পোস্টগুলি

অক্টোবর, ২০২৩ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে

ছবি
  যদিও আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই বোনদের হতাহতের ঘটনা পশ্চিমা মিডিয়াতে আলোচিত হচ্ছে না, যখন মনে হচ্ছে বিশ্ববাসী তাদেরকে পরিত্যাগ করেছে, আমি চাই আপনারা জেনে রাখুন, যে মানুষগুলো ধ্বংস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে, বোমার আঘাতে যাদের কবর দেওয়া হচ্ছে, তারা হচ্ছে 'আকরামু আহলিল আরদ।' এই মুহূর্তে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার নিকট তারা সকল দুনিয়াবাসীর মাঝে সবচেয়ে সম্মানিত। আমাদের কষ্টগুলোকে বৈধতা দেওয়ার জন্য আমাদের অন্য কাউকে দরকার নেই। আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলোকে সম্মান দেওয়ার জন্য আমাদের অন্য কাউকে দরকার নেই। আমাদের শহীদদের সম্মান দেওয়ার জন্য আমাদের অন্য কাউকে দরকার নেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। -- ওমর সুলেইমান আল্লাহ আজ্জা ওয়া জাল্লা বলেন, وَ لَا تَحۡسَبَنَّ الَّذِیۡنَ قُتِلُوۡا فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ اَمۡوَاتًا - "যারা আল্লাহর পথে জীবন দিয়েছে, তাদেরকে তুমি মৃত মনে করো না।" এমনকি তারা মৃত এমনটা কল্পনাও করবে না। কুরআনের এই স্থানে আল্লাহ এমনকি নির্দিষ্ট কিছু চিন্তারও সমালোচনা করেছেন। আমরা জানি, নির্দিষ্ট ধরণের কিছু কথা আছে, বক্তব্য আছে ইসলাম যার অনুমোদন দ...

কাব (রা.) , একজন উত্তম কবি

ছবি
  জাহেলি যুগেই তিনি কবি হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। কাব (রা.) ছিলেন তাঁর সময়ের একজন উত্তম কবি। আরবের গোত্রগুলিতে কবি হিসেবে তাঁর নাম পরিচিত ছিল। রাসুল (সা.) হুনাইন যুদ্ধ শেষ করে তায়েফের দিকে যাত্রা করার সময় হজরত কাব ইবনে মালিক (রা.) দুটি কবিতা লেখেন। কবিতাটি দাউস গোত্রের ওপর এত প্রভাব ফেলে যে তারা তা শুনেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। কাব (রা.)–এর বর্ণনা করা হাদিসের সংখ্যা ৮০। ইসলাম গ্রহণের পর থেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এর সেবায় তিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিলেন। হাতে কলম নিয়ে যেমন ভাষার যুদ্ধ করেছেন, প্রয়োজনের মুহূর্তে তেমনই হাতে তলোয়ারও তুলে নিয়েছেন। কাব ইবনে মালিক (রা.) ছিলেন আনসার সাহাবি। সততা ছিল তাঁর চরিত্রের একান্ত বৈশিষ্ট্য। কঠিন পরিস্থিতিতেও তিনি সত্য বলতে কুণ্ঠিত হতেন না। কাব (রা.) তাঁর কবিতায় কুরাইশদের যুদ্ধবিগ্রহ এবং অতীত ইতিহাস বর্ণনা করে তাদের দোষত্রুটি তুলে ধরতেন। কবিতার মাধ্যমে একদিকে অবিশ্বাসীদের মনে ভীতির সৃষ্টি করতেন, অন্যদিকে মুসলমানদের মন প্রশান্তিতে পূর্ণ করে দিতেন। কাব (রা.) কবিতা লিখে রাসুল (সা.)–কে শোনাতেন। রাসুল (সা.) মাঝেমধ্যে তাতে কিছু শব্দ রদবদলেরও পরাম...

আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার উপদেশ

ছবি
  আল্লাহ তাআ’লার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপদেশঃ ক্বুরআন ও হাদীসে আল্লাহ তাআ’লা মানব জাতিকে বারংবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেই উপদেশ দিয়েছেন তা হচ্ছে ‘তাক্বওয়া’, অর্থাৎ মানুষ যেন তার রব্বকে সর্বদা ভয় করে চলে। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “আমার মতে, যে ব্যক্তি বুঝে এবং (সত্য পথের) অনুসরণ করে তার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের উপদেশের চেয়ে উত্তম কোন উপদেশ নেই। আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার উপদেশঃ আল্লাহ সুবহা’নাহু তাআ’লার উপদেশ বর্ণিত আছে এই আয়াতে - وَلَقَدۡ وَصَّيۡنَا ٱلَّذِينَ أُوتُواْ ٱلۡكِتَٰبَ مِن قَبۡلِكُمۡ وَإِيَّاكُمۡ أَنِ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَۚ “আর নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্বে যাদেরকে কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে এবং তোমাদেরকেও আমি এই আদেশ দিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো।” সুরা আন-নিসাঃ ১৩১। নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের উপদেশঃ আবু যার রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন, اتَّقِ اللَّهَ حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعِ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وَخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُ...

ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াত

ছবি
  ক্বুরআনুল কারীমের ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াতঃ সুরা নাহল, আয়াত নং-৯০ اِنَّ اللّٰہَ یَاۡمُرُ بِالۡعَدۡلِ وَ الۡاِحۡسَانِ وَ اِیۡتَآیِٔ ذِی الۡقُرۡبٰی وَ یَنۡہٰی عَنِ الۡفَحۡشَآءِ وَ الۡمُنۡکَرِ وَ الۡبَغۡیِ ۚ یَعِظُکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَذَکَّرُوۡنَ ﴿۹۰﴾ অর্থঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ আদেশ করেন ন্যায়-বিচার, সদাচারণ ও আত্মীয়দেরকে দেওয়ার জন্য, আর তিনি নিষেধ করেন অশ্লীলতা, অপকর্ম আর বিদ্রোহ থেকে। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর। (১) বিশিষ্ট সাহাবী আ’ব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আ’নহু এই আয়াত সম্পর্কে বলেছেন, “সুরা নাহলের এই আয়াত হচ্ছে ক্বুরআনুল কারীমের ব্যাপকতর অর্থবোধক একটি আয়াত।” (২) তাবেয়ী বিদ্বান কাতাদা রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন “যত ভাল স্বভাব রয়েছে সেইগুলি অবলম্বনের নির্দেশ ক্বুরআন দিয়েছে এবং মানুষের মধ্যে যে সব খারাপ স্বভাব রয়েছে সেইগুলো পরিত্যাগ করতে আল্লাহ তাআ’লা হুকুম করেছেন।” এই আয়াত নাযিল হওয়া সম্পর্কে তিনটি ঘটনাঃ (১) হযরত উসমান ইবনু আবুল আস রাদিয়াল্লাহু আ’নহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি রাসূলুল্লাহর (সঃ) পার্শ্বে বসে ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ তিনি তাঁর দৃষ্ট...

কেমন করে এল আজান

ছবি
  আবু উমাইর ইবনে আনাস বরাতে তাঁর এক আনসারি চাচার বর্ণনা করা হাদিস আছে। তিনি বলেন, নবী (সা.) নামাজের জন্য লোকদের কীভাবে একত্র করা যায়, তা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। তা দেখে কেউ পরামর্শ দিলেন, নামাজের সময় হলে একটা পতাকা ওড়ানো হোক। সেটা দেখে একে অন্যকে সংবাদ জানিয়ে দেবে। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে সেটা পছন্দ হলো না। কেউ কেউ প্রস্তাব করল, ইহুদিদের মতো শিঙাধ্বনি দেওয়া হোক। রাসুলুল্লাহ (সা.) সেটাও পছন্দ করলেন না। কারণ, রীতিটি ছিল ইহুদিদের। কেউ কেউ ঘণ্টাধ্বনি ব্যবহারের প্রস্তাব করলে তিনি বলেন, ‘ওটা খ্রিষ্টানদের রীতি।’ আবদুল্লাহ ইবনে জায়িদ বিষয়টি নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চিন্তার কথা মাথায় নিয়ে প্রস্থান করলেন। এরপর (আল্লাহর পক্ষ থেকে) স্বপ্নে তাঁকে আজান শিখিয়ে দেওয়া হলো। পরদিন ভোরে তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে গিয়ে বিষয়টি জানিয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি কিছুটা তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলাম। এমন সময় এক আগন্তুক এসে আমাকে আজান শিক্ষা দিলেন।’ একইভাবে ওমর খাত্তাবও (রা.) ২০ দিন আগেই স্বপ্নযোগে আজান শিখেছিলেন। কিন্তু তিনি তা গোপন রেখেছিলেন। এরপর (আবদুল্লাহ ইবনে জায়িদের স্বপ্নের বৃত্তান্ত বলার পর) তিনিও তাঁর...

সাহাবিদের সময়ে বিয়ে

ছবি
  সাহাবিদের বিয়ের আয়োজন ছিল সাদামাটা। সকালবেলা একজন সাহাবি ছিলেন অবিবাহিত। কবে বিয়ে করবেন, কাকে বিয়ে করবেন, সেটা সকালেও জানা ছিল না। সন্ধ্যায় তিনি সংসার শুরু করতেন। সাহাবিদের যুগে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ছিল সীমিত। এ কারণে বিয়ে ছিল সহজ। বিয়ের প্রথম ধাপ হচ্ছে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া। পুরুষ সাহাবিরা নিজেদের বিয়ের প্রস্তাব সরাসরি পাত্রীপক্ষের কাছে নিয়ে যেতেন। আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে নিজের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান। তিনি প্রথমে সংকোচ বোধ করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে অভয় দেন। এরপর নবী–কন্যা ফাতেমাকে (রা.) বিয়ে করেন আলী (রা.)। সম্ভ্রান্ত নারীরাও কারও মাধ্যমে নিজেদের বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে পারতেন। খাদিজা (রা.) তাঁর বান্ধবী নাফিসা (রা.)-র মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান। এমনকি কয়েকজন নারী সাহাবিও সরাসরি এসে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এমন একজন প্রস্তাবকারী ছিলেন খাওলা বিনতে হাকিম (রা.)। তাঁর স্বামী উসমান ইবনে মাজউন (রা.) ইন্তেকালের পর তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বিয়ে করেননি। সে যুগে মেয়...

মিষ্টভাষী হজরত দাউদ (আ.)

ছবি
  হজরত দাউদ (আ.) নবী ও বাদশাহ ছিলেন। কোরআনের অনেকগুলো সুরায় দাউদ (আ.)–এর কথা উল্লেখ আছে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত দাউদ (আ.) ছিলেন আল্লাহভক্ত সাধক এবং লৌহবর্ম নির্মাণের মাধ্যমে জীবিকা অর্জনকারী স্বনির্ভর নবী। লোহা তাঁর হাতে নমনীয় হয়ে যেত। তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল অসম্ভব মিষ্টি। তাঁর পাঠ শুনে সবাই মুগ্ধ হতো। পাহাড়, তরুলতা, পশুপাখি এরাও তাঁর সঙ্গে উপাসনায় যোগ দিত। আল্লাহ পাহাড়-পর্বত ও পক্ষীকুলকে তাঁর প্রভাবাধীন করে দিয়েছিলেন। সুরা বাকারায় আছে, দাউদ (আ.) জালুতকে হত্যা করেন। এ সুরায় আল্লাহ্‌র তাঁকে কর্তৃত্ব ও হিকমত দানের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ দাউদ (আ.)–কে বিপুল শক্তি ও ক্ষমতা দিয়েছিলেন। যুবক বয়স থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী ও বীর। খুব অল্প বয়সেই তিনি তালুতের নেতৃত্বে পরিচালিত যুদ্ধে কুখ্যাত যুদ্ধবাজ জালুতকে হত্যা করেছিলেন। কোরআনে মহান আল্লাহ সে ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন। কোরআনে আছে, ‘সুতরাং তখন তারা আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের পরাজিত করল। দাউদ জালুতকে বধ করল ও আল্লাহ তাকে কর্তৃত্ব ও হিকমত দান করলেন এবং যা তিনি ইচ্ছা করলেন, তা তাকে শিক্ষা দিলেন। আল্লাহ যদি মানবজাতির এক দলকে অন্য দল দিয়ে দমন না করতেন, ...

আহলে বাইত কারা

ছবি
  কোরআনের একটি আয়াতে আল্লাহ–তায়ালা ‘আহলে বাইত’ শব্দবন্ধটির উল্লেখ করেছেন। এ আয়াতে যদিও শুরুর দিকে কেবল মহানবী (সা.)-র স্ত্রীদের নির্দেশনা দিয়েছেন, তবে এর মানে এই নয় যে নবী-পরিবারভুক্ত কেবল তার স্ত্রীরাই। আবার এটাও এ-আয়াত থেকে প্রমাণ হয় যে, নবীজির স্ত্রীরা অবশ্যই তার পরিবারভুক্ত। পূর্ণ আয়তটি দেখা যাক: ‘হে নবীপত্নীগণ, তোমরা সাধারণ কোনো নারীর মতো নও। যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে পরপুরুষের সাথে কোমলভাবে কথা বোলো না। অন্যথায়, যার অন্তরে ব্যধি আছে, সে লালসায় পড়বে আর তোমরা সংগত কথা বলো। এবং তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করো এবং পূর্বেকার জাহেলিয়াতের যুগের মতো নিজেদের সৌন্দর্য প্রদর্শন করে বেড়িয়ো না। আর নামাজ কায়েম করো, যাকাত প্রদান করো এবং আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর অনুগত থাকো। হে নবী পরিবারবর্গ, আল্লাহ চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণ পবিত্র করে দিতে। (সূরা আহযাব, আয়াত: ৩২-৩৩) যদিও এ আয়াতটি শুধু তার স্ত্রীদের ওপরই সীমাবদ্ধ—এমন মত দিয়েছেন বিখ্যাত তাবেয়ি ইকরামা (র.)। কেননা, ইবনে আব্বাস (রা.) এমনই মত পোষণ করেছেন। তবে আয়াতটিতে মহানবী (সা.)-র স্ত্রীদের কথা বলা হলেও বিশুদ্ধ ...

বনু নাজ্জার বাগানের একটি ঘটনা

ছবি
  হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বরাতে এ হাদিসের বর্ণনা আছে। তিনি বর্ণনা করেছেন, আমরা আল্লাহর রসুল (সা.)–এর চারপাশে বসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে আবু বকর ও উমর (রা.), অর্থাৎ অন্য সাহাবিরা ছিলেন। এ অবস্থায় রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের মাঝখান থেকে উঠে গেলেন। তাঁর ফিরে আসতে দেরি হওয়ায় আমাদের আশঙ্কা হলো যে আমাদের অনুপস্থিতিতে তিনি না (শত্রুর হাতে) আক্রান্ত হন। এ দুশ্চিন্তায় আমরা ঘাবড়ে গিয়ে উঠে পড়লাম। আমিই প্রথম ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। তাই আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর সন্ধানে বেরিয়ে পড়লাম। শেষ পর্যন্ত আনসারদের বনু নাজ্জারের একটি বাগানে পৌঁছে তার চারপাশে ঘুরতে লাগলাম, যদি কোনো (প্রবেশ) দরজা পাই। কিন্তু কোনো (প্রবেশ) দরজা পেলাম না। হঠাৎ দেখি, বাইরের একটি কুয়া থেকে সরু একটা নালা ওই বাগানের ভেতরে চলে গেছে। আমি সেখান দিয়ে জড়সড় হয়ে বাগানে ঢুকে পড়লাম। (গিয়ে দেখি,) আল্লাহর রাসুল (সা.) সেখানে। তিনি বলেলেন, ‘আবু হুরায়রা?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল!’ তিনি বললেন, ‘কী ঘটনা?’ আমি বললাম, ‘আপনি আমাদের মধ্যে ছিলেন। হঠাৎ উঠে বাইরে এলেন। আপনার ফিরতে দেরি দেখে আমরা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলাম যে আমাদের অনুপস্থিতিতে হয়তো আপনি (শত...

এক রাতেই তিনি প্রায় ৭০ কোটি টাকা দান করেন

ছবি
  তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ (রা.) তাঁর সম্পদ নিয়ে দুশ্চিন্তা করতেন। তাঁকে চিন্তিত দেখে একদিন একজন জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হয়েছে? আপনাকে এমন মনমরা দেখা যাচ্ছে কেন? পারিবারিক সমস্যা?’ তালহা (রা.) বললেন, ‘না, পারিবারিক সমস্যা না। আমার চিন্তা সম্পদ নিয়ে।’ তালহা (রা.)–র দাদি বললেন, ‘তাহলে সম্পদ দান করে দাও। এই সম্পদই যেহেতু তোমার চিন্তার কারণ, এটা দান করে দিলেই তো তুমি চিন্তামুক্ত হয়ে যাবে।’ তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ দাদির কথা আমলে নিলেন। তিনি তাঁর দাসীকে ডেকে বললেন তাঁর সম্পদ জড়ো করতে এবং গরিবদের খবর দিতে। তাঁর কথামতো সম্পদ জড়ো করা হলো। হিসেব করে দেখা গেল তাঁর সম্পদ ৪ লাখ দিরহাম, বর্তমানে প্রায় ৩৩ কোটি টাকার সমপরিমাণ! সেই সম্পদ ছিলো তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ (রা.) জীবনের সমস্ত উপার্জন। সেগুলো তিনি দান করে দিলেন! আল্লাহর রাস্তায় যিনি সম্পদ দান করেন, আল্লাহ তাঁকে আরও সম্পদ দান করেন। নবিজী (সা.) বলেন, দান করলে সম্পদ কমে না (বরং বাড়ে)। সাহাবিদের জীবনী পড়লে দেখা যায়, এই কথাটি শতভাগ সত্য। তাঁরা আল্লাহর রাস্তায় বিপুল সম্পদ দান করা সত্ত্বেও তাঁদের সম্পদ কমেনি। তালহা ইবনে উবাইদিল্লাহ (রা.) একবার তাঁর সমস্ত স...

সুমামাহ্‌র (রা.) ইসলাম গ্রহণ

ছবি
  হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-এর বরাতে এই হাদিসের বর্ণনা আছে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) একদল অশ্বারোহীকে নাজদের দিকে পাঠিয়েছিলেন। এর পর তাঁরা বনু হানিফা বংশের এক লোককে ধরে নিয়ে এল। তার নাম সুমামাহ্ বিন উসাল। তিনি ছিলেন ইয়ামামা শহরবাসীদের নেতা। মসজিদের স্তম্ভগুলোর একটিতে সাহাবিরা তাঁকে বাঁধলেন। রাসুল (সা.) তাঁর সঙ্গে কথা বলতে এলেন। বললেন, হে সুমামাহ্, আমাদের সম্পর্কে আপনার ধারণা কী? তিনি জবাব দিলেন, আপনার সম্পর্কে আমার ধারণা খুব উত্তম। আপনি আমাকে হত্যা করলে আমি তার যোগ্য (অর্থাৎ, আমার মতো অপরাধীকে আপনি হত্যা করতে পারেন। অথবা আমাকে খুন করলে তার বদলা নেওয়া হবে।) আর হত্যা না করে যদি সৌজন্য প্রদর্শন করেন, তাহলে আপনি একজন কৃতজ্ঞ লোকের প্রতি সৌজন্য প্রদর্শন করবেন। যদি ধন–সম্পদ চান, তাহলে যতটা আপনি চান, আপনাকে (তা) দেওয়া হবে।এ উত্তর শুনে তিনি তাঁকে ছেড়ে দিলেন। পর দিন এসে নবী (সা.) আবারও একই প্রশ্ন করলেন। সুমামাহ্‌ও প্রথম দিন যা বলেছিলেন, সেই উত্তরই দিলেন। এ দিনও নবী (সা.) কিছু না বলে চলে গেলেন। তৃতীয় দিন নবী (সা.) এসে আবার প্রথম দুই দিনের মতোই প্রশ্ন করলেন। সুমামাহ্‌ও উত্ত...

জিকিরের ফজিলত

ছবি
  হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-র বরাতে এ হাদিসের বর্ণনা আছে। হজরত আবু হুরায়রা বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু অহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু অলাহুল হামদু অহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।’ অর্থাৎ, এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্য উপাস্য নেই। তাঁর কোনো শরিক নেই। (বিশাল) রাজ্যের তিনিই সার্বভৌম অধিপতি। তাঁরই যাবতীয় স্তুতি ও সও বস্তুর ওপর তিনিই ক্ষমতাবান। এই দোয়া যিনিই দিনে একশ বার পড়বেন, তাঁর ১০টি দাস মুক্ত করার সমান সওয়াব অর্জিত হবে, একশটি সওয়াব লেখা হবে, তাঁর একশটি গুনাহ মোচন করা হবে। ওই দিনের সন্ধ্যা অব্দি এটি তাঁর জন্য শয়তান থেকে বাঁচার রক্ষাকবচ হবে। তার চেয়ে সেদিন কেউ উত্তম কাজ করতে পারবে না, যদি না কেউ তার চেয়ে বেশি আমল করে। (বুখারি, হাদিস: ৬,৪০৩, মুসলিম, হাদিস: ৭,০১৯) তিনি আরও বলেছেন, দিনে যিনি একশবার ‘ সুবহানাল্লাহি অবিহামদিহি ’ পড়বেন, তাঁর গুনাহগুলো মোচন করা হবে; যদি তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়, তবুও। বুখারি, হাদিস: ৬,৪০৫, মুসলিম, হাদিস ৭০১৮ আয়াতুল কুরসি পড়ার অনেক উপকার হজরত আবু হুরায়রা (রা.)-র বরাতে এ হাদিসের বর্ণনা আছে। তিনি বলেছেন, একবার রা...