্বীকার করে নিবেন। পুরুষ পৌরুষপূর্ণ এবং শক্তিশালী ব্যক্তির ভান ধরতে পারে কিন্তু বাস্তবতা হলো তাদের জীবনে প্রেমময়ী এবং প্রেরণাদানকারী একজন নারীর দরকার হয়। এ বাস্তবতার আলোকেই আল্লাহ পুরুষ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আমরা আমাদের সৃষ্টিগত প্রকৃতি থেকে পালাতে পারবো না। বাহিরের দুনিয়ার কাছে তারা 'তাদের কোনকিছুর দরকার নেই' এরকম একটি ব্যক্তিত্বের ভান ধরতে পারে, কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে তাদের একজন প্রেমময়ী স্ত্রীর স্বাচ্ছন্দ্য এবং সমর্থন আবশ্যক হয়ে পড়ে। আমাদের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য আল্লাহ তায়ালা হজরত খাদিজা (রা)কে পছন্দ করেছেন সেই প্রেমময়ী এবং সান্ত্বনাকারী স্ত্রী হিসেবে। হজরত খাদিজার আশীর্বাদ বর্ণনা করে শেষ করার মত নয়। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ঈমান আনেন। ওহী অবতীর্ণ হওয়ার একেবারে শুরু থেকেই তিনি আল্লাহর রাসূলকে স্বান্তনা দিতে থাকেন। তিনিই প্রথমে রাসূলুল্লাহকে ওরাকা ইবনে নওফেলের কাছে নিয়ে যান। জিব্রিল (আ) খাদিজার ঘরে প্রবেশ করতেন। একদিন জিব্রিল (আ) হজরত খাদিজার জন্যে আল্লাহ তায়ালার সালাম নিয়ে আসেন। রাসূলুল্লাহ (স) নিজেই বলেছেন—আল্লাহ তায়ালা খাদিজার চেয়ে উত্তম স্ত্রী আমাকে দান করেননি। সেই প্রথম আমাকে বিশ্বাস করে যখন সবাই আমাকে অবিশ্বাস করেছিল। সেই আমাকে তার অর্থ সম্পদ দিয়েছিলো যখন সবাই আমাকে পরিত্যাগ করেছিল। যখন সমগ্র মক্কা আমার বিরোধীতা করেছিল সেই আমাকে সমর্থন দিয়েছিলো। আর আল্লাহ তায়ালা তাঁর মাধ্যমে আমাকে সন্তান দান করেছেন। -- শায়েখ ইয়াসির কাদির আলোচনা অবলম্বনে -- Seerah of Prophet Muhammed 9 - Marriage to Khadija & Re-building Kaa'ba - Yasir Qadhi | Sept 2011

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট