ফিতনা হলো তিন প্রকারের

 


ফিতনা হলো তিন প্রকারের। আর এর মধ্যে প্রথমটি হলো, আল্লাহ যখন কাউকে ফিতনায় ফেলেন।

দ্বিতীয় ধরণটি হলো, যখন মানুষ আপনাকে ফিতনায় ফেলে। যেমন, [إِنَّ الَّذِينَ فَتَنُوا الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ]। যেমন, [رَبَّبِنَا لَا تَجْعَلْنَا فِتْنَةً لِّلَّذِينَ كَفَرُوا]। যখন মানুষ আপনাকে কষ্টে ফেলে। যখন মানুষ ইমানদারদেরকে নির্যাতন করে। যখন মানুষ ইমানদারদেরকে আক্রমণ করে, যখন মানুষ অন্যায় করে, যখন মানুষ অন্যের ওপর জুলুম করে। যারা নির্যাতন, নিপীড়ন, লুটতরাজ, হত্যা করে, তারা অন্য মানুষকে ফিতনায় ফেলে। এটা আরেকটি ধরণ। তৃতীয় আরেকটি ধরণও রয়েছে। যে ফিতনায় আমি নিজেকে ফেলি— [وَلَكِنَّكُمْ فَتَنْتُمْ أَنفُسَكُمْ]। আল্লাহ বলেন, তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে ফিতনায় ফেলেছো। এখন আমাদেরকে বুঝতে হবে এই তিনটি কিভাবে কাজ করে। যখন অন্য মানুষ তাদেরকে ফিতনায় ফেলে, [ جَعَلَ فِتْنَةَ النَّاسِ كَعَذَابِ اللَّهِ]। (তখন তারা মানুষের ফিতনাকে আল্লাহর ‘আযাবের মত মনে করে। ২৯:১০) এই ব্যক্তি মানুষের তৈরী ফিতনাকে এভাবে নেয়। যখন মানুষ আপনার সাথে কোনো অন্যায় করে, মানুষ বাজে কিছু করে, তখন আপনি নিজের মাথায় সেটাকে এভাবে সাজিয়ে নেন — “কেনো আল্লাহ এমনটা হতে দিচ্ছেন ? আল্লাহ নিশ্চই আমাকে শাস্তি দিচ্ছেন। কেনো আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিচ্ছেন ? আমি তো কিছু করিনি”। এভাবেই আপনি মানুষের তৈরি করা ফিতনাকে আল্লাহর আযাবের সাথে গুলিয়ে ফেলেন। অবশ্যই, এখানে উপস্থিত সকলেই জানেন আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কোনো কিছুই ঘটে না। আল্লাহ যা করেছেন তা হলো, এই দুটি বিষয়কে পৃথক করেছেন। আল্লাহর কোনো কিছু ঘটতে দেওয়াটা, আর আল্লাহর কোনোকিছু ঘটানোর আকাঙ্ক্ষা করা—একই বিষয় নয়। আল্লাহ এই পৃথিবীতে এমন অনেক জিনিস ঘটতে দেন যা আল্লাহকে রাগান্বিত করে তোলে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ কুরআনে রাগ প্রকাশ করেছেন। যদি সবকিছু ঠিক সেভাবেই ঘটতো যেভাবে আল্লাহ চান বা যেভাবে আল্লাহ ইচ্ছা করেন, সবকিছু যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অনুযায়ী ঘটতো, তাহলে কোনো কিছু নিয়েই আল্লাহর কখনোই অসন্তুষ্ট হওয়ার কথা ছিলো না। কারণ তিনিই তো এই সবকিছু করেছেন। কিন্তু আল্লাহ বলেছেন, [غَضِبَ اللهُ عَلَيْهِمْ] - আল্লাহ তাদের উপর রাগান্বিত হয়েছেন। তাফসীরকারকগণ এর কী ব্যাখ্যা দিয়েছেন ? এখানে পার্থক্য রয়েছে— আল্লাহর ‘রিদা’ (رِضَى), অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি, আল্লাহর নিজের ইচ্ছায় কিছু করা বা নিজের আকাঙ্ক্ষা থেকে কিছু করা, বনাম তাঁর শুধু এটিকে ঘটতে দেয়া। তিনি তাঁর নিজের প্রজ্ঞা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তিনি নির্দিষ্ট কিছু বিষয়কে ঘটতে দিবেন, যদিও তিনি নিজে সেই বিষয়গুলো নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তিনি মানুষকে সেই স্বাধীনতা দিয়েছেন, এমন সব কাজ করার জন্য যা তাঁকে অসন্তুষ্ট করে। তিনি তাদেরকে সেই স্বাধীনতা দিয়েছেন। আর প্রথমবার আল্লাহ যখন এটা করলেন, যখন তিনি মানবজাতিকে সৃষ্টি করলেন, তখন ফেরেশতারাও বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলো। কেনো আপনি মানুষকে এমন সব কাজ করার সামর্থ দিচ্ছেন যা আপনি নিজে পছন্দ করেন না ? “ইয়া আল্লাহ, আপনি এই কাজগুলো পছন্দ করেন না। কিন্তু আপনি তাদেরকে এই কাজগুলো করতে দিচ্ছেন। কীভাবে আপনি তাদেরকে এগুলো করতে দিলেন” ? [أَتَجْعَلُ فِيهَا مَن يُفْسِدُ فِيهَا وَيَسْفِكُ الدِّمَاءَ] ? তারা এটা বুঝতে পারেনি। আর আল্লাহ বলেছেন, এই মানবজাতিকে আরও অনেক জটিল ও শক্তিশালী উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করা হয়েছে যা এমনকি ফেরেশতারাও তখন পর্যন্ত বোঝার জন্য প্রস্তুত ছিলো না— [إِنِّي أَعْلَمُ مَا لَا تَعْلَمُونَ] - আমি এমনকিছু জানি যা তোমরা জানো না। তিনি ফেরেশতাদের এই কথাই বলেছিলেন। এখন, আল্লাহ তাঁকে অসন্তুষ্ট করার স্বাধীনতা আমাকে দিয়েছেন। অন্য কারোর কথা ভুলে যান। আমি এখানে ফেরাউন বা শয়তানকে নিয়ে বলছি না, আমি আমার নিজের ব্যাপারে বলছি। আর আমাদের প্রত্যেকেরই নিজেকে নিয়ে ভাবা উচিত। আল্লাহ আমাকে তাঁর অবাধ্য হওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন। আল্লাহ আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছেন তাঁকে অসন্তুষ্ট করার, স্বাধীনতা দিয়েছেন তাঁকে রাগান্বিত করার, স্বাধীনতা দিয়েছেন গীবত করার, স্বাধীনতা দিয়েছেন অপবাদ দেওয়ার, স্বাধীনতা দিয়েছেন হারাম খাওয়ার, স্বাধীনতা দিয়েছেন অন্যকে আক্রমণ করার, অন্যকে আঘাত করার, চুরি করার। তিনি আমাকে সেই স্বাধীনতা দিয়েছেন। তিনি আমাকে সেটা করার সামর্থ দিয়েছেন। সুতরাং, আমি অভিযোগ করার আগে যে, “কিভাবে সে পার পেয়ে গেলো, কিভাবে ও পার পেয়ে গেল, কিভাবে এই যালিম পার পেয়ে গেলো”, এই কথা বলার আগে, আমার নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে, কিভাবে আমি পার পেয়ে যাই ? কিভাবে আমি পার পেয়ে যাই ? আমরা সবাই জানি গাজায় কী ঘটছে। আল্লাহ গাজার মুসলিমদের সাহায্য করুন এবং শহীদদেরকে জান্নাত নসীব করুন, আর তাদের পরিবারগুলোতে সবর দান করুন। এবং আমাদেরকে সেই ধরনের তাওয়াক্কুল ও ইমানের এক বিন্দু হলেও দান করুন যা এই মানুষগুলো প্রদর্শন করেছে। এবং তাদেরকে বিজয় দান করুন। তো একজন এসে জিজ্ঞেস করলো, আল্লাহ কিভাবে এটা ঘটতে দিচ্ছেন ? আল্লাহ কেনো এটা থামিয়ে দিচ্ছেন না ? কারণ এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে ফিতনা। কেনো আল্লাহ এটা থামিয়ে দিচ্ছেন না ? তাহলে বিষয়টা দাঁড়াচ্ছে, চলুন এটা নিয়ে যুক্তিসঙ্গতভাবে ভাবা যাক। আপনি যদি চান আল্লাহ এটা থামিয়ে দিন, যদি চান আল্লাহ হস্তক্ষেপ করুন, তাহলে আপনি আর আমি যখন অবাধ্য হই, আল্লাহর কি হস্তক্ষেপ করা উচিৎ না ? আপনি ঠিক কোথায় সীমা টানবেন ? “না, যদি তারা মানুষ হত্যা করে তবে আল্লাহর থামানো উচিত, কিন্তু তারা চুরি করলে সেটা তেমন খারাপ না, তখন আল্লাহর হস্তক্ষেপ না করলেও চলবে”। অথবা আপনি যদি মিথ্যা বলেন, তখন, “না, না, না, আমার জিহ্বাকে সত্য বলতে বাধ্য করা যাবে না। না, না, অতোটা নিয়ন্ত্রণ না, কিন্তু নির্দিষ্ট সীমার পর আল্লাহর বিষয়গুলো থামিয়ে দেওয়া উচিত”। আল্লাহ মানুষকে এই পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন এবং তিনি তাদেরকে একে অপরের জন্য ফিতনায় পরিণত হওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। আল্লাহ তাদের একে অপরের জন্য ফিতনা হতে দিয়েছেন। আর আমরা যখন একে অপরকে ফিতনায় ফেলি, মানুষ যখন একে অপরকে ফিতনায় ফেলে, আর তারপর আমরা বলি, “না, না, না, এটা আল্লাহর দোষ। আল্লাহই এমনটা করেছেন, কোনো মানুষ নয়। এটাই হলো, আপনি যখন নিজেকে নিজে ফিতনায় ফেলেন। এটি তৃতীয় ধরণ। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে, শুধু এই অর্থে যে আল্লাহ আপনাকে পরীক্ষিত হতে দিয়েছেন। আল্লাহ একটি পরিস্থিতি তৈরি করেন এবং আপনাকে পরীক্ষার সম্মুখীন হতে দেন, এটা দেখতে যে আপনি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, আমি কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবো। ব্যস, এটুকুই। আল্লাহ যে আমাকে ফিতনাতে ফেলছেন, এটা বোঝার সঠিক পদ্ধতিটা কী ? যদি কেউ আমার টাকা চুরি করে, তবে সেই ব্যক্তি আমাকে ফিতনাতে ফেলেছে। কিন্তু আল্লাহ এটা হতে দিয়েছেন। আল্লাহ এটা ঘটার অনুমতি দিয়েছেন। সুতরাং চূড়ান্ত প্রশ্নটি হলো, কেনো আল্লাহ এটি ঘটার অনুমতি দিলেন। দুটি কারণে। আল্লাহ সেই চোরকে পরীক্ষা করেছেন এবং আল্লাহ আমাকেও পরীক্ষা করেছেন। আর সেই লোকটি ইতিমধ্যেই ব্যর্থ, কারণ সে চুরি করেছে। এখন, যে অংশটি বাকী তা হলো, আমি কী করতে যাচ্ছি, আমি এই পরীক্ষায় পাস করবো, নাকি করবো না। কারণ এখানে দুটি ভিন্ন পরীক্ষা চলছে। জালিম তার নিজের পরীক্ষা দিচ্ছে, মজলুম তার নিজের পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের দুজনকেই পরীক্ষা করা হচ্ছে। জালিম ইতোমধ্যেই ব্যর্থ হয়েছে। কারণ সে আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করেছে। কিন্তু যার ওপর অন্যায় হয়েছে, এখন তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, সে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। সে কি আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাবে, নাকি আল্লাহর ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। সে কি বলবে, “এটা থেকে আমি কী শিখতে পারি ? যুক্তিসঙ্গতভাবে আমি কীভাবে এর জবাব দিবো, যার অনুমতি আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন ? এটা কি স্বয়ং আল্লাহর সাথে আমার সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে, নাকি করবে না” ? আর মানুষের মধ্যে এই সমস্যা তৈরী হয় যে, তারা তাদের সংকটকালের জন্য আল্লাহকে দোষারোপ করতে চায়। আমি আপনাদের বলছি, আল্লাহ এটাকে আমাদের ফিতরার মাঝে দিয়েছেন, তিনি মানুষের প্রকৃতিতে এটা দিয়েছেন, এটা বোঝার জন্য আপনাকে মুসলিমও হতে হবে না। আল্লাহ আমাদের প্রকৃতির মধ্যে এই বোধশক্তি দিয়েছেন যে, আসলে মানুষই একে অপরকে সংকটে ফেলে থাকে। এজন্যই আল্লাহর কিতাব অধ্যয়ন এবং আল্লাহর কিতাব নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা এতো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই এটা বোঝা জরুরি যে, একটি দৃশ্যমান জগৎ আছে এবং একটি অদৃশ্য জগৎও আছে। আর আল্লাহ যা কিছু করেন, সেগুলোর পেছনে একটি উদ্দেশ্য থাকে। এটা কখনো উদ্দেশ্যহীন নয়। আল্লাহ আমাকে উদ্দেশ্য ছাড়া সৃষ্টি করেননি। আর আল্লাহ আমাকে এমন কোনো পরিস্থিতিতেও ফেলেন না, যার কোনো উদ্দেশ্য নেই। সেই প্রত্যেকটি উদ্দেশ্যের পেছনেই কোনো না কোনো হিকমাহ রয়েছে। মানুষ একে অপরের সাথে নির্বুদ্ধিতাসুলভ কাজ করে থাকে। কিন্তু আল্লাহ সেইসব নির্বোধ কাজের পেছনেও প্রজ্ঞাপূর্ণ কোনো উদ্দেশ্য না থাকার সুযোগ দেন না। এ কারণেই তিনি আল-হাকীম। এ কারণেই তিনি — [يُدَبِّرُ الْأَمْرَ]। তিনি [تَدْبِيُرُ الْأَمْرِ] ঘটান। তিনি সবকিছু পরিকল্পনা করেন। এমনকি আমাদের যেসকল কাজের পরিকল্পনা আমরা করি না, অথবা খুবই বাজে পরিকল্পনা করি, সেগুলোর পেছনেও আল্লাহর মহৎ কোনো হিকমাহ নিহিত থাকে। মহান আল্লাহ এই উম্মাহকে প্রস্তুত করছেন। তিনি এই উম্মাহকে প্রস্তুত করছেন। সূরা আল-বাকারায় তিনি আমাদের এক নতুন উম্মাহ হিসেবে ঘোষণা করেছেন — [وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا]। তিনি আমাদের একটি ভারসাম্যপূর্ণ জাতি ঘোষণা করেছেন। এবং সেই একই সূরায় তিনি বলেছেন, [وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ بِشَيْءٍ] - আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবো, সকল ধরনের জিনিস দিয়ে পরীক্ষা করবো — [مِنَ الْخَوْفِ وَالْجُوعِ وَنَقْصٍ مِنَ الْأَمْوَالِ وَالْأَنْفُسِ وَالثَّمَرَاتِ]। আমরা তোমাদেরকে অনেক পরীক্ষার মধ্যে ফেলবো, অনেক এবং অনেক বেশি পরীক্ষায় ফেলবো। কিন্তু এর ফলাফল কী হবে ? কীভাবে বুঝবে যে তুমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছো ? কে ভালো ফল লাভ করবে ? কীভাবে জানবে যে তুমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছো ? সেটা রয়েছে আয়াতটির শেষাংশে। আল্লাহ বলেছেন, [وَبَشِّرِ الصَّابِرِينَ الَّذِينَ إِذَا أَصَابَتْهُمْ مُصِيبَةٌ قَالُوا إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ]। অভিনন্দন তাদের, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। অভিনন্দন সেইসব মানুষদের, যারা সবর অবলম্বন করতে পারে। আর সবর বলতে কী বোঝায় ? সেইসব মানুষ, যখনই কোনো অসুবিধা বা যেকোনো বিপদ, যেকোনো পরীক্ষা তাদেরকে আঘাত করে, তারা বলে আমরা আল্লাহর জন্য, এবং আমাদেরকে আল্লাহর কাছেই ফিরে যেতে হবে। তারা উপলব্ধি করে, এই পরীক্ষাগুলোর প্রত্যেকটিই অস্থায়ী এবং আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনই হলো স্থায়ী। অস্থায়ী কষ্ট, স্থায়ী পুরস্কার। ঠিক আপনার ও আমার মতো, আমাদেরও অস্থায়ী কষ্ট আছে। কোনো ছাত্রের পরীক্ষা আসন্ন, পড়াশোনা বেশ কঠিন— অস্থায়ী কষ্ট, দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা। আপনি যদি ব্যবসায়ী হন, কিছু মানুষ খুচরা ব্যবসা করে, সেখানে ব্ল্যাক ফ্রাইডে অথবা শয়তান থার্সডে, এরকম যা-ই থাকুক, বিক্রয়ের এরকম উপলক্ষ আসে, আর কাজের অনেক চাপ থাকে। এর জন্য মাথাব্যথাও অনেক। কর্মচারী সংক্রান্ত অনেক সমস্যা থাকে। ব্যবসায়িক অনেক সমস্যা থাকে। নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমস্যা থাকে। এই সবকিছুই থাকে। তবুও আপনি এতো পরিশ্রম করছেন। দীর্ঘমেয়াদী সুফল—যে পরিমাণ অর্থ আসে তা আসলেই বেশ ভালো। সুতরাং, যখনই দীর্ঘমেয়াদী কোনো সুবিধা থাকে, আপনাকে প্রথমে কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়; তাই না ? আর ইমানদাররা এটা উপলব্ধি করে তাদের গোটা জীবনের প্রেক্ষিতে। আল্লাহ আমাকে একটি স্বল্পমেয়াদী কষ্টের মধ্যে ফেলবেন, তারপর আরেকটি, তারপর আরেকটি, তারপর আরেকটি। এমনকি এটি যদি আজীবনের অসুস্থতাও হয়, এমনকি সেই জীবনব্যাপী অসুস্থতাও একটি স্বল্পমেয়াদী কষ্ট, দীর্ঘমেয়াদী সেই সুবিধার তুলনায় যা সামনে আসছে। আর এই উপলব্ধিটি তারা এখান থেকে পায়— [إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ] - "আমরা আল্লাহর জন্য এবং একমাত্র আল্লাহর কাছেই আমরা ফিরে যাবো।" আল্লাহ আমাদের সকলকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন যারা সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। —নোমান আলী খান

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

দিরিলিসের আরতুগ্রুলের সকল পর্ব কিভাবে দেখবেন?

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে