হাশরের মাঠের কঠিন ভয়াবহতা


হাশরের মাঠের কঠিন ভয়াবহতা

দুনিয়াতে আমরা এসেছি পরীক্ষা দিতে —এটা হচ্ছে জীবনের সবচেয়ে বড় বাস্তবতা। নাটক, সিনেমা, খেলা, হিন্দি সিরিয়াল, মিউজিক, ভিডিও গেম, রংবেরঙের পানীয়, হাজারো বিনোদন সবসময় আমাদেরকে চেষ্টা করে এই বাস্তবতাকে ভুলিয়ে দিতে। আমরা নিজেদেরকে প্রতিদিন নানা ধরনের বিনোদনে নিবিষ্ট করে রেখে জীবনের কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি। আমারা বিনোদনে যতই গা ভাসানোর চেষ্টা করি, ততই বিনোদনের প্রতি আসক্ত হয়ে যাই। যতক্ষণ বিনোদনে ডুবে থাকি, ততক্ষণ জীবনটা আনন্দময় মনে হয়। তারপর বিনোদন শেষ হয়ে গেলেই অবসাদ, বিরক্তি, একঘেয়েমি আমাদেরকে ঘিরে ধরে।
আর এভাবেই ধীরে ধীরে একসময় আমরা জীবনের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠি। “কেন আমার নেই, কিন্তু ওর আছে?” “কেন আমারই বেলায় এরকম হয়, অন্যের কেন এরকম হয় না?” —এই সব অসুস্থ প্রশ্ন করে আমরা আমাদের মানসিক অশান্তিকে আরও জ্বালানী যোগান দেই। এই অশান্তির মূল কারণ হলো: আমরা যে এই জীবনে শুধু পরীক্ষা দিতে এসেছি, আমাদের এই পরিক্ষার জীবনের পরেও যে একটা কঠিন হিসাব নিকাশের দিন রয়েছে —এই কঠিন বাস্তবতাটাকেই আমরা ভুলে যাই।
হাশরের মাঠের কঠিন ভয়াবহতা, যা মৃত্যু এবং কবরের কষ্ট থেকেও কয়েকগুণ বেশি হবে। হাশরের মাঠ, যেখানে বিচারের জন্য সবাইকে একত্রিত করা হবে। যার চতুর্দিকে থাকবে জাহান্নাম যা ভয়াবহ তর্জন-গর্জন করতে থাকবে, যা শুনে মানুষ ভীত হয়ে পরবে। কারও মুখ দিয়ে কোন কথা বের হবে না। মানুষের দেহ থেকে ঘাম ঝড়তে থাকবে, ঘাম এত অধিক পরিমাণে প্রবাহিত হবে যে, যদি কেউ ঘামের মাঝে নৌকা চালাতে চায় তাহলে তাও সম্ভব হবে। ✓ রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যখন থেকে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তখন থেকে তার ওপর মৃত্যুর চেয়ে যন্ত্রণাদায়ক সময় আর কখনো আসেনি, আর মৃত্যুর পরের স্তরগুলো মৃত্যুর চেয়েও বেদনাদায়ক। নিশ্চয়ই মানুষ হাশরের দিনের কষ্টে অতিষ্ঠ হয়ে যাবে, দেহ থেকে ঘাম ঝড়তে থাকবে, ঘাম এত অধিক পরিমাণে প্রবাহিত হবে যে, যদি কেউ ঘামের মাঝে নৌকা চালাতে চায় তাহলে তাও সম্ভব হবে। (সুত্রঃ- ত্বাবারানী, হাদিস নংঃ ৫২৫৮) ✓ হাশরের মাঠের এত কঠিন ভয়াবহ পরিস্তিতে আল্লাহ তায়ালা আদম (আঃ) কে ডেকে বলবেন, হে আদম তুমি তোমার সন্তানদের মধ্য থেকে জাহান্নামের জন্য বেঁছে নাও। আদাম (আঃ) জানতে চাইবেন কত জনকে জাহান্নামের জন্য তিনি বেঁছে নিবেন। তখন আল্লাহ বলবেন হাজারে ৯৯৯ জনকে জাহান্নামের জন্য বেঁছে নাও। মহান আল্লাহ তায়ালার এই ঘোষণার পর মানুষ এত বেশী ভীত হয়ে পরবে যে, সাথে সাথে যারা যুবক তারা বৃদ্ধে পরিণত হয়ে যাবে, যারা গর্ভবতী তারা গর্ভপাত করে ফেলবে, মা তার সন্তানকে ভুলে যাবে, এমনকি সেই দিন এমনও পরিস্তিতি হবে, যখন নিজের বাবা-মা পর্যন্ত তার নিজ সন্তানকে জাহান্নামে দিয়ে হলেও নিজে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে চাইবে। আল্লাহুয়াকবার। আল্লাহুয়াকবার। হাশরের ময়দানের এই হল সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। জাস্ট একটু মনের গভীর থেকে চিন্তা করে দেখুন, আপনাকেও একদিন এই পরিস্তিতির সম্মুখীন হতে হবে। সুতরাং সময় থাকতেই সকল প্রকার গুনাহ ত্যাগ করুন, আল্লাহর হুকুম মেনে চলুন, মেয়েরা যারা পর্দা করে চলছেন না, তার পর্দা করা শুরু করুন, যারা ফেসবুকে অনবরত ছবি পোষ্ট দিচ্ছেন, তারা ছবি ডিলিট করে দিন। এক কথায় সকল গুনাহ ত্যাগ করে আল্লাহর পথে এসে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করুন। পরিপূর্ণ পর্দা মেইন্টেইন করুন। বেহায়াপনা অশ্লীলতা থেকে নিজেকে মুক্ত করুণ। আল্লাহ আমাদের সকলকে তৌফিক দাণ করুক। আমিন।
source-islamic Media BD/youtube

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট