ধর্ম প্রচারকদের তিনটি প্রতারণার কাহিনী
ধর্ম প্রচারকদের তিনটি প্রতারণার কাহিনী
------------- * ------------ইসলামের দিকে দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বিষয় বুঝুন। প্রথম যাকে দাওয়াত দিবেন সে হলো আপনি নিজে। যদি নিজেকে সম্ভবোধন করতে না পারেন, এ দাওয়াত কোনোদিন কাজ করবে না। কুরআন বলছে- নিজে যা করো না তা অন্যদের করতে বলো কেন? এখান থেকে কোনো বারাকাহ আসবে না। আপনি কেমন মানুষ তা বুঝতে পারা মাত্র মানুষ আপনাকে আর বিশ্বাস করবে না। আল্লাহ তো কোনোভাবেই আপনাকে বিশ্বাস করেন না। যদি সত্যিই বিশ্বাস করেন আমি নামাজ না পড়লে আমাকে দোজখে যেতে হবে, তাহলে সবার আগে তো আপনার নামাজ পড়ার কথা। যদি না পড়েন, মুখে যাই বলেন না কেন, আপনি আসলে ইসলামে বিশ্বাস করেন না। আপনি জাস্ট মানুষকে দেখাচ্ছেন। নিজে না মানলে কোনো দাওয়াত নেই। মানুষকে বুঝতে হবে- সবার আগে আমার জীবন। কুরআন বলেছে- "নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।" আগে তুমি নিজে এবং তোমার পরিবার। তারপরে গিয়ে অন্যান্য মানুষেরা। "আমি নিজের পরিবারকে শেখাই না, আমি অন্য সবাইকে শেখাই।" এর নাম ব্যবসা। মানুষ সমাজে নিজের পজিশন বা টাকার জন্য এটা করে। বা অন্য কোনো কারণে। এ কারণে সকল নবীরা বলে গেছেন- আনা আওয়ালুল মু'মিনিন। আমিই প্রথম ঈমানদার। আওয়ালুল মুসলিমিন। প্রথম মুসলিম আমি। আমি যে কাজের দিকেই আহ্বান করি না কেন, সবার প্রথমে আমি তা করি। আমি যার দিকেই মানুষকে ঈমান আনতে আহ্বান করি, সবার আগে আমি তাতে ঈমান আনি। ধর্ম প্রচারকদের হতে হবে এক নম্বর মান্যকারী। তারা যদি মান্য করার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় হয়, এই প্রচার কোনোদিন কাজ করবে না। এটা অন্যতম একটি কারণ, যার কারণে এতো বেশি প্রচার প্রসারণা সত্ত্বেও আশানুরূপ ফল আসছে না। আমার এক ছাত্র আমাকে জানালো। তার এক ধর্ম প্রচারক বন্ধু তার ঘরে বাস করে। ভাবলাম, আচ্ছা এটা তো বিরাট কোনো ব্যাপার না। এরকম তো অহরহ ঘটে। কিন্তু সে প্রচারক বন্ধুর রয়েছে তিন তিনটি বউ। আমি অবাক হয়ে বললাম কিভাবে সম্ভব তিন বউ আর সে তোমার বাসায় থাকে? বললো, না। সব স্ত্রীরা নিজেদের খরচ নিজেরা চালায়। সবাই নিজের মত করে থাকে। বললাম, তার যদি কোনো ইনকাম না থাকে কিভাবে সে তাদের খরচ চালায়? সে বললো- সে তাদেরকে যা পারে এক দুই পাউন্ড দেয়। আচ্ছা এখন আমাকে বলুন। এ ধরণের ধর্ম প্রচারকেরা কী প্রচার করবে? তিন স্ত্রী; তোমার নিজের কোনো ঘর বাড়ি নেই। তুমি মানুষের কাছে কী প্রচার করবে। আল্লাহ কি তোমার কাছ থেকে এটা চান? এমন মানুষের ধর্ম প্রচার কি দুনিয়ার কোত্থাও কাজ করবে? এগুলো করে কি তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে? সব প্রতারণা। আরেক ঘটনা। আমার এক ছাত্রী এসে বললো- এক ব্যক্তি তাকে বিয়ে করতে চায়। আমি তখন বললাম, সে যদি তোমাকে বাসা দিতে পারে তোমার খরচ চালাতে পারে তাহলে যাও বিয়ে করো। ছাত্রী বললো- না, না, না। সে খুবই ভালো একজন মানুষ। ভালো একজন ধর্ম প্রচারক। খুবই বিখ্যাত। সে বলেছে- "চিন্তা করো না। তুমি আমাকে বিয়ে করো। শেষে আমি সব তোমাকে দিবো। আমার কাছে এখন টাকা নেই।" বিয়ের পর লম্বা একটি সময় পার হওয়ার পরে ঐ ছাত্রী আমাকে এসে বললো- সে আমাকে থাকা খাওয়ার কোনো জায়গা প্রদান করেননি। কোনো খরচ প্রদান করেনি। জিজ্ঞেস করলাম- কীভাবে কি করো? সে বললো- আমি আমার পিতা-মাতার সাথে বাস করি। আর যখন রাত কাটাতে চাই, সে তখন কোনো একটি হোটেলে একটি রুম ভাড়া নেয়। এভাবে এক দু রাত কাটানোর পর আবার যার যার জায়গায় ফিরে যাই। আমাকে বলুন, এ ধরণের ধর্ম প্রচার কি সমাজে কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে? এ ধরণের ধর্ম প্রচার কি কোনোদিন কাজ করবে? এর নাম কি ইসলাম? মানুষ যদি জানতে পারে তারা ইসলাম ত্যাগ করবে। এ ধরণের মানুষেরা ধর্মকে মন্দ নাম দেয়। সকল ধর্ম তাদের প্রচারকদের দ্বারা দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এ জন্য আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ইয়াহুদী আলেমদের এতো বেশি সমালোচনা করেছেন। তারা মানুষকে আদেশ করতো কিন্তু নিজেরা পালন করতো না। কুরআন বলছে- তোমরা মানুষকে ভালো হতে আদেশ করো আর নিজের কথা ভুলে যাও!! এটা আসলে কোনোদিন কাজ করে না। আপনার এই ভালো ভালো কাজের আদেশ কোনো কাজে আসবে না। আরেক মুসলিম মেয়ে আমাকে বলেছে, ইংল্যান্ডের এক বিখ্যাত মাদ্রাসার এক শিক্ষক তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। "আমি তোমাকে বিয়ে করবো কিন্তু তোমাকে এটা শুরুর দিকে সিক্রেট রাখতে হবে। পরে আমি এটা প্রকাশ করবো।" তো মেয়েটি তাকে বিশ্বাস করলো। লোকটি তাকে গোপন কোনো এক বাসায় রাখলো। এক মাস সময় কাটানোর পরে সে তাকে সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করলো। আর কোনো যোগাযোগ নেই। এ বিষয়টা নিয়ে পরে আমি একটি আর্টিকল লিখেছি। যে কেউ যদি বিয়ে সিক্রেট রাখতে চায়, তাকে বিয়ে করো না। ইসলামে বিয়ের কথা তো সবার জানার কথা। বিয়ে এমন কিছু যা প্রকাশ্যে হয়। যদি সে সিক্রেট রাখতে চায়, তারমানে তোমার সাথে সংসার করার তার কোনো ইচ্ছেই নেই। এর মানে কোনটা সঠিক কোনটা ভুল সে তা জানে না। কারণ, বিয়ে কিভাবে গোপন হয়! বিয়ের পর তো তোমার ছেলে মেয়ে হবে। কিভাবে এটা গোপন থাকবে! আর গোপন বিয়ে সবার আগে মেয়েদের ক্ষতি করে। পুরুষ যত ভালো ভালো কথাই বলুক না কেন মেয়েদের কখনোই গোপন বিয়েতে সম্মতি দেওয়া উচিত নয়। এরকম বিয়ের চেয়ে বিয়ে না করা উত্তম। এটা অপমানকর। বাসা দিতে পারবে না, খরচ দিতে পারবে না। কোনো বিয়ে হবে না। - ড. আকরাম নদভী - SurahYasinPart2 - deepdeen tv
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন