সবচাইতে ক্ষতিকর মানসিক অবস্থা
আপনি যদি সত্যি সত্যিই নিজের অবস্থা নিয়ে চিন্তাবোধ করেন, আর ভয়ে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন যে “আমার পাপগুলো এতো বেশি পরিমাণে এবং এতো বড় বড় যে আমার কোন আশাই নেই, আমার জন্যে কোন ক্ষমা নেই।” তবে এই সময়েই আমাদের আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লার হেদায়েত প্রয়োজন। কারণ খুবই কষ্টকর আর দুঃখজনক অবস্থা এটি। দেখুন, সবচাইতে কষ্টকর আর সবচাইতে ক্ষতিকর মানসিক অবস্থা হলো একদম নিরাশ হয়ে যাওয়া। যখন কেউ নিজের আত্মার একেবারে নিম্নতর অবস্থায় চলে যায় তখন সে মানুষের মনে আর কোন প্রকার আশারই অস্তিত্ব থাকে না। কিন্তু আল্লাহ আযযা ওয়াজাল আমাদের আশাহীন করে রাখেননি। আল্লাহ্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের অনেক আগেই বলে গিয়েছেন, “কুল্লু বনি আদম খাত্তাউন!” প্রত্যেক আদম সন্তান ভুল করে। এরপর তিনি বলেন, “ওয়া খাইরুল খাত্তাইন আত তাওয়াবুন।” ভুলকারী মানুষদের মধ্যে সর্বোত্তম হলো যারা তাওবা করে। যারা আল্লাহর দিকে ফিরে এসে ক্ষমা চায়। অন্যভাবে বললে, আল্লাহ এই দরজা আমাদের জন্য খুলে রেখেছেন। যতো পাপই আমরা করি না কেন, আল্লাহ আমাদের পুরো আমলনামা মুছে পরিষ্কার করে দিতে রাজি আছেন। যদি আপনি আমি আন্তরিকভাবেই আল্লাহ্র দিকে ফিরে আসি। যদি আমরা খাঁটি অন্তরে তাওবা করি। আগের পাপগুলো ছেড়ে দেই এবং নতুনভাবে শুরু করি। তিনি আসলেই আন্তরিক এক অন্তর চান যে তাঁর দিকে ফিরে আসবে। এমন অন্তর যে নিজের কির্তির ব্যাপারে সত্যিকার অর্থেই লজ্জিত থাকবে। যদি আমরা এমন করতে পারি তবে আল্লাহ একেবারে শুরু থেকে শুরু করবেন আমাদের জন্য। একেবারেই ফ্রেশ স্টার্ট দেবেন। আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা পেতে আরেকটি কাজ করুন। মানুষকে ক্ষমা করে দিন। মানুষের সাথে সর্বোত্তম আচরণ করুন। দয়ালু আচরণ করুন। মানুষের উপরকার করুন আর তাদের কাছ থেকে কোনো বিনিময় আশা করবেন না। এমনকি কৃতজ্ঞতাও নয়। সূরা ইনসানে আল্লাহ মুমিনদের এই বৈশিষ্টটি বর্ণনা করেছেন- "আর তারা আল্লাহর প্রতি তাদের ভালবাসার কারণে মিসকীন, ইয়াতীম ও কয়েদীকে খাবার খাওয়ায়। তারা বলে- ‘আমরা তোমাদেরকে খাবার খাওয়াচ্ছি কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য, আমরা তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান চাই না, চাই না কোন কৃতজ্ঞতাও। জেনে রাখুন, ক্ষমা করার ক্ষেত্রে আপনি কখনো আল্লাহ তায়ালাকে ছেড়ে যেতে পারবেন না। আপনি যদি মানুষের সাথে ক্ষমার আচরণ করেন, আল্লাহ আপনার সাথে ক্ষমার আচরণ করবেন। তিনি আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন। হাদিস থেকে আমরা এমন এক ব্যক্তির কথা জানি যে মানুষকে ঋণ প্রদান করতো। তো ঋণ কালেকশনে পাঠানোর সময় সে তার কর্মচারীদের বলত, তোমরা যখন কোনো অসচ্ছল ব্যক্তির কাছে যাবে তখন তার প্রতি সহানুভূতিশীল হও এবং তার থেকে ঋণ আদায়ে শিথিলতা দেখাও। আশা করা যায়, আল্লাহও আমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হবেন এবং আমাদের ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দিবেন। অতঃপর যখন সেই ব্যক্তির মৃত্যু হলো, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ২০৭৮) -- নোমান আলী খান এবং ইয়াসির কাদির আলোচনা অবলম্বনে
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন