পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মহররমে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি

ছবি
  মহররম কেবল একটি মাস নয়, বরং ইসলামের ইতিহাসের একটি জীবন্ত অধ্যায়, যেখানে বিষাদ, সংগ্রাম ও আধ্যাত্মিকতার মিশ্রণ রয়েছে। কেবল ১০ মহররম নয়, এই মাসজুড়ে ঘটেছে ইতিহাসের অবিস্মরণীয় ও ব্যথাতুর নানা ঘটনা। আমরা কয়েকটি উল্লেখ করছি। মহররমের উল্লেখযোগ্য তারিখ ও ঘটনা ২ মহররম: কারবালায় হোসাইন (রা.)-এর প্রবেশ ৬৮০ সালে, হিজরি ৬১ সনে হোসাইন ইবন আলী (রা.) কারবালায় প্রবেশ করেন এবং তাঁর শিবির স্থাপন করেন। ইয়াজিদের সেনাবাহিনী তাঁদের ঘিরে ফেলে। কুফার দিকে যাওয়ার পথে উমাইয়া সৈন্যরা তাঁদের থামান এবং কারবালার মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করতে বাধ্য করেন, যেখানে পানি বা কোনো সুরক্ষা দেয়াল ছিল না। এই ঘটনা কারবালার ট্র্যাজেডির সূচনা করে (আল-তাবারি,  তারিখ আল-তাবারি , ৫/৩৯১, দারুল কুতুব, ১৯৬৭)। ৭ মহররম: পানি নিষিদ্ধকরণ ৬৮০ সালে, হিজরি ৬১ সনে ইয়াজিদের নির্দেশে হোসাইন (রা.)-এর শিবিরের জন্য পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে হোসাইন (রা.) ও তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে তীব্র তৃষ্ণা ও ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। (আল-তাবারি,  তারিখ আল-তাবারি , ৫/৪০১, দারুল কুতুব, ১৯৬৭) ৮ মহররম: জয়নুল আবেদীন (রা.)–এর মৃত্যু ৯৫ হিজর...

"তাদের জীবন ও মুত্যু কি সমান হবে?"

ছবি
  দুনিয়াতে যেহেতু ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না, তাহলে তোমরা কিভাবে বিচার দিবসকে অস্বীকার করো? আর আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা অন্যায় অবিচারকে বিনা শাস্তিতে পার পেতে দিবেন না। তাই, কুরআন বিচার দিবসের অস্তিত্বের স্বপক্ষে এভাবে নৈতিক যুক্তি তুলে ধরে। আল্লাহ কুরআনে বলেন - أَمْ نَجْعَلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَالْمُفْسِدِينَ فِي الْأَرْضِ أَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِينَ كَالْفُجَّارِ - "যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে তাদেরকে কি আমি ওদের মত করব যারা দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে? আমি মুত্তাক্বীদের কি অপরাধীদের মত গণ্য করব?" (৩৮:২৮) যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে তাদেরকে কি আমি ওদের মত করব যারা দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে? যারা দুনিয়াতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে, যারা গণহত্যা চালায়, যে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক? তোমরা কি মনে করো যে নির্যাতন চালায় আর যারা নির্যাতিত হয় উভয়ের ফলাফল সমান হবে? অন্য আয়াতে বলেন - سَوَاءً مَّحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْ - "তাদের জীবন ও মুত্যু কি সমান হবে?" سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ - কতই না মন্দ তাদের ফয়সালা! (৪৫: ২১) কতই না মন্দ তাদের ফয়সালা! তোমরা কি মনে ক...

মহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে

ছবি
  কুরাইশের নেতৃস্থানীদের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মুসলিমদের প্রথমবার মক্কা ছাড়ার অনুমতি দেন নবীজি (সা.) নবুয়তের পঞ্চম বর্ষে। ৬১৩ খ্রিষ্টাব্দে আরবি রজব মাসে চারজন নারীসহ বারো থেকে পনেরোজন মানুষ আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। মক্কার সবাই মুসলিম হয়ে গেছে, এই খবর শুনে কয়েক মাস পরে আবার তাঁরা ফিরে আসেন জন্মভূমিতে। কাছাকাছি পৌঁছে শুনতে পান খবরটি মিথ্যা। কয়েকজন যে-পথে এসেছেন সে-পথেই ফিরে যাবেন বলে থমকে যান, কয়েকজন ফিরে যান মক্কাতেই। যাঁরা আবার আবিসিনিয়ায় ফিরবেন বলে ভাবেন, তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও শতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন নবীজি (সা.)–র চাচাতো ভাই জাফর ইবনে আবু তালিব (রা.)। প্রশ্ন হলো, নবীজি (সা.) মদিনায় হিজরত করলেন? আবিসিনিয়ায় বা অন্য কোথাও নয়। এর বেশ কয়েকটি কারণ প্রখ্যাত সিরাত গবেষক আবুল আলি নদভি (র.) তাঁর নবিয়ে রহমত গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছেন। নবীজি (সা.) তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না। আবিসিনিয়ায় হিজরতকারীরা যখন আবার হেজাজের পথ ধরেন, ততদিনে নবীজি (সা.)–ও অবশ্য মক্কায় নেই। ৬২১ খ্রিষ্টাব্দের জুনের শেষ দিকে নবীজি (সা.) ইয়াসরিবে চলে গেছেন, যা পরে ‘মদিনাতুন্নবি’ বা ‘নবির শহ...

ইথিওপিয়া হিজরতের গল্প

ছবি
  ইথিওপিয়া হিজরত মক্কার নিপীড়িত জীবনে নবিজির (সা.) একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ছিল। প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার শুরু হলে যখন নির্যাতনের মাত্রা তীব্র হলো, নবিজি তাঁর সাহাবিদেরকে ইথিওপিয়ায় (তখনকার আবিসিনিয়া) হিজরতের নির্দেশ দিলেন। প্রশ্ন হলো, ইথিওপিয়াই কেন, যার দূরত্ব আবার মক্কা থেকে চার হাজার চারশ ছিয়াশি কিলোমিটার? অন্য কোনো দেশ নয় কেন? মুহাম্মদ (সা.) জেনেছিলেন, ইথিওপিয়ার শাসক একজন খ্রিষ্টান। তিনি ধার্মিক, ন্যায়পরায়ণ, দূরদর্শী, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তিনি এমন মানুষ, যার ওপর মজলুমরা ভরসা রাখতে পারে। আর একারেই হিজরতের প্রথম ভূমি হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন ইথিওপিয়াকে। নবীজির (সা.)ধারণা সত্য প্রমাণিত হয়েছিল। সম্রাট নাজ্জাশির ইথিওপিয়া উদার বক্ষে গ্রহণ করেছিল মুহাজির মুসলিমদেরকে। যদিও মক্কার কাফেরদের ক্রোধের থাবা বিস্তৃত হয়েছিল সাগরের ওপারের নিরীহ দেশটি পর্যন্ত। কিন্তু আসহামা নাজ্জাশির বিচক্ষণতা এবং ন্যায়পরায়ণতার সামনে কাফেরদের কোনো চক্রান্ত টিকে থাকতে পারেনি।ইথিওপিয়ায় হিজরতের ঘটনা ঘটেছিল দুইবার। প্রথমবারের সদস্য সংখ্যা ছিল ষোলজন। এঁদের মধ্যে বারোজন ছিল পুরুষ এবং চারজন নারী।...

জাকাত ফিতরা সদকা বিতরণ পদ্ধতি

ছবি
  বাহ্যিক ইবাদত তিনভাবে হয়ে থাকে—মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক। জাকাত একটি নির্ধারিত আর্থিক ফরজ ইবাদত। জাকাত করুণার দান নয়, জাকাত গরিবের প্রাপ্য অধিকার। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মুত্তাকিগণ জান্নাতে ফোয়ারার নিকটে থাকবে। তারা গ্রহণ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদের দেবেন। নিশ্চয় ইতিপূর্বে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ, তারা রাত্রির সামান্য অংশই নিদ্রা যেত, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমাপ্রার্থনা করত এবং তাদের ধনসম্পদে ছিল প্রার্থী ও বঞ্চিতের হক বা ন্যায্য অধিকার।’ (সুরা-৫১ জারিয়াত, আয়াত: ১৫-১৯) সঠিকভাবে জাকাত প্রদান করলেই সমাজ, দেশ, জাতি ও রাষ্ট্র এবং বিশ্ব দারিদ্র্যমুক্ত হবে। জাকাত সম্পদের প্রবাহ তৈরি করে ও দারিদ্র্য বিমোচন করে। আল্লাহ বলেন, ‘যাতে তোমাদের বিত্তবানদের মাঝেই শুধু সম্পদ আবর্তন না করে।’ (সুরা হাশর, আয়াত: ৭)  হাদিস শরিফে এসেছে, ‘দাতা আল্লাহর কাছে প্রিয়, মানুষের কাছে প্রিয়, জান্নাতের নিকটতম; জাহান্নাম থেকে দূরে। সাধারণ দাতা অধিক ইবাদতকারী কৃপণ অপেক্ষা আল্লাহর নিকট বেশি প্রিয়।’ (তিরমিজি)  জাকাত, উশর, সদকাতুল ফিতর, ওয়াজিব সদাকাত, ফিদিয়া, কাফফারা ও মানত ব্যয়ের খাতও এগুলোই। আল্লাহ বলেন, ‘মূলত...

কে ছিলেন ইমাম নববি

ছবি
  তিনি পরিচিত ছিলেন ইমাম মুহিউদ্দিন আবু জাকারিয়া আন-নববি নামে। তবে তাঁর পুরো নাম ইয়াহিয়া ইবনে শারাফ ইবনে মুরি ইবনে হাসান। তাঁর ডাকনাম আবু জাকারিয়া (জাকারিয়ার বাবা), মূল নাম ইয়াহিয়া আর উপাধি মুহিউদ্দিন (দীনকে জীবনদানকারী)। তাঁর জীবন শুধু একজন আলেমের গল্প নয়; বরং একটি আদর্শ। ৬৩১ হিজরি সনে সিরিয়ার হাওরান অঞ্চলের নবা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এ কারণেই তাঁকে নববি বা নবার অধিবাসী বলা হয়। কৈশরেই কোরআনের প্রতি তার ভালোবাসা জন্মায়। ইয়াসিন ইবনে ইউসুফ আল-মারাকিশি বর্ণনা করেন, ‘১০ বছরের নববিকে দেখেছি, সহপাঠীরা তাঁকে জোর করে খেলতে নিয়ে যেত, কিন্তু তিনি কাঁদতে কাঁদতে পালিয়ে কোরআন পড়তেন। আমি তাঁর শিক্ষককে বলেছিলাম, এই শিশু একদিন তাঁর যুগের শ্রেষ্ঠ আলেম হবে।’ (তাজুদ্দিন আস-সুবকি,  তাবাকাতুশ শাফিইয়্যা আল-কুবরা , ৮/৩৯৬, দারুল কুতুব আল-ইলমিয়্যাহ, ১৯৯২) এ ঘটনা তাঁর জীবনের ভিত্তি গড়ে দেয়। কৈশোরে পৌঁছেই তিনি কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেন এবং ইলমের পথে যাত্রা শুরু করেন। ১০ বছরের নববিকে দেখেছি, সহপাঠীরা তাঁকে জোর করে খেলতে নিয়ে যেত, কিন্তু তিনি কাঁদতে কাঁদতে পালিয়ে কোরআন পড়তেন। তাজুদ্দিন আস-স...

কেন তিনি আবু হুরায়রা নামে প্রসিদ্ধ হলেন

ছবি
  আবু হুরায়রা (রা.)–এর মূল নাম আবদুর রহমান ইবনে সাখর আদ-দাউসি। কিন্তু তিনি প্রসিদ্ধি লাভ করেন আবু হুরায়রা নামে। তিনি নবীজি (সা.)-এর একজন মহান সাহাবি। হাদিসের জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর সূত্রে ৫ হাজার ৩৭৪টি হাদিস বর্ণিত। ইসলাম গ্রহণের পর চার বছর মসজিদে নববিসংলগ্ন সুফফায় অতিবাহিত করেছেন। এ দীর্ঘ সময় তিনি নবীজি (সা.) থেকে হাদিসের জ্ঞান অর্জন করেছেন। ( সিয়ারু আলামিন নুবালা , ইমাম জাহাবি, ২/৫৭৮) নাম পরিবর্তন আবু হুরায়রা (রা.) সপ্তম হিজরিতে তুফায়েল ইবনে আমের (রা.)-এর হাতে ইয়ামান শহরে ইসলাম গ্রহণ করেন। তখনও তাঁর নাম ছিল আবদু শামস বা সূর্যের দাস। এটি ছিল জাহিলি যুগের তাঁর পারিবারিক নাম। ইসলাম গ্রহণ করার পর যখন তিনি নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলেন, নবীজি (সা.) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার নাম কী?’ তিনি জবাব দিলেন, আবদু শামস। নবীজি (সা.) বললেন, ‘না, আজ থেকে তোমার নাম আবদুর রহমান, অর্থাৎ রহমানের দাস।’ আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমার পিতামাতা আপনার নামে কোরবান হোক। আজ থেকে আমার নাম আবদুর রহমান।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১৯০) অন্য এক মতে, তাঁর নাম ছিল আবদুল্লাহ। (ইবন...

তিরন্দাজ এক সাহাবি

ছবি
  ইসলামের প্রথম যুদ্ধ ছিল বদরের যুদ্ধ। হজরত সাদ ইবনে আবী ওয়াক্কাস (রা.) এবং তাঁর ভাই উমাইর (রা.) সে যুদ্ধে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। যুদ্ধে উমাইর (রা.) শাহাদাতবরণ করেছিলেন। বদরের যুদ্ধের এক বছর পর ওহুদের যুদ্ধেও সাদ (রা.) অংশ নেন। তিনি ছিলেন দক্ষ তিরন্দাজ। সাদ (রা.) বলেন, ‘ওহুদের রণাঙ্গনে রাসুল (সা.) সব তির আমার সামনে রেখে দিয়ে বললেন, “আমার মা-বাবা তোমার প্রতি উৎসর্গ হোক, তুমি যথাসাধ্য তির ছুড়তে থাকো।”’ (বুখারি) ওহুদের যুদ্ধের একপর্যায়ে মুসলিম বাহিনী যখন চরম বিপর্যয়ের সামনে, তখন মুষ্টিমেয় কিছু সেনা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাসুল (সা.)–কে ঘিরে প্রতিরক্ষাব্যূহ রচনা করেন। সাদ (রা.) সেখানে ছিলেন। ওহুদের যুদ্ধে সাদ (রা.) শত্রুপক্ষের প্রবল আক্রমণ থেকে রাসুল (সা.)-কে হেফাজতের জন্য নিজের জীবন বাজি রেখে লড়েছিলেন। দশম হিজরিতে বিদায় হজের কিছুদিন আগে সাদ (রা.) খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাসুল (সা.) প্রায়ই তাঁকে দেখতে যেতেন। হজরত সাদ (রা.) বলেন, ‘একদিন রাসুল (সা.) আমার সঙ্গে কথা বলার পর আমার কপালে হাত রাখলেন। তারপর মুখমণ্ডলের ওপর হাতের স্পর্শ বুলিয়ে পেট পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে দোয়া করলেন, “হে আল্লা...

আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.)

ছবি
  আবু জাহেল ছিলন ইসলামের অন্যতম শত্রু। তার বাবার নাম হিশাম ইবনুল মুগীরা। মায়ের নাম আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.)। আবু জাহেলের বাবা হিশাম ছিল পৌত্তলিক। রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর নবুয়াত লাভের আগেই হিশাম ইন্তেকাল করে। আসমা বিনতে মুখাররাবার প্রথম বিয়ে হয় হিশাম ইবনে মুগীরার সঙ্গে। এই স্বামীর ঘরে তাঁর দুটি ছেলে জন্ম নেয়। একজন আবু জাহেল, আরেকজন আল-হারিস। আল-হারিস ইবনে হিশাম ছিলেন রাসুলের সাহাবি। তবে প্রথম দিকে তিনিও তাঁর ভাইয়ের মতো ইসলামের বিরোধিতা করেন। বদর ও উহুদ যুদ্ধে মহানবী (সা.)–এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। মক্কা বিজয়ের পর হারিস ইবনে হিশাম ইসলাম গ্রহণ করে সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন। এর পর ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত প্রায় সবগুলো যুদ্ধে ইসলামের পক্ষে অংশ নেন। আসমার প্রথম স্বামী হিশাম ইবনে মুগীরা ইন্তেকাল করলে দেবর আবু রাবীয়া ইবনুল মুগীরার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়।আসমা বিনতে মুখাররাবা (রা.) ইসলাম গ্রহণ করে রাসুলের সাহাবি হওয়ার মর্যাদা লাভ করেন। অথচ তাঁর গর্ভজাত ছেলে ছিল ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু! তিনি ইসলাম গ্রহণ করে তাঁর ছেলের সঙ্গে না থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যান। ইসলাম গ্রহণ করার কারণে আবু জাহেল অন্য সাহ...

আবু মুসা (রা.)

ছবি
  হজরত আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.)-এর গুণ ছিল অনেক। তিনি প্রথম দিকের মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন নেতৃস্থানীয় বিচারক। সবাই বলত: এই উম্মাহর বিচারক চারজন—উমর (রা.), আলী (রা.), আবু মুসা (রা.) ও জায়েদ ইবনে সাবিত (রা.)। আবু মুসা (রা.) মক্কা বিজয় ও হুনাইন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। রাসুল (সা.) আবু মুসা (রা.)-কে ইয়েমেনের গভর্নর করেন। প্রাচীন সময় থেকে ইয়েমেন দুই ভাগে বিভক্ত ছিল। ইয়েমেন আকসা ও ইয়েমেন। মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.)-কে ইয়েমেন আকসার এবং আবু মুসা (রা.)-কে ইয়েমেন আদনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুজনকে বিদায় দেওয়ার সময় রাসুল (সা.) তাঁদের বলেছিলেন, ইয়েমেনবাসীর সঙ্গে কোমল ব্যবহার করতে। কোনো কঠোরতা না করতে। মিলেমিশে বাস করতে।নিজের দেশ হওয়ায় শুরু থেকেই ইয়েমেনের মানুষদের ওপর আবু মুসা (রা.)-এর যথেষ্ট প্রভাব ছিল। তিনি সুষ্ঠুভাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। আরেক গভর্নর মুয়াজ (রা.)-এর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব ছিল। তাঁরা সীমান্তে মিলিত হয়ে নানা বিষয়ে পরামর্শ করতেন। আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.) অত্যন্ত জ্ঞানী ছিলেন। হজরত আলী (রা.) বলতেন, আবু মুসা মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিদ্যার রঙ...

জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে যে ভুল অনেকে করে থাকেন

ছবি
  পুরুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করার চেস্টা করতে হবে। জামাতে নামাজ আদায় করার তাগিদ দিয়ে আল্লাহ বলেন, রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু করো। (সুরা বাকারা, আয়াত: ৪৩) রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জামাতে নামাজ পড়লে একাকী নামাজের তুলনায় সাতাশ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। (বুখারি, হাদিস: ৬১৯) জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে গিয়ে সাধারণত যেসব ভুল অনেকে করে থাকেন। দৌড়ে এসে জামাতে শরিক হওয়া জামাতের সওয়াব অর্জন করতে গিয়ে অনেকে শরিয়তের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ফেলেন। তারা দৌড়ে এসে জামাতে শরিক হন। দৌড়ে এসে নামাজে শরিক হলে কেউ প্রথম তাকবির বা দুই–এক রাকাত বেশি পাবে, কিন্তু তখন সে স্থিরচিত্তে নামাজ পড়তে পারবে না। পুরো নামাজ জুড়েই অস্থিরতা থেকে যাবে। কেউ জোরে হেঁটে এসে ক্লান্ত না হয়ে নামাজ পড়তে পারলে অবশ্য কোনো সমস্যা নেই। হাদিসে আছে, ‘নামাজের একামত শুনলে তোমরা ধীর ও শান্তভাবে মসজিদে বা জামাতে যাও। তাড়াহুড়া কোরো না। ইমামের সঙ্গে নামাজের যতটুকু অংশ পাও ততটুকু পড়ে নাও। আর যে অংশটুকু ছুটে যায়, তা একা পূরণ করে নাও। (বুখারি, হাদিস: ৬৩৬) কাতারের মাঝখানে ফাঁক রেখে দাঁড়ানো কাতার...