কোমল স্বভাব: জান্নাতি মানুষদের বৈশিষ্ট্য

 


কোমল স্বভাব: জান্নাতি মানুষদের বৈশিষ্ট্য

----------------------*------------------- মুমিনের একটি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হলো সে ঝামেলা তৈরি করে না। সে ক্ষুদ্রমনা নয়। এমন অনেককে হয়তো চিনে থাকবেন যার সাথে আপনি কোনো ধরনের কাজ কারবারে জড়াতে চান না। তারা ঝামেলা পাকাবে, উচ্চ আওয়াজে কথা বলবে, সামান্য ভুল ত্রুটিও মেনে নিবে না। আবার, অন্য অনেককে চিনে থাকবেন যাদের সাথে কাজ কারবার করা অনেক সহজ। মুমিন হলো হাইয়িন বা কোমল। সে হলো জেন্টল বা নম্র-ভদ্র। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা কুরআনে এ বলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রশংসা করেন- فَبِمَا رَحۡمَۃٍ مِّنَ اللّٰهِ لِنۡتَ لَهُمۡ “অতঃপর আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের কারণে তুমি তাদের জন্য নম্র হয়েছিলে।” وَ لَوۡ کُنۡتَ فَظًّا غَلِیۡظَ الۡقَلۡبِ لَانۡفَضُّوۡا مِنۡ حَوۡلِکَ ۪- “আর যদি তুমি কঠোর স্বভাবের, কঠিন হৃদয়সম্পন্ন হতে, তবে তারা তোমার আশপাশ থেকে সরে পড়ত।” (3:159) অর্থাৎ, রাসূলুল্লাহ (স) যদি কঠোর স্বভাবের হতেন তাহলে সাহাবারা আশপাশ থেকে সরে পড়তো। তিনি হলেন আমাদের রোল মডেল। তাই আমাদেরও উচিত নম্র এবং কোমল স্বভাবের হওয়া। সবার সাথে। বাছাই করা কিছু মানুষের সাথে নয়। আপনার স্বাভাবিক চরিত্র হলো আপনি ভদ্র এবং কোমল স্বভাবের। যখন আল্লাহ তাআলা মূসা আলাইহিস সালামকে ফেরাউনের নিকট প্রেরণ করেন তখন তিনি কী বলেছিলেন? আল্লাহ বলেন - فَقُوۡلَا لَهٗ قَوۡلًا لَّیِّنًا - তার সঙ্গে নম্রভাবে কথা বলবে। (২০ঃ ৪৪) মূসা আলাইহিস সালাম ফেরাউনের কাছে যাচ্ছেন আর আল্লাহ তাকে বলছেন ফেরাউনের সাথে নরম স্বরে কথা বলো। হয়তোবা সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভয় করবে। আমাদের স্বাভাবিক আচরণ হলো আমরা মানুষের সাথে নম্র এবং কোমল উপায় অবলম্বন করে আচরণ করব। তিরমিজি শরীফের একটি হাদীসে আমাদের রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন—খুব সুন্দর একটি হাদিস, মনোযোগ দিয়ে শুনুন— "আমি কি তোমাদের এমন ব্যক্তির কথা বলব যাকে আল্লাহ জাহান্নামের জন্যে হারাম করেছেন এবং যার জন্য আল্লাহ জাহান্নাম হারাম করেছেন?" তিনি উভয় উপায়ের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। লোকটা জাহান্নামের জন্য হারাম এবং জাহান্নাম লোকটার জন্য হারাম। সাহাবারা জিজ্ঞেস করলেন কে সে ব্যক্তি? তিনি বলেন— كُلِّ قَرِيبٍ هَيِّنٍ لَيِّنٍ سَهْلٍ - "যে ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (জনপ্রিয়), সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী।" এমন প্রত্যেক ব্যক্তি যে নম্র-ভদ্র, সাহল বা যে ঝঞ্ঝাটঝামেলা থেকে মুক্ত, কারিব বা সে মানুষের কাছাকাছি থাকে। সে এমন ব্যক্তি যার সাথে আপনি সহজে আচার আচরণ করতে পারেন। যে কোনো ঝামেলা তৈরি করে না। সুবহানাল্লাহ! আমরা নিজেদের সমাজেই এমন মানুষের সাথে পরিচিত। যারা অমায়িক এবং শান্ত স্বভাবের সবাই তাদেরকে পছন্দ করে। আর বিপরীত স্বভাবের মানুষের ধারেকাছেও কেউ যেতে চায় না। [পরিবারের লোকজন আপনার কোমল আচরণ পাওয়ার বেশি হকদার। তাদের সাথে অমায়িক ব্যবহার করুন। অনেককে দেখেছি বাইরের মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার করেন কিন্তু পরিবারের সদস্যদের সাথে কঠোর আচরণ করেন। এটা ঠিক না। তাদের ছোটখাটো ভুলত্রুটি উপেক্ষা করুন।] —ড. ইয়াসির কাদি

Comments

Popular posts from this blog

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে