নিজের পরীক্ষার উপর ফোকাস করুন। আমাকে আল্লাহ কি কি উপায় উপকরণ দিয়েছেন? আমার পক্ষে কোন কোন ভাল কাজ করা সম্ভব? আমি আমার পর জীবনের জন্য আজকে কি কি পাঠাতে পারি? এগুলোর উপর ফোকাস করুন। কারণ অন্যদের পরীক্ষা নিয়ে আপনি জিজ্ঞাসিত হবেন না, আপনি আপনার পরীক্ষার আলোকে জিজ্ঞাসিত হবেন।
আমাদের প্রত্যেককে আল্লাহ তাআলা বিভিন্ন ধরনের ভালো কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন, সামর্থ্য দিয়েছেন। কারো জন্য হয়তো কোরআন শেখা সহজ করে দিয়েছেন। কারো জন্য হয়তো মানুষের উপকার করা সহজ করে দিয়েছেন। কারো জন্য ইবাদত করা সহজ করে দিয়েছেন। কারো জন্য অন্য কোনো ভালো কাজ।
আপনার পক্ষে যে ভালো কাজই করা সম্ভব, তা বেশি বেশি করতে থাকুন। আর এর মাধ্যমে আপনি আল্লাহকে দেখাচ্ছেন যে আপনি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।
নোমান আলী খান এক লেকচারে খুব সুন্দর একটি উদাহরণ দিয়েছেন। তিনি বলেন—
চলুন, সাধারণ ভাষায় কৃতজ্ঞতার অর্থ বুঝার চেষ্টা করি কিছুটা। যদি আমি আমার ছেলেকে একটি সাইকেল কিনে দেই আর সে বলল, "থ্যাঙ্ক ইউ বাবা। ধন্যবাদ আব্বা।"
আমি তাকে বাই-সাইকেল কিনে দিলাম। কিন্তু সে জীবনেও এটাতে ছড়েনি। সে বাড়ির একপাশে এটি ফেলে রাখল। কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখল। এখন, ঐ থ্যাঙ্ক ইউর কোনো অর্থ নেই। কেন? কারণ সে যদি সাইকেলটি প্রতিদিন চালাত, পরিষ্কার করতো, প্রতিদিন এর যত্ন নিত তখন আমি বলতাম আমার ছেলে সাইকেলের জন্য কৃতজ্ঞ। কিন্তু সে যদি কখনো এটি ব্যবহার না করে ফেলে রাখে...সে যতই সাইকেলের জন্য ধন্যবাদ দিক না কেন, এটা কোনো ব্যাপার না। সাইকেলটা যে পড়ে থেকে ধুলা বালি সংগ্রহ করছে তাই তার কথাগুলো ফাঁকা বুলি ছাড়া আর কিছুই নয়। এর নাম কৃতজ্ঞতা নয়। সহজে বুঝা গেলো তো?
যখন আল্লাহ আমাকে হেদায়েত দিয়েছেন, আল্লাহ আমাকে এই জীবনের একটি লক্ষ্য দিয়েছেন আর আল্লাহ বলেছেন তুমি কি এই হেদায়েতের জন্য কৃতজ্ঞ হবে? আমি কি সেই হেদায়েতের জন্য কৃতজ্ঞ হব, নাকি হব না?
তার মানে- আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন যদি আমি তা ব্যবহার না করি, যদি আমি তা জীবন চলার পথে কাজে না লাগাই, তখন আমি যত খুশি আলহামদুলিল্লাহ বলতে পারি, এটা অর্থহীন। আমি তো উপহারটি ব্যবহার করছি না। আমি কোনোভাবেই এটি কাজে লাগাচ্ছি না।
তাই নিজের পরীক্ষার উপর ফোকাস করুন। আল্লাহ প্রদত্ত উপায় উপকরণগুলো ব্যবহার করে সর্বোচ্চ জান্নাত অর্জনের চেষ্টা করুন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন