আল্লাহ হলেন আল-গাফুর
আল্লাহর সুন্দর সুন্দর নামসমূহ যে গুণগুলো প্রকাশ করে আল্লাহ আমাদের কাছ থেকেও সেগুলো আশা করেন। কী বুঝাতে চাচ্ছি আমি? আরেকটু পরিষ্কার করে বলছি। আল্লাহ হলেন আর-রহমান অর্থাৎ যিনি পরম দয়ালু। তাই তিনি আমাদের ভেতরেও রাহমা বা দয়া দেখতে চান। আল্লাহ হলেন আল-গাফুর অর্থাৎ যিনি ক্ষমা করেন। তাই তিনি চান আমরাও যেন অপর মানুষকে ক্ষমা করি। আল্লাহ হলেন আল-হাকিম মানে মহা প্রজ্ঞাবান। তাই তিনি চান আমরাও যেন প্রজ্ঞা খুঁজি। আল্লাহ হলেন আল-হাদী অর্থাৎ যিনি সঠিক পথ দেখান। তাই তিনি চান আমরাও যেন হেদায়েত খুঁজি, আল্লাহর রাস্তা খুঁজি। আল্লাহ হলেন আল-আলিম বা মহাজ্ঞানী। তাই তিনি চান আমরাও যেন জ্ঞান আহরণ করি। আল্লাহ হলেন আল-আদল অর্থাৎ ন্যায় বিচারক। তাই তিনি চান আমরাও যেন ন্যায় বিচার করি। এখন আল্লাহ হলেন আল-গাফুর। অর্থাৎ যিনি ত্রুটি সমূহ ঢেকে রাখেন। তারমানে তিনি আমাদের কাছ থেকে কী আশা করেন? আমরাও যেন মানুষের দোষত্রুটি ঢেকে রাখি। আমার ব্যক্তিত্বের একটি গুণ হওয়া উচিত যে আমি মানুষের ভুল ত্রুটির কথা অন্যদের বলে বেড়াই না। ঠিক যেমন আমার ব্যক্তিত্বের অংশ হওয়া উচিত আমি ন্যায় বিচারক, আমি দয়ালু, আমি চিন্তাশীল, আমি জ্ঞান আহরণ করি ঠিক তদ্রূপ আমার ব্যক্তিত্বের অংশ হওয়া উচিত কী? আমি অপরের দোষত্রুটি ঢেকে রাখি। আমার এক বন্ধুর দোষ আমি অন্য বন্ধুর কাছে বলে বেড়াই না। আমার এক আত্মীয়ের দোষ আমি অন্য আত্মীয়ের কাছে বলে বেড়াই না। আমার এক কলিগের দোষ আমি অন্য কলিগের কাছে বলে বেড়াই না। এই গুনটি আমাদেরকে অবশ্যই ধারণ করতে হবে। কারণ শেষ বিচারের দিন আমি চাই আল্লাহ যেন আমার অগণিত দোষ ত্রুটি এবং লজ্জাজনক পাপগুলো ঢেকে রাখেন। দুনিয়াতে আমি যদি এমন ভাবে জীবন যাপন করি যে শুধু মানুষের দোষগুলো অন্যের কাছে প্রকাশ করে দিত তাহলে আমি কিভাবে আশা করি যে কেয়ামতের দিন আল্লাহ আমার দোষগুলো ঢেকে রাখবেন? তাই চলুন এই রামাদানে এই গুণটি প্র্যাকটিস করি। এটাকে আমার চরিত্রের অংশ করে ফেলি। অপরের দোষ ত্রুটি ঢেকে রাখা যেন আমার ব্যক্তিত্বের অংশ হয়ে যায়। কিয়ামতের দিন আমি যেন এমন একজন মানুষ হিসেবে উঠতে পারি যে দুনিয়াতে মানুষের দোষ ঢেকে রাখতো। তখন আমি দেখব যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লাও সেদিন আমার দোষগুলো ঢেকে রেখেছেন এবং আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আর এটাই সবচেয়ে বড় সাফল্য। —নোমান আলী খানের আলোচনা অবলম্বনে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন