আল্লাহর কাছে কারো মূল্য

 


আমাদের সমাজে একজন মানুষের দাম নির্ধারিত হয় টাকার মূল্যে। যে যত বেশি টাকা আয় করে সমাজে তার তত বেশি দাম।

আমাদের কোনো ধারণাই নেই যে, আল্লাহর কাছে কারো মূল্য কিভাবে নির্ধারিত হয়। আপনার সত্যিকারের মূল্য নির্ধারিত হয় আপনি কতটুকু জান্নাত অর্জন করতে পেরেছেন তার উপর। জান্নাতের চেয়ে উত্তম কিছুর অস্তিত্ত্ব নেই। জান্নাতের চেয়ে উত্তম কোনো পুরস্কারের অস্তিত্ত্ব নেই। এ জন্য মদিনার নতুন মুসলমানেরা যখন মক্কায় এসে রাসূলুল্লাহ (স) কে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, অর্থাৎ আকাবার শপথের পর, তাঁরা জিজ্ঞেস করেছিলেন তাদের পুরস্কার কী হবে? এ সাহায্যের বিনিময়ে তারা কী পাবে? উত্তরে রাসূল (স) বলেছিলেন, জান্নাত। জান্নাত তোমাদের পুরস্কার। তিনি তাদের বলেননি, যদি তোমরা আমাকে সাহায্য করো তাহলে আমরা এক সাথে পারস্য এবং রোমান সাম্রাজ্য জয় করবো। ফলে তোমরা প্রত্যেকে বিশাল ধনী হয়ে যাবে। না। তিনি এমনটি বলেননি। তিনি বলেছিলেন, তোমাদের পুরস্কার হলো জান্নাত। এমনকি কুরআনেও আল্লাহর পথে সংগ্রাম করার পুরস্কার হিসেবে প্রথমে জান্নাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। দুনিয়ার বিজয়ের কথা সেকেন্ডারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দুনিয়ার বিজয়কে "উখরা বা সেকেন্ডারী" বলা হয়েছে। এবং বলা হয়েছে তোমরা এটা ভালোবাসো। কিন্তু তোমাদের প্রকৃত পুরস্কার হলো জান্নাত। [সূরা সফ ৬১:১০-১৩ দেখুন]  কারণ, কোনো পুরস্কারই জান্নাতের সমান নয়। আমাদেরকে জান্নাত ভালোবাসতে হবে। আমরা আসলে জান্নাতকে ভালোবাসি না। কারো বেশি টাকা দেখলে আমরা তাকে সম্মান দেখাই। উন্নত গাড়ি বাড়ি দেখলে আমরা সম্মান দেখাই। কিন্তু যারা উত্তম উপায়ে নামাজ পড়ে আমরা তাদের সম্মান দেখাই না। কাউকে যদি মসজিদে আপনার চেয়ে ভালোভাবে নামাজ পড়তে দেখেন আপনার কোনো ধারণাই নেই, সে যে কত বেশি পরিমাণে সম্পদ পেতে যাচ্ছে। জান্নাতে সে যা পাবে তা মিলিয়ন মিলিয়ন গুণে উত্তম। আসলে অগণিত গুণে উত্তম। কেউ যদি অন্তর থেকে সুবহানাল্লাহ বলে, এটার কারণে সে যে পুরস্কার পাবে, দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম প্রাসাদ দিয়েও যার মূল্য নির্ধারণ করা যাবে না। এর সাথে আরও বিশ ত্রিশ মিলিয়ন গুণ যোগ করুন। তবু তা একবার 'সুবহানাল্লাহ' বলার সমান হবে না। যদি মানুষ অর্থ বুঝে অন্তর থেকে বলে। এই দুনিয়া পুরস্কার পাওয়ার স্থান নয়। মানুষ ভুল জায়গায় জান্নাত খোঁজে। দুনিয়া কোনোদিন জান্নাত হওয়ার কথা ছিল না। হবেও না। দুনিয়া পরীক্ষার জায়গা। পরীক্ষা শেষ হলে পুরস্কার পাবেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে শুধু একটি কথা স্মরণে রাখুন, এখন আমার রবের হুকুম কী? তিনি আমাকে কী করতে বলেন? সর্বদা আপনার সামনে দুইটি অপশন এসে উপস্থিত হবে। আপনি কী চান। এবং আপনার রব কী চায়। সবসময় আপনার রবেরটা পছন্দ করুন। কারণ, তাঁর চাওয়াটা সবসময় আপনার জন্য উত্তম। খুবই সহজ ব্যাপার। এটাকে যদি আপনার জীবনের মূলনীতি হিসেবে মেনে চলেন সবসময় সফল হবেন। -- ড. আকরাম নদভীর আলোচনা অবলম্বনে -- Tafsir Surah Baqarah 6.3 -- deepdeentv

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে