শয়তান কি ডিপ্রেশন তৈরী করতে পারে?
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
প্রশ্ন: শয়তান কি ডিপ্রেশন তৈরী করতে পারে?
উত্তর: শয়তান মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য অনেক ধরণের কৌশল অবলম্বন করে। তার মাঝে একটি হলো এক ধরণের ডিপ্রেশন তৈরী করা, আপনি যেমন প্রশ্ন করেছেন। কারণ, শয়তানের উদ্দেশ্য হলো আপনাকে আল্লাহর ইবাদাত করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখা। আর এ উদ্দেশ্য পূরণের প্রয়োজনে যত ধরণের উপায় অবলম্বন করা দরকার সে করে থাকে। তার মাঝে একটি ব্যাপার যা মানুষকে আল্লাহর ইবাদাত করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখে তা হলো- নিজের সমস্যা-সঙ্কটে বালা-মুসিবতে মানসিকভাবে এমনভাবে বিষণ্ণ হয়ে পড়া যে সে চুপচাপ বসে থাকে কোনোকিছুই করে না। আর এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই যে, এ ধরণের মানসিক সমস্যাগুলোর অনেকগুলো হয় শয়তান তৈরী করেছে বা এগুলোর অবস্থা আরো খারাপ করেছে শয়তান। আমার মনে এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন নেই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং আমার বিনীত অভিমত বহু মানসিক রোগ শয়তানের তৈরী। এ কারণে ঈমানদাররা মানসিক এ যুদ্ধগুলোতে বেঈমানদের চেয়ে ভালো করে। সাধারণভাবে বলতে গেলে, ধার্মিক মানুষেরা অধার্মিকদের চেয়ে বেশি আশাবাদী। কারণ, আল্লাহ আমাদের ধার্মিক হওয়ার জন্য সৃষ্টি করেছেন, তাই না? সাধারণভাবে বলতে গেলে, ধার্মিক মানুষদের জীবন নিয়ে উত্তম মনোভঙ্গি রয়েছে। তারা ধর্মহীনদের চেয়ে ভালোভাবে দুঃখ-কষ্ট মোকাবেলা করতে পারে। তো, আপনার প্রশ্নের উত্তর, হ্যাঁ, শয়তান বহু কৌশল অবলম্বন করে থাকে। তার মাঝে একটি হলো মানসিক সমস্যা তৈরী করা। প্রশ্ন: এখন তাহলে শয়তানের এ কৌশলের বিরুদ্ধে কিভাবে জয় লাভ করবো? উত্তর: যেভাবে আপনি ধর্মীয় কাজে অলসতার উপর জয় লাভ করেন। যেভাবে আপনি অন্তরের গাফলতির উপর জয়লাভ করেন। যেভাবে আপনি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক না থাকাকে পরাজিত করেন। সবার আগে— ইবাদাত বৃদ্ধি করুন। ইবাদাতের মাধ্যমে অটোমেটিক্যালি আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্ক তৈরী হয়। কুরআন তিলাওয়াত ও অধ্যয়ন বৃদ্ধি করুন। জিকির করা বৃদ্ধি করুন। বেশি বেশি নামাজ পড়ুন। এই কাজগুলো তাৎক্ষণিকভাবে আপনার অন্তরে প্রশান্তি নিয়ে আসবে। দ্বিতীয়তঃ ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করুন। এর ফলে দ্বীনের ব্যাপারে আপনার আরও উত্তম বুঝ তৈরী হবে। জ্ঞান বৃদ্ধি পেলে আপনার ঈমান বৃদ্ধি পাবে। দ্বীনের ব্যাপারে, রাসূলুল্লাহ (স) এর ব্যাপারে কোনো বক্তব্য শুনলে আপনার ঈমান শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এছাড়াও নিশ্চিত করুন যে, প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিকির-আযকারগুলো আপনি নিয়মিত পড়েন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়, প্রবেশ করার সময়, খাওয়ার সময়, ঘুমাতে যাওয়ার সময়, জেগে উঠার সময় এভাবে সর্বাবস্থায় দুআগুলো পাঠ করুন যেন নিজেকে শয়তানের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারেন। এভাবে যত বেশি জিকির এবং দুআগুলো পাঠ করবেন শয়তান আপনার উপর তত কম শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে। আমাদের রাসূল (স) বলেছেন— "আল্লাহর জিকির হলো 'হিসনুল হাসিন' একটি সংরক্ষিত দুর্গ যা তোমাদেরকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা করবে।" মনে করুন, চারপাশে শক্ত দেয়াল তুলে আপনার প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আল্লাহর জিকির ঠিক এ কাজটাই করে। আল্লাহর জিকিরে মগ্ন থাকা মানে আপনি 'হিসনুল হাসিন' সংরক্ষিত দুর্গের ভেতরে আছেন। আর অবশ্যই আল্লাহর নিকট দুআ করতে হবে। আল্লাহ বলেন- وَ اِمَّا یَنۡزَغَنَّکَ مِنَ الشَّیۡطٰنِ نَزۡغٌ فَاسۡتَعِذۡ بِاللّٰهِ - "শয়তানের পক্ষ থেকে যদি তুমি কুমন্ত্রণা অনুভব কর, তাহলে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর।" (৪১:৩৬) আর হতাশা থেকে রক্ষা পেতে আরেকটি সহজ কাজ করতে পারেন—ধার্মিক মুসলিমদের সাথে চলা ফেরা করুন। একা থাকবেন না। সৎ মানুষদের সঙ্গে থাকুন। যারা আপনাকে আল্লাহর কথা স্মরণ করিয়ে দিবে এবং তাঁর কাছাকাছি নিয়ে আসবে। — ড. ইয়াসির ক্বাদী
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন