দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন

 


দুনিয়ার পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেন, আপনার অন্তর যদি আখিরাত নিয়ে মগ্ন থাকে, আপনার অন্তর যদি আল্লাহর ভালোবাসায় সিক্ত থাকে—তখন লক্ষ্য করবেন আপনার হৃদয় কখনো হতাশার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে না, পরকালে ভালো কিছু পাওয়ার আশায় অন্তরটি সবসময় আলোকিত থাকে। আশার প্রদীপটি কখনো নিভে যায় না।

পক্ষান্তরে দেখুন, আপনি যদি স্রষ্টায় অবিশ্বাসী হয়ে থাকেন, জীবনে যদি ধর্মকর্ম অনুপস্থিত থাকে, যদি আপনার সমগ্র অস্তিত্ত্ব শুধুই দুনিয়ার এ জীবন নিয়ে কিন্তু তবু দুনিয়া আপনার ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে গেলো, দুনিয়াতে ব্যর্থ হলেন—তখন আপনি ভয়াবহ এক সমস্যায় নিপতিত হবেন। হতাশার অমানিশা চার দিক থেকে আপনাকে ঘিরে ধরবে। ডিপ্রেশনে পড়ে যাবেন। এমনকি আত্মহত্যার মতো জঘন্য সম্ভাবনাও দেখা দিবে। সব ধরণের নেতিবাচক অনুভূতিগুলো আপনার অন্তরে জেঁকে বসবে। কিন্তু যদি দুনিয়ার জীবনটাকে পরকালের সাথে যুক্ত করেন... যখন উপলব্ধি করবেন যে, হ্যাঁ, আমি দুনিয়াতে সফল হতে চাই, কিন্তু যদি কোনো কারণে ব্যর্থ হই, আমার জন্য তো পরকাল আছেই। যদি এই মানসিকতা অন্তরে লালন করতে পারেন, হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর উত্তেজনা অনুভব করবেন। হঠাৎ করেই তখন নিজের ভেতর এক ধরণের আভিজাত্য অনুভব করবেন। একটি উচ্চতর লক্ষ্য আপনাকে অনুপ্রাণিত রাখবে সবসময়। আমৃত্যু একটি উদ্দেশ্যের পানে ছুটে চলতে পারবেন। "আমি পার্থিব এ জীবন উন্নত করার চেষ্টা করবো। কিন্তু যদি কোনো কারণে না পারি আমার জন্য সবসময় আখিরাত আছে। আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো—আমার জন্য আছে এই সুবিশাল মহাবিশ্বের রাজাধিরাজের সন্তুষ্টি।" শুধু চিন্তা করে দেখুন, যে ব্যক্তি একেবারে সবার শেষে জান্নাতে যাবে তাকে দশটা পৃথিবীর সমান এক জান্নাত দেওয়া হবে। সে এমন এক ব্যক্তি যার কোনো নেক আমল ছিল না। আল্লাহ দয়া করে তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন। তাহলে যাদের নেক আমল থাকবে, যারা সমগ্র জীবন ধরে নামাজ-রোজা করেছেন, আল্লাহ সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে দান-সদকা করেছেন, আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম করেছেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় মানুষের উপকার করেছেন, সমস্যা সংকটে ধৈর্য ধারণ করেছেন তারা কত বড় জান্নাত পাবেন! ও মুসলিম! তোমার হতাশ হওয়ার কিছু নেই। যদি জান্নাতে যেতে পারেন আর কোনো কিছু কি ম্যাটার করে? ঠিক এরকম একটা কথাই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন— "প্রতিটি জীবন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে এবং ক্বিয়ামাতের দিন তোমাদেরকে পূর্ণমাত্রায় বিনিময় দেয়া হবে। যে ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করা হল এবং জান্নাতে দাখিল করা হল, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হল, কেননা পার্থিব জীবন ছলনার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়।" "যে ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন হতে রক্ষা করা হল এবং জান্নাতে দাখিল করা হল, অবশ্যই সে ব্যক্তি সফলকাম হল।" এটাই আসলে চূড়ান্ত কথা। দুনিয়ার সমস্যা সংকট গুলো ক্ষণস্থায়ী। এগুলোর কারণে নিজের পরকাল বরবাদ হতে দিবেন না। একটি ভিডিওতে গাজার এক বোনকে বলতে দেখেছি—"আলহামদুলিল্লাহ। আমাদের এই সংকট একটি দুনিয়াবি সংকট। এটা ক্ষণস্থায়ী। একদিন এর সমাপ্তি হবে। এটা পরকালীন কোন সংকট নয়। স্থায়ী কোন সমস্যা নয়। আলহামদুলিল্লাহ।" এই বোনের মতো নিজের সংকটগুলোর ক্ষণস্থায়িত্বের দিকে তাকিয়ে সবর অবলম্বন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সহজ দশটি(১০)টি জিকির!

দিরিলিসের আরতুগ্রুলের সকল পর্ব কিভাবে দেখবেন?

নিশ্চয়ই কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে