হাশরের মাঠের কঠিন ভয়াবহতা

 


হাশরের মাঠের কঠিন ভয়াবহতা, যা মৃত্যু এবং কবরের কষ্ট থেকেও কয়েকগুণ বেশি হবেঃ হাশরের মাঠ, যেখানে বিচারের জন্য সবাইকে একত্রিত করা হবে। যার চতুর্দিকে থাকবে জাহান্নাম যা ভয়াবহ তর্জন-গর্জন করতে থাকবে, যা শুনে মানুষ ভীত হয়ে পরবে। কারও মুখ দিয়ে কোন কথা বের হবে না। মানুষের দেহ থেকে ঘাম ঝড়তে থাকবে, ঘাম এত অধিক পরিমাণে প্রবাহিত হবে যে, যদি কেউ ঘামের মাঝে নৌকা চালাতে চায় তাহলে তাও সম্ভব হবে।

✓ রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যখন থেকে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন, তখন থেকে তার ওপর মৃত্যুর চেয়ে যন্ত্রণাদায়ক সময় আর কখনো আসেনি, আর মৃত্যুর পরের স্তরগুলো মৃত্যুর চেয়েও বেদনাদায়ক। নিশ্চয়ই মানুষ হাশরের দিনের কষ্টে অতিষ্ঠ হয়ে যাবে, দেহ থেকে ঘাম ঝড়তে থাকবে, ঘাম এত অধিক পরিমাণে প্রবাহিত হবে যে, যদি কেউ ঘামের মাঝে নৌকা চালাতে চায় তাহলে তাও সম্ভব হবে। (সুত্রঃ- ত্বাবারানী, হাদিস নংঃ ৫২৫৮) ✓ হাশরের মাঠের এত কঠিন ভয়াবহ পরিস্তিতে আল্লাহ তায়ালা আদম (আঃ) কে ডেকে বলবেন, হে আদম তুমি তোমার সন্তানদের মধ্য থেকে জাহান্নামের জন্য বেঁছে নাও। আদাম (আঃ) জানতে চাইবেন কত জনকে জাহান্নামের জন্য তিনি বেঁছে নিবেন। তখন আল্লাহ বলবেন হাজারে ৯৯৯ জনকে জাহান্নামের জন্য বেঁছে নাও। মহান আল্লাহ তায়ালার এই ঘোষণার পর মানুষ এত বেশী ভীত হয়ে পরবে যে, সাথে সাথে যারা যুবক তারা বৃদ্ধে পরিণত হয়ে যাবে, যারা গর্ভবতী তারা গর্ভপাত করে ফেলবে, মা তার সন্তানকে ভুলে যাবে, এমনকি সেই দিন এমনও পরিস্তিতি হবে, যখন নিজের বাবা-মা পর্যন্ত তার নিজ সন্তানকে জাহান্নামে দিয়ে হলেও নিজে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে চাইবে। আল্লাহুয়াকবার। আল্লাহুয়াকবার। হাশরের ময়দানের এই হল সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। জাস্ট একটু মনের গভীর থেকে চিন্তা করে দেখুন, আপনাকেও একদিন এই পরিস্তিতির সম্মুখীন হতে হবে। সুতরাং সময় থাকতেই সকল প্রকার গুনাহ ত্যাগ করুন, আল্লাহর হুকুম মেনে চলুন, মেয়েরা যারা পর্দা করে চলছেন না, তার পর্দা করা শুরু করুন, যারা ফেসবুকে অনবরত নিজেদের ছবি পোষ্ট দিচ্ছেন, তারা ছবি ডিলিট করে দিন। এক কথায় সকল গুনাহ ত্যাগ করে আল্লাহর পথে এসে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করুন।

***********************************************************************************
❖ কোন সেই নারী, যে নারী যেনা না করেও যেনাকারিনী বা ব্যভিচারিনী? গতকালকের এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরটি হবেঃ উপরের সবগুলোই। এ বিষয়ে হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে নারী সুগন্ধি মেখে ঘর থেকে বের হয়, অতঃপর মানুষের সম্মুখ দিয়ে হেঁটে চলে, যাতে করে তারা তার সুবাশ অনুভব করে, তবে সেই নারী ব্যভিচারিণী। (সুত্রঃ তিরমিজি, আবু দাউদঃ ২৭০১) ❖ যেনাকারিনী বা ব্ব্যভিচারিণীর সংজ্ঞাঃ একমাত্র নিজের স্বামী ছাড়া অন্য কোন পুরুষের সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়াকে যৌনাঙ্গের যেনা বলে। এছাড়া আরও কয়েক প্রকার যেনা আছে, যেমনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “কোন বেগানা নারীর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া চোখের যেনা, অশ্লীল কথাবার্তা বলা জিহ্বার যেনা, অবৈধভাবে কাউকে স্পর্শ করা হাতের যেনা, ব্যাভিচারের উদ্দেশ্যে হেঁটে যাওয়া পায়ের যেনা, খারাপ কথা শোনা কানের যেনা আর যেনার কল্পণা করা ও আকাংখা করা মনের যেনা । অতঃপর লজ্জাস্থান একে পূর্ণতা দেয় অথবা অসম্পূর্ণ রেখে দেয়”। (সুত্রঃ সহীহ বুখারীঃ হা/৬২৪৩ ) ❖ সুতরাং যে নারী যেনা করে সেই নারীকে যেনাকারিনী বা ব্যভিচারী বলা হয়। যেনাকারিনী বা ব্যভিচারিনীর শাস্তিঃ ১। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, যেনাকার ও যেনাকারিনী কেয়ামত পর্যন্ত উলঙ্গ অবস্থায় আগুনে জ্বলতে থাকবে। (সুত্রঃ বুখারী, মিশকাতঃ ৪৬২১) ২। রাসুল (সাঃ) বলেছেনঃ “আমি স্বপ্নে একটি চুলা দেখতে পেলাম যার উপরের অংশ ছিল চাপা আর নিচের অংশ ছিল প্রশস্ত আর সেখানে আগুন উত্তপ্ত হচ্ছিল, ভিতরে নারী পুরুষরা চিল্লাচিল্লি করছিল। আগুনের শিখা উপরে আসলে তারা উপরে উঠছে, আবার আগুন স্তিমিত হলে তারা নিচে যাচ্ছিল, সর্বদা তাদের এ অবস্থা চলছিল, আমি জিবরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলামঃ এরা কারা ? জিবরাইল আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললঃ তারা হল, অবৈধ যৌনচারকারী নারী ও পুরুষ । (সুত্রঃ সহীহ আল-বুখারী ) সুতরাং হে প্রিয় মুসলিম নারী, যেনা না করেই তুমি যদি সুগন্ধি মেখে ঘর থেকে বের হও তবে তুমিও এই যেনাকারিনীদের মধ্যে গণ্য হবে এবং তোমাকেও যেনার এই ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করতে হবে। সুতরাং যদি কেউ এমন কাজ করে থাকো, তবে আজ থেকেই তওবা কর, আর কখনো এমন কাজ করবে না। আল্লাহ আমাদের সকলকে তার সন্তুষ্টির পথে চলার তৌফিক দান করুক। আমিন...।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে