নৈতিকতা রক্ষার সর্বশেষ দূ্র্গ

 


নৈতিকতা রক্ষার সর্বশেষ দূ্র্গ (১ম পর্ব)

------------------ * ----------------- একশো বছর আগেও আমেরিকাতে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ বিয়ের আগে কোনো শারীরিক সম্পর্কে জড়াতো না। আর এখন ৯৫ শতাংশ মানুষ বিয়ের আগেই শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তাহলে বিয়ের গুরুত্ব আর থাকলো কোথায়!! একশো বছর পূর্বে ৯০ শতাংশ মেয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। আর এখন ৫০ শতাংশের চেয়েও কম মানুষ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ আছে। আমেরিকার অধিকাংশ মানুষ এখন একা থাকে। সমগ্র পারিবারিক ব্যবস্থাপনা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে, নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। আমরা আর কতকাল আমাদের মুখ বন্ধ করে রাখবো। আর কতকাল আমরা এসব নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পাবো। আমরা কিসের অপেক্ষায় আছি? এমনকি আমাদের মুসলিম ভাই বোনেরাও এখন বৈবাহিক সম্পর্কে যুক্ত থাকতে হিমশিম খাচ্ছে। আমাদের মুসলিম সমাজেই বৈবাহিক বিচ্ছেদ এখন আকাশচুম্বী। বহু উচ্চ শিক্ষিত, যোগ্যতাসম্পন্ন মুসলিম বোনেরা নিজেদের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন, ধার্মিক, ভদ্র স্বামী খুঁজে পাচ্ছে না। এর অন্যতম বড় কারণ হলো আমরা নারী পুরুষের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে ফেলেছি। নারীদের স্বাধীন করার ছদ্মবেশে, নারীত্বের সংজ্ঞা পুনঃনির্ধারণের ছদ্মবেশে নারীবাদের নির্দিষ্ট কিছু শাখা এবং ব্যাখ্যা সুস্থ নারীত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। যে নারীত্ব স্বর্গীয়, "মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত" এই এক বাক্যেই যে নারীত্বের পবিত্র রূপ আমাদের সামনে ভেসে উঠতো; নারীত্বের সে রূপকে আজ চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে। আমরা যে ছোট বেলা থেকেই জেনে এসেছি মায়ের স্পেশাল মর্যাদা রয়েছে, এর কারণ আছে। যখন মা হওয়াকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন, যখন মা হওয়াকে সেকেলে মনে করেন এবং বলেন যে এটা নারীর ডিফল্ট অবস্থা নয়; বলেন নারীর ডিফল্ট অবস্থা হলো তাকে পুরুষের মতো হতে হবে। আরো বলেন, পুরুষকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মাঝেই নারীত্বের আসল রূপ প্রস্ফুটিত হয়। উপস্থাপন করেন যে, নারীত্ব এবং পুরুষত্বের মাঝে একটি প্রতিযোগিতা চলছে। যখন আপনি এমন মতবাদ নিয়ে আসেন এবং শত বছর যাবৎ তা সমাজে চালু রাখেন; এখন দেখুন এর ধ্বংসযজ্ঞ। এখন সমাজের অবস্থা দেখুন। এখন দেখুন সংসারী নারী, সংসারী পুরুষ হওয়ার কি আর অবশিষ্ট আছে। সত্যি বলতে আমরা মুসলিমরাই পৃথিবীতে নৈতিকতা রক্ষা করার সর্বশেষ দুর্গ। অন্য সব আব্রাহামিক ধর্মগুলো লিবারালিজমের তীব্র স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। এ বন্যা রোধ করার কোনো চেষ্টাই তারা করছে না। সবাই এর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। আমরাও যদি আত্মসমর্পণ করি তাহলে মানবতার আর কিছুই বাকি থাকবে না। —ডক্টর ইয়াসির কাদি

নারীরা জান্নাতি হুরদের চেয়ে বহুগুণে বেশি সুন্দরী হবে। তাদের জন্য তাদের স্বামীদের থাকবে নিখুঁত এবং খাঁটি ভালোবাসা। হুরেরা হলো জান্নাতের একটি নেয়ামত। কিন্তু সঙ্গ এবং বন্ধুত্ব হবে স্ত্রীর সাথে। আল্লাহ হুরদের ব্যাপারে বলেননি যে, তারা মূল্যবান আসনে হেলান দিয়ে পানীয় পান করবে এবং আলাপচারিতায় মশগুল থাকবে। এটা হবে স্ত্রীদের জন্য। আমাদের স্কলাররা বলেছেন, জান্নাতের নারীরা জান্নাতী হুরদের চেয়ে অসীমভাবে বেশি রূপবতী হবে। কারণ, নারীদেরকে জান্নাত উপহার দেওয়া হবে। আর হুরেরা হলো জান্নাতের একটি নেয়ামত। উভয়টার মাঝে কোনো তুলনা চলে না। সুবহানাল্লাহ! এই পৃথিবীতে অনেক সময় বিয়ে সুখের হয় না। হয়তো দুজনেই ধার্মিক। তবু দাম্পত্য জীবন সুখের হয় না। কিন্তু উভয়ে যদি জান্নাতে যেতে পারেন আপনারা সেখানে সুখী হবেন। ঝগড়াবিহীন নিখুঁত ভালোবাসার জীবন হবে জান্নাতে। তাই যদি এই দুনিয়াতে আপনার পার্টনারের সাথে পুরোপুরি মানিয়ে চলতে না পারেন, চিন্তা করবেন না, যদি উভয়ে ধার্মিক হয়ে থাকেন এবং বিয়ের বন্ধনে যুক্ত থাকেন, আল্লাহ বলছেন- 'উদখুলুল জান্নাতা আনতুম ওয়া আজওয়াজুকুম তুহবারুন।' তোমরা এবং তোমাদের সহধর্মিনীগণ জান্নাতে প্রবেশ কর একত্রে সুখে থাকার জন্য। দুনিয়ার রূপকথার গল্পে আমরা পড়ে থাকি, এরপর দুইজন সুখে শান্তিতে বসবাস করতে থাকলো। দুনিয়াতে এটা রূপকথা। যা কখনো ঘটে না। কিন্তু জান্নাতে এটি বাস্তবতা। আপনার স্বামী/স্ত্রী আপনার সুখের উৎসে পরিণত হবে। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা আপনার স্ত্রীকে পুনরায় নতুন করে সৃষ্টি করবেন। এটা সূরা ওয়াকিয়ায় পরিষ্কারভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন- اِنَّاۤ اَنۡشَاۡنٰهُنَّ اِنۡشَآءً - "তাদেরকে আমি সৃষ্টি করবো এক অভিনব সৃষ্টিতে।" এরপর কী করবো? فَجَعَلۡنٰهُنَّ اَبۡکَارًا - عُرُبًا اَتۡرَابًا - "অতঃপর তাদেরকে বানাব কুমারী, সোহাগিনী ও সমবয়সী।" 'উরুবান' অর্থ: সোহাগিনী, ভালোবাসায় পূর্ণ। দুনিয়ার বিয়ে কখনো কখনো ভালোবাসা নির্ভর হয় না। মাঝে মাঝে কটু কথা শুনতে হয়। কঠোরতা দেখা যায়। কিন্তু, জান্নাতের পার্টনার হবে উরুব। অর্থাৎ, স্বামী স্ত্রীর পরস্পরের জন্য থাকবে নিখুঁত ভালোবাসা। এবং তাদেরকে পুনরায় নিখুঁতভাবে সৃষ্টি করা হবে। 'আতরাবা' মানে সমবয়সী। —ড. ইয়াসির কাদি

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট