ইসলামে গিবত নিষিদ্ধ

 


কারও অনুপস্থিতিতে অন্যের সামনে তার দোষ নিয়ে আলোচনা করাই গিবত। একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের জিজ্ঞেস করলেন, ‘গিবত কাকে বলে? তোমরা কি তা জানো?

উপস্থিত সবাই বললেন, ‘আল্লাহ আর তাঁর রাসুল (সা.) ভালো জানেন।’

রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন বললেন, ‘জিকরুকা আখাকা বিমা ইয়াকরাহু।’ অর্থাৎ ‘গিবত হচ্ছে তোমার ভাইয়ের এমন কথা (দোষ) বর্ণনা করা, যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হবে।’

সাহাবিরা প্রশ্ন করলেন, বর্ণনা করা দোষ যদি ওই ভাইয়ের (আলোচিত ব্যক্তিটির) মধ্যে থাকে, তাহলেও কি তা গিবত হবে?

রাসুল (সা.) বললেন, যদি তা সঠিক থাকে হয়; তবেই তা গিবত। অন্যথায় তা হবে অপবাদ। (মুসলিম, হাদিস: ৬৩৫৭; বুখারি, হাদিস: ৫৬১৩)কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ কোরো না। আর তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১২)

কোরআনে আরও আছে, দুর্ভোগ এদের প্রত্যেকের যে সামনে ও পেছনে লোকের নিন্দা করে, যে অর্থ জমায় ও বারবার তা গোনে, ভাবে যে এ অর্থ তাকে অমর করে রাখবে। কখনো না। তাকে তো ফেলা হবে হুতামায়। হুতামা কী, তুমি কি তা জান? এটা আল্লাহর প্রজ্বলিত হুতাশন, যা হৃৎপিণ্ডগুলোকে গ্রাস করবে, ওদেরকে বেঁধে রাখবে দীর্ঘায়িত স্তম্ভে। (সুরা হুমাজা, আয়াত: ১-৯)

ইসলামে গিবত বা পরনিন্দা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নিষিদ্ধ। গিবত করা ও গিবত শোনা সমান অপরাধ। অনেকে পরনিন্দাকে নিষিদ্ধ বলে মনেই করেন না। মদ্যপান, চুরি, ডাকাতি, ব্যভিচার ইত্যাদির চেয়েও মারাত্মক ও নিকৃষ্টতম পাপ ও কবিরা গুনাহ গিবত।

মহানবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, ‘পরচর্চাকারী জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন আমাকে মিরাজে নিয়ে যাওয়া হলো, তখন আমাকে তামার নখওয়ালা একদল লোকের পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো। তারা তাদের নখগুলো দিয়ে মুখমণ্ডলে আর বুকে আঘাত করে ক্ষতবিক্ষত করছিল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে জিবরাইল! এরা কারা? জিবরাইল (আ.) বললেন, এরা দুনিয়াতে মানুষের গোশত ভক্ষণ করত এবং তাদের মানসম্মান নষ্ট করত। অর্থাৎ তারা মানুষের গিবত ও কুৎসা করত।’ (আবু দাউদ)।

============================================================

আল্লাহ তায়ালা বলেন-- هُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ لَکُمۡ مَّا فِی الۡاَرۡضِ جَمِیۡعًا - "তিনি পৃথিবীর সবকিছু তোমাদের (মানুষের) জন্য সৃষ্টি করেছেন।" (২:২৯) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এই দুনিয়ার সবকিছু সৃষ্টি করেছেন আমাদের জন্য। আর আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন শুধুই তাঁর ইবাদাত করার জন্য। আমাদের আসল চাকরি হলো আল্লাহর ইবাদাত করা। আমাদের বেঁচে থাকার আসল উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর ইবাদাত করা। আর আল্লাহর ইবাদাতের মধ্যে একেবারে প্রধানতম কাজ হলো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। ইবাদাতের জন্য যত কিছুই করেন না কেন, সময়মত দৈনিক নামাজগুলো আদায় করার চেয়ে উত্তম কিছু নেই। এজন্য সাহাবারা যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন যে, আমরা আল্লাহর জন্য সর্বোত্তম কী আমল করতে পারি? উত্তরে তিনি বলেন, সময়মত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। যে কেউ তার নামাজগুলো ঠিকমত আদায় করে সে তার দ্বীনকে রক্ষা করে। আর যে কেউ তার নামাজের ব্যাপারে উদাসীন সে তার দ্বীনকে ধ্বংস করে। -- শায়েখ ওমর আল বান্না

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

ডায়াবেটিস রোগীর ডায়েট চার্ট