দাইয়ুস

 


নিজ ঘরের নারীদের অশ্লীল কাজের জন্য যে পুরুষ জাহান্নামে যাবে। দাইয়ুস হচ্ছে যে ব্যক্তি নিজ পরিবারে যিনা-ব্যভিচার ও অশ্লীলতাকে প্রশ্রয় দেয়। যে পুরুষ ঘরের নারীদের সম্ভ্রম রক্ষায় আত্মসম্মানী নয়, সে মানবিকতাহীন, পৌরুষত্বহীন, অসুস্থ মস্তিষ্ক এবং দুর্বল ঈমানের অধিকারী। তার তুলনা অনেকটা শূকরের মতো, যে নিজ সম্ভ্রম রক্ষা করে না। তাই সেই সব লোককে সতর্ক থাকা উচিত, যারা নিজ পরিবারে এবং তার দায়িত্বে থাকা লোকদের মাঝে অশ্লীলতা বা অশ্লীলতার উপকরণ প্রশ্রয় দেয়। যেমন বাড়িতে এমন টিভি চ্যানেল রাখা যা যৌনতা উস্কে দেয় এবং অশ্লীলতা বৃদ্ধি করে। অধিকাংশ নারী বেপর্দা চলাফেরা ও চরিত্রহীনা হওয়ার জন্যে তাদের পিতা, স্বামী বা পুরুষ গার্জিয়ানের উদাসীনতা দায়ী। এদের পরিণত হবে ভয়াবহ।

আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “এমন তিনজন ব্যক্তি আছে, যাদের দিকে আল্লাহ আ’যযা ওয়া যাল কিয়ামাতের দিন তাকাবেন না। তারা হচ্ছে, (১) যে পিতামাতার অবাধ্য, (২) যে নারী বেশভূষায় পুরুষদের অনুকরণ করে এবং (৩) দাইয়ুস পুরুষ।” নাসায়ীঃ ২৫৬২, হাসান সহীহ, শায়খ আলবানী। ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “দাইয়ুস হচ্ছে এমন পুরুষ যার কোন গীরাহ (Protective jealousy) নেই।” মাজমু আল-ফাতাওয়াঃ ৩২/১৪১। স্থায়ী কমিটির ফাতওয়াঃ “দাইয়ুস শব্দটি এমন ব্যক্তিকে নির্দেশ করে, যে তার অধিকারভুক্ত কোন নারীকেই, হোক তা তার স্ত্রী, কন্যা, বোন এবং অন্যদের যিনা করা থেকে বিরত রাখেনা, তা সরাসরি জিনাই হোক, আর এমন সব কাজ হোক যা জিনার দিকে নিয়ে যায়, যেমন গায়ের মাহরামের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে যেসব আওরা (শরীরের অংশ) ঢেকে রাখতে হয়, তা প্রকাশ করা, গায়ের মাহরাম এর সাথে একাকী অবস্থান করা, ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দেহে সুগন্ধি লাগানো, আর অন্যান্য কাজ যা ফিতনা আর অপরাধ সৃষ্টি করতে পারে।”
****************************
❖ "জায়নামাযের দোয়া" নামে যে দুয়াটি পড়া হয় সেটা পড়ার বিধান কি? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি হবেঃ উপরের সবগুলো কথাই সঠিক। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা হচ্ছে, নামাযের আগে জায়নামাযে দাঁড়িয়ে এই দোয়া পড়া- আল্লাহুম্মা ইন্নি ওয়াজ্জাহতু ওয়ায হিয়া লিল্লাযি ফাতারাস সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ হানীফা ওমা আনা মিনাল মুশরিকী্ন– শরীয়তের কোন দলীল দ্বারা প্রমাণিত নয়। মুলতঃ জায়নামাযের দোয়া বলতে শরীয়তে কিছু নেই। অবশ্য উপরোক্ত দোয়াটি রাসুলুল্লাহ ﷺ কখনো তাহাজ্জুদের নামাযে তাকবীরে তাহরীমার পর সানার স্থানে পড়তেন বলে প্রমাণিত আছে। যেমন, আলী রাযি. থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, كَانَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ قَالَ ‏”‏ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ রাসুলুল্লাহ ﷺ যখন (রাতের বেলা) দাঁড়াতেন তখন (তাকবীরে তাহরীমার পর) বলতেন, ওয়াজ্জাহতু ওয়ায হিয়া লিল্লাযি ফাতারাস সামা ওয়াতি ওয়াল আরদ হানীফা ওমা আনা মিনাল মুশরিকীন…। (মুসলিম ১৬৮৫)

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট