কিয়ামতের পূর্বে

 


শুরুতে একটি নিয়ম জেনে নিই। যখনই কোনো সাহাবী অদৃশ্য জগতের কিছু বলেন আমরা ধরে নিবো যে, উনি এটা রাসূলুল্লাহ (স) এর কাছ থেকে শুনে থাকবেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন-(কিয়ামতের পূর্বে) "অবস্থা এমন হবে যে, মানুষ তাদের উত্তরাধিকার বন্টন করতে পারবে না।" অর্থাৎ, গণহত্যা এবং হত্যাযজ্ঞ এতো বেশি পরিমাণে হবে যে সমগ্র পরিবারের সবার মৃত্যু হয়ে যাবে। উত্তরাধিকার বন্টন করার মত অবস্থা আর থাকবে না। "এবং মানুষ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ পেয়েও খুশি হবে না।" অর্থাৎ, সম্পদ দিয়ে কী হবে। পরিবারের কেউ তো বেঁচে নেই। ইবনে মাসউদ বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন, "যুদ্ধের অবস্থা এমন ভয়াবহ হবে যে, তাদের উপর দিয়ে উড়ে যাওয়া পাখি মরে পড়ে যাবে।" এখন, আমাকে বলুন, মানুষ জমিনের উপর যতই তলোয়ার দিয়ে যুদ্ধ করুক না কেন এর কোনো প্রভাব কি আকাশে পড়ে? আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়া পাখির উপর এর কি কোনো প্রভাব পড়ে? না। তাহলে যুদ্ধে এমন কিছু ব্যবহার করা হবে যার ফলে উড়ে যাওয়া পাখিও মরে পড়ে যাবে। (এটা কি পরমাণু বোমার কারণে হবে? আল্লাহ ভালো জানেন।) এরপর হাদিসে বলা হলো-- "একশ জনের মধ্যে ৯৯ জন মৃত্যুবরণ করবে।" ঐ যুদ্ধে ৯৯% মরে যাবে। মানব ইতিহাসের কোন যুদ্ধে ৯৯ শতাংশ মানুষের মৃত্যু হয়? আমি এমন কোনো যুদ্ধের কথা জানি না। (এটা কি পরমাণু যুদ্ধের কারণে হবে? আল্লাহ ভালো জানেন।) "তাহলে কিভাবে মানুষ গনীমতের সম্পদ পেয়ে খুশি হবে? বা উত্তরাধিকারের কিভাবে বন্টন হবে?" —শাইখ ইয়াসির কাদির আলোচনা থেকে অতএব, যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে আল্লাহর প্রতি সুধারণা হারাবেন না। কারণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ভয়াবহতার কথা আমাদের আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। তাই আমাদের মনোভাবটা হওয়া উচিত এরকম—  وَ لَمَّا رَاَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ الۡاَحۡزَابَ ۙ قَالُوۡا هٰذَا مَا وَعَدَنَا اللّٰهُ وَ رَسُوۡلُهٗ وَ صَدَقَ اللّٰهُ وَ رَسُوۡلُهٗ ۫ وَ مَا زَادَهُمۡ اِلَّاۤ اِیۡمَانًا وَّ تَسۡلِیۡمًا — "মু’মিনরা যখন সম্মিলিত বাহিনীকে দেখল তখন তারা বলে উঠল—আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আনুগত্যের আগ্রহই বৃদ্ধি পেল।" (৩৩ঃ ২২) আর জেনে রাখুন প্রকৃত সফলতা হলো পরকালের সফলতা। فَمَنۡ زُحۡزِحَ عَنِ النَّارِ وَ اُدۡخِلَ الۡجَنَّۃَ فَقَدۡ فَازَ - যে ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করা হলো এবং জান্নাতে দাখিল করা হলো, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হলো। (3:185) আর কাফেরদের ব্যাপারে—لَا یَغُرَّنَّكَ تَقَلُّبُ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا فِی الۡبِلَادِ —দেশে দেশে কাফিরদের সদম্ভ পদচারণা তোমাকে যেন বিভ্রান্ত না করে। مَتَاعٌ قَلِیۡلٌ ۟ ثُمَّ مَاۡوٰىهُمۡ جَهَنَّمُ ؕ وَ بِئۡسَ الۡمِهَادُ — সামান্য ভোগ, তারপর জাহান্নাম তাদের আবাস, আর তা কতই না নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল! (3:196-197)

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে