কঠিন সময়ে আল্লাহর দ্বীন আঁকড়ে ধরে থাকলে...
কঠিন সময়ে আল্লাহর দ্বীন আঁকড়ে ধরে থাকলে কি অতিরিক্ত কোনো পুরস্কার পাওয়া যাবে? ড. ইয়াসির: অবশ্যই যাবে। অবশ্যই সে অতিরিক্ত পুরস্কার পাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বলেছেন, অর্থাৎ সাহাবাদের বলেছেন- "এমন এক সময় আসবে যখন একজনের ধর্ম বিশ্বাসে অটুট থাকাটা এমন কঠিন হবে যেন সে তার হাতে জ্বলন্ত কয়লা ধরে রেখেছে। যে এটা করতে পারবে সে তোমাদের পঞ্চাশ জনের সমান পুরস্কার পাবে।" এটা শুনে সাহাবারাও অবাক হয়ে গেলেন! তারা বললেন- "আপনি বুঝিয়েছেন তাদের পঞ্চাশ জনের সমান?" তিনি বললেন- "না। তোমাদের পঞ্চাশ জনের সমান।" আমি বলছি না যে, এ পুরস্কার আমাদের সময়ের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু এখান থেকে কী শিক্ষা পাচ্ছেন? কঠিন সময়ে আল্লাহর দ্বীন মেনে চললে অগণিত অগণিত পরিমাণে বেশি পুরস্কার পাওয়া যাবে। মুসনাদে ইমাম আহমদের একটি হাদিস। আমাদের রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- "বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য এবং ফিতনার সময়ে আল্লাহর ইবাদাত করা আমার দিকে হিজরত করার মত।" আর আপনি ঠিক এটাই করছেন। আপনি সব নোংরামি এবং ফিতনা প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহর দিকে ফিরছেন। অতএব, পরিষ্কার রূপেই আমরা দেখতে পাচ্ছি- যে ব্যক্তি কঠিন যে কোনো পরিস্থিতিতে আল্লাহর বিধান মেনে চলবে এবং তাঁর ইবাদাত করবে সে অবশ্যই তার চেয়ে অনেক বেশি পুরস্কার পাবে যে সহজ সময়ে আল্লাহর ইবাদাত করে। --------------- * ----------------- [আর যারা আল্লাহর আনুগত্যের শৃঙ্খল ইচ্ছে করে গলায় পরবে না, জাহান্নামে তাদেরকে আসল শেকল পরানো হবে। সূরা গাফিরে এসেছে- اِذِ الۡاَغۡلٰلُ فِیۡۤ اَعۡنَاقِهِمۡ وَ السَّلٰسِلُ ؕ یُسۡحَبُوۡنَ - "যখন তাদের গলদেশে বেড়ী ও শিকল থাকবে, তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে।" فِی الۡحَمِیۡمِ ۬ۙ ثُمَّ فِی النَّارِ یُسۡجَرُوۡنَ - "ফুটন্ত পানিতে, অতঃপর তাদেরকে আগুনে পোড়ানো হবে।" এই হাদিসটি তো আমরা সবাই জানি- "দুনিয়া মুমিনের জন্য জেলখানা এবং কাফিরের জন্য জান্নাত।"]
শয়তানের প্রধান আকাঙ্ক্ষা হলো মানুষ যেন জাহান্নামে যায়। তারা যেন কখনো জান্নাতে প্রবেশ করতে না পারে। আর সে জানে এর জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো তাদের জামাকাপড় খুলে নেওয়া।
শুধু তাদের জামাকাপড় খুলে নাও, বাকিটা অটোমেটিক। এরপরের সবকিছুই অটো পাইলট। তারা নিজেরাই নিজেদেরকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। আমাকে কিছু করতে হবে না।
তাই তার একমাত্র চাকরি হলো মানুষকে দিয়ে নিজেদের জামাকাপড় খুলে নেওয়া। এটা তার এক নাম্বার কৌশল। সে এই কৌশলটা মানবজাতির প্রথম দুইজনের উপর ব্যবহার করেছিল। এভাবেই তার মিশনের যাত্রা শুরু।
এজন্যই আল্লাহ বলেছেন অশ্লীলতার কাছেও যেও না। জেনার নিকটেও যেও না। রাসূলুল্লাহর সিরাহ থেকেও আমরা জানি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম), একেবারে প্রথম দিকের মুসলমানদেরকেও তিনি এই আদেশ দান করেছিলেন।
এজন্য দেখা যায়, কোরআনে আল্লাহ আমাদের বলেছেন যদি তোমরা কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকো আমি তোমাদের সগিরা গুনাহগুলো মাফ করে দেব এবং তোমাদের জান্নাতে প্রবেশ করাবো। এক আয়াতে তিনি অশ্লীলতার ব্যাপারটাও এর সাথে জুড়ে দেন। আমরা জানি জানি বড় গুনাহের মধ্যে অশ্লীল কার্যকলাপও অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু তিনি অশ্লীলতাকে আলাদাভাবে হাইলাইট করলেন। তিনি বলেন— "যারা বিরত থাকে বড় বড় পাপ আর অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে ছোট খাট দোষ-ত্রুটি ছাড়া; বস্তুতঃ তোমার প্রতিপালক ক্ষমা করার ব্যাপারে অতি প্রশস্ত।" (সূরা আন নাজম, আয়াত 32)
সুতরাং যেনা ব্যভিচার এবং অশ্লীলতা থেকে বিরত থাকা ছাড়া দীনের পথে অগ্রগতি লাভ করা অসম্ভব।
—নোমান আলী খানের আলোচনা অবলম্বনে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন