অল্প আমলে অনেক নেকি

 

অল্প আমলে অনেক নেকি

  • মুফতি মোহাম্মদ এনামুল হাসান
    এমন অনেক আমল রয়েছে যাতে কর্মের চেয়ে বিনিময় বা নেকি বেশি। নিচে এমন কিছু আমলের কথা উল্লেখ করা হলো
    ১. একটি জায়নামাজ কিনে মসজিদে রেখে দিন, যে ব্যক্তি তাতে নামাজ আদায় করবে, ইনশা আল্লাহ আপনি সেই আমলের জন্য পুরস্কৃত হবেন।
    ২. একটি বাটি বা গ্লাসে কিছু পানি আপনার জানালায় রেখে দিন পাখিদের জন্য; এটাও একধরনের সদকা। এটিকে অভ্যাসে পরিণত করুন। আপনি পুরস্কৃত হবেন ইনশা আল্লাহ।
    ৩. আপনার পুরনো অথবা ব্যবহার হচ্ছে না এমন পোশাক গরিবকে দান করুন। সুযোগ থাকলে নতুন জামা দান করুন। এই জামা পড়ে সে যত ইবাদত করবে তার একটা অংশ সদকা হিসেবে আপনার আমলনামায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
    ৪. আপনার রুমে একটি বক্স রাখুন এবং যখনই আপনি মনে করবেন যে আপনি কোনো অন্যায় করেছেন, তখনই তাতে সাধ্যমতো টাকা-পয়সা রাখুন। মাস শেষে তা খুলে দেখুন এবং তা দান করে দিন। এতে নিজের ভুলগুলোর পরিমাণ বুঝতে পারবেন এবং অনুতপ্ত হয়ে নিজেকে সংশোধনের জন্য এটি সুন্দর একটি পন্থা। তবে অন্যের হক নষ্ট করলে তার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এবং হক ফিরিয়ে দিতে হবে।
    ৫. বাড়িতে ঢোকার ও বের হওয়ার পথে দোয়া লিখে রাখুন একটি কাগজে। যে এসব দোয়া দেখতে পেয়ে পাঠ করবে, ইনশা আল্লাহ আপনি সে জন্য পুরস্কৃত হবেন। একইভাবে ঘরের এমন কোনো স্থানে দোয়া লিখে রাখতে পারেন, যেটা সবার নজরে আসে।
    ৬. আপনার হাত খরচের টাকা দিয়ে একজন এতিমকে সহায়তা করুন আপনার সাধ্যমতো। মাসের কোনো এক দিন নাশতা না করে এতিম কোনো শিশুকে খাবার খাইয়ে দিন।
    ৭. আপনার বাড়ির আশপাশে যদি কোনো নির্মাণকাজ চলে কিংবা শ্রমিকরা কাজ করে, তবে কিছু ঠাণ্ডা পানি বা খাবার তাদের দিতে পারেন। ইনশা আল্লাহ আপনি পুরস্কৃত হবেন।
    ৮. কোনো মসজিদে কুরআন মাজিদ রেখে দিন; যেকোনো ব্যক্তি যখন অন্তত একটি অক্ষর পাঠ করবে, তার জন্য ১০ গুণ সওয়াব লিখিত হবে আপনার আমলে।
    ৯. আপনার পান করা গ্লাসে পানি অবশিষ্ট থেকে গেলে তা একটি ফুলদানির পাত্রে রেখে দিন, অপচয় করবেন না।
    ১০. আপনার মুসলমান ভাইবোনদের উৎসাহ দিন, দুর্দিনে সাহায্য করুন, সহানুভূতিশীল হন, যখন তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে।
    ১১. অসুস্থ আত্মীয় কিংবা পরিচিতদের দেখে আসুন। একটু হাসুন, কথা বলুন। এটাও সাদাকা। মৃদু হাসি বিনিময় করাও সদকা।
    ১২. আপনাকে যারা কষ্ট দিয়েছে তাদের ক্ষমা করে ঘুমাতে যান।
    ১৩. কাউকে এক অক্ষর হলেও দ্বীন শিক্ষা দিন। সেই ব্যক্তি যখন তার সন্তানসন্ততি, বন্ধুবান্ধব কিংবা তার সন্তানদের মাধ্যমে তার পরের প্রজন্ম এই দ্বীন অর্জন করবে, সেসব সওয়াব মৃত্যুর পরও আপনার কবরে পৌঁছাবে ইনশা আল্লাহ।
    ১৪. সামর্থ্য থাকলে মসজিদ, মাদরাসা, হাসপাতাল স্থাপনে সহায়তা করুন। গাছ লাগান, টিউবওয়েল বা পান করার পানির ব্যবস্থা করুন। আপনার মৃত্যুর পরও মসজিদ মাদরাসা দ্বীন শিক্ষা দিতে থাকবে, হাসপাতালে রোগী সেবা পেতে থাকবে, গাছ থেকে মানুষ অক্সিজেন ও খাবার পাবে, পান করার পানি পান করতে পারবে আপনার ব্যবস্থা করে দেয়া পানির উৎস থেকে। এসব কিছু সদকায়ে জারিয়া। এগুলো মৃত্যুর পরও আপনাকে পরকালের জন্য ধনী করতে থাকবে।
    ১৫. সন্তানদের উত্তম সন্তান হিসেবে গড়ে তুলুন। দ্বীন ও মানবতা শিক্ষা দিন। এদের দোয়া কবর পর্যন্ত পৌঁছাবে, আপনার থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা এদের সঠিক মানুষ হতে সাহায্য করবে।
    ১৬. এই সাদাকার পন্থাগুলো মানুষের কাছে বেশি করে প্রচার করুন, তাদের শিক্ষা দিন। এটিও সদকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত।
    সর্বাবস্থায় হালাল উপার্জন করুন। হারাম উপার্জন আল্লাহ তায়ালা গ্রহণ করেন না।nayadiganta

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট