মুনাফিকির বিশাল বড় এক সংস্কৃতি

 


উপনিবেশ-পরবর্তী সময়ে ইসলামি আন্দোলনগুলোর যে সংকট তৈরী হয় তা হলো, ক্ষমতার প্রতি অতিমাত্রার একধরণের মোহাবিষ্টতা তৈরী হয়। এই মোহাবিষ্টতা ছিলো—আমাদের ভুখন্ডের অধিকার নিতে হবে, আমাদেরকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সমস্যা হলো—ধরুন, কোনো মুসলিম দেশে, যেমন পাকিস্তানে, কিছু ইসলামপন্থী মানুষ হুট করে ক্ষমতা দখল করলো, কিছু ধর্মভীরু সামরিক জেনারেল বললো, "আমরা দেশে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠা করবো, শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করবো।" এখন সবার অবস্থা এরকম— "তাকবির!" (উচ্চস্বরে)। তাই না ?

আর আমরা আসলেই আনন্দিত, কারণ এখন আমরা পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক রাষ্ট্র পেলাম। ইসলামিক আইন অনুযায়ী সব হারাম জিনিস অপসারণ করা হবে— নাইটক্লাব বন্ধ হবে, বার বন্ধ করা হবে, সুদ বিলুপ্ত হবে। রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তিত হোলো। এটাই কি আসলে ইসলামের উদ্দেশ্য ? যদি তাই হয়, তাহলে আপনি ইসলামের আইন এমন এক জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন যাদের বেশিরভাগেরই এই আইনের প্রতি আগ্রহ নেই, তারা এটা মানতেও চায় না। তো, আপনি নিশ্চিত করছেন যে মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির পরিবর্তে ভিন্ন উদ্দেশ্যে এই আইন মানছে। যার অর্থ, আপনি মুনাফিকির বিশাল এক সংস্কৃতি তৈরি করছেন। মুনাফিকির বিশাল বড় এক সংস্কৃতি। উদাহরণস্বরূপ, ইরানে তাদের নিজস্ব ধরণের শরিয়া আইন বাস্তবায়ন করা হয়েছে; তাই না ? শিয়া জনগণের নিজস্ব শরিয়া আইন রয়েছে। তাদের নিজেদের মধ্য থেকেই কতগুলো বিদ্রোহ ও প্রতিবাদ ঘটে যাচ্ছে ? কেনো ? যদি ইসলামের উদ্দেশ্য হয় সরকার প্রতিষ্ঠা করে, আইন প্রণয়ন করে শুকরের মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করা, মদ নিষিদ্ধ করা—এটাকে যদি ইসলামের উদ্দেশ্য বলে আপনার মনে হয়, সেটা আপনি মনে করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি রসূল (সা.)-এর সীরাত অধ্যয়ন করেন, তাহলে লক্ষ করবেন, প্রথম উদ্দেশ্য ছিলো মূলত এমন মানুষ তৈরি করা যাদেরকে আল্লাহর আনুগত্য করাতে সরকারি নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজন পড়বে না। তাদেরকে রোজা রাখানোর জন্য সরকারি নির্দেশের প্রয়োজন হবে না। মদ পান বন্ধ করতে তাদেরকে সরকারি আইনের অপেক্ষায় থাকতে হবে না। রসূল (সা)-এর সীরাতে সবচেয়ে বিস্ময়কর যেসকল পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে, যে বিপ্লব সাধিত হয়েছে, এমনকি খিলাফত প্রতিষ্ঠা—খিলাফত ব্যবস্থাটিও এমন মানুষদের হাত ধরে এসেছে, যারা ইতিমধ্যেই, নিজে থেকেই আল্লাহর প্রতি পূর্ণ অনুগত ছিলেন। তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যক ইতিমধ্যেই আল্লাহর আনুগত্যে নিমজ্জিত ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই, তারা এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করলেন যা তাদের নিজেদের বিশ্বভাবনার সাথে ছিলো সামঞ্জস্যপূর্ণ। তারা ইতিমধ্যেই আল্লাহর কিতাব ও তাঁর রসূলের প্রতি অনুগত। এখন, আপনি যদি এটা জনগণের উপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেন, তাহলে এটা কি [لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ] — "ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই"—এর এক ধরণের লঙ্ঘন হবে না ? আমার স্মরণ আছে, আমার শৈশব কেটেছে সৌদি আরবে। এখন সেখানে আর এই নিয়ম নেই, আগে সেখানে [مُطَوَّعَةْ] - মুতাওও’য়াহ ছিলো। রিয়াদে, যেখানে আমরা শৈশব কেটেছে, যদি আসরের সময় আপনি রাস্তায় থাকেন আর আজান হয়ে যায়, তাহলে আপনার রাস্তায় না থাকাটাই বরং উত্তম। সেখানে পুলিশ-অনুমোদিত এক ধরণের বিশেষ কর্মচারী ছিলো, যাদের বলা হোতো [مُطَوَّعَةْ] - মুতাওও’য়াহ। তাদের হাতে লম্বা একটা লাঠি থাকতো। বেনামাজী অবস্থায় কাউকে দেখলে তারা মাথায় আঘাত করতো। আপনি যদি দৌড়ে মসজিদে না যান, তাহলে তারা পুলিশ ডাকতো। আর নামাজের সময় দোকান বন্ধ রাখতে হবে। কোনো দোকান খোলা পেলে দোকানদারকে টেনে নিয়ে যাওয়া হোতো। আর আমাদের আশেপাশে অনেক বাংলাদেশি মুসলিম, ভারতীয় মুসলিম, পাকিস্তানি মুসলিম, শ্রীলঙ্কান মুসলিম থাকতেন। কিন্তু সেখানে শ্রীলঙ্কান হিন্দু এবং খ্রিস্টানরাও ছিলেন। তাদেরকেও মাঝে-মাঝে জোর করে মসজিদে টেনে আনা হোতো। তারা তো আরবি বোঝে না, তারা শুনতো সবাই বলছে, “আসসালামু ‘আলাইকুম”, আর তারা উত্তর দিত "ওয়া ‘আলাইকুমুস সালাম"। “সালাহ, সালাহ, সালাহ”, “নো, নো, নো সালাহ”। না বললেই মার ! তার জীবনের প্রথম সালাহ হোলো এরকম—আল্লাহু আকবার। (হিন্দুদের পূজা করার ভঙ্গিতে)। এমনকি মুসলিমদেরকেও নামাজের জন্য মার খেতে হোতো। আপনি কি মনে করেন এটাই ইসলামের উদ্দেশ্য ? রসূল(সা.) যখন ফজরের নামাজ পড়তেন, কোনো সাহাবি নামাজে না এলে—এ বিষয়ে শক্ত কিছু হাদিস রয়েছে, কিন্তু কোনো হাদিসেই বলা হয়নি, "ঘাড় ধরে টেনে নিয়ে এসে নামাজ পড়াও"। কোনো হাদিসেই নেই ! পরবর্তীতে উমর (রা)-র সময়ের ঘটনা—তিনি এক ব্যক্তিকে বাড়িতে মদ পান করতে দেখলেন। তিনি রাস্তায় হাঁটতেন; তাই না ? জানালা খোলা ছিল, ভেতরে লোকটিকে মাতাল অবস্থায় দেখতে পেলেন। উমর (রা) বললেন, "তুমি হারাম কাজ করছো !" লোকটি বললো, "আমি একটি হারাম কাজ করেছি, আপনি করেছেন তিনটি। প্রথমত, আপনি আমার ঘরের ভেতর উঁকি দিয়েছেন। আমার গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার রয়েছে। দ্বিতীয়ত, আপনি অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করেছেন। তৃতীয়ত, আপনি ধারণা করছেন। কিভাবে জানলেন যে এটা মদ ?" উমার ইবনুল খাত্তাব তাকে ছেড়ে দিলেন। তিনি চলে গেলেন। কয়েকদিন পর উমার খুতবা দিচ্ছেন। শ্রোতাদের মধ্যে কে ছিলো ? সেই লোকটি। পরে উমার তাকে ডেকে বললেন, "আমি কাউকে তোমার কথা বলিনি।" লোকটি বলল, "সেদিনের পর থেকে আমিও মদ ছেড়ে দিয়েছি।" কুরআনের লক্ষ্য হলো—বিজয়। সেই বিজয় হোলো এমন মানুষ তৈরি করা, যারা আল্লাহর আনুগত্য করবে—এমনকি যদি তাদের প্রতিটি ইন্দ্রিয় আল্লাহর অবাধ্যতার পথে তাড়িত করে। হুদাইবিয়াতে কি তা-ই ঘটেনি ? সেটাই কি চূড়ান্ত বিজয় নয় ? আপনি কি মনে করেন, আমাদের সন্তানেরা যদি নামাজ পড়তে না চায়, আর আমরা তাদের কোনো মুসলিম দেশে নিয়ে যাই যেখানে নামাজ বাধ্যতামূলক; আমাদের সন্তানেরা যদি হিজাব পরতে না চায়, কুরআন পড়তে না চায়, দীনের প্রতি আগ্রহী না হয়, তারা যদি কনসার্টে যেতে চায়, জুয়া খেলতে চায়, মদ পান করতে চায়; আর আপনি শুধু "হারাম" বলে তাদেরকে বাধা দিচ্ছেন। এখন তারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠলো। তারা কিন্তু এই কাজগুলো করতে চায়। আর আপনি তাদেরকে কোনো মুসলিম দেশে রেখে বাধা দিচ্ছেন। আপনি কি মনে করেন, এতে তারা ইমানদার হয়ে যাবে ? আপনি কি মনে করেন সেটা আল্লাহর দৃষ্টিতে তাদেরকে সফল করে তুলবে ? কিয়ামতের দিন আল্লাহ কি তাদের কোনো মুসলিম দেশে অবস্থান করে বাধ্য হওয়ার কারণে বিচার করবেন ? হ্যাহ ! তারা যা করতে পারেনি, আল্লাহ কি সেটা বিচার করবেন, নাকি হৃদয়ের অবস্থা বিচার করবেন ? ইসলামের চূড়ান্ত বিজয় হোলো মানুষকে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে সফল হিসেবে উপস্থাপন করা। যদি এই লক্ষ্য অর্জিত না হয়, যদি সেটা আপনার লক্ষ্য না হয়, যদি আপনার লক্ষ্য হয় ইসলামিক আইন জোরপূর্বক চাপানো—যাকে আপনি ইসলাম বলে মনে করছেন—তাহলে আপনি ব্যর্থ। কোটি মানুষকে জোর করে নামাজ পড়ানো এবং হালাল খাবার গ্রহণে বাধ্য করার কি মূল্য—যেখানে তাদের অধিকাংশই তা চায় না‌; সেক্ষেত্রে যখনই তারা স্বাধীনতা পাবে, তারা অন্য পথে চলে যাবে। এগুলো কুৎসিত বাস্তবতা। তবে আপনাদের বিষয়গুলো জেনে রাখা উচিৎ। উদাহরণস্বরূপ, একটি নাম না করা "ইসলামিক" দেশ—সেখানে মদ নিষিদ্ধ, জুয়া নিষিদ্ধ, আরো অনেক কিছু নিষিদ্ধ। পাশের দেশও মুসলিম রাষ্ট্র। কিন্তু সেখানে মদ, পতিতাবৃত্তি, নাইটক্লাব—সব বৈধ। দুই দেশের মাঝে সীমানা রয়েছে, আর এটা উন্মুক্ত সীমানা। প্রতি শুক্রবার রাতে "ইসলামিক" দেশ থেকে অনিসলামিক দেশটির দিকে—ভীষণ ট্রাফিক জ্যাম ! সাপ্তাহিক ছুটি শেষে এরপর আবার সবাই মিলে সেখান থেকে হিজরত করে । প্রতি সপ্তাহে তারা এই উমরাহ করে ! দুটিই কিন্তু মুসলিম দেশ। মুসলিম দেশ। দুই দেশেই আজান হয়, উভয় দেশেই নামাজ হয়। কিন্তু এই বাস্তবতা কী বলছে ? বাস্তবতা হলো—মানুষের কাছে ইসলামকে পৌঁছানো হোচ্ছে না। মুসলিম দেশগুলোর প্রেক্ষিতে আমরা যখন ইসলাম নিয়ে আলোচনা করি, আমরা বুঝাই শরিয়া কোর্ট, আমরা বুঝাই নিয়ম-কানুন, আমরা বুঝাই—মুরতাদকে হত্যা করতে হবে, অথবা মদ নিষিদ্ধ করতে হবে। মদ নিষিদ্ধ করেন বা না করেন, যেই মানুষগুলো মদপান করতে চায়, আপনি এই বিষয়ে মনোযোগ দেননি যে, কেনো তারা মদ্যপান করতে চায়। সাহবীগণ কেনো মদ ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন যার প্রতি তাঁরা বছরের পর বছর আসক্ত ছিলেন, একটি মাত্র আয়াত নাযিল হলো, আর, কোনো পুলিশ, কোনো আইন, কোনো জরিমানা ছাড়াই মদিনার রাস্তায় মদের বন্যা বয়ে গিয়েছিলো ? কেন ? কারণ, সেটাই ছিল রসূল(সা.)-এর চূড়ান্ত বিজয়। তিনি এরকম মানুষ গড়েছিলেন। মানুষ‌ গুরুত্বপূর্ণ; সরকার নয়, নীতি-নির্ধারণ নয়, নিয়ন্ত্রণ নয়, ভূমি নয়, সম্পদ নয়। “ওহ, আমাদের তো মিডিয়া নেই, আমাদের তো ক্ষমতা নেই, আমাদের তো সম্পদ নেই, আমাদের তো টাকা নেই।” রসূল(সা)-এর কী সম্পদ ছিলো ? তাঁর কী সম্পদ ছিলো ? আর অবশেষে খাইবারে তো আমরা কোটিকোটি টাকা পেতে যাচ্ছি; তাই না ? আর আল্লাহ এই কোটি টাকাকে কীভাবে বর্ণনা করছেন? গৌণ। ভূমি— [أُخْرٰى لَمْ تَقْدِرُوا عَلَيْهَا قَدْ أَحَاطَ اللَّهُ بِهَا]। আমাদের মনোভাব কি হয়েছে ? যতক্ষণ না মুসলিমদের হাতে সম্পদ থাকবে, যতক্ষণ না আমাদের টাকা থাকবে, যতক্ষণ না ক্ষমতা থাকবে, যতক্ষণ না সরকার থাকবে, যতক্ষণ না শরিয়া কোর্ট থাকবে, ততক্ষণ ইসলাম বিজয়ী হবে না। আসলেই ? অন্য কথায়, আমরা মনে করি ইসলাম উপর থেকে নিচে আসবে। ইসলাম সবসময় কীভাবে এসেছে ? নিচ থেকে উপরে, নিচ থেকে উপরে। কোনো সমাজে ইসলাম আনার পদ্ধতিও শুধুমাত্র নিচ থেকে উপরেই হতে পারে। আর যদি আপনি উপর থেকে নিচে আনতে চান, যদি একদল মুসলিম বলে আমরা উপর থেকে নিচে ইসলাম আনব, কী ঘটবে ? আপনি এটাকে সমাজের উপর জোর করে চাপিয়ে দিলেন, ঠিক যেভাবে কাউকে জোর করে এমন কিছু খাওয়ানো যা সে খেতে চায় না। কি ঘটবে ? সে বমি করে ফেলবে। সে শুধু ‘ওয়াক’ করে বের করে দিবে। আর এরকম যাতে না হয় সেই প্রচেষ্টাই আমাদের করতে হবে। আমার মতে, সবচেয়ে বড় যুদ্ধ হলো— আমাদের দেশগুলোকে ইসলামিক বানানো নয়। আমার কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো—আমাদের যুবকদেরকে কুরআন দ্বারা অনুপ্রাণিত করা। এটুকুই। কারণ আমরা যদি আমাদের যুবকদেরকে কুরআন দ্বারা অনুপ্রাণিত করতে পারি, তবে সেই যুবকরাই একদিন বাবা হবে। আর ২০ বছরের মধ্যে আমরা মুসলিমদের গোটা এমনটি প্রজন্ম পাব, যারা স্বাভাবিকভাবে ইসলামিক সমাজ বিনির্মাণ করবে। কারণ তারা এই দ্বীনের সাথে সম্পৃক্ত, এটা তাদের মনস্তত্ত্বের অংশ। তারা সচেতনভাবে মুসলিম। তারা সংস্কৃতিগত মুসলিম নয়। তারা এজন্য মুসলিম নয়, কারণ তাদের বাবা মুসলিম অথবা তাদের মা মুসলিম। তারা মুসলিম, কারণ তারা এই দ্বীনকে ভালোবাসে, তারা এতে বিশ্বাসী, তারা এর মূল্যবোধকে ধারণ করে। তারা তাদের অমুসলিম বন্ধুদেরও এই মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত করতে পারে। তারা এতটাই দৃঢ় বিশ্বাসী যে, মানুষ তাদের আশেপাশে থাকতে শঙ্কিত, কারণ তাদের সাথে থাকলে তারাও মুসলিম হয়ে যেতে পারে ! যখন আপনি এমন তারুণ্য গড়তে শুরু করবেন, তখনই আপনি বিশ্বে পরিবর্তন দেখতে পাবেন। তখনই আপনি পরিবর্তন দেখতে পাবেন। মূলত এই মানবসম্পদই প্রকৃত সম্পদ। —নোমান আলী খান

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

দিরিলিসের আরতুগ্রুলের সকল পর্ব কিভাবে দেখবেন?

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে