ধৈর্যের সংজ্ঞা
ধৈর্যের সংজ্ঞা — ড. ইয়াসির ক্বাদী এখন প্রশ্ন হলো ধৈর্য বলতে আসলে কী বোঝায়? আর কিভাবে এটা প্রদর্শন করা হয়? আমার প্রিয় ভাই এবং বোনেরা, বুঝতে চেষ্টা করুন, ধৈর্য এতো কঠিন হওয়ার কারণ হলো— বাস্তবে ধৈর্য মানে কোনো কিছু না করা, নিষ্ক্রিয়তা। ধৈর্য মানে কিছু না করা। কাজটি করার ইচ্ছেটাকে দমন করা। কোনো কিছু করা বরং সহজ। যখন কোনো কিছুতে বিরক্ত হয়ে পড়েন, যখন রেগে যান, কষ্ট পান যখন, শোকাহত হয়ে পড়েন যখন, তখন মনে হয় কিছু একটা করা দরকার। ধৈর্য মানে সে সময় নিজেকে দমন করা, আটকিয়ে দেওয়া এমন কিছু করা থেকে যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। ধৈর্য মানে— কোনো কারণে ভেতরে ভেতরে আপনার খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আপনি তা বাহিরে প্রকাশ হতে দিচ্ছেন না। শোক, রাগ, ক্ষোভ, হতাশা, যেটাই হউক না কেন আপনি তা গিলে ফেলেছেন, বাহিরে প্রকাশ হতে দিচ্ছেন না। ঠিক এই কারণে ধৈর্য ধরা এতো কঠিন। কারণ, সক্রিয়তার নাম ধৈর্য নয়; ধৈর্য হলো নিষ্ক্রিয়তার নাম। (patience is not an action, patience is inaction) কেউ একজন মারা গেলো, আপনার প্রিয় কারো মৃত্যু হলো। আপনি তখন জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ করেন। অনৈসলামিক পন্থায় আপনি বিলাপ করেন না। আপনি জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করেন। চাকরি হারিয়ে ফেললেন, আপনি তখন চিৎকার চেচামেচি শুরু করেন না— "কেন আমার সাথে এমনটা ঘটছে? আমি কার ক্ষতি করেছি? আল্লাহ শুধু আমাকেই দেখে!!" আস্তাগফিরুল্লাহ! কে আপনি আল্লাহর বিজ্ঞতাকে প্রশ্ন করার। এমন চ্যালেঞ্জ করার কে আপনি। আপনি তো আল্লাহর একজন দাস মাত্র। আপনি যদি আল্লাহর সত্যিকারের একজন দাস হয়ে থাকেন তখন আপনি বলবেন- "ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। " ও আল্লাহ! আপনি আমার রব! আমি বুঝতে পারছি না। কিন্তু, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি। আমি বিশ্বাস করি যা ঘটেছে তা ভালোর জন্যই ঘটেছে। আমি বুঝতে পারছি না। কারণ, আমার বুদ্ধি সীমিত। আমি আপনার প্রজ্ঞাকে প্রশ্ন করছি না, ও আল্লাহ। আমি আমার নিজের বুদ্ধিকে প্রশ্ন করছি। আর আপনার উপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে, ও আল্লাহ। আমি জানি, আপনি আমার অবস্থা উন্নত করে দিবেন। এর নাম হলো ধৈর্য। আপনার মনোভাব, আপনার উচ্চারিত শব্দ, আপনার কর্ম সবকিছু নিয়ন্ত্রিত।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন