ভালো কাজ

 

মানুষ বিভিন্ন ধরণের পুণ্যের কাজ করে থাকে। কারো পক্ষেই সকল ভালো কাজ সমানভাবে করা সম্ভব নয়। কিছু মানুষ রোজা পালনে দক্ষ। এটা তাদের প্রধান সওয়াবের কাজ। অন্য কেউ হয়তো দান-সদকার কাজে উত্তম। এটাই তার প্রধান ভালো কাজ। এভাবে যার যে ধরণের পুণ্যের কাজের প্রতি ঝোঁক বেশি, সে ঐ কাজ বেশি বেশি করে বা ঐ কাজে সে বেশি দক্ষ। তার আমলনামায় ঐ ভালো কাজের পরিমাণ বেশি।

তাই, যে ভালো কাজ আল্লাহ আপনার জন্য সহজ করে দিয়েছেন এবং আপনার কাছে অতিশয় মূল্যবান মনে হয়, যত বেশি পারেন তা করতে থাকুন। এটাকে আপনার প্রধান অভ্যাসে পরিণত করুন। কেন? কারণ, আপনাকে জান্নাত দেওয়া হবে আপনার ঐ কাজের উপর ভিত্তি করে যে কাজটা আপনি খুবই আগ্রহ সহকারে বারবার করতেন। সবকিছু উজাড় করে যা করতেন। যেটা আপনি সবচেয়ে বেশি সংখ্যকবার করেছেন। যে কাজটা নিয়মিত করতেন। জান্নাতে প্রবেশের আটটি দরজা আছে। আটটি ক্যাটাগরি আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি অন্তত একটিতে খুব ভালো করেন, ইনশাআল্লাহু তায়ালা ঐ দরজাগুলোর একটি আপনাকে প্রবেশ করার আহ্বান জানাবে। এমন অনেক মানুষ থাকবে যাদেরকে দুইটি দরজা আহ্বান করবে। সে তখন পছন্দ করতে পারবে কোনটা দিয়ে সে প্রবেশ করবে। কাউকে তিনটি, কাউকে চারটি এভাবে কাউকে কাউকে আটটির সবগুলো নাম ধরে আহ্বান করবে। তাই আল্লাহ আপনার জন্য যে নেক আমলটা সহজ করে দিয়েছেন বা যা করলে আপনার অন্তর পরিতৃপ্ত হয়ে ওঠে সেটা বারবার করুন। বেশি বেশি করুন। দেখুন, সাহাবাদের মধ্যেও স্পেশালিটি ছিল। খালিদ বিন ওয়ালিদ রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ছিলেন যুদ্ধে পারদর্শী, ইবনে আব্বাস ছিলেন কুরআনের স্কলার, আবু হুরায়রা ছিলেন হাদিসের স্কলার এভাবে বিভিন্ন জন বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শী ছিলেন। তাই আল্লাহ যে কাজ করার সুযোগ আপনার সামনে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করুন। সেরাদের সেরা হওয়ার চেষ্টা করুন। হতে পারে আল্লাহ আপনার জন্য কুরআন শেখা সহজ করে দিয়েছেন; তাই কুরআন শিখুন, কুরআন শেখান। কারো জন্য হয়তো মানুষের সেবা সহজ করে দিয়েছেন, মানুষের সেবা করুন আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায়। আপনাদের কেউ হয়তো ডাক্তার, কেউ হয়তো ইঞ্জিনিয়ার—আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায়, পরকালে আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কারের আশায় নিজের যোগ্যতা মানুষের সেবায় এবং উম্মার কল্যাণে ব্যয় করুন। ভালো ব্যবসায়ী হয়ে থাকলে, মূলধন থাকলে বিনিয়োগ করুন। দেশের মানুষকে চাকরি প্রদান করুন। টাকা-পয়সা শুধু ভোগ বিলাস আর নিজের জন্য বাড়ি গাড়ি নির্মাণে ব্যয় না করে, উম্মাহর কল্যাণে ব্যয় করুন। আর এর মাধ্যমে জান্নাতে আপনার চিরস্থায়ী প্রাসাদগুলো নির্মাণ করুন। কারণ আপনাকে যে মরতেই হবে এর কোন ব্যতিক্রম নেই।