হযরত নূহ (আঃ)

 

হযরত নূহ (আঃ)



nazmulhaque592

 

 

হযরত নূহ (আঃ) এর প্রকৃত নামের ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন তাঁর প্রকৃত নাম ছিল আবদুল গাফফার। কেউ কেউ বলেছেন, ‘ইয়াশকুর’। (সাবীঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ১১৫, জালালাইন শরীফের হাশিয়াঃ পৃষ্ঠাঃ ২৮৮)

আবার কেউ বলেছেন, তাঁর প্রকৃত নাম ছিল আবদুল জব্বার। (হায়াতুল হায়ওয়ানঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ১২)

কেউ কেউ বলেছেন, ইদ্রীস ছিল তাঁর নাম। (হায়াতে আদম (আঃ)‍ঃ পৃষ্ঠাঃ ৭৪)

‘নূহ’ শব্দের অর্থ হলো ক্রন্দন। তিনি যেহেতু তাঁর উম্মতের গুনাহের জন্য অধিকতর ক্রন্দন করতেন, তাই তাঁর উপাধি হয়ে যায় ‘নুহ’। (হায়াতুল হায়ওয়ানঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ১২)

আর এজন্যও তাঁর উপাধি নূহ হয় যে, তিনি তাঁর নফসের উপর ক্রন্দন করতেন। (রূহুল মাআনী)

এর কারণ ছিল, একদা তিনি চর্মরোগে আক্রান্ত একটি কুকুরের নিকট দিয়ে পথ চলছিলেন। তিনি মনে মনে ভাবলেন, কুকুরটি কত কুৎসিত! তখন আল্লাহ তা’আলা হযরত নূহ (আঃ) এর নিকট ওহী প্রেরণ করলেন যে, তুমি কি আমাকে দোষারোপ করছো, না আমার সৃষ্ট কুকুরকে দোষারোপ করছো? তুমি কি এর চেয়ে উত্তম কিছু সৃষ্টি করতে সক্ষম? হযরত নূহ (আঃ) তাঁর এই ভুলের জন্য সর্বদা ক্রন্দন করতেন। (সাবীঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২৩৩)

হযরত নূহ (আঃ) এর সর্বমোট বয়স হয়েছিল এক হাজার পঞ্চাশ বছর। তাঁর নবুওয়ত প্রাপ্তির বয়স সম্পর্কে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, তিনি পঞ্চাশ বছর বয়সে নবুওয়ত লাভ করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন, বায়ান্ন বছর, আবার কেউ বলেছেন একশত বছর। (সাবীঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ২৩৩)

চল্লিশ বছর বয়সে নবুওয়ত প্রাপ্তির একটি উক্তিও রয়েছে। (সাবীঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ১১৫)

আল্লাহ তা’আলা হযরত জিবরাইল (আঃ) কে হযরত নূহ (আঃ) এর নিকট পাঠিয়েছিলেন। তিনি হযরত নূহ (আঃ) কে জাহাজ বানানোর নিয়ম-পদ্ধতি শিখিয়েছিলেন। এই জাহাজ দুই বছরে তৈরী করা হয়েছিল। (সাবীঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ১১৬)

হযরত নূহ (আঃ) এর জাহাজের দৈর্ঘ্য ছিল তিনশ’ হাত, প্রস্থ ছিল পঞ্চাশ হাত এবং উচ্চতা ছিল ত্রিশ হাত। জাহাজটি ছিল তিনতলা বিশিষ্ট। নীচের তলায় ছিল হিংস জন্তু ও পোকা মাকড়। ‍দ্বিতীয় তলায় ‍ছিল চতুষ্পদ জন্তু, গরু মহিষ ইত্যাদি এবং তৃতীয় ও উপরের তলায় ছিল মানুষ। (জালালাইনের হাশিয়া, জামাল)

কেউ কেউ জাহাজটির দৈর্ঘ্য ত্রিশ হাত বলেও বর্ণনা করেছেন। হাতের দ্বারা তারা কাঁধ পর্যন্ত পুরা হাতকে গণ্য করেছেন। (সাবীঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ১১৬)

কেউ কেউ বলেছেন এই জাহাজে লোকের সংখ্যা ছিল আশি জন। যার অর্ধেক পুরুষ আর অর্ধেক নারী ছিল। কেউ কেউ বলেছেন নারী পুরুষ মিলে সত্তর জন ছিল। (সাবীঃ খন্ডঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ২৩৩)

কেউ কেউ বলেছেন নয়জন। তিনজন হযরত নূহ (আঃ) এর সন্তানদের মধ্য হতে অর্থাৎ হাম, সাম ও ইয়াফেস। এতদ্ব্যতীত ‍আরো ছয়জন। (সাবীঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ২৩৩)

হযরত নূহ (আঃ) রজব মাসের দশ তারিখ জাহাজে আরোহন করেন এবং মোহররম মাসের দশ তারিখ মুসেল শহরের সুউচ্চ ‘জুদী’ পাহাড়ে গিয়ে থামে। তিনি জাহাজে দীর্ঘ ছয় মাস অবস্থান করেন। (সাবীঃ খন্ডঃ ৩, পৃষ্ঠাঃ ১১৬)

হযরত নূহ (আঃ) এর তিন পুত্র ছিল হাম,সাম ও ইয়াফেস। হিন্দুস্থান, সিন্ধু ও হাবশার লোকেরা হামের বংশধর। রোম, পারস্য ও আহলে ‍আরব হলো সামের বংশধর। ‍আর ইয়াফেসের বংশধর হলো ইয়াজুজ মাজুজ, তুর্কী ও সালাব জাতি। (বুস্তানে আবুল লাইস)

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট