জান্নাতে আল্লাহর সাথে আপনার প্রথম কথোপকথনটি কেমন হবে ?


 জান্নাতে আল্লাহর সাথে আপনার প্রথম কথোপকথনটি কেমন হবে তা নিয়ে কখনো ভেবে দেখেছেন

ধরুন, আল্লাহর রহমতে আপনি জান্নাতে প্রবেশ করেছেন। প্রথমবারের মতো আল্লাহর সাথে আপনার সাক্ষাৎ। গেইট দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করলেন। জান্নাতি পোশাক পরিচ্ছদ পরিধান করলেন। প্রাসাদগুলো দেখতে পাচ্ছেন। নদীগুলো দেখতে পাচ্ছেন। নিজের পরিবার পরিজনকে দেখতে পাচ্ছেন। এখন, আল্লাহ আপনার সাথে কথা বলতে চান। আর এটা প্রশ্নত্তোর নয়। কারণ, প্রশ্নোত্তরের সেশন ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ হবে আমাদের। সে সময় আমাদের বিশেষভাবে সজ্জিত করা হবে। আল্লাহ যার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে--عٰلِیَهُمۡ ثِیَابُ سُنۡدُسٍ خُضۡرٌ وَّ اِسۡتَبۡرَقٌ ۫ وَّ حُلُّوۡۤا اَسَاوِرَ مِنۡ فِضَّۃٍ - তাদের উপর থাকবে সবুজ ও মিহি রেশমের পোশাক এবং মোটা রেশমের পোশাক, তারা অলংকৃত হবে রৌপ্য নির্মিত কংকনে।" (৭৬:২১) তাদেরকে বিভিন্ন ধরণের সিল্কের তৈরি পোশাক পরানো হবে, হাতে বিশেষ ধরণের ব্রেসলেট পরানো হবে। মনে করতে পারেন রোলেক্স ঘড়ির মত কিছু। বিশেষ ব্রান্ডের ঘড়ি পরানো হবে। হাতে ব্রেসলেট পরানো হবে। সুন্দর জামা পরানো হবে। কেন তাদের স্পেশাল পোশাক পরানো হবে? কারণ, বিশেষ কারো সাথে সাক্ষাতের সময় আমরা উত্তম পোশাক পরিধান করি। আর এখন মহা বিশ্বের মালিকের সাথে আমাদের সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। তাই, আমাদের সর্বোত্তম উপায়ে সজ্জিত করা হবে। ঠিক একই আয়াতের পরের অংশে তিনি বলেন- وَ سَقٰهُمۡ رَبُّهُمۡ شَرَابًا طَهُوۡرًا - "আর তাদের রব, আল্লাহ! তাদেরকে পবিত্র ড্রিঙ্কস পান করতে দিবেন।" আল্লাহ আমাদের সুস্বাদু ড্রিংকস পান করতে দিবেন। আর যখন পবিত্র পানীয় আমাদের দিবেন তিনি তখন আমাদের সাথে কথা বলবেন, আর কী বলবেন তিনি তখন? তিনি বলবেন- اِنَّ هٰذَا کَانَ لَکُمۡ جَزَآءً وَّ کَانَ سَعۡیُکُمۡ مَّشۡکُوۡرًا - "এটিই তোমাদের বেতন, এটিই তোমাদের পুরস্কার, আর তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা ছিল প্রশংসাযোগ্য। তোমাদের চেষ্টাগুলো কবুল করে নেয়া হলো।" (৭৬:২২) কিন্তু আপনি তখন কী বলবেন? সেই কথোপকথনটি নিয়ে একটু ভাবুন তো। কী বলবেন তখন? জান্নাতে প্রথমবারের মত আল্লাহর সাথে যখন আপনার কথা বলার সুযোগ হবে। (শায়েখ ওমর সুলেইমান কয়েকজন মুসলিম ভাই বোনকে প্রশ্নটি করেছিলেন। তাদের উত্তর পড়ে দেখুন।) প্রথম উত্তরদাতা: আপনার প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। আপনার প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। আপনার প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। থ্যাংক ইউ। থ্যাংক ইউ। থ্যাংক ইউ। দ্বিতীয় উত্তরদাতা: আমাকে এখানে প্রবেশ করতে দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। কারণ, আমি জানি আমার আমল আমাকে এখানে প্রবেশ করানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। তৃতীয় উত্তরদাতা: সকল প্রশংসা আপনার জন্য। থ্যাংক ইউ। আলহামদুলিল্লাহ। আমার বেলায়— জীবনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার একমাত্র উপায় হলো আল্লাহর সাথে আমার সম্পর্ক। তিনি যে এ সময়টাতে, এ পরীক্ষার সময়টাতে আমার সাথে ছিলেন এটাই আমার কাছে সবকিছু। তিনি যে আমার জন্য একটি পারফেক্ট প্ল্যান লিখেছেন। তাই সকল কৃতজ্ঞতা তাঁর প্রতি। চরম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো তখন। চতুর্থ উত্তরদাতা: আমি আগে কখনো এটা নিয়ে চিন্তা করিনি। সম্ভবত আল্লাহকে সেজদা করবো। এবং তাঁর প্রশংসা করবো। পঞ্চম উত্তরদাতা: সে মুহূর্তে আমার অন্তর আসলে অনেক বেশি কৃতজ্ঞতাবোধ এবং থ্যাংকফুলনেসে পূর্ণ থাকবে। আমি এমনকি বুঝতে পারছি না কি বলবো। তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকাটাই হবে অনেক সৌন্দর্যময় একটি ব্যাপার। ষষ্ঠ উত্তরদাতা: আমি তাঁকে সবচেয়ে গভীর উপায়ে কৃতজ্ঞতা জানাবো সে সময়। ওই সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার জন্য যে কথাগুলো মনে আসবে সেগুলো ব্যবহার করে আমি সবচেয়ে অসামান্য উপায়ে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো। ইসলামের নেয়ামতের জন্য। এটি সত্যিই অনেক সুন্দর একটি ধর্ম। এটি আমাদের প্রচুর সাহস যোগায় মানুষের মত মানুষ হওয়ার জন্য, আরো ভালো হওয়ার জন্য আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলোকে অতিক্রম করতে প্রেরণা দিয়ে যায়। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য। সপ্তম উত্তরদাতা: আমার মনে হয়, এমনকি সে মুহূর্তেও আমি মাফ চাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবো। ব্যাপারটা এমন যেনো— আমি জানি আমি আপনার আদেশ নিষেধগুলো ঠিকভাবে মেনে চলিনি। আমি জানি আমি যথেষ্ট পরিমাণে করিনি। আমি জানি একজন মুসলিম হিসেবে আমার যা যা করার কথা ছিল আমি তা করিনি। হ্যাঁ। আপনার প্রতি শুকরিয়া আদায় করছি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কিন্তু, একই সময়ে, আমি আসলে খুবই দুঃখিত। ইয়া আল্লাহ! I am so sorry, iya Allah!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

❝সূরা হুজুরাত❞

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে