হারুত-মারুত কারা

 



হারুত ও মারুত দুই ফেরেশতার নাম। নবী সোলায়মান (আ.)–এর সময়ে ওই দুই ফেরেশতা বাবেল শহরে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। হারুত–মারুত কিছু লোককে জাদু শিখিয়েছিলেন। শেখানোর শর্ত ছিল, সেই জাদু কারও ওপর প্রয়োগ করা যাবে না। জাদুবিদ্যা যে আসলে মন্দ, সবাইকে এটা শেখানোর জন্যই তাঁরা এসেছিলেন। নবীরা মুজিজা দেখান। মুজিজা জাদু নয়।

কোরআনে সুরা বাকারায় আছে ‘আর সোলায়মানের রাজত্বে শয়তানেরা যা আওড়াত তারা (সাবাবাসীরা) তা মেনে চলত। সোলায়মান অবিশ্বাস করেনি, বরং শয়তানেরাই অবিশ্বাস করেছিল। তারা মানুষকে শিক্ষা দিত (সেই) জাদু যা বাবেল শহরের দুই ফেরেশতা হারুত ও মারুতের ওপর অবতীর্ণ হয়েছিল । তাই ‘আমরা তো (তোমাদের জন্য) ফিতনা (পরীক্ষাস্বরূপ)। তোমরা অবিশ্বাস কোরো না’—এই না বলে তারা কোনো মানুষকে শিক্ষা দিত না। এ-দুজনের কাছ থেকে তারা এখন বিষয় শিক্ষা করত, যা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাতে পারত, তবু আল্লাহর নির্দেশ ছড়া কারও কোনো ক্ষতি তারা করতে পারত না। তারা যা শিক্ষা করত তা তাদের ক্ষতিসাধনই করত, আর কোনো উপকারে আসত না। আর তারা ভালো করেই জানত যে যে-কেউ তা কিনবে পরকালে তার কোনো অংশ নেই । আর যদি তারা জানত, তারা যার বিনিময়ে নিজেদের বিক্রি করেছিল তা কত নিকৃষ্ট! আর তারা যদি বিশ্বাস করত ও আল্লাহকে ভয় করত তবে নিশ্চয় তারা আল্লাহ কাছে ভালো পুরস্কারই পেত, জানত। যদি তারা জানত।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১০২-৩)

হারুত–মারুতের কাহিনি নিয়ে কোনো বর্ণনা কোরআন–হাদিসে নেই। ইবনে কাসির তফসির লিখতে গিয়ে মন্তব্য করেন, এ ঘটনাগুলো সম্ভবত ইসরায়েলি কাহিনি থেকে এসেছে।

‘পাপ’ কবিতায় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন:

কহিলেন বিভু—তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ যে দুইজন

যাক পৃথিবীতে, দেখুক কি ঘোর ধরণীর প্রলোভন!

হারুত মারুত ফেরেশতাদের গৌরব রবি-শশী

ধরার ধুলার অংশী হইল মানবের গৃহে পশি।

কায়ায় কায়ায় মায়া বুলে হেথা ছায়ায় ছায়ায় ফাঁদ,

কমল-দীঘিতে সাতশ হয়েছে এই আকাশের চাঁদ!’

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

অচেনা লোক আর বাগানের মালিকের ঘটনা


হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বরাতে একটি হাদিসের বর্ণনা আছে। তিনি মহানবী (সা.)-এর কাছে ঘটনাটি শুনেছিলেন।

একদিন এক লোক কোনো এক মরুপ্রান্তরে সফর করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ মেঘ থেকে তিনি একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। কণ্ঠটি বলছে, অমুকের বাগানে পানি দাও। তারপর মেঘখণ্ডটি সরে যেতে শুরু করল।

ওই জমিতে এরপর বৃষ্টি হলো। বৃষ্টিতে ওখানকার একটি নালা পানিতে পূর্ণ হয়ে গেল। বাগানের মালিক সেদিকে যাওয়ার সময় দেখতে পেলেন, একজন লোক কোদাল দিয়ে সেই পানি বাগানের নানা দিকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বাগানের মালিককে দেখে লোকটি বললেন, ‘হে আল্লাহর বান্দা! তোমার নাম কী?’

বাগানের মালিক বললেন, তাঁর নাম অমুক। এ নামই লোকটি মেঘখণ্ড থেকে শুনতে পেয়েছিলেন।

মালিক তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার নাম জানতে চাইলে কেন?’

উত্তরে লোকটি বললেন, ‘যে মেঘ থেকে এই পানি ঝরেছে, তার মধ্য থেকে আমি একটি আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলাম। আওয়াজটি তোমার নাম নিয়ে বলেছে, অমুকের বাগানে পানি দাও।’

এরপর লোকটি আরও বললেন, ‘তুমি এ বাগান নিয়ে কী করো?’

মালিক বললেন, ‘তুমি জিজ্ঞেস করছ বলে বলছি। প্রথমে আমি এ বাগানে উৎপাদিত ফসলের হিসাব করি। তার তিন ভাগের এক ভাগ সদকা করি, এক ভাগ আমার ও আমার পরিবার-পরিজনের জন্য রাখি এবং আরেক ভাগ বাগানের উন্নয়নের জন্য খরচ করি।’ (মুসলিম, হাদিস: ২৯৮৪)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে