সূরা আদ-দোহা
সূরা আদ-দোহা শুরু হয়েছে 'আশার' বাণী দিয়ে আর তাই এটি শেষও হয়েছে 'মানুষকে আশা দাও' এই মেসেজ দিয়ে। সূরা আলাম নাশরাহ শুরু হয়েছে 'কৃতজ্ঞতা' দিয়ে। আপনি কার প্রতি কৃতজ্ঞ? আল্লাহর প্রতি। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা কিভাবে প্রকাশ করবেন? তাঁর ইবাদাত করার মাধ্যমে। আর তাই এটি শেষও হয়েছে আল্লাহর ইবাদাত করার নির্দেশ দিয়ে। এখন, এখান থেকে আমাদের জন্য শিক্ষাঃ আমাদের ধর্ম আমাদের কাছ থেকে মূলত দুইটি জিনিস দাবি করে। যা আমাদের অন্তরে ধারণ করা উচিত। আর তা হলোঃ ১। আল্লাহর প্রতি আমাদের আশা থাকতে হবে। ২। আল্লাহর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা থাকতে হবে। আশা হলো ভবিষ্যতের জন্য। আর কৃতজ্ঞতা হলো অতীতের জন্য। বুঝতে পারছেন? যখন অতীত নিয়ে ভাববেন, তখন আপনার অন্তর কৃতজ্ঞতায় পরিপূর্ণ হয়ে যাওয়া উচতি। আর যখন ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করবেন, তখন অন্তর কী দিয়ে ভরপুর হয়ে যাওয়া উচিত? আশা দিয়ে। এখন, যদি এই দুইটি বীজ অন্তরে অবস্থান করে তাহলে এর থেকে দুইটি চারাগাছ উৎপন্ন হবে। কি কি সেগুলো? ১। আপনি মানুষের যত্ন নিবেন। মানুষকে আশা দিবেন। (কারণ আপনি যে একজন আশাবাদী মানুষ। আল্লাহ কুরআনের অসংখ্য আয়াতে মানুষকে অগনিত পুরস্কার প্রদানের যে ওয়াদা দিয়েছেন আপনি তাতে কোনো রকম সন্দেহ করা ব্যতীত মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন। আপনি চান আমরা সবাই যেন সেই পুরস্কারগুলো লাভ করি। তাই আপনি মানুষকে আশা দিয়ে যান— চারদিকের সকল হারাম থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলুন। জাস্ট ধৈর্য ধরে আল্লাহর পথে অটুট থাকুন এবং তার ইবাদত করে যান যতবেশি সম্ভব। ইনশাআল্লাহ তিনি আপনাকে এত বেশি দিবেন যে আপনি সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন।) ২। আপনি নিজে আল্লাহর আরও উত্তম ইবাদাতকারিতে পরিণত হবেন। কৃতজ্ঞতার ফলস্বরূপ। অন্য কথায়, একদিকে আপনি মানুষের প্রতি ভালো হবেন, আবার অন্যদিকে আল্লাহর সাথেও আপনার উত্তম একটি সম্পর্ক গড়ে উঠবে। সুবহানাল্লাহ! —নোমান আলী খান কিছু আশার বাণী ----------------------- জান্নাত পাওয়ার জন্য আপনার শুধু খাঁটি ইচ্ছে থাকতে হবে। এরপর নিজের সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করতে হবে। যে ক্ষুদ্র চেষ্টাই আপনার পক্ষে করা সম্ভব হয়, করুন। কিছু চেষ্টা কোনো চেষ্টা না থাকার চেয়ে উত্তম। কিছু চেষ্টা কোনো চেষ্টা না থাকার চেয়ে উত্তম। আপনার পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব করুন। অতীতে যত পাপই করে থাকেন না কেন, কোনো ব্যাপার না প্রিয় মুসলিম। ও পাপী ব্যক্তি! যে ধরণের পাপই আপনার থাকুক না কেন, হতাশ হবেন না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার দিকে ফিরে আসুন। মানুষের উপকারে কিছু করুন। আল্লাহর ইবাদাত করুন যত বেশি সম্ভব। তাঁর কাছাকাছি হওয়ার জন্য সংগ্রাম করে যান। হাত তুলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চান। কাকুতি-মিনতি করুন জান্নাত পাওয়ার জন্য। আল্লাহকে বলুন তিনি যেন আপনাকে জান্নাতে প্রবেশ করান। (অনেক সময় আমরা নিজেদের অতীত পাপের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর কাছে বড় জান্নাত চাওয়ার সাহস পাই না) কিন্তু, প্রিয় মুসলিম ভাই এবং বোনেরা, মনের মধ্যে একটু সাহস সঞ্চয় করে, আরও একটু আশা নিয়ে আল্লাহর কাছে সর্বোচ্চ জান্নাতের জন্য দুয়া করুন। আমি অনেককে বলতে শুনেছি- "আমি যদি একেবারে সবার শেষেও জান্নাতে যেতে পারি তবু আমি খুশি।" আমরা আগের এক আলোচনায় বলেছি কোন ব্যক্তি সবার শেষে জাহান্নাম থেকে বের হয়ে আসবে। আপনারা সেই আলোচনা শুনতে পারেন। আমি লোকজনকে বলতে শুনেছি- "আমি যদি সেই ব্যক্তিটিও হতে পারি তবু আমি খুশি।" এতে কোনো সন্দেহ নেই, যারা জাহান্নামে পড়ে আছে সেই ব্যক্তি তাদের চেয়ে উত্তম। কিন্তু, আপনি কেন নিজের জন্য এতো নিম্নমানের লক্ষ্য নির্ধারণ করছেন? আপনাকে যদি এই দুনিয়ার সবচেয়ে নিম্নমানের বাড়ি দেওয়া হয় আপনি তো খুশি হবেন না। হবেন কি? আপনি তো সবচেয়ে নিম্নমানের খাবারেও সুখী হবেন না। হবেন কি? তাহলে কেন জান্নাতের জন্য আপনি এমন মনোভাব পোষণ করছেন? যদিও সবচেয়ে নিম্নমানের জান্নাতও অসীমভাবে সেরা। আর খারাপ জান্নাত বলে কিছু নেই। হ্যাঁ, আমি এটা বুঝি এবং একমত। কিন্তু, কেন আপনি মাঝারি মানের জন্য লক্ষ্য স্থির করবেন? উচ্চাশা পোষণ করুন। সবচেয়ে সেরা জান্নাত পাওয়ার জন্য সংগ্রাম করে যান। মনোবল সঞ্চয় করে আল্লাহর নিকট হাত তুলে বলুন- ও আল্লাহ! আমি জান্নাতে প্রবেশকারীদের প্রথম সারিতে থাকতে চাই। ও আল্লাহ! আমি তাঁদের কাতারে থাকতে চাই যারা কোনো ধরণের হিসেব এবং শাস্তি ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে। ও আল্লাহ! আমাকে বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করান। ও আল্লাহ! যারা সবার আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করে দিন। রাসূল (স) বলেছেন— "আল্লাহ জান্নাতে একশ’টি মর্যাদার স্তর প্রস্তুত করে রেখেছেন। দু’টি স্তরের ব্যবধান আসমান ও যমীনের দূরত্বের মত। তোমরা আল্লাহর নিকট চাইলে ফেরদাউস চাইবে। কেননা এটাই হলো সবচেয়ে উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত।" — ড. ইয়াসির ক্বাদী
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন