Posts

Showing posts from August, 2022

আমরা শেষ জামানায় আছি

Image
  আমরা শেষ জামানায় আছি। যদি তুমি এটা না দেখে থাকো, আমি জানি না তুমি কোন গ্রহে বাস করছো। শেষ সময় খুবই নিকটবর্তী। হয়তো এখন থেকে একশ বছরের মধ্যে, দুইশ বছরের মধ্যে আমি জানি না। তা একমাত্র আল্লাহ জানেন। আমাদের রাসূল (স) দুই আঙ্গুল একত্রিত করে দেখিয়েছেন-بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةُ كَهَاتَيْنِ - "আমি এবং কিয়ামত এরকম এক সাথে প্রেরিত হয়েছি।" এটা ছিল ১৪শ বছর পূর্বে। ভূপৃষ্ঠে মানব জাতির অবস্থানকালীন সময়ের সাথে তুলনা করলে এটা বড় কোনো সময় নয়। খুবই সংক্ষিপ্ত এক সময়। এ শেষ সময়কালে সবার উচিত দু’হাত প্রসারিত করে মানুষকে দ্বীনের দিকে আহ্বান জানানো। এটা তো হতাশার কাফেলা নয়। হে পাপী বান্দা! যদি তুমি শতবারও তোমার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে থাকো, তবু শুধু ফিরে আসো। দ্বীনের দরজা খোলা আছে। একমাত্র যে এ দরজা বন্ধ করে সে হলো শয়তান। এই পৃথিবী তোমাকে অপরিচ্ছন্ন করে দিতে পারে। কোনো ব্যাপার না তোমার নিজেকে যত অপরিচ্ছন্নই মনে হউক না কেন, আল্লাহর দরজা তোমার জন্য খোলা। তোমার যাই হউক না কেন, আর-রাহমানের দরজা তোমার জন্য খোলা আছে। আমরা হাদিস থেকে জানি, এমনকি একশ মানুষ খুন করা ব্যক্তির তওবাও কবুল করা হয়েছিল। এ দর

ডিপ্রেশনের কারণে পাপ

Image
  প্রশ্ন: --- ডিপ্রেশনের কারণে কেউ যদি কোনো পাপ করে এ জন্য কি তাকে জবাবদিহি করতে হবে? (যেমন, এমন মনে করা যে তাকে ছাড়া সবাই খুব ভালোই আছে এবং এ প্রক্রিয়ায় অবশেষে পরিবারের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলা) ড. আকরাম নদভী: --------------- অনেক মানুষ মনে করে তাদের কোনো গুরুত্ব নেই। "আমার কোনো গুরুত্ব নেই"—এই চিন্তাটা বড়ো ধরণের একটি রোগ। এটি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ফরমানের বিরুদ্ধে যায়। তবে, এই রোগের চিকিৎসা সম্ভব। মানুষকে এ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। কুরআন অধ্যয়ন করতে হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার বার্তা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ প্রত্যেকটি মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। কুরআনে এসেছে— "ওয়া লাক্বাদ কাররামনা বাণী আদাম- আমি মানুষকে গুরুত্বপূর্ণ বানিয়েছি, আমি তাদেরকে সম্মান মর্যাদা দিয়েছি।" এ কারণেই এতো বেশি নবী-রাসূলের আগমন ঘটেছে। ফেরেশতারা মানুষের সেবা করছে। বেহেশত দোজখ তৈরী করা হয়েছে। বিচার দিবস তৈরী করা হয়েছে। যদি সুরাতুর রাহমান অধ্যয়ন করেন তাহলে দেখবেন, আল্লাহ মানুষের জন্য জান্নাতে অতি চমৎকার চমৎকার কত কি সৃষ্টি করে রেখেছেন! কুরআন আ

কুরআন শিক্ষা না করার পরিনতি

Image
  কুরআন শিক্ষা না করার পরিনতি সম্পর্কে কুরআন এবং হাদিসে যা বলা হয়েছেঃ ১। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভিযোগ পেশ: কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থায় আল্লাহ তা‘আলার অনুমতিতে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মাতের জন্য শাফায়াত চাইবেন। কিন্তু যারা কুরআন শিক্ষা করেনি, কুরআনের যেসব হক রয়েছে তা আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ পেশ করবেন। কুরআনে এসেছে : ﴿ وَقَالَ ٱلرَّسُولُ يَٰرَبِّ إِنَّ قَوۡمِي ٱتَّخَذُواْ هَٰذَا ٱلۡقُرۡءَانَ مَهۡجُورٗا ٣٠ ﴾ [الفرقان: ٣٠] অর্থ: ‘আর রাসূল বলবেন, হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে’ [সূরা আল-ফুরকান-৩০] ইবন কাসীর বলেন, কুরআন না পড়া, তা অনুসারে আমল না করা, তা থেকে হেদায়াত গ্রহণ না করা, এ সবই কুরআন পরিত্যাগ করার শামিল। ২। কিয়ামতের দিন অন্ধ হয়ে উঠা: যে কুরআন শিখা থেকে থেকে বিমুখ হয়ে থাকল, সে কতইনা দুর্ভাগা! আলকুরআনে এসেছে, ﴿ وَمَنۡ أَعۡرَضَ عَن ذِكۡرِي فَإِنَّ لَهُۥ مَعِيشَةٗ ضَنكٗا وَنَحۡشُرُهُۥ يَوۡمَ ٱلۡقِيَٰمَةِ أَعۡمَىٰ ١٢٤ قَالَ رَبِّ لِمَ حَ

কালিমা নিয়ে তিনটি প্রশ্নের উত্তর

Image
  কালিমা নিয়ে তিনটি প্রশ্নের উত্তর: (১) বর্তমান সময়ের একজন বক্তা বলেছে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” এবং “মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এই দুইটি কালেমা একসাথে লেখা যাবেনা। এটা কি সত্যি? উত্তরঃ এটা বাজে একটা কথা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের খায়বার যুদ্ধের পতাকার মাঝে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এই কালেমাটি লিখা ছিলো। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানি রাহি’মাহুল্লাহ তাঁর লিখিত “ফাতহুল বারী” তে খায়বার যুদ্ধ অধ্যায়ে এই হাদীসটিকে সহীহ সনদের সাথে উল্লেখ করেছেন। বর্তমান সৌদি আরবের জাতীয় পতাকার মাঝেও “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এইভাবেই লেখা আছে। সমস্ত মক্কা মদীনার বিশ্ব বিখ্যাত আলেমরা, কাবা, মসজিদে নববির সম্মানিত ইমাম খতিবেরা কেউ-ই এর বিরুদ্ধে কোন আপত্তি তুলেন নাই। এমনিতেই উম্মতের মাঝে ইখতিলাফের শেষ নাই, তার মাঝে এইরকম নিত্য-নতুন ইখতেলাফ জন্ম দেওয়া হচ্ছে। এইগুলো বাজে কথা। (২) “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” এই কালেমা কি যিকির হিসেবে ১০ বার, ৩৩ বার, ৯৯ বার…এইভাবে যিকির হিসেবে পড়া যাবে? উত্তরঃ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” - এটি কালিমা (

জীবনের একমাত্র লক্ষ্য

Image
  আখেরাত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিকে জীবনের একমাত্র লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য বানানোর উপকারীতাঃ (১) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যার সমস্ত চিন্তা-ফিকির এবং ইচ্ছা ও খেয়াল একমাত্র আখেরাতের জন্যে হয় এবং তাতেই নিমগ্ন থাকে, আল্লাহ তাআ’লা তাকে দুনিয়ার সমস্ত চিন্তা ও উদ্বেগ থেকে রক্ষা করেন। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি শুধু দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন থাকে, সে যে কোন উপত্যকায় ধ্বংস হয়ে যাক, এতে আল্লাহ তাআলার কোন পরওয়া নেই।” এই হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ রহি’মাহুল্লাহ বর্ণনা করেছেন। (২) অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, “দুনিয়ার চিন্তায় নিমগ্ন ব্যক্তির সমস্ত কাজে আল্লাহ তাআ’লা উদ্বেগ নিক্ষেপ করেন এবং তার দারিদ্র তার চোখের সামনে করে দেন। মানুষ দুনিয়া হতে ঐ পরিমাণই প্রাপ্ত হবে যে পরিমাণ তার ভাগ্যে লিপিবদ্ধ আছে। আর যে ব্যক্তি আখেরাতকে তার কেন্দ্রস্থল বানিয়ে নেবে এবং নিজের নিয়ত শুধু আখেরাতকেই রাখবে, আল্লাহ তাআ’লা তার প্রতিটি কাজে প্রশান্তি আনয়ন করবেন এবং তার অন্তরকে পরিতৃপ্ত করবেন। আর দুনিয়া তার পায়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে।” (৩) সৌদি আরবের প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, ফযীলাতুশ-শায়খ সা’দ আস-শিসরী

জান্নাতের কি এক বিস্ময়কর নেয়ামত

Image
  সূরা মুতাফফিনিনে আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বলেন- "ইন্নাল আবরারা লাফিই নাঈম- পুণ্যবান লোকেরা থাকবে অফুরন্ত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের মাঝে।" عَلَی الۡاَرَآئِکِ یَنۡظُرُوۡنَ - "সুসজ্জিত আসনে বসে তারা দেখতে থাকবে।" অর্থাৎ, বিলাসবহুল চেয়ারে বা সিংহাসনে। আর তারা আরাম করে বসে থাকবে। রিল্যাক্স করবে। পাশ্চাত্য সমাজে যেমন বলা হয় 'লেজি বয় চেয়ার' বা অলস ছেলের চেয়ার। যে চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে মানুষ রিল্যাক্স করে, চা কফি পান করে বা বই পড়ে। টিভি দেখে বা আড্ডা দেয়, যাই করুক। এটা হলো আরাম আয়েশের একেবারে খাঁটি আচরণ। আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বলছেন যারা এই দুনিয়াতে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতো পরের জীবনে তারা "আলাল আরা-ইকি ইয়ানজুরুন-সুসজ্জিত আসনে আয়েস করে বসে দেখতে থাকবে।" এরপর তিনি বলেন- تَعۡرِفُ فِیۡ وُجُوۡهِهِمۡ نَضۡرَۃَ النَّعِیۡمِ- "তুমি তাদের মুখে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের উজ্জ্বলতা দেখতে পাবে।" এই দুনিয়াতেও কেউ যদি ভালো খাবার আহার করে, মজার আলাপ-আলোচনা করে তাদের চোখ মুখ থেকেও কেমন যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের দীপ্তি ছড়িয়ে পড়ে। সবকিছু ভালো যাচ্ছে। আল

আত্মীয়দের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক

Image
  আত্মীয়দের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার ফযীলতঃ রিযিক পাওয়ার এবং তা বৃদ্ধি হওয়ার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পিতা-মাতার সাথে সৎ ব্যবহার করা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি চায় যে বা, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার রিজিক আল্লাহ তাআ’লা প্রশস্ত করে দেন এবং তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক; তাহলে সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখে।” সহীহ বুখারীঃ ৫৯৮৫, সহীহ মুসলিমঃ ৪৬৩৯। হাদীসে উল্লেখিত “তার আয়ু দীর্ঘ করা হোক” এই কথার অর্থ কি? এই কথার প্রথম ব্যাখ্যা হচ্ছেঃ তার শারিরীক ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে, সে সবসময় সুস্থ থাকবে। দ্বিতীয় ব্যাখ্যা হচ্ছে, তার বয়সে বরকত হবে। তৃতীয় ব্যাখ্যা হচ্ছে, তার মৃত্যুর পরেও তার সুনাম বা তার সম্পর্কে ভালো কথা জারি থাকবে। আর চতুর্থ ব্যাখ্যা হচ্ছে, সে যদি আত্মীয়তার সম্পর্কে বজায় রাখে তাহলে তার আয়ু বৃদ্ধি করা হবে। আলেমগণ এই ব্যাখ্যাকে অধিক পছন্দ করেছেন। আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা বলতে কি বুঝায়? শায়খ আব্দুর রাক্বীব বুখারী হা’ফিজাহুল্লাহ বলেন, “আত্মীয় অনেক ধরণের হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় আত্মীয় হচ্ছে ‘রেহেম’-এর

কাফির মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব

Image
  কাফির মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব না করা ঈমানের অন্তর্ভুক্তঃ ইমাম বায়হাক্বী রহি’মাহুল্লাহ “শুআ’বুল ঈমান” নামক গ্রন্থে বলেনঃ “কাফির মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব না করাটাও ঈমানের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ সুবহানাহু তাআ’লা বলেছেন, لَّا يَتَّخِذِ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِن دُونِ الْمُؤْمِنِينَ ۖ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَلَيْسَ مِنَ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلَّا أَن تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً মুমিনগণ যেন ঈমানদারদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে নিজেদের বন্ধু ও পৃষ্ঠপোষক রূপে গ্রহণ না করে। যে এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহর কোনও সম্পর্ক থাকবে না। অবশ্য তাদের নির্যাতন থেকে বাচার জন্য এরূপ করলে আল্লাহ্ মাফ করবেন। সূরা আলে ইমরানঃ ২৮। অন্য জায়গায় কাফিরদের সাথে সম্পর্ক রাখা তো দূরের কথা তাদের সাথে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ جَاهِدِ الْكُفَّارَ وَالْمُنَافِقِينَ وَاغْلُظْ عَلَيْهِمْ “হে নবী! কাফির এবং মুনাফিকদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যান, আর তাদের সম্পর্কে কঠোর নীতি অবলম্বন করুন। সূরা আত তাওবাঃ ৭৩। আরও বলা হয়েছে, يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قَاتِلُ

ইসলামে আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষার গুরুত্ব

Image
  মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনন্য গুণ হলো সত্যবাদিতা ও বিশ্বস্ততা। এ কারণে কাফির, মুশরিকরাও তাঁকে ‘আল আমিন’ বা ‘বিশ্বাসী’ বলে ডাকত। আমানতদারি বা বিশ্বস্ততা মানুষের অনুপম বৈশিষ্ট্য। আমানতদার ব্যক্তি সব সমাজেই প্রশংসিত। আল্লাহ তাআলা প্রকৃত মুমিনের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেন, ‘তারা (মুমিনরা) সেসব লোক, যারা আমানতের প্রতি লক্ষ রাখে এবং স্বীয় অঙ্গীকার হেফাজত করে।’ (সুরা-২৩ মুমিনুন, আয়াত: ৮) ‘নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন, আমানতসমূহ তার প্রকৃত পাওনাদারদের নিকট প্রত্যর্পণ করতে।’ (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৫৮) আমানতদারি একটি ব্যাপক বিষয়। সৃষ্টির সূচনায় আল্লাহ তাআলা তাঁর আমানত সোপর্দ করার জন্য আসমান, জমিন, পাহাড় ও মানুষের কাছে প্রস্তাব করেছিলেন। ‘আমরা আকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালার নিকট এই আমানত পেশ করেছিলাম। অতঃপর তারা তা বহন করতে অস্বীকার করল এবং শঙ্কিত হলো, কিন্তু মানুষ তা বহন করল। বস্তুত সে অতিশয় জালিম ও অজ্ঞ।’ (সুরা-৩৩ আহযাব, আয়াত: ৭২) এই আমানতের বিস্তৃতি জীবনের সর্বক্ষেত্রে। ব্যক্তিগত জীবনে একনিষ্ঠতার সঙ্গে ইবাদত করা তথা আল্লাহর আদেশ পালন করা ও নিষেধ থেকে বিরত থাকা, হালাল-হারাম মেনে চলা, লেনদেনে

দুনিয়ার চাপ মোকাবেলায় যে কাজ

Image
  দুনিয়ার চাপ মোকাবেলায় যে একটি কাজ করতে পারেন — ড. ইয়াসির কাদি রাসূলুল্লাহ (স) বলেন- مَنْ جَعَلَ الْهُمُومَ هَمًّا وَاحِدًا هَمَّ آخِرَتِهِ كَفَاهُ اللَّهُ هَمَّ دُنْيَاهُ وَمَنْ تَشَعَّبَتْ بِهِ الْهُمُومُ فِي أَحْوَالِ الدُّنْيَا لَمْ يُبَالِ اللَّهُ فِي أَىِّ أَوْدِيَتِهَا هَلَكَ - "যে ব্যক্তি তার সমস্ত চিন্তাকে একটি চিন্তায় কেন্দ্রীভূত করেছে, অর্থাৎ আখিরাতের চিন্তায়, আল্লাহ তার দুনিয়ার চিন্তার জন্য যথেষ্ট। অপর দিকে যে ব্যক্তি যাবতীয় পার্থিব চিন্তায় নিমগ্ন থাকবে, সে যেকোনো উন্মুক্ত মাঠে ধ্বংস হোক, তাতে আল্লাহ্‌র কিছু যায় আসে না।" (সুনান ইবনে মাজাহ ২৫৭) কি চমৎকার এক হাদিস! যদি আপনি পরকালের চিন্তায় নিমগ্ন থাকেন...আল্লাহর কাছে আমি কী বলবো? শেষ বিচারের দিন আমি আল্লাহর কাছে কী উত্তর দিবো? কিভাবে আমি জান্নাত অর্জন করবো? যদি এই চিন্তাগুলো আপনাকে উদ্বিগ্ন করে রাখে, আপনি যদি এভাবে আখেরাতের চিন্তায় আচ্ছন্ন থাকেন, আমাদের রাসূল (স) বলেছেন, كَفَاهُ اللَّهُ هَمَّ دُنْيَاهُ - দুনিয়াতে আপনার যত ধরণের উদ্বেগ, চিন্তা, উৎকণ্ঠা আছে আল্লাহ তার জন্য দায়িত্ব নিয়ে নিবেন। এরপর তিনি বলেন- আ

আমার একমাত্র আল্লাহকেই প্রয়োজন

Image
  আমার একমাত্র আল্লাহকেই প্রয়োজন —ড. ইয়াসির কাদি রাসূলুল্লাহ (স) কোন দোয়া করেছিলেন যখন এই দুনিয়ার সকল আশা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন? কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে যখন সাহাবায়েকেরাম (রা) পরিবেষ্টিত হয়ে পড়েছিলেন 'আহযাব' দ্বারা, মদিনার চারপাশে দশ হাজার শক্তিশালী সৈন্য দ্বারা। আর দশ হাজার সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শক্তি আসলেই তাদের ছিল না। তখন তারা কী বলেছিলেন? আল্লাহ কুরআনে তা উল্লেখ করেছেন। الَّذِينَ قَالَ لَهُمُ النَّاسُ إِنَّ النَّاسَ قَدْ جَمَعُوا لَكُمْ فَاخْشَوْهُمْ فَزَادَهُمْ إِيمَانًا وَقَالُوا حَسْبُنَا اللَّهُ وَنِعْمَ الْوَكِيلُ - "যাদেরকে লোকে খবর দিয়েছিল যে, একটা বড় বাহিনী তোমাদের বিরুদ্ধে জড় হচ্ছে, কাজেই তাদেরকে ভয় কর। তখন তা তাদের ঈমান বৃদ্ধি করে দিল এবং তারা বলল, ‘আমাদের জন্যে আল্লাহ্ই যথেষ্ট এবং তিনি কতই না উত্তম কর্মবিধায়ক!’ " (৩:১৭৩) সৎ মানুষ হলো তারা যাদেরকে বিশাল একটি বাহিনী যখন আক্রমণ করতে এলো, অন্য লোকেরা যখন তাদেরকে বললো, তোমরা কি ভয় পাচ্ছ না? তোমার কি ভীত নও? তখন কোন বাক্যাংশটি রাসূল (স) এবং সাহাবারা উল্লেখ করেছিলেন? "হাসিবুনাল্লাহু ও

সেজদার আয়াত

Image
ছোটবেলায় আমরা যখন উস্তাদের কাছে আমপারা বা কুরআন পড়া শুরু করতাম, তখন আমাদের অনেকের মনে একটা ভয় কাজ করত, আর তা হচ্ছে সেজদার আয়াত। কোন সেজদার আয়াত পড়লে বা শুনলে সেজদা দিতে হবে, এই ভয়ে অনেকেই সেজদার আয়াত পড়তে চায়না, বা কোন তেলাওয়াতের সেজদাহ আছে এমন সুরাতে যখন সিজদার আয়াত আসতো, তখন সেই আয়াত না শোনার চেষ্টা করতো, যাতে করে সেজদাহ দেওয়ার হাত থেকে বেঁচে যায়। এমনকি, বড় হয়েও এখন পর্যন্ত অনেকের মাঝেই দেখা যায় যে, তেলাওয়াতের সেজদার আয়াতের ব্যপারে একটা ভয়, আতংক বা অনীহা কাজ করে। অথচ এটা ঠিকনা, তেলাওয়াতের সেজদাহ করা একটা মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত, যা আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উপায়। সুতরাং, মহান প্রভুর দরবারে বিনীত হয়ে একটা সেজদা করার সুযোগ লাভ করাতো আমাদের জন্যে একটা সৌভাগ্যের বিষয়। সেজন্য, সেজদার আয়াতকে আমাদের ভয় নয়, বরং আরো বেশি ভালোবাসা উচিৎ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আল্লাহর কালামকে ভালোবাসার তোওফিক দান করুন, আমিন। যাই হোক, এবার আমরা মূল আলোচনায় প্রবেশ করি, বি ইজনিল্লাহি তাআ’লা। (১) সেজদার আয়াত কি? কুরআনুল কারীমে এমন কিছু আয়াত আছে, যেইগুলো পড়লে বা শুনলে সেজদাহ করতে হয়, এই আয়াতগুলোকে ‘সেজদার আয়াত’ বলা হয়। সাধার

আল্লাহ তাআ’লার গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ

Image
  আল্লাহ তাআ’লার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশঃ ক্বুরআন ও হাদীসে আল্লাহ তাআ’লা মানব জাতিকে বারংবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেই উপদেশ দিয়েছেন তা হচ্ছে ‘তাক্বওয়া’, অর্থাৎ মানুষ যেন তার রব্বকে সর্বদা ভয় করে চলে। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “আমার মতে, যে ব্যক্তি বুঝে এবং (সত্য পথের) অনুসরণ করে তার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের উপদেশের চেয়ে উত্তম কোন উপদেশ নেই। আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার উপদেশঃ আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার উপদেশ বর্ণিত আছে এই আয়াতে - وَلَقَدۡ وَصَّيۡنَا ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَإِيَّاكُمۡ أَنِ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ “আর নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও আমি এই আদেশ দিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো।” সুরা আন-নিসাঃ ১৩১। নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের উপদেশঃ আবু যার রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন, اتَّقِ اللَّهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعِ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ ح

সুরা নাহল, আয়াত নং-৯০

Image
  ক্বুরআনুল কারীমের ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াতঃ সুরা নাহল, আয়াত নং-৯০ اِنَّ اللّٰہَ یَاۡمُرُ بِالۡعَدۡلِ وَ الۡاِحۡسَانِ وَ اِیۡتَآیِٔ ذِی الۡقُرۡبٰی وَ یَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ وَ الۡبَغۡیِ ۚ یَعِظُکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۹۰﴾ অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ আদেশ করেন ন্যায়-বিচার, সদাচারণ ও আত্মীয়দেরকে দেওয়ার জন্য, আর তিনি নিষেধ করেন অশ্লীলতা, অপকর্ম আর বিদ্রোহ থেকে। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। (১) বিশিষ্ট সাহাবী আ’ব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু এই আয়াত সম্পর্কে বলেছেন, “সুরা নাহলের এই আয়াত হচ্ছে ক্বুরআনুল কারীমের ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াত।” (২) তাবেয়ী বিদ্বান কাতাদা রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন “যত ভাল স্বভাব রয়েছে সেইগুলি অবলম্বনের নির্দেশ ক্বুরআন দিয়েছে এবং মানুষের মধ্যে যে সব খারাপ স্বভাব রয়েছে সেইগুলো পরিত্যাগ করতে আল্লাহ তাআ’লা হুকুম করেছেন।” এই আয়াত নাযিল হওয়া সম্পর্কে তিনটি ঘটনাঃ (১) হযরত উসমান ইবনু আবুল আস রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহর (সঃ) পার্শ্বে বসে ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ তিনি তাঁর দৃষ্টি উপ