নামাজ পড়তে যদি অলসতা লাগে

 


কখনো নামাজ পড়তে যদি অলসতা লাগে তাহলে এ কয়েকটি আয়াতের কথা স্মরণ করুন। আখিরাত সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য আল্লাহ এমন ধরণের ক্রিয়াপদ ব্যবহার করেছেন যা শুনেই আপনার হার্ট বিট বেড়ে যায়, হিম্মত বেড়ে যায়, কাল্পনিক শক্তি বেড়ে যায়, ঈমান বেড়ে যায়। আপনি কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেন।

১. فَاسۡعَوۡا اِلٰی ذِکۡرِ اللّٰهِ - আল্লাহর স্মরণের দিকে শীঘ্র ধাবিত হও।" (৬২:৯) ২. وَ سَارِعُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ جَنَّۃٍ عَرۡضُهَا السَّمٰوٰتُ وَ الۡاَرۡضُ ۙ اُعِدَّتۡ لِلۡمُتَّقِیۡنَ - তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমার দিকে ও সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি হচ্ছে আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরী করা হয়েছে। (৩:১৩৩) ৩. سَابِقُوۡۤا اِلٰی مَغۡفِرَۃٍ مِّنۡ رَّبِّکُمۡ وَ جَنَّۃٍ عَرۡضُهَا کَعَرۡضِ السَّمَآءِ وَ الۡاَرۡضِ - তোমরা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হও, যার প্রশস্ততা আসমান ও যমীনের প্রশস্ততার মত। (৫৭:২১) ৪. فَاسۡتَبِقُوا الۡخَیۡرٰتِ ؕ - "সওয়াবের কাজে তোমরা প্রতিযোগিতা করো।" (২:১৪৮) যখন সৎ কাজের কথা আসে তখন এমনভাবে ধাবমান হও যেনো তুমি সমগ্র মানব জাতির মধ্যে এক নম্বর হতে চাও। তোমার নিজের জীবনে, তোমার দিনের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফাসতাবিকু। তুমি নাম্বার ওয়ান হতে চাও। তোমার দ্বারা যত বেশি ভালো কাজ করা সম্ভব ক্ষিপ্রতার সাথে করতে থাকো। চারটি ভার্ব - ফাসআও (শীঘ্র ধাবিত হও), সা-রিউ (দ্রুত অগ্রসর হও), সা-বিকু (প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হও), ফাসতাবিকু (প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হও)। 'সাবাকার' সর্বোচ্চ ভার্সন হলো 'ফাসতাবাকা'। এরপর দ্রুত উঠে পড়ুন। ওযু করুন। আর মসজিদের দিকে হাঁটা শুরু করুন। অথবা বাসায় পড়লে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়া শুরু করুন। এভাবেই কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে শয়তানকে পরাজিত করুন।
আল্লাহ আমাকে আপনাকে একটি সহজ জীবন অতিবাহিত করার জন্য এ দুনিয়াতে রাখেননি। আল্লাহ আমাদের এ দুনিয়াতে রেখেছেন একটি পরীক্ষায় পাশ করার জন্য। আমাদের প্রত্যেকের পরীক্ষাটা ইউনিক। আপনার পরীক্ষাটা সম্পূর্ণ পৃথকভাবে শুধু আপনারই জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন— لِّيَبْلُوَكُمْ فِي مَا آتَاكُمْ - "...আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি ওগুলোর মাধ্যমে তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য..."। (৬:১৬৫) প্রতিটি ব্যক্তির পরীক্ষা অনুপম, স্বতন্ত্র এবং শুধুই ঐ ব্যক্তির জন্য বানানো হয়েছে (custom-made)। নিজের পরীক্ষাটা বুঝতে পারার পর এ পরীক্ষায় পাস করার জন্য সবকিছু উৎসর্গ করে দিন। এই পরীক্ষায় পাস করার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছুর অস্তিত্ব নেই। কারণ শেষ বিচারের দিন মানুষ এতোটাই মরিয়া হয়ে উঠবে যে— "সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি পণস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে, তার স্ত্রীকে, তার ভ্রাতাকে, তার গোষ্ঠীকে যারা তাকে আশ্রয় দিত এবং পৃথিবীর সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে।" সূরা মা'আরিজ। তাই, নিজের জীবন এনালাইসিস করে বুঝতে চেষ্টা করুন যে, আমাকে কিভাবে পরীক্ষা করা হচ্ছে। এটা কি হারাম টাকা? কোনো মেয়ে? হারাম সম্পর্ক? বিপদাপদ? অসুখ-বিসুখ? যদি হারাম কিছু হয় তাহলে এটা থেকে হিজরত করুন। বহুদূর পালিয়ে যান। কারণ, শেষ বিচারের দিন আপনার অবস্থা যেন সে ব্যক্তির মত না হয় যে আফসুস করে বলবে- "যদি মন্দ কাজ ও তার মধ্যে বহুদূর ব্যবধান হত!" (৩:৩০) যদি পাপ থেকে হিজরত করতে পারেন এবং এরপর উত্তম আমল করেন তাহলে আল্লাহ আপনার পাপগুলোকে পুণ্যে রূপান্তরিত করে দিবেন। আর যদি কষ্টকর কিছু হয় তাহলে ধৈর্য ধরুন। ধৈর্য যে শুধু আপনাকে শাস্তি থেকে বাঁচাবে তা নয়, ধৈর্য আপনাকে জান্নাতে প্রবেশকারীদের একেবারে প্রথম দিকে নিয়ে আসবে এবং জান্নাতে প্রবেশের আটটি দরজার সবগুলো আপনার জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়বে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে