স্বর্ণালি সময়ে পুণ্য কুড়িয়ে নিন

স্বর্ণালি সময়ে পুণ্য কুড়িয়ে নিন

সৈয়্যেদ নূরে আখতার হোসাইন

নাজাতের দশক শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে কাক্সিক্ষত কদরের রাত খোঁজা। রাসূলে পাক (সা.)-এর বাণীতে প্রমাণিত, রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর যে কোনো এক রাতে রয়েছে শবেকদর। কদর এমন এক রাত, যা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। হাজার মাসে হয় ৮৩ বছর ৪ মাস। এটি সায়েমের জন্য অনেক বড় পুরস্কার।
কোন দিন হবে শবেকদর। সৌদি আরবভিত্তিক বিশ্বের অনেক দেশে যে রাতে কদরের ইবাদত করে, তখন বাংলাদেশে জোড়সংখ্যক রোজা। আর এ দেশে যখন বিজোড় সংখ্যক রোজা, তখন অন্যান্য দেশে জোড় রোজা। তাহলে শবেকদরের রাত কি দুই অঞ্চলের জন্য দুই রাতে হওয়া সম্ভব? পবিত্র কোরআনে কদর সম্পর্কে বলা হয়েছে একটি রাতের কথা। আল্লাহপাক কদরের রাতকে গোপন রেখেছেন; কিন্তু আমাদের খোঁজার জন্য বলেছেন, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দিয়ে।
কদরের রাত নির্দিষ্ট করে প্রকাশ না করা সম্পর্কে হজরত বড়পীর (রহ.) লিখেছেন, কোনো ব্যক্তি যেন কদরের রাত জেগে ইবাদত করে এ ধারণা না করতে পারে যে, আমার আজকের রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। কাজেই আল্লাহ আমাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দিয়েছেন। আমি আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানিত ও মর্যাদাসম্পন্ন হয়েছি। নিশ্চয় আমি বেহেশতের অধিকারী। এ ধারণার বশবর্তী হয়ে অলস এবং আরামপ্রিয় লোকেরা যাতে অন্যান্য দিনের ইবাদত-বন্দেগি তরক না করে, সেজন্যই আল্লাহ কদরের রাতকে অনির্দিষ্ট রেখেছেন।
হজরত মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি (রহ.) মসনবি শরিফে বলেছেন, মর্যাদার রাত খুঁজে নাও, যার মাঝে পাবে তুমি জাহান্নাম থেকে মুক্তি। হজরত শেখ আবু বকর ওয়াররাক (রহ.) বর্ণনা করেন, এ মহান রাতে ইবাদতের কারণে এমন লোকের মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি পায় ইতঃপূর্বে যাদের কোনো মর্যাদা মর্তবা কদর ছিল না। তাই এ রাতকে কদর বলা হয়।
আল্লাহর দরবারে নিজেদের কদরও বাড়াতে হবে। নিজেকে সমর্পণ করতে হবে উজাড় করে দিয়ে। চোখের জলে বুক ভাসিয়ে আল্লাহকে পাওয়ার জন্য আকুতি জানাতে হবে। আল্লাহপ্রাপ্তির পথ হল ইবাদত এবং প্রেম। প্রেমের মাধ্যমেই ইবাদত, এটিই ইমান, এটিই ধর্ম।
রমজানের প্রতিটি মুহূর্ত আল্লাহর অশেষ রহমতে পরিপূর্ণ। খাজা ওসমান হারুনী (রহ.) বলেছেন, রমজান মাস রহমতের ভাণ্ডার হয়ে আগমন করে। রমজান মাসে প্রবেশ করার উপমা হচ্ছে, যেন একদল বিজয়ী সৈন্য দখলকৃত এলাকায় প্রবেশ করে দেখতে পেল পুরো ঐশ্বর্য স্থানটিতে ভরপুর, যেভাবে খুশি গ্রহণ কর। রমজান মাসটিও তেমনি, যেদিকে তাকাও দেখবে শুধু ঐশ্বর্য। নেয়ামত ও বরকতে ভরা। মানুষের উচিত যতদূর সম্ভব রিয়াজত ও মোজাহেদা করা। তাহলে এ মাসে সায়েম অফুরন্ত ফজিলত ও বরকত লাভ করতে পারবে।

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট