মুসলমানদের শক্তির মূল ভিত্তি তাকওয়াঃ

মুসলমানদের শক্তির মূল ভিত্তি তাকওয়া

Mahmudul Huq

মুসলমানদের শক্তির মূল ভিত্তি তাকওয়াঃ
আল্লাহ পাক বলেছেন -
يا ايها الذين امنوا اتقوا الله حق تقاته ولا تموتن الا وانتم مسلمون. سورة: ال عمران: 102.
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিত ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যু বরন করো না।
আলে ইমরানঃ ১০২।

তাকওয়ার পরিচয়ঃ
তাকওয়া বা আল্লাহকে ভয় করা। অর্থাৎ তার অপছন্দনীয় কাজ কর্ম থেকে বেচে থাক। 'তাকওয়া' শব্দটি আরবি ভাষায় বেচে থাকা ও বিরত থাকার অর্থে ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ ভয় করাও করা হয়। কারণ যে বিষয় থেকে বেচে থাকার নির্দেশ দেয়া হয় সেগুলো ভয় করারই বিষয়। তাতে খোদায়ী শাস্তির ভয় থাকে। রাসুল সাঃ বলেছেন- التقوي ههنا يشير الي صدره. তাকওয়ার স্থান হলো এখানে। এ উক্তি পেশ করে রাসুল সা বক্ক মোবারকের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। বাহ্যিক পোষাক আষাকের চাক চিক্য তাকওয়া নয়। বরং আল্লাহর বিধি-বিধান মনে প্রাণে মেনে নিয়ে আল্লাহর নিদর্শনাদিকে সম্মান করাই হলো تقوي القلوب আন্তরিক তাকওয়া।

তাকওয়ার স্তর সমূহঃ
তাকওয়ার তিনটি স্তর রয়েছে।
তন্মধ্যে সর্ব নিম্ন স্তর হলো كفر ও شرك থেকে বেচে থাকা। এ অর্থে প্রত্যেক মুসলমানকে متقي আল্লাহভীরু বলা যায়। যদিও সে গোনাহের কাজে লিপ্ত থাকে। এ অর্থ বুঝানোর জন্যই কুরআনে করিমে অনেক জায়গায় متقي 'আল্লাহভীরু' ও تقوي 'খোদাভীরুতা' শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে।

দ্বিতীয় স্তর যা আসলে কাম্য- তা হলো এমন সব বিষয় থেকে বেচে থাকা, যা আল্লাহ তা'য়ালা ও তার রাসুলের পছন্দনীয় নয়। কোরআন ও হাদিসে যে তাকওয়ার যে সব ফজিলত ও কল্যাণ প্রতিশ্রুত হয়েছে, তা এ স্তরের তাকওয়ার উপর ভিত্তি করেই হয়েছে।

তৃতীয় স্তরটি তাকওয়ার সর্বোচ্চ স্তর। আম্বিয়া আলাইহিমুছ ছালাম ও তাদের বিশেষ উত্তরাধিকারী ওলীগণ এ স্তরের তাকওয়া অর্জন করে থাকেন। অর্থাৎ অন্তরকে আল্লাহ ব্যতীত সব কিছু থেকে বাচিয়ে রাখা এবং আল্লাহর স্মরণ ও তার সন্তুষ্টি কামনার দ্বারা পরিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ রাখা। মহান আল্লাহ বলেছেন- اتقوا الله حق تقاته অর্থাৎ তাকওয়ার ঐ স্তর অর্জন কর, যা তাকওয়ার হক।
তাকওয়ার হক সমূহঃ
তাকওয়ার হক কি এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ, রবী,কাতাদাহ ও হাসান বসরী (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাঃ থেকেও এমনি বর্ণিত হয়েছে যে, তাকওয়ার হক হলোঃ ان يطاع فلا يعصي প্রত্যেক কাজে আল্লাহর আনুগত্য করা, আনুগত্যের বিপরীতে কোন কাজ না করা, وان يذكر فلا ينسي আল্লাহকে সর্বদ স্মরণে রাখা, কখনও বিস্মৃত না হওয়া এবং وان يشكر فلا يكفر . সব সময় আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা, আকৃতজ্ঞ না হওয়া।
বাহরে মুহীত, মা'আরেফুল কোরআন। কোরআনের অন্যত্র বলা হয়েছে-
فاتقوا الله ما استطعتم . সাধ্যমত আল্লাহকে ভয় কর। হযরত ইবনে আবাস ও তাউস বলেনঃ এ আয়াতটি বাস্তবে তাকওয়ার হকের ব্যাখ্যা। উদ্দেশ্য এই যে, পূর্ণ শক্তি ব্যয় করে গোনাহ থেকে বেচে থাক। এভাবেই তাকওয়ার হক আদায় হবে। অতএব, কোন ব্যক্তি অবৈধ বিষয় থেকে বেচে থাকার জন্য পূর্ণ শক্তি ব্যয় করা সত্বেও কোন অবৈধ কাজে লিপ্ত হয়ে পড়লে তা তাকওয়ার হকের পরিপন্থী হবে না। আসলে পরিপূর্ণ ইসলামই হচ্ছে তাকওয়া, আল্লাহ তা'য়ালা এবং তার রাসুলের আনুগত্য ও তার অবাধ্যতা থেকে বেচে থাকা। এদিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে-
ولا تموتن الا وانتم مسلمون.
মা'আরেফুল কোরআন।
রাসুল সাঃ তাকওয়া ও আত্বার পরিশুদ্ধতার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন-
اللهم ات نفسي تقواها وزكها, انت خير من زكاها, انت وليها ومولاها.

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে