নিজের বুদ্ধি খরচ করুন

 


প্রতিটি মানুষকে এই জীবন দেওয়া হয়েছে মৃত্যু পরবর্তী জীবনের প্রস্তুতি নিতে। সহজ বিষয়। কুরআন এই ব্যাপারে খুবই পরিষ্কার। এই দুনিয়া তোমার বাড়ি নয়। এটা তোমার বাসস্থান নয়। সবার জীবনকাল এখানে অল্প কিছু সময়ের জন্য। এরপর আপনি মারা যাবেন। সবাইকে তাদের রবের সামনে দাঁড়াতে হবে। সবার বিচার হবে। এরপর যদি এখানে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী ভাল জীবন অতিবাহিত করে থাকেন, আপনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন। যারা ব্যর্থ হবে তারা জাহান্নামে যাবে। এই বিষয়ে কুরআন একেবারেই পরিষ্কার। প্রতিটি ব্যক্তির বিচার হবে শেষ বিচারের দিন। সেখানে আপনাকে কোন কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে কুরআন সেগুলোও পরিষ্কার করে তুলে ধরেছে।

কুরআন এই বিষয়টাও পরিষ্কার করে তুলে ধরেছে যে, এটাই একমাত্র জীবন যেখানে আপনি সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রস্তুত করবেন। এছাড়া আর কোনো জীবন নেই। প্রত্যেককে এই একটি চান্স-ই দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বারের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। কারো জন্যই না। আবার, আপনার সফলতা সম্পূর্ণরূপে আপনার নিজের উপর নির্ভরশীল। কেউ আপনার সফলতা কেড়ে নিতে পারবে না। কেউ আপনার সফলতায় কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। কেউ না। আপনার বাবা, মা, পরিবার, স্ত্রী, স্বামী, সমাজ, রাষ্ট্র কেউ আপনার সফলতায় কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। ব্যাপারটা একেবারেই সুস্পষ্ট। যে সময় এবং উপায় উপকরণ আপনাকে দেওয়া হয়েছে, তা দেওয়া হয়েছে আপনাকে সাহায্য করার জন্য। কিন্তু এটা কোনোভাবেই আপনার কাছ থেকে আপনার সফলতা কেড়ে নিতে পারবে না। তাই, মানুষের এই কথা বলার কোনো সুযোগ নেই যে, আমি আলাদা সময়ে এবং আলাদা পরিস্থিতিতে আছি। যে পরিস্থিতিতেই আপনি থাকেন না কেন, যে পরিবেশেই অবস্থান করেন না কেন প্রতিটি পরিস্থিতিতে, প্রতিটি পরিবেশে আপনার পক্ষে শ্রেষ্ঠ মানুষ হওয়া সম্ভব। যে কোনো জায়গায়। আপনি পৃথিবীতে শ্রেষ্ঠ মানুষ হতে পারবেন। এই কুরআন আপনাকে শিখাবে কিভাবে আচরণ করতে হবে। কিভাবে নিজেকে খাপ খাওয়াতে হবে। সবচেয়ে সেরা ব্যক্তিটি হওয়ার জন্য আপনাকে সকল ক্যাপাসিটি, সকল সামর্থ্য দেওয়া হয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে। ধরুন, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। আপনার আশে পাশে কোনো মেয়ে নেই। যেভাবে ইচ্ছা হেঁটে যেতে পারেন। যদি কোনো মেয়ে সামনে এসে পড়ে চোখ নিচু করে ফেলুন। সহজে প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করে ফেলুন। কেউ আপনার কাছ থেকে কিছু কেড়ে নিতে পারবে না। ব্যাপারটা এমন নয় যে, মেয়েরা আপনার উপর প্রভাব ফেলবে। না। এটা আপনার নিজের কাছে। যদি মনে করেন আপনার ভুল কামনা-বাসনা আছে, নিয়ন্ত্রণ করুন। যে কোনো পরিস্থিতিতে... যদি দেখেন সমাজে অন্যান্য সমস্যা আছে, সমাজ অনেক সমস্যা তৈরি করছে মানুষের জন্য, এই সমস্যাগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জন্য আপনাকে সকল সামর্থ্য দেওয়া হয়েছে। যে কেউ। যদি আপনাকে কোনো কুয়োর মত জায়গাও দেয়া হয়, যদি আপনাকে জেলে রাখা হয়, তবু আপনার পক্ষে সেরা মানুষ হওয়া সম্ভব। সুতরাং, এই বই আসলে কোনো অস্পষ্টতা রাখেনি এই বিষয়ে যে- যে কোনো ব্যক্তি, যে কোনো পরিস্থিতিতে সবচেয়ে সেরা মানুষ হওয়ার সামর্থ্য রাখে। হতে পারে আপনার স্বামী খুবই খারাপ মানুষ। ফেরাউনের মত অত্যাচারী। তবু, আপনি শ্রেষ্ঠ মানুষ হতে পারেন। তার স্ত্রীর মত। তিনি ফেরাউনের নিয়ন্ত্রণে থাকা সত্ত্বেও সবচেয়ে সেরা মানুষ হতে পেরেছিলেন। ফেরাউন সম্পর্কে তো জানেন সে কেমন খারাপ মানুষ ছিল। তারপরেও কুরআন বলছে ফেরাউনের স্ত্রী সকল ঈমানদারের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ। এ ব্যাপারগুলো মাথায় রাখুন। এ বই ব্যাপারটা খুবই স্পষ্টরূপে তুলে ধরেছে যে, আপনার ভালোর জন্য আপনিই দায়ী। নিজেকে ঠিক করার জন্য আপনি নিজেই দায়ী। আপনার সফলতা এবং ব্যর্থতা আপনি ছাড়া আর কারো উপর নির্ভর করে না। কেউ এতে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে না, কেউ না। আল্লাহ আপনাকে যে সামর্থ্য এবং উপায় উপকরণ দান করেছেন, যদি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন কেউ প্রভাব ফেলতে পারবে না। নিজের বুদ্ধি খরচ করুন। নিজের সামর্থ্য খরচ করুন। সকল পরিস্থিতিতে সমাধান পাবেন। —ড. আকরাম নদভী
source-nak in bangla/youtube

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট