পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২৫ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

আমার রব আমাকে ছেড়ে যাবেন না

ছবি
  মানুষ যত দিন বেঁচে থাকে, তত দিন জীবন নিয়ে স্বপ্ন দেখে। এই স্বপ্ন কখনো বাস্তব, কখনো অবাস্তব। আল্লাহ যে তকদির ঠিক করে রেখেছেন, সেটা মানুষের অজানা। তাই সে ইচ্ছেমতো ভাবে, স্বপ্ন দেখে। আর যখন যে অবশ্যম্ভাবী তকদির এসে সামনে দাঁড়ায়, অপ্রত্যাশিত আঘাত কিংবা আনন্দ দিয়ে, মানুষ বিহ্বল হয়ে পড়ে। জীবনে চলার পথে আমরা প্রায়ই এমন ঘটনার মুখোমুখি হই। হয়তো ভাবি, কেন এভাবে একটা সাজানো সুন্দর ছিমছাম সংসারে মা কিংবা বাবাকে বিদায় নিতে হলো চিরতরে? পরিবারের বাকি মানুষগুলো এখন কী নিয়ে বাঁচবে? আসলেই আল্লাহ কেন মানুষকে এ রকম পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে নিয়ে যান, তার কারণ সব সময় আমাদের বোধগম্য হবে না। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে আমরা কী করে নিজেদের আল্লাহর ওপর ভরসা, অর্থাৎ তাওয়াক্কুলের ওপর সুদৃঢ় রাখব? আসুন, দেখি, ইসলাম এ নিয়ে আমাদের কী শেখাতে চায়। জীবনে চলার পথে আমরা প্রায়ই এমন ঘটনার মুখোমুখি হই। হয়তো ভাবি, কেন এভাবে একটা সাজানো সুন্দর ছিমছাম সংসারে মা কিংবা বাবাকে বিদায় নিতে হলো চিরতরে? ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহর আদেশে ইব্রাহিম (আ.) হাজেরা ও তাঁর শিশুপুত্র ইসমাইলকে নিয়ে নির্বাসন দানের জন্য বের হলেন। পথে হাজেরা শিশুকে ...

আল-গাফফার: এই নামে আল্লাহ ক্ষমার অপার সমুদ্র

ছবি
  যখন পাপের অন্ধকার হৃদয়কে গ্রাস করে, যখন ভুলের বোঝা কাঁধে চেপে বসে, তখন একটি নাম আশার আলো জ্বালায়, ‘আল-গাফফার’। তিনি আল্লাহ, যিনি তাঁর অসীম ক্ষমায় বান্দার পাপ ঢেকে দেন, তাঁর রহমতের চাদরে তাকে আগলে রাখেন। তাঁর ক্ষমার দরজা সব সময় খোলা, তাঁর রহমতের সমুদ্র কখনো শুকায় না। ‘আল-গাফফার’ নামটি শুধু তাঁর ক্ষমার প্রকাশ নয়, বরং আমাদের নবজীবনের পথ দেখায় এবং তাঁর দিকে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানায়। ক্ষমার অপরূপ রূপ ‘আল-গাফফার’ আল্লাহর সেই নাম, যা তাঁর অসীম ক্ষমা ও রহমতের কথা বলে। তিনি সেই সত্তা, যিনি বান্দার পাপ ঢেকে দেন, তাঁর দোষত্রুটি প্রকাশ করেন না। কোরআন মজিদে এই নাম পাঁচবার উল্লেখিত হয়েছে, প্রতিবারই তাঁর অপার ক্ষমার সাক্ষ্য বহন করে। সুরা নুহে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয় তিনি অতি ক্ষমাশীল।’ (আয়াত: ১০) আল্লাহ তাঁর বান্দার পাপ ঢেকে দেন, যেন অন্য কেউ তা জানতে না পারে। তিনি দুনিয়ায় পাপের শাস্তি থেকে রক্ষা করেন এবং আখিরাতে তাঁর ক্ষমায় বান্দাকে মুক্তি দেন। ইমাম হিজাজি (রহ.), আন-নুর আল-আসনা, পৃ. ৫৭ ইমাম হিজাজি (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ তাঁর বান্দার পাপ ঢেক...

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আধ্যাত্মিক চাবিকাঠি

ছবি
  রিজিক বা জীবিকা কেবল অর্থ বা বস্তুগত সম্পদ নয়; বরং আল্লাহ প্রদত্ত সব নিয়ামতই রিজিক; যার মধ্যে শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক সবই অন্তর্ভুক্ত। আমরা প্রায়ই রিজিকের জন্য দৌড়ঝাঁপ করি, কিন্তু এই প্রক্রিয়াটিকে যদি আমরা আধ্যাত্মিক উন্নতির সঙ্গে যুক্ত করতে পারি, তাহলে তা আমাদের জীবনকে আরও অর্থবহ ও পরিপূর্ণ করে তুলবে। রিজিক বৃদ্ধির জন্য চারটি আধ্যাত্মিক চাবিকাঠি রয়েছে—তাকওয়া (আল্লাহভীতি), তাওয়াক্কুল (আল্লাহর ওপর ভরসা), ইয়াকিন (দৃঢ় বিশ্বাস) ও ইস্তিগফার (ক্ষমাপ্রার্থনা)। এই চার উপায়ে রিজিক সন্ধান করলে তা কেবল বৈষয়িক বিষয় আর থাকবে না; বরং এর মধ্য দিয়ে তখন একটা আধ্যাত্মিক উৎকর্ষও সাধিত হবে। ১. তাকওয়া: আল্লাহভীতি তাকওয়া বা আল্লাহভীতি হলো এমন একটি গুণ, যা মানুষকে পাপ থেকে দূরে রাখে এবং আল্লাহর আনুগত্যের পথে চলতে সাহায্য করে। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর প্রতি কর্তব্য পালন করে, আল্লাহ তার জন্য প্রতিটি কঠিন পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার পথ তৈরি করে দেবেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারেনি।’ (সুরা তালাক, আয়াত: ২-৩) যে ব্যক্তি আল্লাহকে...

মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার কয়েকটি আয়াত ও হাদিস

ছবি
  আধুনিক জীবনের দ্রুতগতি ও বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে আমরা প্রায়ই ভুলে যাই মা-বাবার ত্যাগ, ভালোবাসা ও অকৃত্রিম যত্নের মূল্য। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্ব পালন কখনো কখনো কিছু উপহার বা বিশেষ দিনে শুভেচ্ছা কার্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। কিন্তু ইসলাম মা-বাবার প্রতি কর্তব্যকে এমন একটি পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করে, যা তাঁদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরও অব্যাহত থাকে। তাঁদের প্রতি কর্তব্য পালন ইসলামের একটি মৌলিক শিক্ষা। আমরা কয়েকটি আয়াত ও হাদিস তুলে ধরব, যা মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে প্রেরণা জোগাবে। মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহারকে ইমানের ঠিক পরই স্থান দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আল্লাহর ইবাদতের পাশাপাশি মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পালনও একটি অপরিহার্য ইবাদত। ১. ইমানের পরই মা-বাবার প্রতি দায়িত্ব পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তোমার রব নির্দেশ দিয়েছেন যে তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করবে না এবং মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবে।’ (সুরা ইসরা, আয়াত: ২৩) এই আয়াতে মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহারকে ইমানের ঠিক পরই স্থান দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আল্লাহর...

নবী ইবরাহিম (আ.) ও চারটি পাখি

ছবি
  অনেক সময় এমন হয়, আমরা একটা বিষয় বিশ্বাস করি, তারপর সেই বিশ্বাসকে পাকাপোক্ত করতে অনেক পড়াশোনা করি, নিজ চোখে দেখার চেষ্টা করি, ক্ষেত্রবিশেষ পরীক্ষা–নিরীক্ষাও করে থাকি। বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে আমরা যত বেশি আলোচনা করি, বিশ্বাস তত শক্তিশালী হয়। এ কারণেই পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর তুমি আলোচনা করতে থাকো, কারণ এ আলোচনা ইমানদারদের উপকারে আসবে।’ (সুরা যারিয়াত, আয়াত: ৫৫) বিজ্ঞানীরা অনেক সময় পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত কোনো বিষয়কে সত্য প্রমাণ করেন। মুসলমান হিসেবে তো আমরা বিজ্ঞানীদের প্রমাণ ছাড়া পবিত্র কোরআনের প্রতিটি হরফ বিশ্বাস করি, তবু তাঁদের তত্ত্ব আমাদের মনকে প্রশান্ত করে, বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। এ কারণে আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা করা ভালো, এতে এলেম বৃদ্ধি পায় এবং ইমানে নতুনত্ব আসে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার এমন একটি ঘটনা এনেছেন:একদিন হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহর কাছে আরজ করেন, ‘হে আমার রব, আপনি কীভাবে মৃতদের জীবিত করেন?’ আল্লাহ বললেন, ‘তুমি কি বিশ্বাস করোনি?’ হজরত ইবরাহিম (আ.) বললেন, ‘অবশ্যই বিশ্বাস করি। কিন্তু আমার মনের প্রশান্তির জন্য দেখ...

তাদের জীবন ও মুত্যু কি সমান হবে?

ছবি
  দুনিয়াতে যেহেতু ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না, তাহলে তোমরা কিভাবে বিচার দিবসকে অস্বীকার করো? আর আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা অন্যায় অবিচারকে বিনা শাস্তিতে পার পেতে দিবেন না। তাই, কুরআন বিচার দিবসের অস্তিত্বের স্বপক্ষে এভাবে নৈতিক যুক্তি তুলে ধরে। আল্লাহ কুরআনে বলেন - أَمْ نَجْعَلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَالْمُفْسِدِينَ فِي الْأَرْضِ أَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِينَ كَالْفُجَّارِ - "যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে তাদেরকে কি আমি ওদের মত করব যারা দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে? আমি মুত্তাক্বীদের কি অপরাধীদের মত গণ্য করব?" (৩৮:২৮) যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে তাদেরকে কি আমি ওদের মত করব যারা দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে? যারা দুনিয়াতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে, যারা গণহত্যা চালায়, যে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক? তোমরা কি মনে করো যে নির্যাতন চালায় আর যারা নির্যাতিত হয় উভয়ের ফলাফল সমান হবে? অন্য আয়াতে বলেন - سَوَاءً مَّحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْ - "তাদের জীবন ও মুত্যু কি সমান হবে?" سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ - কতই না মন্দ তাদের ফয়সালা! (৪৫: ২১) কতই না মন্দ তাদের ফয়সালা! তোমরা কি মনে ক...

দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক

ছবি
  দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন, আপনার অন্তর যদি আখিরাত নিয়ে মগ্ন থাকে, আপনার অন্তর যদি আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত থাকে—তখন লক্ষ্য করবেন আপনার হৃদয় কখনো হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে না, পরকালে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় অন্তরটি সবসময় আলোকিত থাকে। আশার প্রদীপটি কখনো নিভে যায় না। পক্ষান্তরে দেখুন, আপনি যদি স্রষ্টায় অবিশ্বাসী হয়ে থাকেন, জীবনে যদি ধর্মকর্ম অনুপস্থিত থাকে, যদি আপনার সমগ্র অস্তিত্ত্ব শুধুই দুনিয়ার এ জীবন নিয়ে কিন্তু তবু দুনিয়া আপনার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেলো, দুনিয়াতে ব্যর্থ হলেন—তখন আপনি ভয়াবহ এক সমস্যায় নিপতিত হবেন। হতাশার অমানিশা চার দিক থেকে আপনাকে ঘিরে ধরবে। ডিপ্রেশনে পড়ে যাবেন। এমনকি আত্মহত্যার মতো জঘন্য সম্ভাবনাও দেখা দিবে। সব ধরণের নেতিবাচক অনুভূতিগুলো আপনার অন্তরে জেঁকে বসবে। কিন্তু যদি দুনিয়ার জীবনটাকে পরকালের সাথে যুক্ত করেন... যখন উপলব্ধি করবেন যে, হ্যাঁ, আমি দুনিয়াতে সফল হতে চাই, কিন্তু যদি কোনো কারণে ব্যর্থ হই, আমার জন্য তো পরকাল আছেই। যদি এই মানসিকতা অন্তরে লালন করতে পারেন, হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর উত্তেজনা অনুভব করবেন। হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর এ...

তাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ

ছবি
  ‘তাকওয়া’ শব্দটির অর্থ আল্লাহকে ভয় করে চলা, সব সময় তাঁর নির্দেশ মেনে চলা এবং গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করা। এটি এমন একটি গুণ, যা একজন মুমিনকে আল্লাহর প্রিয় বানিয়ে তোলে। তাকওয়া থাকে অন্তরে, কিন্তু তার প্রভাব দেখা যায় মানুষের জীবনে। তাকওয়াবান মানুষ একা থাকলেও খারাপ কাজ করে না, কারণ সে জানে, ‘আমার রব আমাকে দেখছেন।’ আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যেমনভাবে ভয় করা উচিত। আর মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০২) আল্লাহ আরও বলেন, ‘আল্লাহ তাদেরকেই কবুল করেন, যাঁরা তাকওয়াবান।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত: ২৭) এই আয়াতগুলো আমাদের শেখায় তাকওয়া ছাড়া ইমান পরিপূর্ণ হয় না আর আল্লাহর নৈকট্য অর্জনও সম্ভব নয়। তাকওয়ার উপকারিতা ১. জীবনের সংকট থেকে মুক্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যে আল্লাহকে ভয় করে, তিনি তার জন্য পথ বের করে দেন এবং তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দেন, যা সে কল্পনাও করতে পারে না।’ (সুরা তালাক, আয়াত: ২-৩) ২. ভালোমন্দ বোঝার শক্তি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় কর, তাহলে তিনি তোমাদের সঠিক-বেঠিক বোঝার শক্তি দেবেন, গুনাহ মাফ করবেন এবং ক্ষমা করে দেবে...

মহররমে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি

ছবি
  মহররম কেবল একটি মাস নয়, বরং ইসলামের ইতিহাসের একটি জীবন্ত অধ্যায়, যেখানে বিষাদ, সংগ্রাম ও আধ্যাত্মিকতার মিশ্রণ রয়েছে। কেবল ১০ মহররম নয়, এই মাসজুড়ে ঘটেছে ইতিহাসের অবিস্মরণীয় ও ব্যথাতুর নানা ঘটনা। আমরা কয়েকটি উল্লেখ করছি। মহররমের উল্লেখযোগ্য তারিখ ও ঘটনা ২ মহররম: কারবালায় হোসাইন (রা.)-এর প্রবেশ ৬৮০ সালে, হিজরি ৬১ সনে হোসাইন ইবন আলী (রা.) কারবালায় প্রবেশ করেন এবং তাঁর শিবির স্থাপন করেন। ইয়াজিদের সেনাবাহিনী তাঁদের ঘিরে ফেলে। কুফার দিকে যাওয়ার পথে উমাইয়া সৈন্যরা তাঁদের থামান এবং কারবালার মরুভূমিতে শিবির স্থাপন করতে বাধ্য করেন, যেখানে পানি বা কোনো সুরক্ষা দেয়াল ছিল না। এই ঘটনা কারবালার ট্র্যাজেডির সূচনা করে (আল-তাবারি,  তারিখ আল-তাবারি , ৫/৩৯১, দারুল কুতুব, ১৯৬৭)। ৭ মহররম: পানি নিষিদ্ধকরণ ৬৮০ সালে, হিজরি ৬১ সনে ইয়াজিদের নির্দেশে হোসাইন (রা.)-এর শিবিরের জন্য পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর ফলে হোসাইন (রা.) ও তাঁর সঙ্গীদের মধ্যে তীব্র তৃষ্ণা ও ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। (আল-তাবারি,  তারিখ আল-তাবারি , ৫/৪০১, দারুল কুতুব, ১৯৬৭) ৮ মহররম: জয়নুল আবেদীন (রা.)–এর মৃত্যু ৯৫ হিজর...

"তাদের জীবন ও মুত্যু কি সমান হবে?"

ছবি
  দুনিয়াতে যেহেতু ন্যায় বিচার পাওয়া যায় না, তাহলে তোমরা কিভাবে বিচার দিবসকে অস্বীকার করো? আর আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা অন্যায় অবিচারকে বিনা শাস্তিতে পার পেতে দিবেন না। তাই, কুরআন বিচার দিবসের অস্তিত্বের স্বপক্ষে এভাবে নৈতিক যুক্তি তুলে ধরে। আল্লাহ কুরআনে বলেন - أَمْ نَجْعَلُ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ كَالْمُفْسِدِينَ فِي الْأَرْضِ أَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِينَ كَالْفُجَّارِ - "যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে তাদেরকে কি আমি ওদের মত করব যারা দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে? আমি মুত্তাক্বীদের কি অপরাধীদের মত গণ্য করব?" (৩৮:২৮) যারা ঈমান আনে আর সৎ কাজ করে তাদেরকে কি আমি ওদের মত করব যারা দুনিয়াতে বিপর্যয় সৃষ্টি করে? যারা দুনিয়াতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে, যারা গণহত্যা চালায়, যে নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক? তোমরা কি মনে করো যে নির্যাতন চালায় আর যারা নির্যাতিত হয় উভয়ের ফলাফল সমান হবে? অন্য আয়াতে বলেন - سَوَاءً مَّحْيَاهُمْ وَمَمَاتُهُمْ - "তাদের জীবন ও মুত্যু কি সমান হবে?" سَاءَ مَا يَحْكُمُونَ - কতই না মন্দ তাদের ফয়সালা! (৪৫: ২১) কতই না মন্দ তাদের ফয়সালা! তোমরা কি মনে ক...

মহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে

ছবি
  কুরাইশের নেতৃস্থানীদের নিপীড়ন থেকে বাঁচতে মুসলিমদের প্রথমবার মক্কা ছাড়ার অনুমতি দেন নবীজি (সা.) নবুয়তের পঞ্চম বর্ষে। ৬১৩ খ্রিষ্টাব্দে আরবি রজব মাসে চারজন নারীসহ বারো থেকে পনেরোজন মানুষ আবিসিনিয়ার (বর্তমান ইথিওপিয়া) উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। মক্কার সবাই মুসলিম হয়ে গেছে, এই খবর শুনে কয়েক মাস পরে আবার তাঁরা ফিরে আসেন জন্মভূমিতে। কাছাকাছি পৌঁছে শুনতে পান খবরটি মিথ্যা। কয়েকজন যে-পথে এসেছেন সে-পথেই ফিরে যাবেন বলে থমকে যান, কয়েকজন ফিরে যান মক্কাতেই। যাঁরা আবার আবিসিনিয়ায় ফিরবেন বলে ভাবেন, তাদের সঙ্গে যোগ দেন আরও শতাধিক নারী-পুরুষ। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন নবীজি (সা.)–র চাচাতো ভাই জাফর ইবনে আবু তালিব (রা.)। প্রশ্ন হলো, নবীজি (সা.) মদিনায় হিজরত করলেন? আবিসিনিয়ায় বা অন্য কোথাও নয়। এর বেশ কয়েকটি কারণ প্রখ্যাত সিরাত গবেষক আবুল আলি নদভি (র.) তাঁর নবিয়ে রহমত গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছেন। নবীজি (সা.) তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না। আবিসিনিয়ায় হিজরতকারীরা যখন আবার হেজাজের পথ ধরেন, ততদিনে নবীজি (সা.)–ও অবশ্য মক্কায় নেই। ৬২১ খ্রিষ্টাব্দের জুনের শেষ দিকে নবীজি (সা.) ইয়াসরিবে চলে গেছেন, যা পরে ‘মদিনাতুন্নবি’ বা ‘নবির শহ...